alt

জাতীয়

ভারতের সঙ্গে উন্নয়ন ও বন্ধুত্বের পথে নবযাত্রা শুরু হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

কুটনৈতিক বার্তা পরিবেশক : শনিবার, ২২ জুন ২০২৪

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ় এবং উন্নয়ন ও বন্ধুত্বের পথে দুই দেশের নতুন সরকারের নবযাত্রা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শনিবার (২২ জুন) নয়া দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকসহ বিভিন্ন চুক্তি সইয়ের পর যৌথ বিবৃতি দেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।

এসময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতে নতুন সরকার, আমাদেরও বলতে গেলে নতুন সরকার। আমরা পাঁচ মাস আগে যাত্রা শুরু করেছি। উন্নয়ন এবং বন্ধুত্বের পথে আমাদের নবযাত্রা শুরু হয়েছে– এটাই আমি বলতে চাই।’

বিগত বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগের কারণে শুধু সম্পর্ক দৃঢ় হয়নি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও অবদান রেখেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ভারত একটি বিশাল দেশ, বিরাট অর্থনীতির দেশ এবং তাদের সহায়তা পাওয়াটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য আমরা অনেক উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছি।’

‘আমি মনে করি, সারা বিশ্বে বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধ হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এই উপমহাদেশে আমরা একটি পরিপূর্ণ চমৎকার সম্পর্ক গড়ে তৈরি করতে পেরেছি এবং আমাদের দুই দেশের মধ্যে হৃদ্যতা ও বন্ধুত্ব এভাবেই গড়ে উঠেছে’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুই প্রতিবেশী দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সম্পর্কের সম্পূর্ণ বিষয় যার মধ্যে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, নিরাপত্তা ও বাণিজ্যের বিষয়টি উল্লেখযোগ্যভাবে আলোচনায় এসেছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উভয় দেশের স্বার্থে একটি টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ডিজিটাল এবং সবুজ অংশীদারত্বের জন্য যৌথ দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্মত হয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘উভয় দেশই একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে আমাদের পথ দেখানোর জন্য ‘রূপকল্প ঘোষণা’ অনুমোদন করেছে। আমরা টেকসই ভবিষ্যতের জন্য ‘ডিজিটাল অংশীদারত্ব’ এবং ‘সবুজ অংশীদারত্ব’ বিষয়ক দু’টি সমন্বিত রূপকল্পকে সামনে রেখে কাজ করতে দু’পক্ষই সম্মত হয়েছি।’

ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সৃষ্ট সম্পর্ককে বাংলাদেশ সবসময়ই বিশেষ গুরুত্ব দেয়।’ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্রমাগত বিকশিত এবং দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের দুপক্ষের মধ্যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আমরা অন্যান্য পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মধ্যে রাজনীতি ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও সংযোগ, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, জ্বালানি ও শক্তি এবং আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের দুদেশের এবং জনগণের কল্যাণের জন্য আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।’

যেহেতু নতুন সরকার গঠনের মাধ্যমে ঢাকা ও দিল্লি নতুনভাবে পথ-চলা শুরু করেছে, সে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সেই ধারাবাহিকতায় আমরা ‘রূপকল্প-২০৪১’ এর মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ অনুসরণ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, তারা এই দিন নতুন কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই প্রত্যক্ষ করেছেন। কিছু নবায়ন করেছেন এবং ভবিষ্যৎ কাজের ক্ষেত্র হিসেবে কিছু যৌথ কার্যক্রমের ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, দু’দেশই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়সহ উচ্চপর্যায়ের মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠান আমাদের স্বাধীনতার এবং দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে তার শেষ দ্বিপাক্ষিক সফর করেছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র আমন্ত্রিত ‘অতিথি দেশ’ বাংলাদেশের নেতা হিসেবে নয়াদিল্লিতে ভারতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন।

এর আগে শেখ হাসিনা গত ৯ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং নবগঠিত মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আরও কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে নয়াদিল্লি সফর করেন। সেই সফরের কথা তুলে তিনি বলেন, আমি এই এক ‘জুন’ মাসেই অভূতপূর্ব দ্বিতীয়বারের মতো নয়াদিল্লি সফর করছি।

