প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে আজ মঙ্গলবার (১৮ মে) সকাল আটটার দিকে শাহবাগ থানা থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেওয়া হয়েছে। তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।
এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে ‘গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি চুরির চেষ্টা এবং মোবাইলে ছবি তোলার’ অভিযোগে রোজিনাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
রোজিনার বিরুদ্ধে ঢাকার শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে, যেখানে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় চুরি এবং ১৯২৩ সালের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের’ ৩ ও ৫ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের দখলে রাখার অভিযোগ এনেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
রোজিনা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর প্রথম আলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করায় রোজিনা ‘আক্রোশের শিকার’ হয়েছেন বলে তাদের সন্দেহ।
প্রথম আলো সুত্র জানিয়েছে, পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গতকাল সোমবার দুপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান রোজিনা। তখন তাকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞার কক্ষে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। সেখানে তাকে ‘হেনস্তা’ করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তার বিরুদ্ধে। রাত পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ জানায়, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকেরা বিকেলে সচিবালয়ে এবং রাতে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভ করেন। এডিটর্স গিলড তার মুক্তির দাবি জানিয়েছে। এর নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফউজে, ডিউজে, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংগঠন।
কী ঘটেছে সচিবালয়ে
সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা সোমবার বিকালে খবর পান রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে আটক রাখা হয়েছে। তখন তারা সেখানে ছুটে যান। যে কক্ষে তাকে রাখা হয়েছিল, ছয়জন নারী পুলিশ সদস্যকে সেখানে দেখা যায়। কক্ষের বাইরে আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্য ছিলেন।
কী ঘটেছে জানতে উপস্থিত সাংবাদিকরা কয়েক দফা সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন সাংবাদিকরা, কিন্তু তিনি কথা বলেননি।
সেই সময় রোজিনা জানান তিনি সচিবের সাথে দেখা করতে তার একান্ত সচিব সাইফুলের কক্ষে যান। এরপরই হঠাৎ পুলিশ ডেকে তাকে ঐ কক্ষে আটক করা হয়। আটকের পর দেহ তল্লাশি করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন ‘মিজান’ নামে এক পুলিশ সদস্য তাকে ‘নাজেহাল’ করেছে। তিনি আরও জানান সেখান থেকে কোনো নথি তিনি নেননি।
সন্ধ্যার দিকে রোজিনা অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দাবি তোলেন। তবে কর্মকর্তারা তাতে সাড়া দেননি।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশের কয়েকটি গাড়ি আসে। এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ তলা থেকে রোজিনা ইসলামকে লিফটে করে নিচে নামিয়ে একটি সাদা রঙের গাড়িতে তুলে শাহবাগ থানার দিকে রওনা হয় পুলিশ। তবে রোজিনাকে কী অভিযোগে থানায় নেয়া হচ্ছে - উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের তখন কোনো উত্তর দেননি।
পরে রাত ৯টার দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম প্রধান সাংবাদিকদের অভিযোগের বিষয়গুলো জানান। তার অভিযোগ রোজিনা সচিবের পিএসের রুমে ঢুকে মোবাইলে কিছু ‘গুরুত্বপূর্ণ ফাইল-নথির ছবি তোলেন’। আর কিছু কাগজপত্র তিনি ‘সাথে নিয়ে যাচ্ছিলেন’।
তবে থানায় রোজিনার সঙ্গে দেখা করার পর তার ছোট বোন সাবিনা পারভীন সুমী বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রোজিনা ‘হয়রানির শিকার হচ্ছেন’।
সাবিনা বলেন, কিছু তথ্য জন্য স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রোজিনা। তখন তাকে পিএসের রুমে বসতে বলেন কনস্টেবল মিজান। যদিও রোজিনা সেখানে বসতে চাচ্ছিলেন না। এর কিছুক্ষণ পরই কনস্টেবল মিজানসহ দুই তিনজন এসে রোজিনার ব্যাগ কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ করেন সাবিনা। তিনি বলেন যে এই সময় রজিনাকে তারা এই বলে হুমকি দেন যে, ‘এতদিন স্বাস্থ্য খাত নিয়ে অনেক নেতিবাচক রিপোর্ট করছেন। আপনাকে মাটিতে পুঁতে ফেলব’।
সাবিনার অভিযোগ যখন রজিনার ব্যাগ কেড়ে নেয়া হয়েছিলো তখন ‘ব্যাগে কিছু ডকুমেন্ট ঢুকিয়ে’ দিয়ে থাকতে পারে।
