alt

বাংলাদেশে ভয়ংকর সিসা দূষণ, হৃদরোগে বছরে লাখো মানুষের মৃত্যু

সংবাদ ডেস্ক : মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ছবি: সংগৃহীত

ভয়ংকর সিসা দূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর হৃদরোগে আক্রান্ত ১ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। একই কারণে দেশে শিশুদের আইকিউ কমে যাচ্ছে, যার ফলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সাময়িকী ‘দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে’ প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

‘গ্লোবাল হেলথ বার্ডেন অ্যান্ড কস্ট অব লেড এক্সপোজার ইন চিলড্রেন অ্যান্ড অ্যাডাল্টস: এ হেলথ ইমপ্যাক্ট অ্যান্ড ইকোনমিক মডেলিং অ্যানালাইসিস’ শিরোনামের এই গবেষণাটি করেছেন বিশ্বব্যাংকের একদল গবেষক বলে বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিসা দূষণের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন চতুর্থ। এর ফলে একদিকে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অস্বাভাবিক হারে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তেমনি শিশুদেরও আইকিউ কমে যাচ্ছে।

আর্থিক ক্ষতির হিসাবে এর পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৮৬৩ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের ২০১৯ সালের মোট জিডিপি’র প্রায় ছয় থেকে নয় শতাংশের সমান। সিসা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে শিশুদের। মাত্রাতিরিক্ত সিসা শিশুদের শরীরের বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে।

বাংলাদেশের ২০১৯ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন, সিসা দূষণের ফলে দেশে শূন্য থেকে চার বছর বয়সী শিশুরা প্রায় দুই কোটি আইকিউ পয়েন্টস হারাচ্ছে। এতে শিশুদের বুদ্ধির যথাযথ বিকাশ হচ্ছে না। ফলে নতুন কিছু শেখার ক্ষেত্রে তাদের যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি আচার-ব্যবহারেও নানা অসংগতি দেখা দিচ্ছে। এছাড়া, খাবারে অরুচি, ওজন কমে যাওয়া, খিটখিটে মেজাজ - এমন নানা সমস্যাও তৈরি করছে।

এ প্রসঙ্গে ইউনিসেফ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. প্রিসিলা ওবিল বলেন, বাংলাদেশে শিশুদের রক্তে উচ্চমাত্রায় সিসার উপস্থিতি তাদের মেধার পূর্ণ বিকাশের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। এছাড়া সিসা দূষণের ফলে তাদের আইকিউ কমে যাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই সিসা দূষণ বন্ধে জাতীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

২০২২ সালের মে মাসে প্রকাশিত ‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজে’র তথ্যে দেখা গিয়েছিল, সিসা দূষণের ফলে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার মানুষের অকালে মৃত্যু হচ্ছে। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের নতুন এই গবেষণা প্রতিবেদনে আরও ভয়ংকর তথ্যই উঠে এসেছে। এখানে দেখা যাচ্ছে, সিসা দূষণের ফলে প্রতিবছর বাংলাদেশে ২৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী অন্তত ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রকল্প সমন্বয়ক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, সিসা দূষণ রোধে এখনই উপযুক্ত সময়। এই সমস্যাকে সমূলে উৎপাটনের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

সিসা দূষণের উৎস:

ব্যাটারি ভাঙা শিল্প, সীসাযুক্ত পেইন্ট, অ্যালুমিনিয়ামের হাড়ি-পাতিল, খাবার রাখার জন্য ব্যবহৃত সিরামিকের পাত্র, ই-বর্জ্য, খেলনা, সার, রান্নায় ব্যবহৃত বিভিন্ন মসলা, প্রসাধনী, নানা ধরনের খাবার এবং চাষ করা মাছের জন্য তৈরি খাবার থেকেই মূলতঃ বাংলাদেশে সিসার দূষণ ঘটে।

প্রকাশিত গবেষণাটির অংশ হিসেবে খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২০০টি নমুনা সংগ্রহ করে সিসার উপস্থিতি পরিমাপ করে দেখেছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান পিওর আর্থ। এসব নমুনার মধ্যে খাবার রাখার জন্য ব্যবহৃত ধাতব ও প্লাস্টিকের পাত্র, সিরামিক পাত্র, রঙ, শুকনো খাবার, খেলনা, রান্নায় ব্যবহৃত মসলা এবং প্রসাধনী পণ্য রয়েছে।

