ঢাবিতে ‘১৯৭১ এ বাংলাদেশের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা
“১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য প্রয়োজন সকল স্তরের মানুষের সমন্বিত প্রয়াস। গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের কি কি শূণ্যতা আছে সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। গণহত্যার উপর শক্তিশালী ডেটাবেজ ও ডকুমেন্টশন তৈরী করে আন্তর্জাতিকভাবে তার প্রচারণা চালাতে হবে।”
‘১৯৭১ সালের বাংলাদেশের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। আজ সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (ইউসিএল) এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ-এর যৌথ উদ্যোগে এ প্রজেক্ট পরিচালিত হচ্ছে। সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক শেখ হাফিজুর রহমানের (কার্জন) সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড এ এস এম মাকসুদ কামাল।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশনের এমন কোনো ধারা নেই যা পাকিস্তানি বাহিনী সংগঠিত করে নাই। অথচ স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমাদের গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি জানাতে হচ্ছে। আমরা কেন এত পিছিয়ে পড়লাম সেটির কারণ খুৃঁজে বের করতে হবে। সেজন্য স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীরা কীভাবে এদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়েছে সেটি জানতে হবে। তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। এখনো সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে।
তিনি আরো বলেন, গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য একটা শক্তিশালী ও বিস্তৃত ডেটাবেস প্রয়োজন। যেমন ৭১ এর অনেক বদ্ধভূমি আমাদের অজানা রয়েছে। সেগুলো আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। ডকুমেন্টেসন করতে হবে। সেজন্য প্রত্যেকেই যার যারা অবস্থান থেকে অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে জেনোসাইড স্টাডিজকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাহলেই তরুণদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে৷ তারা এ বিষয়ে গবেষণা করতে এগিয়ে আসবে।
এ এস এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, এই প্রজেক্টের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের গণহত্যার উপর একটি ওয়েব বেইসড ডকুমেন্টেশন তৈরী করবো। যাতে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে আমরা এটি ছড়িয়ে দিতে পারি। যেকোনো গবেষক এটা থেকে অ্যাট্রিবিউট সংগ্রহ করতে পারবে। গণহত্যা স্বীকৃতি পেতে আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের কি কি শূণ্যতা আছে, এই প্রজেক্টের মাধ্যমে আমরা তাও খুঁজে বের করবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে জেনোসাইড স্টাডিজকে আরো যুগোপযোগী করার উদ্যোগও নেওয়া হবে বলে জানান উপাচার্য।
ইউসিএল-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. বায়েস আহমেদ বলেন, গণহত্যা নিয়ে কাজ করার সময় আমার বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে কিছু করার বিষয়টি মাথায় আসে। সে লক্ষ্যে আমরা ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে(ইউসিএল) প্রপোজাল সাবমিট করি। তারা এটি গ্রহণ করে। হাউজ অব লর্ডসে ব্রিটিশ প্রতিনিধি, বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন নিয়ে আমাদের কোলাবোরেশান হয়েছে।
শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, ৭১ এর গণহত্যার এদেশীয় যারা মাস্টারমাইন্ড তাদের বিচার হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানি মাস্টারমাইন্ডদের বিচার হয়নি। আমরা গণহত্যার আন্তর্জাতিক তথা জাতিসংঘের স্বীকৃতিও পাইনি। রুয়ান্ডার গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে অনেকদিন সময় লেগেছে। আমাদের জন্য এটা সহজ হবে না। আমাদের উদ্দেশ্য দুটি৷ এক, গণহত্যার স্বীকৃতি। দুই, ক্ষতিপূরণ।
কর্মশালায় একটি প্যানেল ডিসকাশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশ নেন ইতিহাসবিদ ও লেখক মুনতাসীর মামুন, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, মানবাধিকার ও উন্নয়ন কর্মী আসিফ মুনীরসহ প্রমুখ।
ঢাবিতে ‘১৯৭১ এ বাংলাদেশের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা
সোমবার, ২৭ মে ২০২৪
“১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য প্রয়োজন সকল স্তরের মানুষের সমন্বিত প্রয়াস। গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের কি কি শূণ্যতা আছে সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। গণহত্যার উপর শক্তিশালী ডেটাবেজ ও ডকুমেন্টশন তৈরী করে আন্তর্জাতিকভাবে তার প্রচারণা চালাতে হবে।”
‘১৯৭১ সালের বাংলাদেশের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। আজ সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (ইউসিএল) এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ-এর যৌথ উদ্যোগে এ প্রজেক্ট পরিচালিত হচ্ছে। সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক শেখ হাফিজুর রহমানের (কার্জন) সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড এ এস এম মাকসুদ কামাল।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশনের এমন কোনো ধারা নেই যা পাকিস্তানি বাহিনী সংগঠিত করে নাই। অথচ স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমাদের গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি জানাতে হচ্ছে। আমরা কেন এত পিছিয়ে পড়লাম সেটির কারণ খুৃঁজে বের করতে হবে। সেজন্য স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীরা কীভাবে এদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়েছে সেটি জানতে হবে। তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। এখনো সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে।
তিনি আরো বলেন, গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য একটা শক্তিশালী ও বিস্তৃত ডেটাবেস প্রয়োজন। যেমন ৭১ এর অনেক বদ্ধভূমি আমাদের অজানা রয়েছে। সেগুলো আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। ডকুমেন্টেসন করতে হবে। সেজন্য প্রত্যেকেই যার যারা অবস্থান থেকে অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে জেনোসাইড স্টাডিজকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাহলেই তরুণদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে৷ তারা এ বিষয়ে গবেষণা করতে এগিয়ে আসবে।
এ এস এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, এই প্রজেক্টের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের গণহত্যার উপর একটি ওয়েব বেইসড ডকুমেন্টেশন তৈরী করবো। যাতে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে আমরা এটি ছড়িয়ে দিতে পারি। যেকোনো গবেষক এটা থেকে অ্যাট্রিবিউট সংগ্রহ করতে পারবে। গণহত্যা স্বীকৃতি পেতে আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের কি কি শূণ্যতা আছে, এই প্রজেক্টের মাধ্যমে আমরা তাও খুঁজে বের করবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে জেনোসাইড স্টাডিজকে আরো যুগোপযোগী করার উদ্যোগও নেওয়া হবে বলে জানান উপাচার্য।
ইউসিএল-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. বায়েস আহমেদ বলেন, গণহত্যা নিয়ে কাজ করার সময় আমার বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে কিছু করার বিষয়টি মাথায় আসে। সে লক্ষ্যে আমরা ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে(ইউসিএল) প্রপোজাল সাবমিট করি। তারা এটি গ্রহণ করে। হাউজ অব লর্ডসে ব্রিটিশ প্রতিনিধি, বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন নিয়ে আমাদের কোলাবোরেশান হয়েছে।
শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, ৭১ এর গণহত্যার এদেশীয় যারা মাস্টারমাইন্ড তাদের বিচার হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানি মাস্টারমাইন্ডদের বিচার হয়নি। আমরা গণহত্যার আন্তর্জাতিক তথা জাতিসংঘের স্বীকৃতিও পাইনি। রুয়ান্ডার গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে অনেকদিন সময় লেগেছে। আমাদের জন্য এটা সহজ হবে না। আমাদের উদ্দেশ্য দুটি৷ এক, গণহত্যার স্বীকৃতি। দুই, ক্ষতিপূরণ।
কর্মশালায় একটি প্যানেল ডিসকাশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশ নেন ইতিহাসবিদ ও লেখক মুনতাসীর মামুন, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, মানবাধিকার ও উন্নয়ন কর্মী আসিফ মুনীরসহ প্রমুখ।