নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন নতুন বই সবার হাতে দিতে না পারায় পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করেছে সরকার। বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যের সব পাঠ্যবই দিতে না পারায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। বই বিতরণ নিয়ে ‘ষড়যন্ত্র’ হয়েছে দাবি করে উপদেষ্টা বলেছেন, ‘কোন কোন জেলায় ষড়যন্ত্র করে সেগুলো আটকে রাখা হয়েছে।’
পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন এবং বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন ভাতার সরকারি অংশ বা এমপিও বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বই উৎসব
শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই প্রণয়ন এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। করোনাকাল ছাড়া ২০১০ সাল থেকে শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎসব করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে বই তুলে দেয়ার বিষয়টি অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়।
এবার স্কুলগুলোতে সেই আয়োজন নেই। হয়নি বই উৎসব। সব শিক্ষার্থীরা পায়নি নতুন বই।
ছাপানো চলছে
প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ের সংখ্যা ৯ কোটি ৬৪ লাখের মতো। এর মধ্যে গত সোমবার পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে পাঠানোর জন্য ছাড়পত্র হয়েছে ৩ কোটি ৯৪ লাখ বইয়ের। এনসিটিবি সূত্রমতে, নতুন শিক্ষাবর্ষে চার কোটির মতো শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৪০ কোটির বেশি বই ছাপানো হচ্ছে। ছাপানোর কাজ শেষ না হওয়ায় সব শিক্ষার্থী হাতে বই পায়নি।
পুরাতন শিক্ষাক্রমে
জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ এর আলোকে শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম বাদ দিয়ে এক যুগ আগের পুরোনো শিক্ষাক্রমে ফিরছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এবার পাঠ্যবইয়েও অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেক বিষয়বস্তু সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৪৪১টি বই পরিমার্জন করা হয়েছে, যা অনলাইনে এনসিটিবির ওয়েবসাইটে বইয়ের পিডিএফ কপি পাওয়া যাচ্ছে বুধবার ১ জানুয়ারি থেকে।
দুঃখ প্রকাশ শিক্ষা উপদেষ্টার
অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের বইগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে যে এখনই সব দিতে পারা গেল না এজন্য তাদের অভিভাবকদের কাছে এবং তাদের কাছে আমি আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে এটুকু সান্ত¡না, যখন বইগুলো পাবে ছাত্রছাত্রীরা আগের চেয়ে সুন্দর দেখাবে এবং বছরের মাঝখানে পাতাগুলো ছিড়ে যাবে না।’
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘কাউকে দোষারোপ করতে আমি চাই না। এর মধ্যে অনেক ষড়যন্ত্র ছিল। এমনকি বই বিতরণের ক্ষেত্রে কোনো কোনো জেলায় ষড়যন্ত্র করে সেগুলো আটকে রাখা হয়েছিল। কত দিক থেকে আমাদের বিপরীতমুখী শক্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে এটা কল্পনাতীত। বিপরীতমুখী শক্তি কত জায়গা থেকে আসছে সেটা আমরা বুঝতেও পারি না।’
এনসিটিবির বক্তব্য
এনসিটিবি আগেই জানিয়েছিল, বছরের প্রথম দিন এবার নতুন কোনো পাঠ্যবই হাতে পাবে না প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ; যাদের এজন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত।
* প্রেসমালিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা*
কয়েকজন প্রেসমালিক ও কাগজ উৎপাদকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাবো কিছু কিছু প্রেসের মালিককে, কিছু কিছু সবচেয়ে বৃহৎ কাগজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি। তারা আমার ব্যক্তিগত অনুরোধে এখনকার যে বাজারমূল্য বেড়ে গেছে তার থেকে কমিয়ে আগের বাজারমূল্যে কাগজ সরবরাহ করেছেন। প্রেসের কিছু মালিকরাও বলেছেন আমাকে, ছেলেমেয়েরাও তো প্রাণ দিয়েছে তাদের জন্য আমরা কি করব না? তাদের জন্য আমরা সবাইকে দোষারোপ করতে চাচ্ছি না।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করছি কারা কারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন এবং কারা কারা আমাদের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। আমরা সেটা পরবর্তীতে মূল্যায়ন করে দেখব এবং পরবর্তীতে যেই ক্ষমতা আসবে তার কাছে সে তথ্য দিয়ে যাব।’
বইগুলো অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে পরিমার্জন করতে হয়েছে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিদিন এখানে যে পরিবর্তনগুলো হয়েছে তা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে, কোন সেন্টেন্সটা বাদ দিল কোন সেন্টেন্সটা যুক্ত হলো, কে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছে, কে মুক্তিযুদ্ধের নায়ক, সংবিধান লঙ্ঘন হলো কিনা এগুলো নিয়ে অনেক আলোচনা হতে থাকবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই যদি পত্র-পত্রিকায় এ নিয়ে সমালোচনা করা হয়।’
