alt

জাতীয়

‘বৈষম্যহীন’ ফলের দাবি : চার শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও, বিক্ষোভ, ‘হামলায়’ আহত কয়েকজন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

এইচএসসি ফল বাতিল করে ‘বৈষম্যহীন’ ফল প্রকাশের দাবিতে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে বিক্ষোভের সময় হামলার শিকার এক নারী-সংবাদ

এইচএসসির ফলাফলে ‘বৈষম্যের’ অভিযোগ তুলে অন্তত চারটি শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা সব বিষয়ে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ করে এইচএসসির ফল মূল্যায়নের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে। অর্থাৎ তারা বলছেন যে সব বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে সেগুলোর খাতার মূল্যায়ন নয়, সাবজেক্ট ম্যাপিং করতে হবে। ‘এইচএসসি ব্যাচ ২৪’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন হয়।

এদিন কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও যশোর শিক্ষা বোর্ডেও একই কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ‘ইচ্ছে করে ফেল’ করানো, খাতা যথাযথ মূল্যায়ন না করা এবং ইংরেজি বিষয়ে একচেটিয়া ফেল করানোরও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে বিক্ষোভ
এইচএসসি পরীক্ষার সব বিষয়ে অর্থাৎ বিষয়ে লিখিত পরীক্ষা হয়েছে সেসব বিষয়েও ‘ম্যাপিং’ করে ফল প্রকাশের দাবিতে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করেন একদল শিক্ষার্থী। সেখানে তাদের ওপর হামলা হয় বলে দাবি করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ছয়জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে বিক্ষোভকারীদের দাবি।

রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে ‘এইচএসসি ব্যাচ ২০২৪’ এর ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী রাজধানীর বকশিবাজারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ঢুকে বিক্ষোভ শুরু করেন। কিছুক্ষণ বিক্ষোভের পর তারা ভবনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের ওপর ‘হামলার’ ঘটনা ঘটে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড বিক্ষোভ ও হামলায় অন্তত ছয়জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।

আহতরা হলেন- সরকারি শাহবাজপুর কলেজের শিক্ষার্থী মো. সাগর, নারায়ণগঞ্জ কলেজের শাহরিয়ার, কিশোরগঞ্জের ওয়ালি নেওয়াজ খান কলেজের ওয়াহিদ, বাঘাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফাহমিদা হোসেন ও গোপালগঞ্জের শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের আশুতোষ।

শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের ‘শান্তিপূর্ণ’ কর্মসূচিতে কেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হামলা করলো, রক্তাক্ত করলো- তারা এর বিচার চান। অন্য এক বিক্ষোভকারী জানান, তারা বোর্ডের কর্মচারীদের সঙ্গে কোনো মারামারি বা কোনোকিছুই করেননি। তারা ‘শান্তিপূর্ণ’ অবস্থানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে উত্তীর্ণ আলিফ আহমেদ বলেন, সিলেট বোর্ডের শিক্ষার্থীরা একটি পরীক্ষা দিয়েছে, আর তারা সাতটি পরীক্ষা দিয়েও আশানুরূপ রেজাল্ট পাননি। তারা পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়নের জন্য আসলে গেটে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে গেট ভেঙ্গে শিক্ষার্থীরা বোর্ড চেয়ারম্যানের রুমে গেলে সেখানে কয়েকজন তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে কয়েকজন রক্তাক্ত হয়েছেন।

আলিফ আহমেদ অভিযোগ করেন, ‘আমাদের পরীক্ষার খাতা ঠিকমতো দেখা হয়নি। তারা অ্যাপসের মাধ্যমে আন্দাজ করে আমাদের রেজাল্ট দিয়ে দিয়েছে। আমাদের পরীক্ষার খাতা পুনরায় মূল্যায়ন করা না হলে এই আন্দোলন চলবে।’

এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেছেন, আন্দোলনকারীদের কারণে সন্ধ্যা ৬টাতেও বোর্ড কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। তারাই বোর্ডে ভাঙচূর চালিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির যুক্তিকতার বিষয়ে সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে, তারা অকৃতকার্য হয়েছে। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, যেসব সাবজেক্টে পরীক্ষা হয়েছে- তার ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করে ফলাফল দিয়েছি। এখন তারা সেটি মানবে না। তারা চাচ্ছে সবগুলো সাবজেক্ট ম্যাপিং করে নতুন করে ফলাফল দিতে। এটা কীভাবে সম্ভব?’