এগুলোর মধ্যে ২৪ শতাংশ নমুনাতেই মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। খাবার রাখার জন্য ব্যবহৃত ৫৯ শতাংশ ধাতব পাত্রে, ৪৪ শতাংশ সিরামিক পাত্রে, নয় শতাংশ প্লাস্টিকের পাত্রে, ৫৪ শতাংশ পেইন্টে, ১৭ শতাংশ চাল/স্টার্চে, ১৩ শতাংশ খেলনায়, সাত শতাংশ মসলায় এবং ছয় শতাংশ প্রসাধনীতে অতিমাত্রায় ক্ষতিকর সিসার উপস্থিতি পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে গড়ে প্রায় ৬ দশমিক ৮ মাইক্রোগ্রাম সিসা পাওয়া গেছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে। তবে একজন মানুষের শরীরে কতটুকু সিসা থাকা নিরাপদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তার সঠিক কোনো পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়নি।

###

ছবি

ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, কোনো শক্তিই ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব

ছবি

ট্রাইব্যুনাল ফেইস না করে যানবাহনে আগুন মানুষ ‘ভালোভাবে নিচ্ছে না’: প্রসিকিউটর

কিউকম সিইও রিপন কারাগারে, রিমান্ড শুনানি বুধবার

বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান হান্নানের সহযোগীর দুই ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ

ছবি

১ ফেব্রুয়ারি থেকে একুশে বইমেলার দাবি, প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি

ছবি

পাচারের শিকার শান্তনা দীর্ঘ ১১ বছর পর দেশে ফিরলো

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো: আরও ৪ এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা করছে দুদক

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের রায় ২০ নভেম্বর

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ৯১২ জন হাসপাতালে, মৃত্যু ৩ জনের

ইসির সংলাপ শুরু কাল থেকে, ধাপে ধাপে ডাকা হবে দলগুলোকে

ছবি

জুলাই সনদ নিয়ে ‘৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে’ সিদ্ধান্ত নেবে সরকার

ছবি

তৌহিদ হোসেন বললেন, দিল্লির বিস্ফোরণে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ ভিত্তিহীন

ছবি

বিমানবন্দরগুলোকে নিরাপত্তা ও নজরদারি বাড়াতে কয়েকটি নির্দেশ : বেবিচক

ছবি

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিচার প্রস্তুত, আদালত বদল

সাবেক মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদিরকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ, রায়ের অপেক্ষা, হাসিনার বিরুদ্ধে ‘প্লট দুর্নীতি’ মামলা

এটা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়, এটা নতুন বাংলাদেশ: আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি প্রেস সচিবের

লতিফ সিদ্দিকী ও মঞ্জুরুল আলমের জামিন বহাল, মুক্তিতে বাধা নেই

শক্তিশালী বোমা মেশিন বসিয়ে বালু অপসারণ, ঝুঁকিতে তিস্তা ব্যারেজ

বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করতে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন: নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ‘জিহাদ’ ঘোষণা

প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদের বিধান কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট

ছবি

সনদ ও গণভোটের বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: উপদেষ্টা রিজওয়ানা

ছবি

ইসির সিদ্ধান্ত অবৈধ: বাগেরহাটে ৪ ও গাজীপুরে ৫ আসনই বহাল

ছবি

দুদকের অভিযোগ: বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ১১ কোটি টাকা আয়বহির্ভূত সম্পদ

ছবি

প্লট বরাদ্দ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন, ১৭ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন

প্রাথমিক শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত বদল, ফের কর্মবিরতি ঘোষণা

ছবি

প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত, অবস্থান কর্মসূচি চলবে

ছবি

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ জারি

ছবি

রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যের সমালোচনা করল ঢাকা

ছবি

গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনের দাবি সাংবাদিকদের, বিবেচনার আশ্বাস ইসির

ছবি

অপরাধ ট্রাইব্যুনাল: শেখ হাসিনার মামলার রায়ের তারিখ ঘিরে অনিরাপদ বোধ ‘করছে না’ প্রসিকিউশন

ছবি

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় ২২ সাক্ষী হাজির

ছবি

সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

ঢাকা থেকে ‘স্বতন্ত্র’ নির্বাচন করবো, পদত্যাগ ‘উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ওপর’: আসিফ মাহমুদ

ছবি

১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনার মামলার রায় নির্ধারণ—প্রসিকিউশন বলছে, তারা অনিরাপদ নয়

tab

বাংলাদেশে ভয়ংকর সিসা দূষণ, হৃদরোগে বছরে লাখো মানুষের মৃত্যু

সংবাদ ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ভয়ংকর সিসা দূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর হৃদরোগে আক্রান্ত ১ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। একই কারণে দেশে শিশুদের আইকিউ কমে যাচ্ছে, যার ফলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সাময়িকী ‘দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে’ প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

