আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের এক চতুর্থাংশ কেন্দ্র ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ৫৩টি আসন। অন্যান্য আসনেও কমবেশি ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্র রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এসব ‘ঝুঁকিপূর্ণ ও অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্রগুলোতে ‘বাড়তি’ নিরাপত্তা নেয়া হচ্ছে। এই কেন্দ্রগুলোকে ঘিরে থাকছে বিশেষ নজরদারিও। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও পুলিশের সূত্রগুলো এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে ইসি এসব ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ বলছে।
রোববার (৭ জানুয়ারি) দ্বাদশ সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এসব আসনে মোট ৪২ হাজার ১৪৯টি ভোটকেন্দ্র থাকছে। পুলিশ জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচনে ১০ হাজার ৫৩০টি ভোটকেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে ইসির একটি সূত্র জানায়, তারা ১০ হাজার ৩০০টি কেন্দ্রকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
জানতে চাইলে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন্স) হায়দার আলী খান সংবাদকে বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা বলয় থাকবে। আমরা এসব কেন্দ্রে ডেপ্লয়মেন্ট স্কেলটা (নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়নের মাত্রা) বাড়িয়ে দিচ্ছি। মোবাইল কোর্ট (ভ্রাম্যমাণ আদালত) বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মনিটরিং টিমের নজরদারি বেশি রাখা হচ্ছে। আমাদের যে রণকৌশল রয়েছে সেটা সেখানে প্রয়োগ করা হবে।’
বাড়তি নিরাপত্তা কাঠামো কেমন থাকবে, এমন প্রশ্নে ডিআইজি হায়দার বলেন, ‘ধরুন, ডেপ্লয়মেন্ট স্কেলটা আমরা নরমালি দুইটা থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোতে চারটা দেয়া হবে। মোবাইল কোর্ট দুইটার জায়গায় চারটা বা পাঁচটা রাখা হবে। মনিটরিং টিম সাধারণত যদি দুইবার খোঁজ নেয়, সেখানে চারবার বা বারবার নিবে। জেলা পর্যায়ে যে টিমগুলো নিয়োজিত থাকবে তারা ওই কেন্দ্রগুলোতে বেশি খোঁজ নিবে। একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকবে। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণ করবো। যেন মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটদান করতে পারে।’
ইসি ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এবার আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রায় সাড়ে ৭ লাখ সদস্য মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে পুলিশ ১ লাখ ৮৯ হাজার, বিজিবি ৩৫ হাজার, এপিবিএন ৬ হাজার এবং আনসার-ভিডিপির ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৬৭ জন সদস্য থাকবেন। এ হিসেবে কেন্দ্র প্রতি ১৮ জন করে নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত থাকছে। এছাড়াও বেসমরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে সশস্ত্র বাহিনীও (সেনা-নৌ-বিমানবাহিনী)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, মেট্রোপলিটন এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনজন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্যসহ ১৫ সদস্যের একটি নিরাপত্তা দল থাকবে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে একজন সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই)সহ অস্ত্রধারী ৪ জন পুলিশসহ ১৮ জনের টিম নিয়োজিত থাকবে।
আর মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে অস্ত্রধারী দুজন পুলিশ, অস্ত্রধারী একজন আনসারসহ ১৬ জনের একটি টিম নিয়োজিত থাকবে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে এসআই বা এএসআই (সহকারী উপ-পরিদর্শক) সহ তিনজন অস্ত্রধারী পুলিশ ও একজন অস্ত্রধারী আনসারসহ ১৭ জনের একটি নিরাপত্তা টিম নিয়োজিত থাকবে। এর বাইরে র্যাব ও বিজিবি টহলে থাকবে।
এবারের সংসদ নির্বাচন বিএনপি-জামায়াতসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল বর্জন করছে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। এসব দলের ১৫৩৪ জন প্রার্থী ও ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে মোট ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী ভোটে প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ২৬৬ জন ও বর্তমান সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) লাঙ্গল প্রতীকে ২৬৫ জন প্রার্থী অংশ নিলেও আলোচনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ৪৩৬ জন। বিএনপি নির্বাচন না আসায় ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ করতে আওয়ামী লীগ তাদের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ‘উৎসাহিত’ করেছে।
ক্ষমতাসীনদের এমন ‘আগ্রহে’ বড় একটা সংখ্যায় দলটির মনোনয়ন না পাওয়া নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ কারণে অনেক আসনেই আওয়ামী লীগ মনোনীত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ‘উত্তেজনা’ তৈরি হয়েছে। মূলত সেই সব আসনেই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্র বেশি বলে ইসি ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
এর মধ্যেই নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কিছু সংঘাত ও সহিংসতা ঘটেছে। প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর শুক্রবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে দেড়শ’ অধিক সংঘাত ও সহিংসতা ঘটেছে। এর মধ্যে দুটি ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুও হয়েছে।
নির্বাচনকে ঘিরে দফায় দফায় পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কাজী হাবিুল আউয়ালের নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক শেষে কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘সব মিলিয়ে ভোটকেন্দ্রে গেলে কোনো ভয় নেই, এই নিশ্চয়তা দিতে চায় নিরাপত্তা বাহিনী।’