আন্ত:শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, তারা বুঝতেছে না, সরছেও না। এখানে সেনাবাহিনী আছে, পুলিশ আছে। তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন।’

শিক্ষার্থীরা জানান, বাতিল ৬টি পরীক্ষা যে পদ্ধতিতে ‘ম্যাপিং’ করে ফল তৈরি করা হয়েছে তাতে ‘চরম বৈষম্য’ তৈরি হয়েছে। সিলেট ও মাদ্রাসা বোর্ডের মাত্র ৩টি পরীক্ষা হয়েছে; সেজন্য তাদের ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ করায় ফলাফল ভালো হয়েছে। অথচ অন্যান্য বোর্ডে ভালো পরীক্ষা দিয়েও অনেকে অকৃতকার্য হয়েছে। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

চট্টগ্রাম বোর্ড ঘেরাওয়ের সময় শাফিন মাহমুদ নামের এক শিক্ষার্থী জানান, এবার যে ‘ফলাফলটা’ হয়েছে এটা ‘চরম বৈষম্যের’। এবার যত বেশি পরীক্ষা হয়েছে সে বোর্ডের শিক্ষার্থীরা তত বেশি পরীক্ষা দিয়েছে, তারা তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কোনো বোর্ডে ৬টি বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে; কোনো বোর্ড ৩টি পরীক্ষা নিতে পেরেছে। অথচ রেজাল্টের ক্ষেত্রে ‘কম পরীক্ষা দেয়া বোর্ডের রেজাল্ট ভালো’ হয়েছে। এই বৈষম্য শিক্ষার্থীরা মানেন না বলে জানান শাফিন মাহমুদ।

চকবাজার থানার ওসি রেজাউল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বৈষম্যমূলক রেজাল্ট হয়েছে; সেজন্য নতুন ফলাফলের দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বোর্ডে আসে। কিন্তু তারা ধৈর্য না ধরে পুলিশের বাধা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। তখন বোর্ডে কর্মচারীরা বাধা দেন। ছোট সিঁড়ি হওয়ায় কেউ কেউ পড়ে আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, তাদের এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের মূল্যায়ন করে এইচএসসি রেজাল্ট দেয়ার কথা। কিন্তু একজন শিক্ষার্থীর সব ‘সাবজেক্টে এ+’ পেয়েছে কিন্তু একটি সাবজেক্টে সে ‘ডি গ্রেট’ পেয়েছে, এটা কেন করলো।

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের এসএসসি রেজাল্ট দেখে মূল্যায়ন করার কথা ছিল, সেটা বিবেচনা করে এইচএসসি রেজাল্ট প্রকাশ করা উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের রেজাল্ট অনেক খারাপ হয়েছে।’

যশোর ও চট্রগ্রাম বোর্ডে মিছিল
বৈষম্যহীন রেজাল্টের দাবিতে যশোরে গণমিছিল ও শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন এইচএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা এই গণমিছিল ও শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেন।

তারা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকলে একপর্যায়ে বোর্ড সচিব আবদুর রহিম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে চান। পরে গেট খুলে দিলে তারা বোর্ড চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার খাতা যথাযথ মূল্যায়ন না করে ফল দেয়া হয়েছে। অবিলম্বে খাতা পুনর্মূল্যায়ন করে পরীক্ষার ফলাফলের দাবি জানান তারা। পরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

তাবাসসুম তাসফিয়া নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সিলেট বোর্ডে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা না দেয়া সত্ত্বেও তাদের প্রতিটি সাবজেক্টে এ-প্লাস এসেছে। তাহলে যশোর বোর্ডে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কেন বৈষম্য করা হলো?

ওই শিক্ষার্থী বলেন, তারা জানতে পেরেছেন অনেক থানায় পরীক্ষার খাতা পুড়ে গেছে, তাহলে কীসের ভিত্তিতে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করা হলো? পরীক্ষার সঠিক মূল্যায়ন করা হলে যশোর বোর্ডে বিভিন্ন বিষয়ে ফেল আসতো কিন্তু ইংরেজি বিষয়ে একচেটিয়া ফেল এসেছে।

বিক্ষোভ চলার প্রায় দেড় ঘণ্টার মাথায় যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মর্জিনা আক্তার ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