‘এসবই আমাদের এই দু’দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে একে অপরের সঙ্গে কাজ করার প্রমাণ বহন করে’, উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে দুদেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততার পথ এবং কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজ বিকালে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং উপ-রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এই আলোচনাগুলো আমাদের একে অপরকে সহযোগিতার উন্নততর পথ নিরূপণে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দেবে।’ ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনের পর এটিই কোনও দেশে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এসময় বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারত সরকার ও জনগণের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ভারতের সেসব বীরদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি যারা ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী তাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান এবং তাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

ছবি

সব হাসপাতালে রাসেল’স ভাইপারের অ্যান্টিভেনম আছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছবি

খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় বেসরকারি হাসপাতালে গেছেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান, এপিএ স্বাক্ষর ও মাসিক এডিপি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে আম ইলিশ মিষ্টি পাঠালেন

ছবি

আমাদের চাঁদেও যেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি

বছরে বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার ট্যাক্সি ও মোটরসাইকেল চালক নেবে দুবাই

ছবি

হজে গিয়ে ৫১ বাংলাদেশির মৃত্যু

ছবি

তারেককে ‘অচিরেই’ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী

পুলিশের ৬৯৫টি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা

ছবি

জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে আমি মারা যাব: শেখ হাসিনা

ছবি

বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করেই ভারতের সাথে সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

দায়িত্বহীনতার কারণে সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ হাতিয়ে নিয়েছে ভারত: সিপিডি

ছবি

শহরের নির্ধারিত আয়ের মানুষ খুব বেশি চাপে আছে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘লাভজনক’ প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

‘পদ্মা সেতু থেকে ২ বছরে আয় দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি’

ছবি

সাপে কাটা ভ্যাকসিনের পর্যাপ্ত সংরক্ষণ চেয়ে সরকারকে নোটিশ

ছবি

অষ্টম শ্রেণি চালুর জন্য প্রস্তুত ১৫৪ স্কুল

ছবি

দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার পথ নিয়ে আলোচনা করেছি : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

দিল্লি সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন আজ

ছবি

নিবন্ধিত সিমের প্রায় অর্ধেক নিস্ক্রিয়: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক

ছবি

সংসদ ভবনে স্থাপিত হলো ‘মুজিব ও স্বাধীনতা’, উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

পলকের নির্দেশে টাকা ফেরৎ পাচ্ছে পারুল বেগম

ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর খুবই ফলপ্রসূ হবে বলে চীনা মন্ত্রীর আশাবাদ

ছবি

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা নিয়ে আলোচনা

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন কাল

ছবি

অসংক্রামক ব্যাধি থেকে পরিত্রাণে সচেতনতা প্রয়োজন : স্পিকার

ছবি

স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা অসৎ উপায়ে ভূমি ক্রয়ের প্রচেষ্টা প্রতিহত করবে: ভূমিমন্ত্রী

ছবি

ঢাকায় চীনা মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও

ছবি

বাংলাদেশের যত অর্জন তা আওয়ামী লীগের হাত ধরেই : শেখ হাসিনা

কে হচ্ছেন পুলিশের নতুন আইজি?

ছবি

পুলিশে রদবদল, ১৪ জেলায় নতুন এসপি

ছবি

দুর্নীতির মাধ্যমে এভাবে সম্পদ অর্জন করা কখনো সমীচীন নয়

ছবি

সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান

ছবি

মিন্টুকে গ্রেপ্তার করে কোনো চাপে নেই ডিবি

ছবি

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ডেপুটি স্পিকারের শ্রদ্ধা

tab

জাতীয়

ভারতের সঙ্গে উন্নয়ন ও বন্ধুত্বের পথে নবযাত্রা শুরু হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

কুটনৈতিক বার্তা পরিবেশক

শনিবার, ২২ জুন ২০২৪

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ় এবং উন্নয়ন ও বন্ধুত্বের পথে দুই দেশের নতুন সরকারের নবযাত্রা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শনিবার (২২ জুন) নয়া দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকসহ বিভিন্ন চুক্তি সইয়ের পর যৌথ বিবৃতি দেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।

