জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদায়ন নিয়ে ‘গলদগর্ম’ অবস্থায় পরেছে প্রশাসন। পর পর দু’দিনে ৫৯ জেলায় ডিসি পদায়ন করে ‘বঞ্চিতদের বিক্ষোভের’ মুখে পড়ে প্রশাসন। ‘বিশৃঙ্খল’ পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও আট ডিসির নিয়োগ বাতিল এবং চারজনের কর্মস্থল বদলে দেয়া হয়েছে।
ডিসি পদে পদায়ন প্রত্যাশী কর্মকর্তাদের একটি অংশ বুধবারও (১১ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ভিড় করেন। আগের দিন তারা সচিবালয়ে ‘বিক্ষোভ’ করেছেন। বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তা সচিবালয়ে ভিড় করেন। দু’দিনে ডিসি হিসেবে পদায়ন পাওয়া সবার নিয়োগ বাতিল হচ্ছে বলে ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের দাবি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন গত ৯ সেপ্টেম্বর ২৫ জেলায় এবং ১০ সেপ্টেম্বর ৩৪ জেলায় নতুন ডিসি পদায়নের প্রজ্ঞাপন জারি করে। এই ৫৯ জনের নিয়োগ নিয়ে বিগত সরকারের আমলে ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের মধ্যে ‘তীব্র অসন্তোষ’ দেখা দেয়। ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা গত দু’দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ‘বিক্ষোভ’ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কক্ষে হট্টগোল করেন।
৮ জেলার ডিসি প্রত্যাহার ও চার জেলায় রদবদল
৫৯ জন ডিসির মধ্যে আটজনকে একদিনের মাথায় বুধবার প্রত্যাহার করে নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি চার জনের কর্মস্থল পরিবর্তন করা হয়েছে। আগের দিন সিলেটের ডিসির নিয়োগ বাতিল করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আট জেলায় গত মঙ্গলবার যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের উইথড্র করা হয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ৩৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এরমধ্যে আট জেলায় যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তারা আর ডিসি নেই। আগের দিন গত সোমবার ২৫ জনকে দেয়া হয়েছিল; এর মধ্যে সিলেটে একজনকে বাদ দিয়ে আরেকজনকে দেয়া হয়েছে।’
আট জেলা হলো- লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, শরীয়তপুর, দিনাজপুর ও রাজবাড়ী।
প্রত্যাহার হওয়া আট কর্মকর্তার মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপসচিব সুফিয়া আক্তার রুমীকে লক্ষ্মীপুর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মনির হোসেন হাওলাদারকে সিরাজগঞ্জ, আরপিএটিসির উপ-পরিচালক মনোয়ারা বেগমকে রাজবাড়ী, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবুর রহমানকে রাজশাহী, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব আবদুল আজিজকে শরীয়তপুর, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোবাশশেরুল ইসলামকে দিনাজপুরের ডিসি হিসেবে আদেশ জারি হয়েছিল।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি-২ এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক সাইদুজ্জামানকে জয়পুরহাট ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফারহানা ইসলামকে কুষ্টিয়ার ডিসি হিসেবে বদলির আদেশ বাতিল করা হয়েছে। এই দুজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ৯ সেপ্টেম্বর।
যে চার জেলায় ডিসি পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে, তার মধ্যে টাঙ্গাইলের ডিসিকে পঞ্চগড়, নাটোরে ডিসিকে লক্ষ্মীপুর, নীলফামারীর ডিসিকে টাঙ্গাইল এবং পঞ্চগড়ের ডিসিকে নীলফামারীতে বদলি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, ‘একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে ডিসিদের ফিটলিস্ট হয়। সেই কমিটি আজকে বসেছিল। পর্যালোচনা করে ইমিডিয়েট যেটা হয়েছে, ইতোমধ্যে আট জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।’
‘হট্টগোলের’ ঘটনা খতিয়ে দেখতে কমিটি
মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ঘটা ‘অনাকাঙ্খিত’ ঘটনার (ডিসি নিয়োগ নিয়ে হট্টগোল) কারণ খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এমএ আকমল হোসেন আজাদের নেতৃত্বে এক সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিসি নিয়োগে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করে মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব কেএম আলী আযম ও জিয়াউদ্দিনের কক্ষে হট্টগোল করেন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। বেলা ৩টায় ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা এ দুই যুগ্ম সচিবের কক্ষ অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে যুগ্ম সচিব আলী আযম পাশের রুমের টয়লেটে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেন। প্রায় ২ ঘণ্টা পর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে তাকে বের করে আনেন।
বঞ্চিতদের ‘ইজ্জতহানিও হয় নাই’
সিনিয়র সচিব এমএ আকমল হোসেন আজাদ বুধবার নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘যারা ডিসি হন নাই, তাদের তো পদাবনতি হয়নি, তাই তাদের ইজ্জতহানিও হয় নাই’।
কম করে হলেও এক হাজার ডেপুটি সেক্রেটারি (উপসচিব) থেকে মাত্র ৬৪ জন ডিসি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রেকর্ড আছে একজন ডিসিকে দ্বিতীয় দিনেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। যাওয়ার আগে যদি প্রি-কন্সেন্ট বলেন, এদের সবাই স্বৈরাচারী সরকারের বেনিফিশিয়ার, তারা উপকারভোগী ছিলেন।’
কয়েকজন সচিবের নেতৃত্বে ‘হাই পাওয়ার কমিটি’ গঠন করা হয়েছে জানিয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘তারা যাচাই বাছাই করে দেখেছে, টপ স্কোরার বেস্টদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এখন বিতর্ক হয়েছে, ‘এরা খারাপ, এরা ভালো’।
ডিসি হতে ইচ্ছুকদের হট্টগোল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা শোভন হয়নি। কারা করেছে, যারা ডেপুটি সেক্রেটারি, সিনিয়র অফিসার, ডিসি হতে ইচ্ছুক, তালিকায় তাদের নাম ছিল, কিন্তু তারা হয়নি। তালিকায় নাম থাকলেই যদি তারা মনে করে যে তারা ডিসি হয়েছে, এটা ঠিক নয়।’
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘তারা কেন হয় নাই আমরা কিন্তু সেটা প্রকাশ করিনি। যদি প্রকাশ করার কোনো আইনগত সুযোগ থাকে, যদিও সেই সুযোগ নাই, তাহলে তারা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হবেন। অফিসিয়াল সিক্রেসি অনুযায়ী আমরা এটা প্রকাশ করতে পারি না। তিনি সেই পদের জন্য যোগ্য হতে পারেন নাই, অযোগ্য শব্দটা আমরা ব্যবহার করি না।’
একটা জেলার ডিসি মানে একটি ‘মিনি বাংলাদেশের তিনি নেতা’ মন্তব্য করে আকমল হোসেন আজাদ বলেন, ‘বর্তমান সময়ে ১২০টা কমিটির সভাপতি তিনি। ডিসির মাধ্যমেই সবকিছু চ্যানেলাইজ হয়ে যায়। সুতরাং ডিসির অভিজ্ঞতা বয়স স্বাস্থ্য অনেক কিছু বিবেচনা করতে হয়। আমি কিন্তু তাদের বিভাগীয় মামলা করার অথরিটি না। সাক্ষ্য প্রমাণে আমি কি পেলাম সেটা বলতে পারি। কারা দোষ করেছে কারা করেনি।’
ডিসি নিয়োগের সব প্রজ্ঞাপন বাতিল দাবি ‘বঞ্চিতদের’
দু’দিনে ডিসি নিয়োগের যে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে সেগুলো বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে বাতিল চেয়েছেন ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা। তারা বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান করছিলেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ডিসি হিসেবে নিয়োগ প্রত্যাশী উপসচিবদের সমন্বয়ক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নূরুল করিম ভূইয়া।
তিনি বুধবার সচিবালয়ে মোখলেস উর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন। নূরুল করিম ভূইয়া বলেন, সিনিয়র সচিব প্রজ্ঞাপন দুটি বাতিল করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধান দাবি ছিল প্রশাসনের সর্বস্তরে বিগত দিনে যারা সুবিধাভোগী, যারা ছাত্র-জনতা হত্যার সঙ্গে জড়িত, খুন, লুটপাট ও রাষ্ট্র সংস্কারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এবং এখন পর্যন্ত ছাত্র-জনতার এই বিপ্লবের মূল আকাঙ্খা ও চেতনার বিরুদ্ধে কাজ করছেন, সেসব কর্তাকে আজকের মধ্যে বিদায় দিতে হবে।’