পরে মর্জিনা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের দাবিসহ স্মারকলিপিটি তিনি আন্ত:বোর্ডের কাছে পাঠাবেন। সেখান থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেন একদল শিক্ষার্থী। তারা বোর্ডের সামনে অবস্থান নিয়ে এইচএসসির ফল বাতিলের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বোর্ড চেয়ারম্যান ও সচিবের কক্ষের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় দাবি মেনে নেয়া না হলে সড়ক অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। তারা এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী এইচএসসির ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বোর্ডের এক শিক্ষার্থী বলেন, তাদের ইচ্ছে করেই ফেল করানো হয়েছে। তারা কোনোভাবে এই ফলাফল মানেন না। তাদের সাবজেক্ট কীভাবে ম্যাপিং হয়েছে, সেই বিষয়ে তারা জানতে চান। কেননা, পরীক্ষা দেয়ার পরও কীভাবে অনুপস্থিত আসে?’

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান রেজাউল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি জানিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী যা করা প্রয়োজন তারা তাই করবেন।

এদিন একদল শিক্ষার্থী কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করে এইচএসসির ফল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। তারাও সব বিষয়ে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের’ মাধ্যমে পূণরায় ফল প্রকাশের দাবি করেছেন।

গত ১৫ অক্টোবর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এর আগে গত ৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। সিলেট বিভাগে বন্যার কারণে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ৯ জুলাই। সিলেট বোর্ড মাত্র তিনটি পরীক্ষা নিতে পেরেছে। বাকি বোর্ডগুলো ছয়টি পরীক্ষা নিয়েছে।

এর আগে জুলাইয়ের শুরুর দিকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থবিরতা দেখা দেয়। এতে অন্তত পাঁচবার পরীক্ষা পেছানো হয়।

এক পর্যায়ে বাকি থাকা ছয়টি পরীক্ষা বাতিল করা হয়। সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেয়ার কথা ছিল। এর আগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা।

পরবর্তীতে আন্ত:শিক্ষা বোর্ড পুনরায় এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ নেয়। এরপর ২০ আগস্ট পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে প্রবেশ করে বিক্ষোভ করেন একদল শিক্ষার্থী। তারা সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। এরপর পরীক্ষা বাতিলের সিন্ধান্ত নেয় শিক্ষা প্রশাসন। আর সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে ফল প্রকাশের সিন্ধান্ত হয়।

এই প্রক্রিয়ায় একজন পরীক্ষার্থী এসএসসিতে একটি বিষয়ে যত নম্বর পেয়েছিল, এইচএসসিতে সেই বিষয় থাকলে তাতে এসএসসিতে প্রাপ্ত পুরো নম্বর বিবেচনায় নেয়া হয়। তবে এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় বিষয়ে ভিন্নতা থাকলে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে’ও এসএসসির বিষয় অনুযায়ী নম্বর দেয়া হয়।

ছবি

আগামী প্রজন্ম নিরাপদ সড়ক উপহার দিতে ব্যর্থ হবে না : সড়ক উপদেষ্টা

ছবি

পুলিশের ২৫২ এসআইকে অব্যাহতিতে রাজনৈতিক কারণ নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ১৫৭ বাংলাদেশি

ছবি

৫ দিনের রিমান্ডে ব্যারিস্টার সুমন

ছবি

দুর্নীতি-অর্থপাচারের দায়ে পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্টকে ২০ বছরের জেল

ছবি

চট্টগ্রামে একের পর এক ঘাট ইজারা : সাম্পান মাঝিদের কর্ণফুলীতে প্রতিবাদ

হত্যাচেষ্টা মামলায় জেড আই খান পান্নার নাম প্রত্যাহারের আবেদন বাদীর

ছবি

সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের

ছবি

ব্যারিস্টার সুমন গ্রেপ্তার

ছবি

"শেখ হাসিনার পুনর্বাসন হবে না: ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ"

ছবি

জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে কিশোরীদের জন্য এইচপিভি টিকার বিশেষ কর্মসূচি শুরু

ছবি

আগামী বছরের ছুটির তালিকা প্রকাশ: ঈদ ও পূজায় বাড়তি ছুটি

ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নিয়োগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াতপন্থি চিকিৎসকদের মধ্যে সংঘর্ষ

ছবি

মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবছে সরকার : সাখাওয়াত হোসেন

ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ নিয়ে নতুন বিতর্ক না করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

ছবি

পান্নার নাম বাদ দিতে বাদীর আবেদন

ছবি

হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মিথ্যাচার করেছেন : আসিফ নজরুল

ছবি

ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থায় যুক্ত করা হলো শিক্ষার্থীদের