এসময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতে নতুন সরকার, আমাদেরও বলতে গেলে নতুন সরকার। আমরা পাঁচ মাস আগে যাত্রা শুরু করেছি। উন্নয়ন এবং বন্ধুত্বের পথে আমাদের নবযাত্রা শুরু হয়েছে– এটাই আমি বলতে চাই।’

বিগত বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগের কারণে শুধু সম্পর্ক দৃঢ় হয়নি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও অবদান রেখেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ভারত একটি বিশাল দেশ, বিরাট অর্থনীতির দেশ এবং তাদের সহায়তা পাওয়াটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য আমরা অনেক উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছি।’

‘আমি মনে করি, সারা বিশ্বে বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধ হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এই উপমহাদেশে আমরা একটি পরিপূর্ণ চমৎকার সম্পর্ক গড়ে তৈরি করতে পেরেছি এবং আমাদের দুই দেশের মধ্যে হৃদ্যতা ও বন্ধুত্ব এভাবেই গড়ে উঠেছে’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুই প্রতিবেশী দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সম্পর্কের সম্পূর্ণ বিষয় যার মধ্যে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, নিরাপত্তা ও বাণিজ্যের বিষয়টি উল্লেখযোগ্যভাবে আলোচনায় এসেছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উভয় দেশের স্বার্থে একটি টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ডিজিটাল এবং সবুজ অংশীদারত্বের জন্য যৌথ দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্মত হয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘উভয় দেশই একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে আমাদের পথ দেখানোর জন্য ‘রূপকল্প ঘোষণা’ অনুমোদন করেছে। আমরা টেকসই ভবিষ্যতের জন্য ‘ডিজিটাল অংশীদারত্ব’ এবং ‘সবুজ অংশীদারত্ব’ বিষয়ক দু’টি সমন্বিত রূপকল্পকে সামনে রেখে কাজ করতে দু’পক্ষই সম্মত হয়েছি।’

ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সৃষ্ট সম্পর্ককে বাংলাদেশ সবসময়ই বিশেষ গুরুত্ব দেয়।’ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্রমাগত বিকশিত এবং দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের দুপক্ষের মধ্যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আমরা অন্যান্য পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মধ্যে রাজনীতি ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও সংযোগ, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, জ্বালানি ও শক্তি এবং আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের দুদেশের এবং জনগণের কল্যাণের জন্য আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।’

যেহেতু নতুন সরকার গঠনের মাধ্যমে ঢাকা ও দিল্লি নতুনভাবে পথ-চলা শুরু করেছে, সে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সেই ধারাবাহিকতায় আমরা ‘রূপকল্প-২০৪১’ এর মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ অনুসরণ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, তারা এই দিন নতুন কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই প্রত্যক্ষ করেছেন। কিছু নবায়ন করেছেন এবং ভবিষ্যৎ কাজের ক্ষেত্র হিসেবে কিছু যৌথ কার্যক্রমের ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, দু’দেশই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়সহ উচ্চপর্যায়ের মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠান আমাদের স্বাধীনতার এবং দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে তার শেষ দ্বিপাক্ষিক সফর করেছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র আমন্ত্রিত ‘অতিথি দেশ’ বাংলাদেশের নেতা হিসেবে নয়াদিল্লিতে ভারতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন।

এর আগে শেখ হাসিনা গত ৯ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং নবগঠিত মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আরও কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে নয়াদিল্লি সফর করেন। সেই সফরের কথা তুলে তিনি বলেন, আমি এই এক ‘জুন’ মাসেই অভূতপূর্ব দ্বিতীয়বারের মতো নয়াদিল্লি সফর করছি।

‘এসবই আমাদের এই দু’দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে একে অপরের সঙ্গে কাজ করার প্রমাণ বহন করে’, উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে দুদেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততার পথ এবং কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজ বিকালে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং উপ-রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এই আলোচনাগুলো আমাদের একে অপরকে সহযোগিতার উন্নততর পথ নিরূপণে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দেবে।’ ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনের পর এটিই কোনও দেশে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এসময় বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারত সরকার ও জনগণের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ভারতের সেসব বীরদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি যারা ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী তাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান এবং তাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

back to top