যে ৫৯ জন ডিসিকে পদায়ন করা হলো তাদের অনেকের বিরুদ্ধে নানা ‘অভিযোগ ও আপত্তি’ রয়েছে দাবি করে নূরুল করিম ভূইয়া বলেন, ‘যেহেতু বিগত সরকারের সময় এসব কর্মকর্তা বিভিন্নভাবে সুবিধা নিয়েছেন এবং আশীর্বাদপুষ্ট হয়েছেন। তারা যে খুন, হত্যা ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত সে তথ্য আপনারা মিডিয়ার মাধ্যমেই দিয়েছেন। যেহেতু এটা একটা জটিল প্রক্রিয়া, সেহেতু যত দ্রুত সম্ভব প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে এ দুটি প্রজ্ঞাপন বাতিল করবেন বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আজ যেসব কর্মকর্তা সেখানে গিয়েছিলেন তাদের সবাই মেধাবী, যোগ্য ও সৎ। যেহেতু কোটাবিরোধী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল মেধাবীরা নিয়োগ পাক, সেহেতু আমরাও চাই মেধাবী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক।’
এর আগে সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান ঘোষণা দেন, আট জেলার জেলা প্রশাসক বাদে বাকিরা বহাল থাকবেন, কিন্তু আপনারা সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর কি সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন-এমন প্রশ্নে নূরুল করিম ভূইয়া বলেন, ‘নিশ্চয়ই আপনারা নতুন কোনো সিদ্ধান্ত পাবেন। আমাদের দাবি ছিল আজ বিকেল ৫টার মধ্যে তারা যেন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন। তিনি আমাদের বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব আমি এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবো, আপনাদের ইমোশনের কথা তাকে জানাবো।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, বুধবার বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ডিসিদের একটি ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সেটি অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হয়েছে। এজন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ডিসিদের পদায়ন হওয়া কর্মস্থলের উদ্দেশে যাত্রা করতে বারণ করা হয়েছে।
যাদের নিয়ে বিতর্ক
বঞ্চিত কয়েকজন উপসচিব অভিযোগ করেছেন, ডিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বেশির ভাগ কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। সাবেক মন্ত্রীদের সঙ্গেও তাদের ঘনিষ্ঠতা ছিল। কয়েকজনের শেয়ারবাজারে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে সহকর্মীকে হেনস্তা ও স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। কয়েকজনের মাঠ প্রশাসনে কাজ করারও অভিজ্ঞতা নেই।
জানা গেছে, রাজশাহীর ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবুর রহমান। এই কর্মকর্তা নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ হাসিনার ম্যান’ হিসেবে দাবি করে ফেসবুকে ‘পোস্ট’ দিয়েছিলেন। এই কর্মকর্তা জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার আত্মীয়।
দিনাজপুরের ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম। তিনি সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমের একান্ত সচিব (পিএস) ছিলেন।
পঞ্চগড়ের ডিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান টানা ৬ বছর এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের পিএস ছিলেন। শরীয়তপুরের ডিসি আবদুল আজিজ সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলমের পিএস ছিলেন।
নেত্রকোণার ডিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব বনানী বিশ্বাসের স্বামী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সঙ্গে জড়িত। ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালে বনানী বিশ^াসের বিরুদ্ধে ‘অনিয়মের অভিযোগ’ ওঠে।
নীলফামারীর ডিসি হওয়া শরিফা হক এবং বাগেরহাটের ডিসি হওয়া আহমেদ কামরুল হাসানের মাঠ প্রশাসনে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকার অভিযোগ তুলেছেন ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা।
সিরাজগঞ্জের ডিসি হিসেবে পদায়ন পেয়েছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মনির হোসেন হাওলাদার। পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) থাকাকালে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকের সঙ্গে শিষ্টাচার-বহির্ভূত আচরণের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদায়ন নিয়ে ‘গলদগর্ম’ অবস্থায় পরেছে প্রশাসন। পর পর দু’দিনে ৫৯ জেলায় ডিসি পদায়ন করে ‘বঞ্চিতদের বিক্ষোভের’ মুখে পড়ে প্রশাসন। ‘বিশৃঙ্খল’ পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও আট ডিসির নিয়োগ বাতিল এবং চারজনের কর্মস্থল বদলে দেয়া হয়েছে।
