রংপুরে জেলা ও বিভাগীয় সরকারী, আধা সরকারী ও স্বায়িত্বশাসিত অফিস গুলোতে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার নামে চলছে ‘চরম নৈরাজ্য’ আর সরকারী অর্থ ‘লুৎপাটের মহোৎসব’। গত দু বছরে মুলধারার দৈনিক পত্রিকার বদলে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা ‘হাতিয়ে নেওয়ার’ অভিযোগ উঠেছে।
এই প্রক্রিয়ার সাথে বিভিন্ন সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত ও আধা স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার অসাধু কর্মকর্তারা জড়িত বলে অভিযোগ। তারা বিজ্ঞাপনের জন্য ‘আগাম টাকা নিচ্ছেন’ আর বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ পত্রিকাগুলোতে। তথ্য মন্ত্রনালয়ের চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের বেঁধে দেয়া মূলধারার পত্রিকার বিজ্ঞাপনের দরে কথিত আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকা গুলোকে বিজ্ঞাপন বিল পরিশোধ করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন অভিযোগ করেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে প্রতিবছর বিভাগীয় কার্যালয় ও জেলা কার্যালয় হিসেবে রংপুরের বিভিন্ন সরকারী অফিস বিশেষ করে এলজিইডি, গনপূর্ত , সড়ক ও জনপথ, স্বাস্থ্য প্রকৌশল, কারাগার , পুলিশ সুপারের কার্যালয়, মেট্রোপলিটান পুলিশ , সিটি করপোরেশন, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, ডিআইজি কার্যালয়, ফায়ার সার্ভিস , সহ আইন শৃংখলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থার কার্যালয় থেকে কমপক্ষে ৫ কোটি টাকার টেন্ডার বিজ্ঞাপন সহ বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেয়া হয়ে থাকে। সরকারী নির্দ্দেশনা অনুযায়ী মুল ধারার এবং প্রচার সংখ্যা বিবেচনায় এনে বিশেষ করে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা সংস্থার দেয়া তালিকা অনুযায়ী একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি দৈনিকে সরকারী বিজ্ঞাপন দেবার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা অধিকাংশ সময় সরকারী দপ্তরগুলো মানছে না।
বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে ঢাকা থেকে প্রকাশিত আন্ডার গ্রাউন্ড বিভিন্ন বাংলা ও ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায়। শতকরা ৫ থেকে ১০ ভাগ বিজ্ঞাপন পাচ্ছে মুলধারার দৈনিক গুলো। তাদেরকেও বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করতে গিয়ে সরকারী অফিস গুলোর এক শ্রেণীর কর্তাদের ‘আগাম টাকা দেবার দাবি’ শুনে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।
অনুসন্ধানে বেশ কিছু ইংরেজি ও বাংলা পত্রিকার নাম পাওয়া গেছে বিভিন্ন সরকারী অফিসে। ইংরেজি দৈনিক – প্রেজেন্ট টাইমস, আওয়ার টাইমস , ডেইলী ব্যানার, সিটিজেন টাইমস, নিউ এ্জ লাইন. আওয়ার টাইমস, গুড মনিং, নিউজ ষ্টার, মর্নিং গ্লোরী। আর বাংলা পত্রিকা – স্বাধীন বাংলা, স্বাধীন সংবাদ, সোনালী বার্তা, মত প্রকাশ, নওরোজ, সোনালী বার্তা, নয়া শতাব্দি, খবরের আলো, স্বাধীন মত , প্রধান সংবাদ সহ আরো অনেক আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকা।
কালের কন্ঠ পত্রিকার ব্যুরো প্রধান নজরুল ইসলাম রাজু জানান, ‘বিজ্ঞাপন পাচ্ছে আন্ডার গ্রাউন্ড দৈনিক পত্রিকাগুলো, যেগুলোর নামও কেউ শোনেনি। রংপুরে সেই পত্রিকাগুলো কখনও আসেনা। এসব পত্রিকার ভুঁইফোড় সাংবাদিক নামধারী কিছু ব্যক্তি সরকারী অফিসগুলোর সাথে যোগসাজস করে সরকারী বিজ্ঞাপন হাতিয়ে নিচ্ছে। তথ্য মন্ত্রনালয়ের তালিকায় সেগুলোর অনেক পত্রিকার নাম থাকলেও তাদের সরকারী বেঁধে দেয়া দরের চেয়ে বেশী দেয়া হচ্ছে। এরা মুল ধারার দৈনিক গুলোর বেঁধে দেয়া দরে বিল দাখিল করে বিজ্ঞাপন বিল উত্তোলন করছে। অথচ মুলধারার পত্রিকা গুলো সরেকারী বিজ্ঞাপন পাচ্ছেনা।’
