জাতীয় পার্টির (জাপা) আজকের সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও আজ কাকরাইলে সমাবেশ ও মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। তবে এই সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। তারা কাকরাইলে জাপার কার্যালয়ের সামনে পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজধানীর বিজয়নগরে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জাপা চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) বলেছেন, ‘জীবন দিয়ে হলেও জাতীয় পার্টি আজ মহাসমাবেশ করবে।’ ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিজয়নগরে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলন করে জাপা। জাপা বলেছে, ওই সময় নেতাকর্মীরা সমাবেশের প্রস্তুতি সভা করছিলেন।
সব ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ‘দুঃশাসন’ চালিয়েছে উল্লেখ করে জিএম কাদের সংবাদ সম্মেলনে ২০০৮ সালের নবম সংসদ থেকে ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির ভূমিকা তুলে ধরেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সবাই আওয়ামী লীগকে বৈধতা দিয়েছিল বলে মনে করেন তিনি। ২০১৪ ও ’২৪-এর নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে ব্ল্যাকমেইল করে নির্বাচন করতে বাধ্য করেছিল বলে দাবি তার।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই অপরাধ হবে কেন- এমন প্রশ্ন রেখে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা সাংবিধানিক অধিকার।’ শেষ তিনটি নির্বাচন নিয়ে তথ্য ও ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে দাবি তার। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের হামলা, মামলা ও দলীয় বিভক্তির রাজনীতির শিকার জাতীয় পার্টি হয়েছে বলেও দাবি জিএম কাদেরের।
জিএম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসর অপবাদ দিয়ে বড় ষড়যন্ত্র চলছে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে। আমরা আমাদের রাজনীতি করেছি, আওয়ামী লীগ করেছে তাদের রাজনীতি। আওয়ামী লীগের অপকর্মের প্রতিবাদ করেছি, তাদের অপকর্মের দায় আমাদের নয়।’
তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না হলে, মানুষ না খেয়ে মারা গেলে সংস্কার দিয়ে কি হবে। আইনশৃঙ্খলা অবস্থা কি দেখছি, কোনো লোক এসে গুলি করে মেরে ফেলতে পারে। আল্লাহ ছাড়া কোন নিরাপত্তা নেই।’
সমাবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ২ তারিখ (শনিবার) যে কর্মসূচি দিয়েছি, সে কর্মসূচি চালু থাকবে। কেউ ভয় পাবেন না। আমরা মরতে আসছি, আমরা মরতে চাই। কত লোক মারবেন ওনারা, আমরা সেটা দেখতে চাই। মনে রাখবেন, ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। হাত দিয়ে প্রতিবাদ করতে না পারলে মুখ দিয়ে করো। মুখ দিয়ে না পারলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করো। আমাদের সেটা করতে হবে। তার জন্য আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা দেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আমরা মহাসমাবেশ করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছ থেকে বৈধভাবে অনুমতি নিয়ে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। একটি কুচক্রী মহল আমাদের নির্ধারিত মহাসমাবেশ নস্যাৎ করতে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করেছে।’
যাদের নিয়ে বাংলাদেশ গর্ব করতে পারে, তাদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জাপা চেয়ারম্যানের। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের ফসল সত্যিকারভাবে পাচ্ছি না। আমরা আওয়ামী লীগের মতো বিভাজনের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। নিরপরাধ হাজার হাজার লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হচ্ছে।’ দলীয়করণ মুক্ত করতে গিয়ে পুনরায় দলীয়করণ হচ্ছে বলেও অভিযোগ তার।
তিনি বলেন, ‘এখন কি দেশ সঠিক পথে চলছে! কেউ দোষ করলে তার বিচার হোক, কিন্তু বিচার না করেই কারো অফিস বন্ধ করে দেয়াটা বৈষম্যবিরোধী! অনেক আশা করে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম, দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না, কিন্তু আমরা বৈষম্যের শিকার। আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা হত্যা মামলা দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘জাপা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল, সারাদেশে কর্মী সমর্থক রয়েছে। সেটাই তাদের বড় ভয়, তারা মনে করে এটাকে ধ্বংস করতে হবে। কিন্তু তারা অতীতেও পারেনি ভবিষ্যতেও পারবে না। জাতীয় পার্টি বারংবার কবর থেকে উঠে এসেছে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জেলে থেকে পাঁচটি আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই শীর্ষ নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার ইস্যুতে বলেন, ‘রংপুরের মেয়র ক্ষোভ থেকে করেছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করাটাও স্বাভাবিক। ছাত্রদের আন্দোলনে সরাসরি অংশ নেয়ার পরও সেই ছাত্ররাই যদি আবার জাতীয় পার্টিকে প্রতিহত করার ডাক দেয় তখন ক্ষুব্ধ হওয়াই স্বাভাবিক।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মুজিবুল হক চুন্নু, রেজাউল করিম ভূঁইয়া, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও শেরীফা কাদের।
পাল্টা গণপ্রতিরোধ কর্মসূচির ডাক ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা’র
জাপার সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা কাকরাইলে দলটির কার্যালয়ের সামনে পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টির’ রাজনৈতিক অপতৎপরতা বন্ধ ও দলটি নিষিদ্ধের দাবি জানায় ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। জাপাসহ ফ্যাসিবাদের সব দোসরদের অফিসকে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতি হিসেবে ব্যবহার করতে বলেন তারা।
তাদের দাবি, জাপা কার্যালয়ে যে ভাঙচুর হয়েছে তার সঙ্গে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার সম্পর্ক নেই। জাতীয় পার্টির সদস্যরা আক্রমণ করায় কয়েকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে এই ভাঙচুর চালিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাতীয় পার্টির ডাকা শনিবারের সমাবেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে পুনরুত্থানের পরিকল্পনার অংশ। এই অপতৎপরতা বন্ধের জন্যই ছাত্র-জনতা জেগে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় পার্টির সব কার্যালয়ের সামনে আজ বেলা ১১টায় গণপ্রতিরোধ কর্মসূচি পালন করবে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা।
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চললে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনারসহ সবার প্রতি আহ্বান আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ তাদের দোসরদের যেন রাজনৈতিক সমাবেশ করার অনুমতি না দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের নেতারা যদি জেলে থাকে, তাদের দোসর জাপার নেতাদেরও জেলে থাকতে হবে।’
বিজয়নগরে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ : ডিএমপি
কাকরাইল এলাকায় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করায় ওই এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় আজ (শনিবার) সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। শুক্রবার রাতে ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-ওওও/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর পাইওনিয়ার রোডের ৬৬ নং ভবন, পাইওনিয়ার রোড, কাকরাইলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যে কোনো প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।’
শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪
জাতীয় পার্টির (জাপা) আজকের সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও আজ কাকরাইলে সমাবেশ ও মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। তবে এই সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। তারা কাকরাইলে জাপার কার্যালয়ের সামনে পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজধানীর বিজয়নগরে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জাপা চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) বলেছেন, ‘জীবন দিয়ে হলেও জাতীয় পার্টি আজ মহাসমাবেশ করবে।’ ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিজয়নগরে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলন করে জাপা। জাপা বলেছে, ওই সময় নেতাকর্মীরা সমাবেশের প্রস্তুতি সভা করছিলেন।
সব ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ‘দুঃশাসন’ চালিয়েছে উল্লেখ করে জিএম কাদের সংবাদ সম্মেলনে ২০০৮ সালের নবম সংসদ থেকে ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির ভূমিকা তুলে ধরেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সবাই আওয়ামী লীগকে বৈধতা দিয়েছিল বলে মনে করেন তিনি। ২০১৪ ও ’২৪-এর নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে ব্ল্যাকমেইল করে নির্বাচন করতে বাধ্য করেছিল বলে দাবি তার।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই অপরাধ হবে কেন- এমন প্রশ্ন রেখে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা সাংবিধানিক অধিকার।’ শেষ তিনটি নির্বাচন নিয়ে তথ্য ও ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে দাবি তার। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের হামলা, মামলা ও দলীয় বিভক্তির রাজনীতির শিকার জাতীয় পার্টি হয়েছে বলেও দাবি জিএম কাদেরের।
জিএম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসর অপবাদ দিয়ে বড় ষড়যন্ত্র চলছে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে। আমরা আমাদের রাজনীতি করেছি, আওয়ামী লীগ করেছে তাদের রাজনীতি। আওয়ামী লীগের অপকর্মের প্রতিবাদ করেছি, তাদের অপকর্মের দায় আমাদের নয়।’
তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না হলে, মানুষ না খেয়ে মারা গেলে সংস্কার দিয়ে কি হবে। আইনশৃঙ্খলা অবস্থা কি দেখছি, কোনো লোক এসে গুলি করে মেরে ফেলতে পারে। আল্লাহ ছাড়া কোন নিরাপত্তা নেই।’
সমাবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ২ তারিখ (শনিবার) যে কর্মসূচি দিয়েছি, সে কর্মসূচি চালু থাকবে। কেউ ভয় পাবেন না। আমরা মরতে আসছি, আমরা মরতে চাই। কত লোক মারবেন ওনারা, আমরা সেটা দেখতে চাই। মনে রাখবেন, ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। হাত দিয়ে প্রতিবাদ করতে না পারলে মুখ দিয়ে করো। মুখ দিয়ে না পারলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করো। আমাদের সেটা করতে হবে। তার জন্য আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা দেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আমরা মহাসমাবেশ করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছ থেকে বৈধভাবে অনুমতি নিয়ে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। একটি কুচক্রী মহল আমাদের নির্ধারিত মহাসমাবেশ নস্যাৎ করতে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করেছে।’
যাদের নিয়ে বাংলাদেশ গর্ব করতে পারে, তাদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জাপা চেয়ারম্যানের। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের ফসল সত্যিকারভাবে পাচ্ছি না। আমরা আওয়ামী লীগের মতো বিভাজনের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। নিরপরাধ হাজার হাজার লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হচ্ছে।’ দলীয়করণ মুক্ত করতে গিয়ে পুনরায় দলীয়করণ হচ্ছে বলেও অভিযোগ তার।
তিনি বলেন, ‘এখন কি দেশ সঠিক পথে চলছে! কেউ দোষ করলে তার বিচার হোক, কিন্তু বিচার না করেই কারো অফিস বন্ধ করে দেয়াটা বৈষম্যবিরোধী! অনেক আশা করে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম, দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না, কিন্তু আমরা বৈষম্যের শিকার। আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা হত্যা মামলা দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘জাপা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল, সারাদেশে কর্মী সমর্থক রয়েছে। সেটাই তাদের বড় ভয়, তারা মনে করে এটাকে ধ্বংস করতে হবে। কিন্তু তারা অতীতেও পারেনি ভবিষ্যতেও পারবে না। জাতীয় পার্টি বারংবার কবর থেকে উঠে এসেছে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জেলে থেকে পাঁচটি আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই শীর্ষ নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার ইস্যুতে বলেন, ‘রংপুরের মেয়র ক্ষোভ থেকে করেছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করাটাও স্বাভাবিক। ছাত্রদের আন্দোলনে সরাসরি অংশ নেয়ার পরও সেই ছাত্ররাই যদি আবার জাতীয় পার্টিকে প্রতিহত করার ডাক দেয় তখন ক্ষুব্ধ হওয়াই স্বাভাবিক।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মুজিবুল হক চুন্নু, রেজাউল করিম ভূঁইয়া, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও শেরীফা কাদের।
পাল্টা গণপ্রতিরোধ কর্মসূচির ডাক ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা’র
জাপার সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা কাকরাইলে দলটির কার্যালয়ের সামনে পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টির’ রাজনৈতিক অপতৎপরতা বন্ধ ও দলটি নিষিদ্ধের দাবি জানায় ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। জাপাসহ ফ্যাসিবাদের সব দোসরদের অফিসকে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতি হিসেবে ব্যবহার করতে বলেন তারা।
তাদের দাবি, জাপা কার্যালয়ে যে ভাঙচুর হয়েছে তার সঙ্গে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার সম্পর্ক নেই। জাতীয় পার্টির সদস্যরা আক্রমণ করায় কয়েকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে এই ভাঙচুর চালিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাতীয় পার্টির ডাকা শনিবারের সমাবেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে পুনরুত্থানের পরিকল্পনার অংশ। এই অপতৎপরতা বন্ধের জন্যই ছাত্র-জনতা জেগে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় পার্টির সব কার্যালয়ের সামনে আজ বেলা ১১টায় গণপ্রতিরোধ কর্মসূচি পালন করবে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা।
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চললে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনারসহ সবার প্রতি আহ্বান আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ তাদের দোসরদের যেন রাজনৈতিক সমাবেশ করার অনুমতি না দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের নেতারা যদি জেলে থাকে, তাদের দোসর জাপার নেতাদেরও জেলে থাকতে হবে।’
বিজয়নগরে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ : ডিএমপি
কাকরাইল এলাকায় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করায় ওই এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় আজ (শনিবার) সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। শুক্রবার রাতে ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-ওওও/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর পাইওনিয়ার রোডের ৬৬ নং ভবন, পাইওনিয়ার রোড, কাকরাইলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যে কোনো প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।’