‘হত্যাচেষ্টা’ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে আসামি করার চারদিন পরেই মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেছে বাদী। প্রত্যাহারের আবেদনে বাদী বলেন, ‘ভুলবশত’ জেড আই খান পান্নাকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ জেড আই খান পান্নাকে এ মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন দিয়েছে।
গত ১৭ অক্টোবর খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা চেষ্টার মামলা হয়েছিল। সেখানে ১৮০ জনকে আসামি করা হয় এবং সেখানে জেড আই খান পান্নাকে ৯৪ নাম্বার আসামি করা হয়। তবে, এই মামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় ২০ অক্টোবর রোববার।
খিলগাঁও থানার ওসি মো. দাউদ হোসেন বলেন, ‘গতকাল এই আবেদন করেছেন বাদী বাকের। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বাদী বাকের সাহেব আমার কাছে একটি আবেদন করেছেন। আবেদনে তার মামলার এজাহারে জেড আই খান পান্নাকে ভুলবশত আসামি করেছেন উল্লেখ করে তার নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। আমি আবেদনটি গ্রহণ করেছি, সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’ কোনো ধরনের প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই এ মামলা নেয়া হয়েছে বলে জানান খিলগাঁও থানার (ওসি) মো. দাউদ হোসেন।
খিলগাঁও থানার ওই আবেদনে বাকের বলেন, ‘এজাহারের ৯৪ নং ক্রমিকে বর্ণিত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না (৬৫) কে অজ্ঞতা ও ভুলবশত আসামি করা হয়। ৯৪ নং ক্রমিকে বর্ণিত ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করিতে মর্জি হয়।’
সোমবার আহাম জামিনের শুনানি শেষে আদালত ভবন থেকে বের হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পান্না সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এমন কোনো কাজ করি নাই যাতে এই ধরনের একটা মামলা করা হবে। যদি রাজনৈতিক মামলা হতো আমার আপত্তি ছিল না, জীবনে আমি বহুত মামলা খাইছি। একটা হত্যা প্রচেষ্টা এবং মেরাদিয়া কোথায় আমি জানিও না, যাইওনি।’
জেড আই খান পান্নার আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, ‘শুনানিতে আদালত থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি এবং রাষ্ট্রপক্ষও জামিন আবেদনের বিষয়ে কোনো আপত্তি করেনি। তার (জেড আই খান পান্না) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা তাকে হ্যারাস করার জন্যই করা হয়েছে। আমি মনে করি না এখানে রাষ্ট্র বা যারা ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত, তাদের কোনো প্রভাব আছে।’
কোনো ‘অতি উৎসাহী’ ব্যক্তি এই মামলাটি করিয়েছেন বলে মনে করছেন এহসানুল করিম।
মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বিজিবি মহাপরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ ১৮০ জনের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া বাজারের পশ্চিমে শুক্কুর আলী গার্মেন্টস মোড়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনে অংশ নেন বাদী মো. বাকেরের ছেলে মো. আহাদুল ইসলাম।
‘এ সময় পুলিশ, বিজিবি, র?্যাবসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন এবং ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ককটেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটান এবং গুলিও চালান।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য হত্যার উদ্দেশ্যে এ গুলি চালানো হয়’ অভিযোগ করে এজাহারে বলা হয়, ‘সেখানে আহাদুল ইসলাম বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। সন্ত্রাসীরা তাকে পরে আরও লাঠিপেটা করেন। পরে তাকে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো বন্ধ করার আদেশ চেয়ে গত ২৯ জুলাই আইনজীবীদের একটি দল হাইকোর্টে আবেদন করে। তাদের একজন ছিলেন জেড আই খান পান্না। শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ২৯ জুলাই নাগরিক উদ্যোগে গঠিত জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের সদস্যও ছিলেন তিনি।
‘গণহত্যার বিচার চাই, গায়েবি মামলা-গ্রেপ্তার ও নির্যাতন বন্ধ কর’ শিরোনামে ২৯ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে একটি মানববন্ধন করা হয়। ‘আইনজীবী সমাজ’-এর ব্যানারে আয়োজিত সেই মানববন্ধনে ছিলেন জেড আই খান পান্না।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপারসন জেড আই খান পান্না আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী নানা আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিষয়ে সমালোচনামুখর ছিলেন জেড আই খান পান্না। সংবিধান নতুন করে লেখার যে কথা বলা হচ্ছে, তারও তীব্র সমালোচনা করছিলেন তিনি। জেড আই খান পান্না গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে সংবিধান রচিত হয়েছে, তার ঘোষণাপত্র পাল্টানো যাবে না। যদি করে, তাহলে যুদ্ধ না, মহাযুদ্ধ হবে।’
মামলার বিষয়ে জেড আই খান পান্না সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এটা কোনো না কোনো প্রভাবশালীর ইন্ধনেই হয়েছে, তা নিয়ে আমার সন্দেহ নেই। অথচ আমি কোটা আন্দোলনকারীদের পক্ষে সক্রিয় ছিলাম। যে স্থানের কথা বলা হয়েছে, সেই মেরাদিয়ায় আমি কখনও গেছি বলেও তো মনে হয় না।’