শুক্রবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৪
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের এক চতুর্থাংশ কেন্দ্র ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ৫৩টি আসন। অন্যান্য আসনেও কমবেশি ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্র রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এসব ‘ঝুঁকিপূর্ণ ও অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্রগুলোতে ‘বাড়তি’ নিরাপত্তা নেয়া হচ্ছে। এই কেন্দ্রগুলোকে ঘিরে থাকছে বিশেষ নজরদারিও। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও পুলিশের সূত্রগুলো এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে ইসি এসব ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ বলছে।
রোববার (৭ জানুয়ারি) দ্বাদশ সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এসব আসনে মোট ৪২ হাজার ১৪৯টি ভোটকেন্দ্র থাকছে। পুলিশ জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচনে ১০ হাজার ৫৩০টি ভোটকেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে ইসির একটি সূত্র জানায়, তারা ১০ হাজার ৩০০টি কেন্দ্রকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
জানতে চাইলে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন্স) হায়দার আলী খান সংবাদকে বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা বলয় থাকবে। আমরা এসব কেন্দ্রে ডেপ্লয়মেন্ট স্কেলটা (নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়নের মাত্রা) বাড়িয়ে দিচ্ছি। মোবাইল কোর্ট (ভ্রাম্যমাণ আদালত) বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মনিটরিং টিমের নজরদারি বেশি রাখা হচ্ছে। আমাদের যে রণকৌশল রয়েছে সেটা সেখানে প্রয়োগ করা হবে।’
বাড়তি নিরাপত্তা কাঠামো কেমন থাকবে, এমন প্রশ্নে ডিআইজি হায়দার বলেন, ‘ধরুন, ডেপ্লয়মেন্ট স্কেলটা আমরা নরমালি দুইটা থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোতে চারটা দেয়া হবে। মোবাইল কোর্ট দুইটার জায়গায় চারটা বা পাঁচটা রাখা হবে। মনিটরিং টিম সাধারণত যদি দুইবার খোঁজ নেয়, সেখানে চারবার বা বারবার নিবে। জেলা পর্যায়ে যে টিমগুলো নিয়োজিত থাকবে তারা ওই কেন্দ্রগুলোতে বেশি খোঁজ নিবে। একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকবে। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণ করবো। যেন মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটদান করতে পারে।’
ইসি ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এবার আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রায় সাড়ে ৭ লাখ সদস্য মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে পুলিশ ১ লাখ ৮৯ হাজার, বিজিবি ৩৫ হাজার, এপিবিএন ৬ হাজার এবং আনসার-ভিডিপির ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৬৭ জন সদস্য থাকবেন। এ হিসেবে কেন্দ্র প্রতি ১৮ জন করে নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত থাকছে। এছাড়াও বেসমরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে সশস্ত্র বাহিনীও (সেনা-নৌ-বিমানবাহিনী)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, মেট্রোপলিটন এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনজন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্যসহ ১৫ সদস্যের একটি নিরাপত্তা দল থাকবে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে একজন সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই)সহ অস্ত্রধারী ৪ জন পুলিশসহ ১৮ জনের টিম নিয়োজিত থাকবে।
আর মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে অস্ত্রধারী দুজন পুলিশ, অস্ত্রধারী একজন আনসারসহ ১৬ জনের একটি টিম নিয়োজিত থাকবে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে এসআই বা এএসআই (সহকারী উপ-পরিদর্শক) সহ তিনজন অস্ত্রধারী পুলিশ ও একজন অস্ত্রধারী আনসারসহ ১৭ জনের একটি নিরাপত্তা টিম নিয়োজিত থাকবে। এর বাইরে র্যাব ও বিজিবি টহলে থাকবে।
এবারের সংসদ নির্বাচন বিএনপি-জামায়াতসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল বর্জন করছে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। এসব দলের ১৫৩৪ জন প্রার্থী ও ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে মোট ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী ভোটে প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ২৬৬ জন ও বর্তমান সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) লাঙ্গল প্রতীকে ২৬৫ জন প্রার্থী অংশ নিলেও আলোচনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ৪৩৬ জন। বিএনপি নির্বাচন না আসায় ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ করতে আওয়ামী লীগ তাদের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ‘উৎসাহিত’ করেছে।
ক্ষমতাসীনদের এমন ‘আগ্রহে’ বড় একটা সংখ্যায় দলটির মনোনয়ন না পাওয়া নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ কারণে অনেক আসনেই আওয়ামী লীগ মনোনীত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ‘উত্তেজনা’ তৈরি হয়েছে। মূলত সেই সব আসনেই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্র বেশি বলে ইসি ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
এর মধ্যেই নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কিছু সংঘাত ও সহিংসতা ঘটেছে। প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর শুক্রবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে দেড়শ’ অধিক সংঘাত ও সহিংসতা ঘটেছে। এর মধ্যে দুটি ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুও হয়েছে।
নির্বাচনকে ঘিরে দফায় দফায় পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কাজী হাবিুল আউয়ালের নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক শেষে কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘সব মিলিয়ে ভোটকেন্দ্রে গেলে কোনো ভয় নেই, এই নিশ্চয়তা দিতে চায় নিরাপত্তা বাহিনী।’