মুলধারার পত্রিকায় কর্মরত বেশ কয়েকজন সাংবাদিক জানান আন্ডর গ্রাউন্ড পত্রিকা গুলোর সাংবাদিক নামধারীদের কাছে মুল ধারার দৈনিক পত্রিকা গুলো অসহায় হয়ে পড়ছে। আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকাগুলো আগাম টাকা দিয়ে আসে সরকারী অফিসে। এতে দুধরনের ক্ষতি হচ্ছেঃ টেন্ডার বিজ্ঞাপন বা অন্য বিজ্ঞাপনগুলো সম্পর্কে সংশ্লিষ্ঠরা জানতে পারছেনা। আর ‘পছন্দের’ প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তিকে ‘অনায়াসে কাজ দেয়া যাচ্ছে’।
রংপুর রিপোটার্স ক্লাবের সভাপতি শাহ বায়েজিদ আহাম্মেদ অভিযোগ করেন, ‘রংপুরে মুল ধারার পত্রিকা গুলোতে সরকারী বিজ্ঞাপন না দিয়ে আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হচ্ছে। আদৌ ওই আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকাগুলো চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের তালিকা ভুক্ত কিনা, হয়ে থাকলে তাদের জন্য বেঁধে দেয়া প্রতি কলাম ইঞ্চির মুল্য কত সেটাও পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়না।’ এসব বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত হওয়া উচিত বলে দাবী তার।
রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন কবীর মানিকেরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘সরকারী অফিস গুলো সরকারী বিজ্ঞাপন দেবার নামে দোকান খুলে বসেছেন। তারা মুল ধারার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দিয়ে টাকার বিনিময়ে আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকা গুলোতে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। এ ব্যাপারে তথ্য মন্ত্রনালয় সহ সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।’
রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মাযহার মান্নান অভিযোগ করেছেন, ‘সরকারী অফিস গুলোর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সেচ্ছাচারিতার কারণে মুল ধারার পত্রিকা বঞ্চিত হচ্ছে। অবিলম্বে এই অরাজকতা বন্ধ হওয়া উচিৎ।’
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
রংপুরে জেলা ও বিভাগীয় সরকারী, আধা সরকারী ও স্বায়িত্বশাসিত অফিস গুলোতে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার নামে চলছে ‘চরম নৈরাজ্য’ আর সরকারী অর্থ ‘লুৎপাটের মহোৎসব’। গত দু বছরে মুলধারার দৈনিক পত্রিকার বদলে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা ‘হাতিয়ে নেওয়ার’ অভিযোগ উঠেছে।
এই প্রক্রিয়ার সাথে বিভিন্ন সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত ও আধা স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার অসাধু কর্মকর্তারা জড়িত বলে অভিযোগ। তারা বিজ্ঞাপনের জন্য ‘আগাম টাকা নিচ্ছেন’ আর বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ পত্রিকাগুলোতে। তথ্য মন্ত্রনালয়ের চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের বেঁধে দেয়া মূলধারার পত্রিকার বিজ্ঞাপনের দরে কথিত আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকা গুলোকে বিজ্ঞাপন বিল পরিশোধ করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন অভিযোগ করেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে প্রতিবছর বিভাগীয় কার্যালয় ও জেলা কার্যালয় হিসেবে রংপুরের বিভিন্ন সরকারী অফিস বিশেষ করে এলজিইডি, গনপূর্ত , সড়ক ও জনপথ, স্বাস্থ্য প্রকৌশল, কারাগার , পুলিশ সুপারের কার্যালয়, মেট্রোপলিটান পুলিশ , সিটি করপোরেশন, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, ডিআইজি কার্যালয়, ফায়ার সার্ভিস , সহ আইন শৃংখলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থার কার্যালয় থেকে কমপক্ষে ৫ কোটি টাকার টেন্ডার বিজ্ঞাপন সহ বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেয়া হয়ে থাকে। সরকারী নির্দ্দেশনা অনুযায়ী মুল ধারার এবং প্রচার সংখ্যা বিবেচনায় এনে বিশেষ করে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা সংস্থার দেয়া তালিকা অনুযায়ী একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি দৈনিকে সরকারী বিজ্ঞাপন দেবার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা অধিকাংশ সময় সরকারী দপ্তরগুলো মানছে না।
বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে ঢাকা থেকে প্রকাশিত আন্ডার গ্রাউন্ড বিভিন্ন বাংলা ও ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায়। শতকরা ৫ থেকে ১০ ভাগ বিজ্ঞাপন পাচ্ছে মুলধারার দৈনিক গুলো। তাদেরকেও বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করতে গিয়ে সরকারী অফিস গুলোর এক শ্রেণীর কর্তাদের ‘আগাম টাকা দেবার দাবি’ শুনে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।
অনুসন্ধানে বেশ কিছু ইংরেজি ও বাংলা পত্রিকার নাম পাওয়া গেছে বিভিন্ন সরকারী অফিসে। ইংরেজি দৈনিক – প্রেজেন্ট টাইমস, আওয়ার টাইমস , ডেইলী ব্যানার, সিটিজেন টাইমস, নিউ এ্জ লাইন. আওয়ার টাইমস, গুড মনিং, নিউজ ষ্টার, মর্নিং গ্লোরী। আর বাংলা পত্রিকা – স্বাধীন বাংলা, স্বাধীন সংবাদ, সোনালী বার্তা, মত প্রকাশ, নওরোজ, সোনালী বার্তা, নয়া শতাব্দি, খবরের আলো, স্বাধীন মত , প্রধান সংবাদ সহ আরো অনেক আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকা।
কালের কন্ঠ পত্রিকার ব্যুরো প্রধান নজরুল ইসলাম রাজু জানান, ‘বিজ্ঞাপন পাচ্ছে আন্ডার গ্রাউন্ড দৈনিক পত্রিকাগুলো, যেগুলোর নামও কেউ শোনেনি। রংপুরে সেই পত্রিকাগুলো কখনও আসেনা। এসব পত্রিকার ভুঁইফোড় সাংবাদিক নামধারী কিছু ব্যক্তি সরকারী অফিসগুলোর সাথে যোগসাজস করে সরকারী বিজ্ঞাপন হাতিয়ে নিচ্ছে। তথ্য মন্ত্রনালয়ের তালিকায় সেগুলোর অনেক পত্রিকার নাম থাকলেও তাদের সরকারী বেঁধে দেয়া দরের চেয়ে বেশী দেয়া হচ্ছে। এরা মুল ধারার দৈনিক গুলোর বেঁধে দেয়া দরে বিল দাখিল করে বিজ্ঞাপন বিল উত্তোলন করছে। অথচ মুলধারার পত্রিকা গুলো সরেকারী বিজ্ঞাপন পাচ্ছেনা।’
মুলধারার পত্রিকায় কর্মরত বেশ কয়েকজন সাংবাদিক জানান আন্ডর গ্রাউন্ড পত্রিকা গুলোর সাংবাদিক নামধারীদের কাছে মুল ধারার দৈনিক পত্রিকা গুলো অসহায় হয়ে পড়ছে। আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকাগুলো আগাম টাকা দিয়ে আসে সরকারী অফিসে। এতে দুধরনের ক্ষতি হচ্ছেঃ টেন্ডার বিজ্ঞাপন বা অন্য বিজ্ঞাপনগুলো সম্পর্কে সংশ্লিষ্ঠরা জানতে পারছেনা। আর ‘পছন্দের’ প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তিকে ‘অনায়াসে কাজ দেয়া যাচ্ছে’।
রংপুর রিপোটার্স ক্লাবের সভাপতি শাহ বায়েজিদ আহাম্মেদ অভিযোগ করেন, ‘রংপুরে মুল ধারার পত্রিকা গুলোতে সরকারী বিজ্ঞাপন না দিয়ে আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হচ্ছে। আদৌ ওই আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকাগুলো চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের তালিকা ভুক্ত কিনা, হয়ে থাকলে তাদের জন্য বেঁধে দেয়া প্রতি কলাম ইঞ্চির মুল্য কত সেটাও পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়না।’ এসব বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত হওয়া উচিত বলে দাবী তার।
রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন কবীর মানিকেরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘সরকারী অফিস গুলো সরকারী বিজ্ঞাপন দেবার নামে দোকান খুলে বসেছেন। তারা মুল ধারার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দিয়ে টাকার বিনিময়ে আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকা গুলোতে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। এ ব্যাপারে তথ্য মন্ত্রনালয় সহ সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।’
রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মাযহার মান্নান অভিযোগ করেছেন, ‘সরকারী অফিস গুলোর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সেচ্ছাচারিতার কারণে মুল ধারার পত্রিকা বঞ্চিত হচ্ছে। অবিলম্বে এই অরাজকতা বন্ধ হওয়া উচিৎ।’