মঙ্গলবার, ১৮ মে ২০২১
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে আজ মঙ্গলবার (১৮ মে) সকাল আটটার দিকে শাহবাগ থানা থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেওয়া হয়েছে। তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।
এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে ‘গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি চুরির চেষ্টা এবং মোবাইলে ছবি তোলার’ অভিযোগে রোজিনাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
রোজিনার বিরুদ্ধে ঢাকার শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে, যেখানে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় চুরি এবং ১৯২৩ সালের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের’ ৩ ও ৫ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের দখলে রাখার অভিযোগ এনেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
রোজিনা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর প্রথম আলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করায় রোজিনা ‘আক্রোশের শিকার’ হয়েছেন বলে তাদের সন্দেহ।
প্রথম আলো সুত্র জানিয়েছে, পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গতকাল সোমবার দুপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান রোজিনা। তখন তাকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞার কক্ষে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। সেখানে তাকে ‘হেনস্তা’ করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তার বিরুদ্ধে। রাত পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ জানায়, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকেরা বিকেলে সচিবালয়ে এবং রাতে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভ করেন। এডিটর্স গিলড তার মুক্তির দাবি জানিয়েছে। এর নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফউজে, ডিউজে, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংগঠন।
কী ঘটেছে সচিবালয়ে
সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা সোমবার বিকালে খবর পান রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে আটক রাখা হয়েছে। তখন তারা সেখানে ছুটে যান। যে কক্ষে তাকে রাখা হয়েছিল, ছয়জন নারী পুলিশ সদস্যকে সেখানে দেখা যায়। কক্ষের বাইরে আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্য ছিলেন।
কী ঘটেছে জানতে উপস্থিত সাংবাদিকরা কয়েক দফা সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন সাংবাদিকরা, কিন্তু তিনি কথা বলেননি।
সেই সময় রোজিনা জানান তিনি সচিবের সাথে দেখা করতে তার একান্ত সচিব সাইফুলের কক্ষে যান। এরপরই হঠাৎ পুলিশ ডেকে তাকে ঐ কক্ষে আটক করা হয়। আটকের পর দেহ তল্লাশি করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন ‘মিজান’ নামে এক পুলিশ সদস্য তাকে ‘নাজেহাল’ করেছে। তিনি আরও জানান সেখান থেকে কোনো নথি তিনি নেননি।
সন্ধ্যার দিকে রোজিনা অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দাবি তোলেন। তবে কর্মকর্তারা তাতে সাড়া দেননি।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশের কয়েকটি গাড়ি আসে। এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ তলা থেকে রোজিনা ইসলামকে লিফটে করে নিচে নামিয়ে একটি সাদা রঙের গাড়িতে তুলে শাহবাগ থানার দিকে রওনা হয় পুলিশ। তবে রোজিনাকে কী অভিযোগে থানায় নেয়া হচ্ছে - উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের তখন কোনো উত্তর দেননি।
পরে রাত ৯টার দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম প্রধান সাংবাদিকদের অভিযোগের বিষয়গুলো জানান। তার অভিযোগ রোজিনা সচিবের পিএসের রুমে ঢুকে মোবাইলে কিছু ‘গুরুত্বপূর্ণ ফাইল-নথির ছবি তোলেন’। আর কিছু কাগজপত্র তিনি ‘সাথে নিয়ে যাচ্ছিলেন’।
তবে থানায় রোজিনার সঙ্গে দেখা করার পর তার ছোট বোন সাবিনা পারভীন সুমী বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রোজিনা ‘হয়রানির শিকার হচ্ছেন’।
সাবিনা বলেন, কিছু তথ্য জন্য স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রোজিনা। তখন তাকে পিএসের রুমে বসতে বলেন কনস্টেবল মিজান। যদিও রোজিনা সেখানে বসতে চাচ্ছিলেন না। এর কিছুক্ষণ পরই কনস্টেবল মিজানসহ দুই তিনজন এসে রোজিনার ব্যাগ কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ করেন সাবিনা। তিনি বলেন যে এই সময় রজিনাকে তারা এই বলে হুমকি দেন যে, ‘এতদিন স্বাস্থ্য খাত নিয়ে অনেক নেতিবাচক রিপোর্ট করছেন। আপনাকে মাটিতে পুঁতে ফেলব’।
সাবিনার অভিযোগ যখন রজিনার ব্যাগ কেড়ে নেয়া হয়েছিলো তখন ‘ব্যাগে কিছু ডকুমেন্ট ঢুকিয়ে’ দিয়ে থাকতে পারে।