‘গ্লোবাল হেলথ বার্ডেন অ্যান্ড কস্ট অব লেড এক্সপোজার ইন চিলড্রেন অ্যান্ড অ্যাডাল্টস: এ হেলথ ইমপ্যাক্ট অ্যান্ড ইকোনমিক মডেলিং অ্যানালাইসিস’ শিরোনামের এই গবেষণাটি করেছেন বিশ্বব্যাংকের একদল গবেষক বলে বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিসা দূষণের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন চতুর্থ। এর ফলে একদিকে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অস্বাভাবিক হারে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তেমনি শিশুদেরও আইকিউ কমে যাচ্ছে।

আর্থিক ক্ষতির হিসাবে এর পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৮৬৩ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের ২০১৯ সালের মোট জিডিপি’র প্রায় ছয় থেকে নয় শতাংশের সমান। সিসা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে শিশুদের। মাত্রাতিরিক্ত সিসা শিশুদের শরীরের বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে।

বাংলাদেশের ২০১৯ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন, সিসা দূষণের ফলে দেশে শূন্য থেকে চার বছর বয়সী শিশুরা প্রায় দুই কোটি আইকিউ পয়েন্টস হারাচ্ছে। এতে শিশুদের বুদ্ধির যথাযথ বিকাশ হচ্ছে না। ফলে নতুন কিছু শেখার ক্ষেত্রে তাদের যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি আচার-ব্যবহারেও নানা অসংগতি দেখা দিচ্ছে। এছাড়া, খাবারে অরুচি, ওজন কমে যাওয়া, খিটখিটে মেজাজ - এমন নানা সমস্যাও তৈরি করছে।

এ প্রসঙ্গে ইউনিসেফ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. প্রিসিলা ওবিল বলেন, বাংলাদেশে শিশুদের রক্তে উচ্চমাত্রায় সিসার উপস্থিতি তাদের মেধার পূর্ণ বিকাশের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। এছাড়া সিসা দূষণের ফলে তাদের আইকিউ কমে যাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই সিসা দূষণ বন্ধে জাতীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

২০২২ সালের মে মাসে প্রকাশিত ‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজে’র তথ্যে দেখা গিয়েছিল, সিসা দূষণের ফলে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার মানুষের অকালে মৃত্যু হচ্ছে। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের নতুন এই গবেষণা প্রতিবেদনে আরও ভয়ংকর তথ্যই উঠে এসেছে। এখানে দেখা যাচ্ছে, সিসা দূষণের ফলে প্রতিবছর বাংলাদেশে ২৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী অন্তত ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রকল্প সমন্বয়ক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, সিসা দূষণ রোধে এখনই উপযুক্ত সময়। এই সমস্যাকে সমূলে উৎপাটনের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

সিসা দূষণের উৎস:

ব্যাটারি ভাঙা শিল্প, সীসাযুক্ত পেইন্ট, অ্যালুমিনিয়ামের হাড়ি-পাতিল, খাবার রাখার জন্য ব্যবহৃত সিরামিকের পাত্র, ই-বর্জ্য, খেলনা, সার, রান্নায় ব্যবহৃত বিভিন্ন মসলা, প্রসাধনী, নানা ধরনের খাবার এবং চাষ করা মাছের জন্য তৈরি খাবার থেকেই মূলতঃ বাংলাদেশে সিসার দূষণ ঘটে।

প্রকাশিত গবেষণাটির অংশ হিসেবে খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২০০টি নমুনা সংগ্রহ করে সিসার উপস্থিতি পরিমাপ করে দেখেছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান পিওর আর্থ। এসব নমুনার মধ্যে খাবার রাখার জন্য ব্যবহৃত ধাতব ও প্লাস্টিকের পাত্র, সিরামিক পাত্র, রঙ, শুকনো খাবার, খেলনা, রান্নায় ব্যবহৃত মসলা এবং প্রসাধনী পণ্য রয়েছে।

এগুলোর মধ্যে ২৪ শতাংশ নমুনাতেই মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। খাবার রাখার জন্য ব্যবহৃত ৫৯ শতাংশ ধাতব পাত্রে, ৪৪ শতাংশ সিরামিক পাত্রে, নয় শতাংশ প্লাস্টিকের পাত্রে, ৫৪ শতাংশ পেইন্টে, ১৭ শতাংশ চাল/স্টার্চে, ১৩ শতাংশ খেলনায়, সাত শতাংশ মসলায় এবং ছয় শতাংশ প্রসাধনীতে অতিমাত্রায় ক্ষতিকর সিসার উপস্থিতি পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে গড়ে প্রায় ৬ দশমিক ৮ মাইক্রোগ্রাম সিসা পাওয়া গেছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে। তবে একজন মানুষের শরীরে কতটুকু সিসা থাকা নিরাপদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তার সঠিক কোনো পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়নি।

###

back to top