ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্তি বাতিল ও স্বতন্ত্র বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা এ দাবিতে সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে ঢাকা কলেজের সামনের সড়ক থেকে সায়েন্সল্যাব ও নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন; সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
বিকেল চারটার দিকে সায়েন্সল্যাব মোড়ে তিনদফা দাবি তুলে ধরে কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান। এরপর সায়েন্সল্যাবের দুই পাশের সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে ঢাকা কলেজে জড়ো হয় ঢাবির অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। তাদের কর্মসূচিকে ঘিরে সায়েন্সল্যাব ও নীলক্ষেতের আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, ‘মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আগামী ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে আজকের (সোমবার) মতো আন্দোলন শেষ করছি। এর মাঝে দাবি মানা না হলে আগামী বুধবার আবারও আন্দোলনে নামা হবে।’
কর্মসূচিতে ‘ঢাবির প্রহসন মানি না মানব না’, ‘ঢাবির জায়গায় ঢাবি থাক, সাত কলেজ মুক্তি পাক’, ‘টু জিরো টু ফোর-অ্যাফিলিয়েটেড নো মোর’, ‘শিক্ষা না বাণিজ্য- শিক্ষা শিক্ষা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি হলো- সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার অভিপ্রায়ে দ্রƒত সময়ের মধ্যে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করতে হবে; সংস্কার কমিটি অনধিক ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সাত কলেজের সমন্বয়ে শুধু একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবেন।
সংস্কার কমিটি বর্তমান কাঠামো সচল রাখতে ঢাবি প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন, যাতে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সেশন জটিলতার কোনো ধরনের পরিবেশ তৈরি না হয়।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তড়িঘড়ি করে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। এতে সেশনজটসহ শিক্ষার্থীদের হয়রানি আরও বেড়েছে। সেজন্য তারা সাত কলেজ নিয়ে আলাদা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় চান।
ওই সিদ্ধান্ত ‘অপরিকল্পিত’ ছিল দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এই কলেজগুলো অধিভুক্ত করা হয়েছিল, সেটা বিগত সাত বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য তারা আর ঢাবির অধিভুক্ত থাকতে চান না।
দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ও ঢাবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা জানান। তারা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় তারা রাস্তায় নেমেছেন।
এর আগে ২০ অক্টোবর রোববার রাতে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল কলেজ ও বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই রাতে শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে নীলক্ষেত হয়ে ইডেন কলেজের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেয়।
মূলত সেশনজট নিরসন, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন এবং জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমাতেই ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। কলেজ হলো-ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, বাঙলা কলেজ (মিরপুর) ও তিতুমীর কলেজ।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়েও বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই সময় তাদের দাবির মধ্যে ছিল- ঢাবি প্রশাসনিক ভবনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করা, যেসব শিক্ষার্থী পরবর্তী বর্ষের ক্লাস, ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা পর্যন্ত অংশগ্রহণ করার পর জানতে পেরেছে নন-প্রমোটেড তাদের মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষের পরীক্ষার সুযোগ দেয়া, বিলম্বে ফলাফল প্রকাশের কারণ ও সমস্যা সমাধানে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দেয়া এবং সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা।
এ ছাড়া সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অভিভাবক কে বা কারা, কোথায় তাদের সমস্যাগুলো উপস্থাপন করবে তা ঠিক করে দেয়া, একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, সব বিষয়ে পাস করার পরেও একজন শিক্ষার্থী সিজিপিএ শর্তের জন্য নন প্রমোটেড হচ্ছে এবং সিজিপিএ শর্ত শিথিল করার কথাও তুলে ধরেছিল শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্তি বাতিল ও স্বতন্ত্র বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা এ দাবিতে সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে ঢাকা কলেজের সামনের সড়ক থেকে সায়েন্সল্যাব ও নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন; সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
বিকেল চারটার দিকে সায়েন্সল্যাব মোড়ে তিনদফা দাবি তুলে ধরে কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান। এরপর সায়েন্সল্যাবের দুই পাশের সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে ঢাকা কলেজে জড়ো হয় ঢাবির অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। তাদের কর্মসূচিকে ঘিরে সায়েন্সল্যাব ও নীলক্ষেতের আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, ‘মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আগামী ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে আজকের (সোমবার) মতো আন্দোলন শেষ করছি। এর মাঝে দাবি মানা না হলে আগামী বুধবার আবারও আন্দোলনে নামা হবে।’
কর্মসূচিতে ‘ঢাবির প্রহসন মানি না মানব না’, ‘ঢাবির জায়গায় ঢাবি থাক, সাত কলেজ মুক্তি পাক’, ‘টু জিরো টু ফোর-অ্যাফিলিয়েটেড নো মোর’, ‘শিক্ষা না বাণিজ্য- শিক্ষা শিক্ষা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি হলো- সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার অভিপ্রায়ে দ্রƒত সময়ের মধ্যে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করতে হবে; সংস্কার কমিটি অনধিক ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সাত কলেজের সমন্বয়ে শুধু একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবেন।
সংস্কার কমিটি বর্তমান কাঠামো সচল রাখতে ঢাবি প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন, যাতে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সেশন জটিলতার কোনো ধরনের পরিবেশ তৈরি না হয়।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তড়িঘড়ি করে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। এতে সেশনজটসহ শিক্ষার্থীদের হয়রানি আরও বেড়েছে। সেজন্য তারা সাত কলেজ নিয়ে আলাদা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় চান।
ওই সিদ্ধান্ত ‘অপরিকল্পিত’ ছিল দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এই কলেজগুলো অধিভুক্ত করা হয়েছিল, সেটা বিগত সাত বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য তারা আর ঢাবির অধিভুক্ত থাকতে চান না।
দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ও ঢাবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা জানান। তারা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় তারা রাস্তায় নেমেছেন।
এর আগে ২০ অক্টোবর রোববার রাতে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল কলেজ ও বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই রাতে শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে নীলক্ষেত হয়ে ইডেন কলেজের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেয়।
মূলত সেশনজট নিরসন, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন এবং জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমাতেই ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। কলেজ হলো-ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, বাঙলা কলেজ (মিরপুর) ও তিতুমীর কলেজ।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়েও বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই সময় তাদের দাবির মধ্যে ছিল- ঢাবি প্রশাসনিক ভবনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করা, যেসব শিক্ষার্থী পরবর্তী বর্ষের ক্লাস, ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা পর্যন্ত অংশগ্রহণ করার পর জানতে পেরেছে নন-প্রমোটেড তাদের মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষের পরীক্ষার সুযোগ দেয়া, বিলম্বে ফলাফল প্রকাশের কারণ ও সমস্যা সমাধানে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দেয়া এবং সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা।
এ ছাড়া সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অভিভাবক কে বা কারা, কোথায় তাদের সমস্যাগুলো উপস্থাপন করবে তা ঠিক করে দেয়া, একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, সব বিষয়ে পাস করার পরেও একজন শিক্ষার্থী সিজিপিএ শর্তের জন্য নন প্রমোটেড হচ্ছে এবং সিজিপিএ শর্ত শিথিল করার কথাও তুলে ধরেছিল শিক্ষার্থীরা।