ডিসি পদে পদায়ন প্রত্যাশী কর্মকর্তাদের একটি অংশ বুধবারও (১১ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ভিড় করেন। আগের দিন তারা সচিবালয়ে ‘বিক্ষোভ’ করেছেন। বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তা সচিবালয়ে ভিড় করেন। দু’দিনে ডিসি হিসেবে পদায়ন পাওয়া সবার নিয়োগ বাতিল হচ্ছে বলে ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের দাবি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন গত ৯ সেপ্টেম্বর ২৫ জেলায় এবং ১০ সেপ্টেম্বর ৩৪ জেলায় নতুন ডিসি পদায়নের প্রজ্ঞাপন জারি করে। এই ৫৯ জনের নিয়োগ নিয়ে বিগত সরকারের আমলে ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের মধ্যে ‘তীব্র অসন্তোষ’ দেখা দেয়। ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা গত দু’দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ‘বিক্ষোভ’ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কক্ষে হট্টগোল করেন।
৮ জেলার ডিসি প্রত্যাহার ও চার জেলায় রদবদল
৫৯ জন ডিসির মধ্যে আটজনকে একদিনের মাথায় বুধবার প্রত্যাহার করে নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি চার জনের কর্মস্থল পরিবর্তন করা হয়েছে। আগের দিন সিলেটের ডিসির নিয়োগ বাতিল করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আট জেলায় গত মঙ্গলবার যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের উইথড্র করা হয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ৩৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এরমধ্যে আট জেলায় যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তারা আর ডিসি নেই। আগের দিন গত সোমবার ২৫ জনকে দেয়া হয়েছিল; এর মধ্যে সিলেটে একজনকে বাদ দিয়ে আরেকজনকে দেয়া হয়েছে।’
আট জেলা হলো- লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, শরীয়তপুর, দিনাজপুর ও রাজবাড়ী।
প্রত্যাহার হওয়া আট কর্মকর্তার মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপসচিব সুফিয়া আক্তার রুমীকে লক্ষ্মীপুর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মনির হোসেন হাওলাদারকে সিরাজগঞ্জ, আরপিএটিসির উপ-পরিচালক মনোয়ারা বেগমকে রাজবাড়ী, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবুর রহমানকে রাজশাহী, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব আবদুল আজিজকে শরীয়তপুর, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোবাশশেরুল ইসলামকে দিনাজপুরের ডিসি হিসেবে আদেশ জারি হয়েছিল।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি-২ এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক সাইদুজ্জামানকে জয়পুরহাট ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফারহানা ইসলামকে কুষ্টিয়ার ডিসি হিসেবে বদলির আদেশ বাতিল করা হয়েছে। এই দুজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ৯ সেপ্টেম্বর।
যে চার জেলায় ডিসি পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে, তার মধ্যে টাঙ্গাইলের ডিসিকে পঞ্চগড়, নাটোরে ডিসিকে লক্ষ্মীপুর, নীলফামারীর ডিসিকে টাঙ্গাইল এবং পঞ্চগড়ের ডিসিকে নীলফামারীতে বদলি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, ‘একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে ডিসিদের ফিটলিস্ট হয়। সেই কমিটি আজকে বসেছিল। পর্যালোচনা করে ইমিডিয়েট যেটা হয়েছে, ইতোমধ্যে আট জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।’
‘হট্টগোলের’ ঘটনা খতিয়ে দেখতে কমিটি
মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ঘটা ‘অনাকাঙ্খিত’ ঘটনার (ডিসি নিয়োগ নিয়ে হট্টগোল) কারণ খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এমএ আকমল হোসেন আজাদের নেতৃত্বে এক সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিসি নিয়োগে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করে মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব কেএম আলী আযম ও জিয়াউদ্দিনের কক্ষে হট্টগোল করেন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। বেলা ৩টায় ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা এ দুই যুগ্ম সচিবের কক্ষ অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে যুগ্ম সচিব আলী আযম পাশের রুমের টয়লেটে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেন। প্রায় ২ ঘণ্টা পর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে তাকে বের করে আনেন।
বঞ্চিতদের ‘ইজ্জতহানিও হয় নাই’
সিনিয়র সচিব এমএ আকমল হোসেন আজাদ বুধবার নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘যারা ডিসি হন নাই, তাদের তো পদাবনতি হয়নি, তাই তাদের ইজ্জতহানিও হয় নাই’।
কম করে হলেও এক হাজার ডেপুটি সেক্রেটারি (উপসচিব) থেকে মাত্র ৬৪ জন ডিসি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রেকর্ড আছে একজন ডিসিকে দ্বিতীয় দিনেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। যাওয়ার আগে যদি প্রি-কন্সেন্ট বলেন, এদের সবাই স্বৈরাচারী সরকারের বেনিফিশিয়ার, তারা উপকারভোগী ছিলেন।’
কয়েকজন সচিবের নেতৃত্বে ‘হাই পাওয়ার কমিটি’ গঠন করা হয়েছে জানিয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘তারা যাচাই বাছাই করে দেখেছে, টপ স্কোরার বেস্টদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এখন বিতর্ক হয়েছে, ‘এরা খারাপ, এরা ভালো’।
ডিসি হতে ইচ্ছুকদের হট্টগোল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা শোভন হয়নি। কারা করেছে, যারা ডেপুটি সেক্রেটারি, সিনিয়র অফিসার, ডিসি হতে ইচ্ছুক, তালিকায় তাদের নাম ছিল, কিন্তু তারা হয়নি। তালিকায় নাম থাকলেই যদি তারা মনে করে যে তারা ডিসি হয়েছে, এটা ঠিক নয়।’
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘তারা কেন হয় নাই আমরা কিন্তু সেটা প্রকাশ করিনি। যদি প্রকাশ করার কোনো আইনগত সুযোগ থাকে, যদিও সেই সুযোগ নাই, তাহলে তারা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হবেন। অফিসিয়াল সিক্রেসি অনুযায়ী আমরা এটা প্রকাশ করতে পারি না। তিনি সেই পদের জন্য যোগ্য হতে পারেন নাই, অযোগ্য শব্দটা আমরা ব্যবহার করি না।’
একটা জেলার ডিসি মানে একটি ‘মিনি বাংলাদেশের তিনি নেতা’ মন্তব্য করে আকমল হোসেন আজাদ বলেন, ‘বর্তমান সময়ে ১২০টা কমিটির সভাপতি তিনি। ডিসির মাধ্যমেই সবকিছু চ্যানেলাইজ হয়ে যায়। সুতরাং ডিসির অভিজ্ঞতা বয়স স্বাস্থ্য অনেক কিছু বিবেচনা করতে হয়। আমি কিন্তু তাদের বিভাগীয় মামলা করার অথরিটি না। সাক্ষ্য প্রমাণে আমি কি পেলাম সেটা বলতে পারি। কারা দোষ করেছে কারা করেনি।’
ডিসি নিয়োগের সব প্রজ্ঞাপন বাতিল দাবি ‘বঞ্চিতদের’
দু’দিনে ডিসি নিয়োগের যে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে সেগুলো বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে বাতিল চেয়েছেন ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা। তারা বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান করছিলেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ডিসি হিসেবে নিয়োগ প্রত্যাশী উপসচিবদের সমন্বয়ক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নূরুল করিম ভূইয়া।
তিনি বুধবার সচিবালয়ে মোখলেস উর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন। নূরুল করিম ভূইয়া বলেন, সিনিয়র সচিব প্রজ্ঞাপন দুটি বাতিল করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধান দাবি ছিল প্রশাসনের সর্বস্তরে বিগত দিনে যারা সুবিধাভোগী, যারা ছাত্র-জনতা হত্যার সঙ্গে জড়িত, খুন, লুটপাট ও রাষ্ট্র সংস্কারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এবং এখন পর্যন্ত ছাত্র-জনতার এই বিপ্লবের মূল আকাঙ্খা ও চেতনার বিরুদ্ধে কাজ করছেন, সেসব কর্তাকে আজকের মধ্যে বিদায় দিতে হবে।’
যে ৫৯ জন ডিসিকে পদায়ন করা হলো তাদের অনেকের বিরুদ্ধে নানা ‘অভিযোগ ও আপত্তি’ রয়েছে দাবি করে নূরুল করিম ভূইয়া বলেন, ‘যেহেতু বিগত সরকারের সময় এসব কর্মকর্তা বিভিন্নভাবে সুবিধা নিয়েছেন এবং আশীর্বাদপুষ্ট হয়েছেন। তারা যে খুন, হত্যা ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত সে তথ্য আপনারা মিডিয়ার মাধ্যমেই দিয়েছেন। যেহেতু এটা একটা জটিল প্রক্রিয়া, সেহেতু যত দ্রুত সম্ভব প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে এ দুটি প্রজ্ঞাপন বাতিল করবেন বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আজ যেসব কর্মকর্তা সেখানে গিয়েছিলেন তাদের সবাই মেধাবী, যোগ্য ও সৎ। যেহেতু কোটাবিরোধী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল মেধাবীরা নিয়োগ পাক, সেহেতু আমরাও চাই মেধাবী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক।’
এর আগে সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান ঘোষণা দেন, আট জেলার জেলা প্রশাসক বাদে বাকিরা বহাল থাকবেন, কিন্তু আপনারা সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর কি সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন-এমন প্রশ্নে নূরুল করিম ভূইয়া বলেন, ‘নিশ্চয়ই আপনারা নতুন কোনো সিদ্ধান্ত পাবেন। আমাদের দাবি ছিল আজ বিকেল ৫টার মধ্যে তারা যেন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন। তিনি আমাদের বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব আমি এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবো, আপনাদের ইমোশনের কথা তাকে জানাবো।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, বুধবার বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ডিসিদের একটি ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সেটি অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হয়েছে। এজন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ডিসিদের পদায়ন হওয়া কর্মস্থলের উদ্দেশে যাত্রা করতে বারণ করা হয়েছে।
যাদের নিয়ে বিতর্ক
বঞ্চিত কয়েকজন উপসচিব অভিযোগ করেছেন, ডিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বেশির ভাগ কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। সাবেক মন্ত্রীদের সঙ্গেও তাদের ঘনিষ্ঠতা ছিল। কয়েকজনের শেয়ারবাজারে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে সহকর্মীকে হেনস্তা ও স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। কয়েকজনের মাঠ প্রশাসনে কাজ করারও অভিজ্ঞতা নেই।
জানা গেছে, রাজশাহীর ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবুর রহমান। এই কর্মকর্তা নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ হাসিনার ম্যান’ হিসেবে দাবি করে ফেসবুকে ‘পোস্ট’ দিয়েছিলেন। এই কর্মকর্তা জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার আত্মীয়।
দিনাজপুরের ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম। তিনি সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমের একান্ত সচিব (পিএস) ছিলেন।
পঞ্চগড়ের ডিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান টানা ৬ বছর এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের পিএস ছিলেন। শরীয়তপুরের ডিসি আবদুল আজিজ সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলমের পিএস ছিলেন।
নেত্রকোণার ডিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব বনানী বিশ্বাসের স্বামী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সঙ্গে জড়িত। ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালে বনানী বিশ^াসের বিরুদ্ধে ‘অনিয়মের অভিযোগ’ ওঠে।
নীলফামারীর ডিসি হওয়া শরিফা হক এবং বাগেরহাটের ডিসি হওয়া আহমেদ কামরুল হাসানের মাঠ প্রশাসনে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকার অভিযোগ তুলেছেন ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা।
সিরাজগঞ্জের ডিসি হিসেবে পদায়ন পেয়েছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মনির হোসেন হাওলাদার। পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) থাকাকালে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকের সঙ্গে শিষ্টাচার-বহির্ভূত আচরণের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।