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
‘হত্যাচেষ্টা’ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে আসামি করার চারদিন পরেই মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেছে বাদী। প্রত্যাহারের আবেদনে বাদী বলেন, ‘ভুলবশত’ জেড আই খান পান্নাকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ জেড আই খান পান্নাকে এ মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন দিয়েছে।
গত ১৭ অক্টোবর খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা চেষ্টার মামলা হয়েছিল। সেখানে ১৮০ জনকে আসামি করা হয় এবং সেখানে জেড আই খান পান্নাকে ৯৪ নাম্বার আসামি করা হয়। তবে, এই মামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় ২০ অক্টোবর রোববার।
খিলগাঁও থানার ওসি মো. দাউদ হোসেন বলেন, ‘গতকাল এই আবেদন করেছেন বাদী বাকের। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বাদী বাকের সাহেব আমার কাছে একটি আবেদন করেছেন। আবেদনে তার মামলার এজাহারে জেড আই খান পান্নাকে ভুলবশত আসামি করেছেন উল্লেখ করে তার নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। আমি আবেদনটি গ্রহণ করেছি, সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’ কোনো ধরনের প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই এ মামলা নেয়া হয়েছে বলে জানান খিলগাঁও থানার (ওসি) মো. দাউদ হোসেন।
খিলগাঁও থানার ওই আবেদনে বাকের বলেন, ‘এজাহারের ৯৪ নং ক্রমিকে বর্ণিত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না (৬৫) কে অজ্ঞতা ও ভুলবশত আসামি করা হয়। ৯৪ নং ক্রমিকে বর্ণিত ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করিতে মর্জি হয়।’
সোমবার আহাম জামিনের শুনানি শেষে আদালত ভবন থেকে বের হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পান্না সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এমন কোনো কাজ করি নাই যাতে এই ধরনের একটা মামলা করা হবে। যদি রাজনৈতিক মামলা হতো আমার আপত্তি ছিল না, জীবনে আমি বহুত মামলা খাইছি। একটা হত্যা প্রচেষ্টা এবং মেরাদিয়া কোথায় আমি জানিও না, যাইওনি।’
জেড আই খান পান্নার আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, ‘শুনানিতে আদালত থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি এবং রাষ্ট্রপক্ষও জামিন আবেদনের বিষয়ে কোনো আপত্তি করেনি। তার (জেড আই খান পান্না) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা তাকে হ্যারাস করার জন্যই করা হয়েছে। আমি মনে করি না এখানে রাষ্ট্র বা যারা ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত, তাদের কোনো প্রভাব আছে।’
কোনো ‘অতি উৎসাহী’ ব্যক্তি এই মামলাটি করিয়েছেন বলে মনে করছেন এহসানুল করিম।
মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বিজিবি মহাপরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ ১৮০ জনের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া বাজারের পশ্চিমে শুক্কুর আলী গার্মেন্টস মোড়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনে অংশ নেন বাদী মো. বাকেরের ছেলে মো. আহাদুল ইসলাম।
‘এ সময় পুলিশ, বিজিবি, র?্যাবসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন এবং ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ককটেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটান এবং গুলিও চালান।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য হত্যার উদ্দেশ্যে এ গুলি চালানো হয়’ অভিযোগ করে এজাহারে বলা হয়, ‘সেখানে আহাদুল ইসলাম বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। সন্ত্রাসীরা তাকে পরে আরও লাঠিপেটা করেন। পরে তাকে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো বন্ধ করার আদেশ চেয়ে গত ২৯ জুলাই আইনজীবীদের একটি দল হাইকোর্টে আবেদন করে। তাদের একজন ছিলেন জেড আই খান পান্না। শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ২৯ জুলাই নাগরিক উদ্যোগে গঠিত জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের সদস্যও ছিলেন তিনি।
‘গণহত্যার বিচার চাই, গায়েবি মামলা-গ্রেপ্তার ও নির্যাতন বন্ধ কর’ শিরোনামে ২৯ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে একটি মানববন্ধন করা হয়। ‘আইনজীবী সমাজ’-এর ব্যানারে আয়োজিত সেই মানববন্ধনে ছিলেন জেড আই খান পান্না।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপারসন জেড আই খান পান্না আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী নানা আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিষয়ে সমালোচনামুখর ছিলেন জেড আই খান পান্না। সংবিধান নতুন করে লেখার যে কথা বলা হচ্ছে, তারও তীব্র সমালোচনা করছিলেন তিনি। জেড আই খান পান্না গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে সংবিধান রচিত হয়েছে, তার ঘোষণাপত্র পাল্টানো যাবে না। যদি করে, তাহলে যুদ্ধ না, মহাযুদ্ধ হবে।’
মামলার বিষয়ে জেড আই খান পান্না সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এটা কোনো না কোনো প্রভাবশালীর ইন্ধনেই হয়েছে, তা নিয়ে আমার সন্দেহ নেই। অথচ আমি কোটা আন্দোলনকারীদের পক্ষে সক্রিয় ছিলাম। যে স্থানের কথা বলা হয়েছে, সেই মেরাদিয়ায় আমি কখনও গেছি বলেও তো মনে হয় না।’