ছবি: সংগৃহীত
‘বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনীয় নয় বরং শিক্ষণীয়’ বলে মনে করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান। আর বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে না বলে ধারণা বক্তাদের। এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের আয়োজনে ‘বেসামাল বিশ্ব অর্থনীতি ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তারা।
শনিবার (২০ আগস্ট) সকালে এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর সভাপতিত্বে বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের শুরুতেই মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন গ্লোবাল টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমায় আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। মাঝখানে রেমিট্যান্স কমায় রিজার্ভ বাড়ার গতি কমে গিয়েছিল। আমদানি মেটাতে ব্যাংকগুলোতে ডলারের দাম বাড়ায় টাকার মান কমে যাচ্ছে ফলে কমছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনীতি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, আইএমএফকে নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক অপচর্চা হয়েছে। কারণ আইএমএফ যখন এসেছে তখন দেখা হয়েছে তাদের চারটি ক্ষেত্র থেকে বাংলাদেশ কী কী নিতে পারে। চারটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের মতো নেয়া সম্ভব। এর মধ্যে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট হচ্ছে একটি। বাকি ছিল ক্লাইমেট ফান্ডে। সেটি শুধু আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের বর্তমান যে রিজার্ভ এবং আমদানি সক্ষমতা তাতে এই মুহূর্তে আইএমএফের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু আমরা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এটা করেছি। আমাদের চেষ্টা থাকতে হবে আমরা কিভাবে রেভিনিউ জিডিপি বাড়াতে পারি।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, আমাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমাদের বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদ ও নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে না কারণ আমাদের অর্থনীতির ভিত অনেক শক্ত। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা নয়-ছয়ের কারণে মুদ্রানীতি একেবারেই ব্যবহার করতে পারিনি।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের এখন সময় এসেছে এনবিআরকে পুনর্গঠন করা। এই কাঠামোর মধ্যে ট্যাক্স বাড়ানো খুবই কঠিন। আমাদের এখানে পলিসি লেভেল এবং বাস্তবায়নকে আলাদা করা দরকার। ডিজিটালাইজেশন নিয়ে আমাদের সিরিয়াস কাজ করা দরকার। তাছাড়া আমাদের মুদ্রানীতি নিয়েও কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, সুদের হার বাড়ানো বাংলাদেশের জন্য সমীচীন না। আমাদের বক্তব্যের কারণে অনেক ভুল শঙ্কা মানুষের মধ্যে তৈরি হয়।
এডিটরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ও বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ বলেন, সুশাসন যদি সঠিকভাবে থাকে তাহলে এই ক্রাইসিস হয়তো ভালোভাবে মোকাবিলা করা যাবে।
অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেন, প্রতিটি সেক্টরে সুশাসন স্থাপন করতে হবে। স্বচ্ছতা জবাবদিহি ঠিকভাবে দেখতে হবে। যারা দোষী তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে যদি এর একটিও উদাহরণ দেখা যেত তাহলে পুনরাবৃত্তি হতো না।
ছবি: সংগৃহীত
শনিবার, ২০ আগস্ট ২০২২
‘বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনীয় নয় বরং শিক্ষণীয়’ বলে মনে করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান। আর বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে না বলে ধারণা বক্তাদের। এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের আয়োজনে ‘বেসামাল বিশ্ব অর্থনীতি ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তারা।
শনিবার (২০ আগস্ট) সকালে এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর সভাপতিত্বে বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের শুরুতেই মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন গ্লোবাল টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমায় আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। মাঝখানে রেমিট্যান্স কমায় রিজার্ভ বাড়ার গতি কমে গিয়েছিল। আমদানি মেটাতে ব্যাংকগুলোতে ডলারের দাম বাড়ায় টাকার মান কমে যাচ্ছে ফলে কমছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনীতি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, আইএমএফকে নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক অপচর্চা হয়েছে। কারণ আইএমএফ যখন এসেছে তখন দেখা হয়েছে তাদের চারটি ক্ষেত্র থেকে বাংলাদেশ কী কী নিতে পারে। চারটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের মতো নেয়া সম্ভব। এর মধ্যে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট হচ্ছে একটি। বাকি ছিল ক্লাইমেট ফান্ডে। সেটি শুধু আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের বর্তমান যে রিজার্ভ এবং আমদানি সক্ষমতা তাতে এই মুহূর্তে আইএমএফের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু আমরা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এটা করেছি। আমাদের চেষ্টা থাকতে হবে আমরা কিভাবে রেভিনিউ জিডিপি বাড়াতে পারি।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, আমাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমাদের বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদ ও নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে না কারণ আমাদের অর্থনীতির ভিত অনেক শক্ত। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা নয়-ছয়ের কারণে মুদ্রানীতি একেবারেই ব্যবহার করতে পারিনি।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের এখন সময় এসেছে এনবিআরকে পুনর্গঠন করা। এই কাঠামোর মধ্যে ট্যাক্স বাড়ানো খুবই কঠিন। আমাদের এখানে পলিসি লেভেল এবং বাস্তবায়নকে আলাদা করা দরকার। ডিজিটালাইজেশন নিয়ে আমাদের সিরিয়াস কাজ করা দরকার। তাছাড়া আমাদের মুদ্রানীতি নিয়েও কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, সুদের হার বাড়ানো বাংলাদেশের জন্য সমীচীন না। আমাদের বক্তব্যের কারণে অনেক ভুল শঙ্কা মানুষের মধ্যে তৈরি হয়।
এডিটরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ও বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ বলেন, সুশাসন যদি সঠিকভাবে থাকে তাহলে এই ক্রাইসিস হয়তো ভালোভাবে মোকাবিলা করা যাবে।
অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেন, প্রতিটি সেক্টরে সুশাসন স্থাপন করতে হবে। স্বচ্ছতা জবাবদিহি ঠিকভাবে দেখতে হবে। যারা দোষী তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে যদি এর একটিও উদাহরণ দেখা যেত তাহলে পুনরাবৃত্তি হতো না।