ছবি

রাজু ভাস্কর্যের নারী প্রতিকৃতিতে হিজাব, তদন্ত কমিটি গঠন

ছবি

শাহপরীর দ্বীপে নবনির্মিত বেড়িবাঁধের সিসি ব্লকে ধস আতঙ্কে ৪০ হাজার বাসিন্দা

ছবি

গত ১১ বছরে সড়কে প্রাণ হারিয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার মানুষ

ছবি

বগুড়া-ঠাকুরগাঁও-ঝিনাইদহে ২০০ সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ

ছবি

আইনজীবী জেড আই খান পান্নার হাইকোর্টে আগাম জামিন

ছবি

সব শিক্ষা বোর্ডে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ

ছবি

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা

ছবি

সালাহউদ্দীন নোমান চৌধুরী জাতিসংঘে বাংলাদেশের নতুন স্থায়ী প্রতিনিধি

সংসদ নয়, বিচারপতি অপসারণ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে : রিভিউ রায়

ছবি

হত্যাচেষ্টার মামলায় আইনজীবী জেড আই পান্না আসামি, নিন্দা জানাল আসক

ছবি

পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে প্রণয় ভার্মার বৈঠক,শেখ হাসিনা ইস্যুতে আলোচনা হয়নি

ছবি

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাইদ স্নাতক পরীক্ষায় ১৪ তম স্থান অধিকার করেছে

ছবি

কপ-২৯ সম্মেলনের আগে ন্যায়সংগত জলবায়ু অর্থায়নের আহ্বান

ছবি

পল্লী বিদ্যুতের আরও ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্ট্যান্ড রিলিজ

ছবি

পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

গ্যাস-বিদ্যুতের দাম ঠিক করবে বিইআরসি : জ্বালানি উপদেষ্টা

ছবি

শেখ হাসিনাকে দেশে এসে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান

ছবি

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে

tab

জাতীয়

‘বৈষম্যহীন’ ফলের দাবি : চার শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও, বিক্ষোভ, ‘হামলায়’ আহত কয়েকজন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

এইচএসসি ফল বাতিল করে ‘বৈষম্যহীন’ ফল প্রকাশের দাবিতে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে বিক্ষোভের সময় হামলার শিকার এক নারী-সংবাদ

সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

এইচএসসির ফলাফলে ‘বৈষম্যের’ অভিযোগ তুলে অন্তত চারটি শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা সব বিষয়ে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ করে এইচএসসির ফল মূল্যায়নের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে। অর্থাৎ তারা বলছেন যে সব বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে সেগুলোর খাতার মূল্যায়ন নয়, সাবজেক্ট ম্যাপিং করতে হবে। ‘এইচএসসি ব্যাচ ২৪’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন হয়।

এদিন কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও যশোর শিক্ষা বোর্ডেও একই কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ‘ইচ্ছে করে ফেল’ করানো, খাতা যথাযথ মূল্যায়ন না করা এবং ইংরেজি বিষয়ে একচেটিয়া ফেল করানোরও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে বিক্ষোভ
এইচএসসি পরীক্ষার সব বিষয়ে অর্থাৎ বিষয়ে লিখিত পরীক্ষা হয়েছে সেসব বিষয়েও ‘ম্যাপিং’ করে ফল প্রকাশের দাবিতে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করেন একদল শিক্ষার্থী। সেখানে তাদের ওপর হামলা হয় বলে দাবি করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ছয়জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে বিক্ষোভকারীদের দাবি।

রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে ‘এইচএসসি ব্যাচ ২০২৪’ এর ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী রাজধানীর বকশিবাজারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ঢুকে বিক্ষোভ শুরু করেন। কিছুক্ষণ বিক্ষোভের পর তারা ভবনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের ওপর ‘হামলার’ ঘটনা ঘটে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড বিক্ষোভ ও হামলায় অন্তত ছয়জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।

আহতরা হলেন- সরকারি শাহবাজপুর কলেজের শিক্ষার্থী মো. সাগর, নারায়ণগঞ্জ কলেজের শাহরিয়ার, কিশোরগঞ্জের ওয়ালি নেওয়াজ খান কলেজের ওয়াহিদ, বাঘাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফাহমিদা হোসেন ও গোপালগঞ্জের শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের আশুতোষ।

শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের ‘শান্তিপূর্ণ’ কর্মসূচিতে কেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হামলা করলো, রক্তাক্ত করলো- তারা এর বিচার চান। অন্য এক বিক্ষোভকারী জানান, তারা বোর্ডের কর্মচারীদের সঙ্গে কোনো মারামারি বা কোনোকিছুই করেননি। তারা ‘শান্তিপূর্ণ’ অবস্থানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে উত্তীর্ণ আলিফ আহমেদ বলেন, সিলেট বোর্ডের শিক্ষার্থীরা একটি পরীক্ষা দিয়েছে, আর তারা সাতটি পরীক্ষা দিয়েও আশানুরূপ রেজাল্ট পাননি। তারা পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়নের জন্য আসলে গেটে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে গেট ভেঙ্গে শিক্ষার্থীরা বোর্ড চেয়ারম্যানের রুমে গেলে সেখানে কয়েকজন তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে কয়েকজন রক্তাক্ত হয়েছেন।

আলিফ আহমেদ অভিযোগ করেন, ‘আমাদের পরীক্ষার খাতা ঠিকমতো দেখা হয়নি। তারা অ্যাপসের মাধ্যমে আন্দাজ করে আমাদের রেজাল্ট দিয়ে দিয়েছে। আমাদের পরীক্ষার খাতা পুনরায় মূল্যায়ন করা না হলে এই আন্দোলন চলবে।’

এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেছেন, আন্দোলনকারীদের কারণে সন্ধ্যা ৬টাতেও বোর্ড কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। তারাই বোর্ডে ভাঙচূর চালিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির যুক্তিকতার বিষয়ে সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে, তারা অকৃতকার্য হয়েছে। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, যেসব সাবজেক্টে পরীক্ষা হয়েছে- তার ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করে ফলাফল দিয়েছি। এখন তারা সেটি মানবে না। তারা চাচ্ছে সবগুলো সাবজেক্ট ম্যাপিং করে নতুন করে ফলাফল দিতে। এটা কীভাবে সম্ভব?’

আন্ত:শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, তারা বুঝতেছে না, সরছেও না। এখানে সেনাবাহিনী আছে, পুলিশ আছে। তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন।’

শিক্ষার্থীরা জানান, বাতিল ৬টি পরীক্ষা যে পদ্ধতিতে ‘ম্যাপিং’ করে ফল তৈরি করা হয়েছে তাতে ‘চরম বৈষম্য’ তৈরি হয়েছে। সিলেট ও মাদ্রাসা বোর্ডের মাত্র ৩টি পরীক্ষা হয়েছে; সেজন্য তাদের ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ করায় ফলাফল ভালো হয়েছে। অথচ অন্যান্য বোর্ডে ভালো পরীক্ষা দিয়েও অনেকে অকৃতকার্য হয়েছে। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

চট্টগ্রাম বোর্ড ঘেরাওয়ের সময় শাফিন মাহমুদ নামের এক শিক্ষার্থী জানান, এবার যে ‘ফলাফলটা’ হয়েছে এটা ‘চরম বৈষম্যের’। এবার যত বেশি পরীক্ষা হয়েছে সে বোর্ডের শিক্ষার্থীরা তত বেশি পরীক্ষা দিয়েছে, তারা তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কোনো বোর্ডে ৬টি বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে; কোনো বোর্ড ৩টি পরীক্ষা নিতে পেরেছে। অথচ রেজাল্টের ক্ষেত্রে ‘কম পরীক্ষা দেয়া বোর্ডের রেজাল্ট ভালো’ হয়েছে। এই বৈষম্য শিক্ষার্থীরা মানেন না বলে জানান শাফিন মাহমুদ।

চকবাজার থানার ওসি রেজাউল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বৈষম্যমূলক রেজাল্ট হয়েছে; সেজন্য নতুন ফলাফলের দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বোর্ডে আসে। কিন্তু তারা ধৈর্য না ধরে পুলিশের বাধা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। তখন বোর্ডে কর্মচারীরা বাধা দেন। ছোট সিঁড়ি হওয়ায় কেউ কেউ পড়ে আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, তাদের এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের মূল্যায়ন করে এইচএসসি রেজাল্ট দেয়ার কথা। কিন্তু একজন শিক্ষার্থীর সব ‘সাবজেক্টে এ+’ পেয়েছে কিন্তু একটি সাবজেক্টে সে ‘ডি গ্রেট’ পেয়েছে, এটা কেন করলো।

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের এসএসসি রেজাল্ট দেখে মূল্যায়ন করার কথা ছিল, সেটা বিবেচনা করে এইচএসসি রেজাল্ট প্রকাশ করা উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের রেজাল্ট অনেক খারাপ হয়েছে।’