*এক যুগ আগে ফেরা*
২০১২ সালের কারিকুলামে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে অনেক সমালোচনা হয়েছে মন্তব্য করে শিক্ষা উপষ্টো বলেন, ‘আমরা যে নতুন কারিকুলাম এসেছে, তা হঠাৎ করে বদলে দিলাম বদলে দিতে হলো এই তাড়াহুড়ার মধ্যে। তাড়াহুড়া হয়েছে বলেই তো পাঠ্যপুস্তক ছাপানোতে দেরি হল।’
কিন্তু নতুন পাঠ্যক্রমে কিছু বিষয় তুলে ধরে ওয়াহিউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ওই পাঠ্যক্রমে অনেক গুরুতর সমস্যা ছিল বলে তার মনে হয়েছে। সেটি হলো, নবম শ্রেণী ও দশম শ্রেণীতে শুধু সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান পড়ানো হবে, উচ্চতর গণিত ও উচ্চতর বিজ্ঞান পড়ানোর কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। নবম শ্রেণী থেকে উচ্চতর গণিত না পড়ালে উচ্চ মাধ্যমিকে গণিত নেয়া যেত না। তাতে অন্য বিষয়ের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হতো।
তিনি বলেন, ‘এই শিক্ষাক্রম থেকে আগের শিক্ষাক্রমে যাওয়াকে বলা হচ্ছে পশ্চাৎপদে যাচ্ছি কেন? যাচ্ছিলাম বলেই আমি পেছনে ফিরে গেছি। এখান থেকে আমরা নতুন করে শুরু করব, এখন তো আর সময় পাওয়া গেল না। তাই কিছু পরিমার্জন করা হল। কিন্তু অনেক বিষয়েই আমরা এমনভাবে বইগুলো আরও পরিমার্জন করবো যেন ধারাবাহিকতার কোনো সমস্যা না হয়। এবার নবম শ্রেণীতে কিছু হলো।’
* সব বই ২০ জানুয়ারি*
অনুষ্ঠানে এনসিটিবির চেয়ারম্যান এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘গত মঙ্গলবার দিন পর্যন্ত ৪১ কোটি বইয়ের মধ্যে আমরা ৬ কোটি বই পাঠিয়েছি। ৪ কোটি বই ট্রাকে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে এবং আজকের মধ্যে এগুলো পাঠানো হয়ে যেতে পারে। ৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রাথমিকের অবশিষ্ট সব বই, ১০ জানুয়ারির মধ্যে মাধ্যমিকের ৮টি বই আর ২০ জানুয়ারির মধ্যে বাকি সব বই আমরা দিয়ে দিতে পারবো। আর দশম শ্রেণীর বই ৫ জানুয়ারি দিয়ে দিতে পারবো।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ সরকারি অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫
নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন নতুন বই সবার হাতে দিতে না পারায় পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করেছে সরকার। বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যের সব পাঠ্যবই দিতে না পারায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। বই বিতরণ নিয়ে ‘ষড়যন্ত্র’ হয়েছে দাবি করে উপদেষ্টা বলেছেন, ‘কোন কোন জেলায় ষড়যন্ত্র করে সেগুলো আটকে রাখা হয়েছে।’
পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন এবং বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন ভাতার সরকারি অংশ বা এমপিও বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বই উৎসব
শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই প্রণয়ন এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। করোনাকাল ছাড়া ২০১০ সাল থেকে শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎসব করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে বই তুলে দেয়ার বিষয়টি অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়।
এবার স্কুলগুলোতে সেই আয়োজন নেই। হয়নি বই উৎসব। সব শিক্ষার্থীরা পায়নি নতুন বই।
ছাপানো চলছে
প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ের সংখ্যা ৯ কোটি ৬৪ লাখের মতো। এর মধ্যে গত সোমবার পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে পাঠানোর জন্য ছাড়পত্র হয়েছে ৩ কোটি ৯৪ লাখ বইয়ের। এনসিটিবি সূত্রমতে, নতুন শিক্ষাবর্ষে চার কোটির মতো শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৪০ কোটির বেশি বই ছাপানো হচ্ছে। ছাপানোর কাজ শেষ না হওয়ায় সব শিক্ষার্থী হাতে বই পায়নি।
পুরাতন শিক্ষাক্রমে
জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ এর আলোকে শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম বাদ দিয়ে এক যুগ আগের পুরোনো শিক্ষাক্রমে ফিরছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এবার পাঠ্যবইয়েও অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেক বিষয়বস্তু সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৪৪১টি বই পরিমার্জন করা হয়েছে, যা অনলাইনে এনসিটিবির ওয়েবসাইটে বইয়ের পিডিএফ কপি পাওয়া যাচ্ছে বুধবার ১ জানুয়ারি থেকে।
দুঃখ প্রকাশ শিক্ষা উপদেষ্টার
অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের বইগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে যে এখনই সব দিতে পারা গেল না এজন্য তাদের অভিভাবকদের কাছে এবং তাদের কাছে আমি আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে এটুকু সান্ত¡না, যখন বইগুলো পাবে ছাত্রছাত্রীরা আগের চেয়ে সুন্দর দেখাবে এবং বছরের মাঝখানে পাতাগুলো ছিড়ে যাবে না।’
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘কাউকে দোষারোপ করতে আমি চাই না। এর মধ্যে অনেক ষড়যন্ত্র ছিল। এমনকি বই বিতরণের ক্ষেত্রে কোনো কোনো জেলায় ষড়যন্ত্র করে সেগুলো আটকে রাখা হয়েছিল। কত দিক থেকে আমাদের বিপরীতমুখী শক্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে এটা কল্পনাতীত। বিপরীতমুখী শক্তি কত জায়গা থেকে আসছে সেটা আমরা বুঝতেও পারি না।’
এনসিটিবির বক্তব্য
এনসিটিবি আগেই জানিয়েছিল, বছরের প্রথম দিন এবার নতুন কোনো পাঠ্যবই হাতে পাবে না প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ; যাদের এজন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত।
* প্রেসমালিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা*
কয়েকজন প্রেসমালিক ও কাগজ উৎপাদকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাবো কিছু কিছু প্রেসের মালিককে, কিছু কিছু সবচেয়ে বৃহৎ কাগজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি। তারা আমার ব্যক্তিগত অনুরোধে এখনকার যে বাজারমূল্য বেড়ে গেছে তার থেকে কমিয়ে আগের বাজারমূল্যে কাগজ সরবরাহ করেছেন। প্রেসের কিছু মালিকরাও বলেছেন আমাকে, ছেলেমেয়েরাও তো প্রাণ দিয়েছে তাদের জন্য আমরা কি করব না? তাদের জন্য আমরা সবাইকে দোষারোপ করতে চাচ্ছি না।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করছি কারা কারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন এবং কারা কারা আমাদের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। আমরা সেটা পরবর্তীতে মূল্যায়ন করে দেখব এবং পরবর্তীতে যেই ক্ষমতা আসবে তার কাছে সে তথ্য দিয়ে যাব।’
বইগুলো অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে পরিমার্জন করতে হয়েছে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিদিন এখানে যে পরিবর্তনগুলো হয়েছে তা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে, কোন সেন্টেন্সটা বাদ দিল কোন সেন্টেন্সটা যুক্ত হলো, কে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছে, কে মুক্তিযুদ্ধের নায়ক, সংবিধান লঙ্ঘন হলো কিনা এগুলো নিয়ে অনেক আলোচনা হতে থাকবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই যদি পত্র-পত্রিকায় এ নিয়ে সমালোচনা করা হয়।’
*এক যুগ আগে ফেরা*
২০১২ সালের কারিকুলামে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে অনেক সমালোচনা হয়েছে মন্তব্য করে শিক্ষা উপষ্টো বলেন, ‘আমরা যে নতুন কারিকুলাম এসেছে, তা হঠাৎ করে বদলে দিলাম বদলে দিতে হলো এই তাড়াহুড়ার মধ্যে। তাড়াহুড়া হয়েছে বলেই তো পাঠ্যপুস্তক ছাপানোতে দেরি হল।’
কিন্তু নতুন পাঠ্যক্রমে কিছু বিষয় তুলে ধরে ওয়াহিউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ওই পাঠ্যক্রমে অনেক গুরুতর সমস্যা ছিল বলে তার মনে হয়েছে। সেটি হলো, নবম শ্রেণী ও দশম শ্রেণীতে শুধু সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান পড়ানো হবে, উচ্চতর গণিত ও উচ্চতর বিজ্ঞান পড়ানোর কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। নবম শ্রেণী থেকে উচ্চতর গণিত না পড়ালে উচ্চ মাধ্যমিকে গণিত নেয়া যেত না। তাতে অন্য বিষয়ের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হতো।
তিনি বলেন, ‘এই শিক্ষাক্রম থেকে আগের শিক্ষাক্রমে যাওয়াকে বলা হচ্ছে পশ্চাৎপদে যাচ্ছি কেন? যাচ্ছিলাম বলেই আমি পেছনে ফিরে গেছি। এখান থেকে আমরা নতুন করে শুরু করব, এখন তো আর সময় পাওয়া গেল না। তাই কিছু পরিমার্জন করা হল। কিন্তু অনেক বিষয়েই আমরা এমনভাবে বইগুলো আরও পরিমার্জন করবো যেন ধারাবাহিকতার কোনো সমস্যা না হয়। এবার নবম শ্রেণীতে কিছু হলো।’
* সব বই ২০ জানুয়ারি*
অনুষ্ঠানে এনসিটিবির চেয়ারম্যান এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘গত মঙ্গলবার দিন পর্যন্ত ৪১ কোটি বইয়ের মধ্যে আমরা ৬ কোটি বই পাঠিয়েছি। ৪ কোটি বই ট্রাকে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে এবং আজকের মধ্যে এগুলো পাঠানো হয়ে যেতে পারে। ৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রাথমিকের অবশিষ্ট সব বই, ১০ জানুয়ারির মধ্যে মাধ্যমিকের ৮টি বই আর ২০ জানুয়ারির মধ্যে বাকি সব বই আমরা দিয়ে দিতে পারবো। আর দশম শ্রেণীর বই ৫ জানুয়ারি দিয়ে দিতে পারবো।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ সরকারি অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম।