সরকার আড়িপাতার ব্যবস্থা নিশ্চিত রেখেই দেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট–সেবা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) জন্য তথ্য দেওয়ার ব্যবস্থা রাখার কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি বিটিআরসি একটি খসড়া গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে মতামত গ্রহণ চলবে আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠিত স্পেসএক্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংক গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা চালুর আগ্রহ দেখাচ্ছে। প্রথাগত সাবমেরিন কেব্ল ও মোবাইল টাওয়ার ছাড়াই সরাসরি কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ইন্টারনেট–সেবা দিতে সক্ষম স্টারলিংক বর্তমানে বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাংলাদেশে তাদের লাইসেন্স প্রদানে আগ্রহী সরকার এবং বিটিআরসি এরই মধ্যে খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
প্রস্তাবিত নীতিমালার মূল শর্তাবলি
গাইডলাইন অনুযায়ী, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এনটিএমসি বা বিটিআরসির কাছে তথ্য সরবরাহ করতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি স্থাপন করতে হবে স্যাটেলাইট অপারেটরদের। ইন্টারনেট প্রোটোকল রেকর্ড এবং গ্রাহক সম্পর্কিত অন্যান্য ডেটা সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং বেআইনি কার্যক্রম রোধে নির্দিষ্ট ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। আইআইজির মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সংগ্রহ বাধ্যতামূলক, যাতে দেশের অভ্যন্তরীণ ইন্টারনেট–সেবার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায়।
বিষয়টিতে নেটওয়ার্ক বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ বলেন, স্যাটেলাইট হলেও আইআইজির ওপর নির্ভরশীলতা থাকার ফলে দেশে ইন্টারনেট বন্ধ থাকলে স্যাটেলাইট ইন্টারনেটও কার্যকর থাকবে না। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাইডলাইনে সরকারের একক নিয়ন্ত্রণ ও বিচারবহির্ভূত মনিটরিংয়ের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা উদ্বেগের বিষয়।
গণ–অভ্যুত্থান এবং প্রশ্নবিদ্ধ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার পরিবর্তনের গণ–আন্দোলনের সময়ে অতীতে ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখার যে উদাহরণ রয়েছে, তা এই খসড়া নীতিমালাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। জাতীয় নিরাপত্তার নামে ইন্টারনেট বন্ধ বা পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে একক নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে রাখা হলে গ্রাহকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করেন ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ এরশাদুল করিম।
এ ছাড়া খসড়া গাইডলাইন অনুযায়ী স্টারলিংককে টেলিকম আইন ২০০১, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮সহ অন্যান্য আইন মেনে চলতে হবে। কিন্তু এত শর্ত মানতে স্টারলিংক রাজি হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিবন্ধন এবং ফি কাঠামো
বিটিআরসি গাইডলাইনে পাঁচ বছরের জন্য লাইসেন্স নবায়নের বিধান রয়েছে। লাইসেন্স পেতে আবেদন ফি ৫ লাখ টাকা এবং লাইসেন্স অধিগ্রহণ ফি ১০ হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বার্ষিক নিবন্ধন ফি ৫০ হাজার ডলার ও রাজস্বের ৫.৫ শতাংশ ভাগাভাগি করতে হবে।
এই খসড়া নীতিমালা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার মতামত গ্রহণ শেষে চূড়ান্ত নীতিমালা তৈরি করা হবে।
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
সরকার আড়িপাতার ব্যবস্থা নিশ্চিত রেখেই দেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট–সেবা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) জন্য তথ্য দেওয়ার ব্যবস্থা রাখার কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি বিটিআরসি একটি খসড়া গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে মতামত গ্রহণ চলবে আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠিত স্পেসএক্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংক গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা চালুর আগ্রহ দেখাচ্ছে। প্রথাগত সাবমেরিন কেব্ল ও মোবাইল টাওয়ার ছাড়াই সরাসরি কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ইন্টারনেট–সেবা দিতে সক্ষম স্টারলিংক বর্তমানে বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাংলাদেশে তাদের লাইসেন্স প্রদানে আগ্রহী সরকার এবং বিটিআরসি এরই মধ্যে খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
প্রস্তাবিত নীতিমালার মূল শর্তাবলি
গাইডলাইন অনুযায়ী, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এনটিএমসি বা বিটিআরসির কাছে তথ্য সরবরাহ করতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি স্থাপন করতে হবে স্যাটেলাইট অপারেটরদের। ইন্টারনেট প্রোটোকল রেকর্ড এবং গ্রাহক সম্পর্কিত অন্যান্য ডেটা সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং বেআইনি কার্যক্রম রোধে নির্দিষ্ট ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। আইআইজির মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সংগ্রহ বাধ্যতামূলক, যাতে দেশের অভ্যন্তরীণ ইন্টারনেট–সেবার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায়।
বিষয়টিতে নেটওয়ার্ক বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ বলেন, স্যাটেলাইট হলেও আইআইজির ওপর নির্ভরশীলতা থাকার ফলে দেশে ইন্টারনেট বন্ধ থাকলে স্যাটেলাইট ইন্টারনেটও কার্যকর থাকবে না। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাইডলাইনে সরকারের একক নিয়ন্ত্রণ ও বিচারবহির্ভূত মনিটরিংয়ের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা উদ্বেগের বিষয়।
গণ–অভ্যুত্থান এবং প্রশ্নবিদ্ধ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার পরিবর্তনের গণ–আন্দোলনের সময়ে অতীতে ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখার যে উদাহরণ রয়েছে, তা এই খসড়া নীতিমালাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। জাতীয় নিরাপত্তার নামে ইন্টারনেট বন্ধ বা পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে একক নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে রাখা হলে গ্রাহকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করেন ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ এরশাদুল করিম।
এ ছাড়া খসড়া গাইডলাইন অনুযায়ী স্টারলিংককে টেলিকম আইন ২০০১, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮সহ অন্যান্য আইন মেনে চলতে হবে। কিন্তু এত শর্ত মানতে স্টারলিংক রাজি হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিবন্ধন এবং ফি কাঠামো
বিটিআরসি গাইডলাইনে পাঁচ বছরের জন্য লাইসেন্স নবায়নের বিধান রয়েছে। লাইসেন্স পেতে আবেদন ফি ৫ লাখ টাকা এবং লাইসেন্স অধিগ্রহণ ফি ১০ হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বার্ষিক নিবন্ধন ফি ৫০ হাজার ডলার ও রাজস্বের ৫.৫ শতাংশ ভাগাভাগি করতে হবে।
এই খসড়া নীতিমালা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার মতামত গ্রহণ শেষে চূড়ান্ত নীতিমালা তৈরি করা হবে।