# খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানান তিন বাহিনীর প্রধানরা
# বক্তব্যে খালেদা জিয়াকে স্বাগত ও ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
# ২০১৮ সালে কারাগারে যাওয়ার পর এই প্রথম কোনো অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিতি খালেদার
দীর্ঘ এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে গেলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। এই সুবাদে প্রায় ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল তাকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে বসে তিনি উপভোগ করলেন সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে তিনি ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে পৌঁছান। সেখানে খালেদা জিয়াকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন অভ্যর্থনা জানান।
তার বসার ব্যবস্থা হয়েছিল অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে। এ সময় খালেদা জিয়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের সঙ্গে তার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন অনুষ্ঠানে আসেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আগেই পৌঁছেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম। যোগ দিয়েছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ আমন্ত্রিত সিনিয়র নেতারা। এই আয়োজনে গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেনও এসেছিলেন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে স্বাগত এবং অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া আজ এখানে আমাদের মধ্যে উপস্থিত আছেন। এক যুগ ধরে তিনি এই মহাসম্মিলনীতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান নাই। আজকে সুযোগ পেয়েছেন। আমরা সবাই আনন্দিত এবং গর্বিত যে এই সুযোগ দিতে পেরেছি আপনাকে।’
শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও এই বিশেষ দিবসে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তাকে এই অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে স্বাগত জানান। এ সময় খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে রওনা হন। সাময়িক মুক্তির পর থেকে তিনি কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে কখনো বাসা থেকে বের হননি। রাজনৈতিক কর্মসূচি বা কোনো ধরনের অনুষ্ঠানেও তাকে দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়া বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময়, রাস্তায় জড়ো হওয়া বিএনপি কর্মীরা পুরো এলাকা সেøাগানে মুখর করে তোলেন।
এবারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির ২৬ নেতাকে সেনাকুঞ্জে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর এই প্রথম কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
দুই বছর কারাগারে থাকার পর ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পান খালেদা জিয়া। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি দ- মওকুফ করে তাকে মুক্তি দেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণের সূচনা করে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রতিবছর এই দিনটিকে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ হিসেবে পালন করে বাংলাদেশ।
সবশেষ ২০১২ সালে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া, তখন তিনি বিরোধীদলীয় নেতা।
এক সময় সেনাকুঞ্জের এ অনুষ্ঠান আলোচনায় থাকত রাজনৈতিক কারণে। দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া দু’জনেই এ অনুষ্ঠানে যেতেন। চির বৈরী এ দুই নেতার সারাবছর দেখা না হলেও সেনাকুঞ্জে তাদের সাক্ষৎ হওয়ার সম্ভাবনা থাকত।
২০১২ সালে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেও সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন দুই নেত্রী। তবে সেদিন তাদের কথা হয়নি।
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
# খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানান তিন বাহিনীর প্রধানরা
# বক্তব্যে খালেদা জিয়াকে স্বাগত ও ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
# ২০১৮ সালে কারাগারে যাওয়ার পর এই প্রথম কোনো অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিতি খালেদার
দীর্ঘ এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে গেলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। এই সুবাদে প্রায় ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল তাকে। সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে বসে তিনি উপভোগ করলেন সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে তিনি ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে পৌঁছান। সেখানে খালেদা জিয়াকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন অভ্যর্থনা জানান।
তার বসার ব্যবস্থা হয়েছিল অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে। এ সময় খালেদা জিয়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের সঙ্গে তার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন অনুষ্ঠানে আসেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আগেই পৌঁছেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম। যোগ দিয়েছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ আমন্ত্রিত সিনিয়র নেতারা। এই আয়োজনে গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেনও এসেছিলেন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে স্বাগত এবং অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া আজ এখানে আমাদের মধ্যে উপস্থিত আছেন। এক যুগ ধরে তিনি এই মহাসম্মিলনীতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান নাই। আজকে সুযোগ পেয়েছেন। আমরা সবাই আনন্দিত এবং গর্বিত যে এই সুযোগ দিতে পেরেছি আপনাকে।’
শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও এই বিশেষ দিবসে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তাকে এই অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে স্বাগত জানান। এ সময় খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে রওনা হন। সাময়িক মুক্তির পর থেকে তিনি কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে কখনো বাসা থেকে বের হননি। রাজনৈতিক কর্মসূচি বা কোনো ধরনের অনুষ্ঠানেও তাকে দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়া বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময়, রাস্তায় জড়ো হওয়া বিএনপি কর্মীরা পুরো এলাকা সেøাগানে মুখর করে তোলেন।
এবারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির ২৬ নেতাকে সেনাকুঞ্জে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর এই প্রথম কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
দুই বছর কারাগারে থাকার পর ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পান খালেদা জিয়া। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি দ- মওকুফ করে তাকে মুক্তি দেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণের সূচনা করে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রতিবছর এই দিনটিকে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ হিসেবে পালন করে বাংলাদেশ।
সবশেষ ২০১২ সালে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া, তখন তিনি বিরোধীদলীয় নেতা।
এক সময় সেনাকুঞ্জের এ অনুষ্ঠান আলোচনায় থাকত রাজনৈতিক কারণে। দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া দু’জনেই এ অনুষ্ঠানে যেতেন। চির বৈরী এ দুই নেতার সারাবছর দেখা না হলেও সেনাকুঞ্জে তাদের সাক্ষৎ হওয়ার সম্ভাবনা থাকত।
২০১২ সালে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেও সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন দুই নেত্রী। তবে সেদিন তাদের কথা হয়নি।