যশোর ও চট্রগ্রাম বোর্ডে মিছিল
বৈষম্যহীন রেজাল্টের দাবিতে যশোরে গণমিছিল ও শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন এইচএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা এই গণমিছিল ও শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেন।

তারা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকলে একপর্যায়ে বোর্ড সচিব আবদুর রহিম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে চান। পরে গেট খুলে দিলে তারা বোর্ড চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার খাতা যথাযথ মূল্যায়ন না করে ফল দেয়া হয়েছে। অবিলম্বে খাতা পুনর্মূল্যায়ন করে পরীক্ষার ফলাফলের দাবি জানান তারা। পরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

তাবাসসুম তাসফিয়া নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সিলেট বোর্ডে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা না দেয়া সত্ত্বেও তাদের প্রতিটি সাবজেক্টে এ-প্লাস এসেছে। তাহলে যশোর বোর্ডে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কেন বৈষম্য করা হলো?

ওই শিক্ষার্থী বলেন, তারা জানতে পেরেছেন অনেক থানায় পরীক্ষার খাতা পুড়ে গেছে, তাহলে কীসের ভিত্তিতে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করা হলো? পরীক্ষার সঠিক মূল্যায়ন করা হলে যশোর বোর্ডে বিভিন্ন বিষয়ে ফেল আসতো কিন্তু ইংরেজি বিষয়ে একচেটিয়া ফেল এসেছে।

বিক্ষোভ চলার প্রায় দেড় ঘণ্টার মাথায় যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মর্জিনা আক্তার ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

পরে মর্জিনা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের দাবিসহ স্মারকলিপিটি তিনি আন্ত:বোর্ডের কাছে পাঠাবেন। সেখান থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেন একদল শিক্ষার্থী। তারা বোর্ডের সামনে অবস্থান নিয়ে এইচএসসির ফল বাতিলের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বোর্ড চেয়ারম্যান ও সচিবের কক্ষের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় দাবি মেনে নেয়া না হলে সড়ক অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। তারা এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী এইচএসসির ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বোর্ডের এক শিক্ষার্থী বলেন, তাদের ইচ্ছে করেই ফেল করানো হয়েছে। তারা কোনোভাবে এই ফলাফল মানেন না। তাদের সাবজেক্ট কীভাবে ম্যাপিং হয়েছে, সেই বিষয়ে তারা জানতে চান। কেননা, পরীক্ষা দেয়ার পরও কীভাবে অনুপস্থিত আসে?’

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান রেজাউল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি জানিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী যা করা প্রয়োজন তারা তাই করবেন।

এদিন একদল শিক্ষার্থী কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করে এইচএসসির ফল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। তারাও সব বিষয়ে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের’ মাধ্যমে পূণরায় ফল প্রকাশের দাবি করেছেন।

গত ১৫ অক্টোবর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এর আগে গত ৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। সিলেট বিভাগে বন্যার কারণে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ৯ জুলাই। সিলেট বোর্ড মাত্র তিনটি পরীক্ষা নিতে পেরেছে। বাকি বোর্ডগুলো ছয়টি পরীক্ষা নিয়েছে।

এর আগে জুলাইয়ের শুরুর দিকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থবিরতা দেখা দেয়। এতে অন্তত পাঁচবার পরীক্ষা পেছানো হয়।

এক পর্যায়ে বাকি থাকা ছয়টি পরীক্ষা বাতিল করা হয়। সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেয়ার কথা ছিল। এর আগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা।

পরবর্তীতে আন্ত:শিক্ষা বোর্ড পুনরায় এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ নেয়। এরপর ২০ আগস্ট পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে প্রবেশ করে বিক্ষোভ করেন একদল শিক্ষার্থী। তারা সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। এরপর পরীক্ষা বাতিলের সিন্ধান্ত নেয় শিক্ষা প্রশাসন। আর সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে ফল প্রকাশের সিন্ধান্ত হয়।

এই প্রক্রিয়ায় একজন পরীক্ষার্থী এসএসসিতে একটি বিষয়ে যত নম্বর পেয়েছিল, এইচএসসিতে সেই বিষয় থাকলে তাতে এসএসসিতে প্রাপ্ত পুরো নম্বর বিবেচনায় নেয়া হয়। তবে এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় বিষয়ে ভিন্নতা থাকলে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে’ও এসএসসির বিষয় অনুযায়ী নম্বর দেয়া হয়।

back to top