বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দেওয়া ভারতের জন্য দায়িত্ব
ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও কংগ্রেস নেতা মণি শঙ্কর আইয়ার বলেছেন, বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যতদিন প্রয়োজন, ততদিন ভারতে থাকার সুযোগ দেওয়া উচিত। তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনা ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন, তাই তাকে আশ্রয় দেওয়া ভারতের নৈতিক দায়িত্ব।
শনিবার কলকাতায় ষোড়শ এপিজে সাহিত্য উৎসবে অংশ নেওয়ার সময় এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। পিটিআইকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি শেখ হাসিনার অবদান, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেন।
মণি শঙ্কর বলেন, "শেখ হাসিনা আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। তাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, এটা প্রশংসনীয়। যতদিন তিনি থাকতে চান, এমনকি যদি তা তার বাকি জীবন হয়, আমাদের উচিত তাকে সেই সুযোগ দেওয়া।"
গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। বর্তমানে তিনি দিল্লির একটি নিরাপদ আবাসনে রয়েছেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। তার সঙ্গে বাইরের কারো যোগাযোগ নিয়ন্ত্রিত।
বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের অভিযোগে শতাধিক মামলা করেছে। এর মধ্যে গণহত্যা ও গুমের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য তাকে ফেরত চেয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর ভারতকে কূটনৈতিক পত্র পাঠিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ভারত এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো জবাব দেয়নি। বরং তাকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট দেওয়ার মাধ্যমে ভারতে থাকার সুযোগ দীর্ঘায়িত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার প্রসঙ্গেও মণি শঙ্কর আইয়ার কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, “হ্যাঁ, এসব ঘটনা ঘটেছে, তবে অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলো রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনার সমর্থক ছিলেন।”
তার মতে, এ ধরনের ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে পাকিস্তান-ভারত সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন মণি শঙ্কর আইয়ার। তিনি বলেন, “আমাদের পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর সাহস আছে, কিন্তু তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার সাহস নেই।”
পাকিস্তান সন্ত্রাস ছড়ালেও তারাও সন্ত্রাসের শিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তালেবানকে ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা পাকিস্তানের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, কাশ্মির ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলার ক্ষেত্রে মনমোহন ছিলেন সবচেয়ে সফল। মণি শঙ্করের মতে, ভারতের উচিত সেই পথেই এগিয়ে যাওয়া।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে প্রতিনিয়ত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন মণি শঙ্কর। ভারতের উচিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সরাসরি মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক করা, যা উভয় দেশের স্বার্থরক্ষা করবে।
শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থা ও ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির এই দিকটি আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দেওয়া ভারতের জন্য দায়িত্ব
রোববার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও কংগ্রেস নেতা মণি শঙ্কর আইয়ার বলেছেন, বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যতদিন প্রয়োজন, ততদিন ভারতে থাকার সুযোগ দেওয়া উচিত। তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনা ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন, তাই তাকে আশ্রয় দেওয়া ভারতের নৈতিক দায়িত্ব।
শনিবার কলকাতায় ষোড়শ এপিজে সাহিত্য উৎসবে অংশ নেওয়ার সময় এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। পিটিআইকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি শেখ হাসিনার অবদান, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেন।
মণি শঙ্কর বলেন, "শেখ হাসিনা আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। তাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, এটা প্রশংসনীয়। যতদিন তিনি থাকতে চান, এমনকি যদি তা তার বাকি জীবন হয়, আমাদের উচিত তাকে সেই সুযোগ দেওয়া।"
গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। বর্তমানে তিনি দিল্লির একটি নিরাপদ আবাসনে রয়েছেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। তার সঙ্গে বাইরের কারো যোগাযোগ নিয়ন্ত্রিত।
বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের অভিযোগে শতাধিক মামলা করেছে। এর মধ্যে গণহত্যা ও গুমের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য তাকে ফেরত চেয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর ভারতকে কূটনৈতিক পত্র পাঠিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ভারত এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো জবাব দেয়নি। বরং তাকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট দেওয়ার মাধ্যমে ভারতে থাকার সুযোগ দীর্ঘায়িত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার প্রসঙ্গেও মণি শঙ্কর আইয়ার কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, “হ্যাঁ, এসব ঘটনা ঘটেছে, তবে অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলো রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনার সমর্থক ছিলেন।”
তার মতে, এ ধরনের ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে পাকিস্তান-ভারত সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন মণি শঙ্কর আইয়ার। তিনি বলেন, “আমাদের পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর সাহস আছে, কিন্তু তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার সাহস নেই।”
পাকিস্তান সন্ত্রাস ছড়ালেও তারাও সন্ত্রাসের শিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তালেবানকে ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা পাকিস্তানের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, কাশ্মির ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলার ক্ষেত্রে মনমোহন ছিলেন সবচেয়ে সফল। মণি শঙ্করের মতে, ভারতের উচিত সেই পথেই এগিয়ে যাওয়া।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে প্রতিনিয়ত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন মণি শঙ্কর। ভারতের উচিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সরাসরি মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক করা, যা উভয় দেশের স্বার্থরক্ষা করবে।
শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থা ও ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির এই দিকটি আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।