যুক্তরাজ্যে শায়ান রহমানকে ঘিরে বিতর্কের ঝড়
দুর্নীতির অভিযোগে ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যেই আলোচনায় এসেছেন সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান। বাংলাদেশে ধনী ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের পরিবার এবং তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যেও ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
শায়ান রহমান বর্তমানে ব্রিটিশ রাজার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দাতব্য সংস্থা ‘ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট’–এর উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। এই দাতব্য সংস্থাটি ২০০৭ সালে রাজা চার্লস প্রতিষ্ঠা করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল শনিবার এক প্রতিবেদনে লিখেছে, শায়ান রহমান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে। সালমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থপাচার এবং দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শায়ান রহমান ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের পারিবারিক বন্ধু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে এলে শায়ানের ১৩ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বাড়িতে বিনা ভাড়ায় থাকতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। টিউলিপের মা শেখ রেহানা লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে যে বাড়িতে বসবাস করেন, সেটিও শায়ানের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি অফশোর কোম্পানির মালিকানাধীন বলে জানা গেছে।
এছাড়া, শায়ানের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি তুলে ধরে ডেইলি মেইল আরও জানিয়েছে, এসব অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন।
শায়ানের প্রতিক্রিয়া ও ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের বিবৃতি
শায়ানের মুখপাত্রের দাবি, “শায়ান রহমান একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী। তিনি কিংবা তার স্ত্রী কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হননি। শুধুমাত্র সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে তার ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।”
ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টও এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, “আমরা শায়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানি এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।”
সালমান এফ রহমান, তার ছেলে শায়ান এবং পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব ইতোমধ্যে অবরুদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। গত আগস্টে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
সালমান এফ রহমানের পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থপাচার এবং দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে শায়ানের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে।
ব্রিটিশ রাজা চার্লস একসময় শায়ানের প্রশংসা করে বলেছিলেন, “আমাদের সঙ্গে কাজ করা মানুষদের মধ্যে শায়ান অন্যতম।” তিনি ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের বাংলাদেশ প্রকল্পে শায়ানের ভূমিকা নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।
তবে, ডেইলি মেইল ও সানডে টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শায়ানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং তার সম্পদ ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি নিয়ে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে বিতর্ক চলছে।
ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টে শায়ান রহমান আড়াই লাখ পাউন্ড অনুদান দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসও মন্তব্য করেছেন। তিনি বাংলাদেশের অর্থপাচার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শায়ানের ‘দানশীলতা’ নিয়ে রসিকতা করেছেন।
শায়ান রহমান একসময় আইএফআইসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তবে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠনে তিনি পরিচালক পদ হারান।
দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শায়ান রহমান ও তার পরিবারকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় বইছে। ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের মতো প্রতিষ্ঠানে তার অবস্থান এবং বিতর্কিত সম্পদের বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের রাজনীতি এবং মিডিয়ায় আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
যুক্তরাজ্যে শায়ান রহমানকে ঘিরে বিতর্কের ঝড়
রোববার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
দুর্নীতির অভিযোগে ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যেই আলোচনায় এসেছেন সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান। বাংলাদেশে ধনী ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের পরিবার এবং তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যেও ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
শায়ান রহমান বর্তমানে ব্রিটিশ রাজার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দাতব্য সংস্থা ‘ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট’–এর উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। এই দাতব্য সংস্থাটি ২০০৭ সালে রাজা চার্লস প্রতিষ্ঠা করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল শনিবার এক প্রতিবেদনে লিখেছে, শায়ান রহমান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে। সালমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থপাচার এবং দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শায়ান রহমান ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের পারিবারিক বন্ধু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে এলে শায়ানের ১৩ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বাড়িতে বিনা ভাড়ায় থাকতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। টিউলিপের মা শেখ রেহানা লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে যে বাড়িতে বসবাস করেন, সেটিও শায়ানের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি অফশোর কোম্পানির মালিকানাধীন বলে জানা গেছে।
এছাড়া, শায়ানের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি তুলে ধরে ডেইলি মেইল আরও জানিয়েছে, এসব অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন।
শায়ানের প্রতিক্রিয়া ও ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের বিবৃতি
শায়ানের মুখপাত্রের দাবি, “শায়ান রহমান একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী। তিনি কিংবা তার স্ত্রী কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হননি। শুধুমাত্র সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে তার ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।”
ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টও এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, “আমরা শায়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানি এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।”
সালমান এফ রহমান, তার ছেলে শায়ান এবং পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব ইতোমধ্যে অবরুদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। গত আগস্টে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
সালমান এফ রহমানের পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থপাচার এবং দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে শায়ানের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে।
ব্রিটিশ রাজা চার্লস একসময় শায়ানের প্রশংসা করে বলেছিলেন, “আমাদের সঙ্গে কাজ করা মানুষদের মধ্যে শায়ান অন্যতম।” তিনি ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের বাংলাদেশ প্রকল্পে শায়ানের ভূমিকা নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।
তবে, ডেইলি মেইল ও সানডে টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শায়ানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং তার সম্পদ ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি নিয়ে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে বিতর্ক চলছে।
ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টে শায়ান রহমান আড়াই লাখ পাউন্ড অনুদান দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসও মন্তব্য করেছেন। তিনি বাংলাদেশের অর্থপাচার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শায়ানের ‘দানশীলতা’ নিয়ে রসিকতা করেছেন।
শায়ান রহমান একসময় আইএফআইসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তবে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠনে তিনি পরিচালক পদ হারান।
দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শায়ান রহমান ও তার পরিবারকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় বইছে। ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের মতো প্রতিষ্ঠানে তার অবস্থান এবং বিতর্কিত সম্পদের বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের রাজনীতি এবং মিডিয়ায় আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।