alt

জাতীয়

রাজধানীর বেশিরভাগ স্কুলেই পাঠ্যবই ‘সংকট’

রাকিব উদ্দিন : বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

ঢাকার কোনো হাইস্কুলেই সব শ্রেণীর পাঠ্যবই পৌঁছেনি। কোনো শ্রেণীর দুটি, কোনো শ্রেণীর তিনটি করে বই পৌঁছেছে বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে। সব মিলিয়ে ৩০ শতাংশের মতো পাঠ্যবই পেয়েছে রাজধানীর বিদ্যালয়গুলি।

পাঠ্যবই ‘সঙ্কটে’ পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে। সব বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাশ হচ্ছে না। বিনামূল্যের পাঠ্যবই না পেয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকেই ‘নোট-গাইড’ বা সহায়ক বইয়ের পেছনে ছুটছেন। ঢাকায় পাঠ্যবই বিক্রিও হচ্ছে।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সব শ্রেণীর বই না পাওয়ায় বেশির ভাগ স্কুলেই দু’টি বা তিনটি করে ক্লাশ নেয়া হচ্ছে। বাকি সময়টুকু খেলাধুলা ও স্কাউটিংসহ এ সংক্রান্ত কার্যক্রমে ব্যয় করছে স্কুলগুলি। কোনো কোনো স্কুলের শিক্ষক ওয়েবসাইট থেকে পাঠ্যবই ডাউনলোড করে ক্লাশ নিচ্ছেন।

পাঠ্যবই ছাপতে দেরি হওয়ায় সহায়ক বই বিক্রির লাইব্রেরিগুলিতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিক্রিরও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই ধরণের কম-বেশি বই বিক্রি হচ্ছে বলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে সহায়ক বই বিক্রির সঙ্গে জড়িত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলিকে দায়ী করে সেগুলির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে এনসিটিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।

যদিও পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল সংবাদকে বলেছেন, ‘কোনো পেশাদার লাইব্রেরিতে এসব বই বিক্রি হচ্ছে না। বাংলাবাজার ও নীলক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিক্রি হচ্ছে। এক শ্রেণীর লোক বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এসব বই দালালের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বিক্রি করছে।’

রাজধানীর পল্লবীর কালশী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন ২২ জানুয়ারি সংবাদকে জানিয়েছেন, তার প্রতিষ্ঠানটি ‘পাঠ্যবই বিতরণ কেন্দ্র’। এই স্কুল থেকে পল্লবী এলাকার অন্তত ৪০টি প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়। এই স্কুল থেকে চাহিদার অন্তত ৩০ শতাংশের মতো বই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়েছে।

রাজধানীর অন্য একটি থানার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে সংবাদকে জানিয়েছেন, তার থানার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর প্রায় বেশির ভাগ বই সরবরাহ করা হয়েছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর বই পর্যায়ক্রমে যাচ্ছে। আর মাধ্যমিকের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিতরণ করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বই বিতরণ হয়েছে বলে ওই শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি।

এনসিটিবি থেকে জানা গেছে, চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপা হচ্ছে। এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে আট হাজারের বেশি ব্রেইল বই এবং শিক্ষকদের জন্য ছাপা প্রায় ৪১ লাখ সহায়িকা বই ছাপা হচ্ছে। সংস্থার কর্মকর্তাদের দাবি, এ পর্যন্ত ১৩/১৪ কোটি বই ছাপা হয়েছে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান জানিয়েছেন, ২৫ জানুয়ারির মধ্যে পঞ্চম শ্রেণীর বই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌছে যাবে। ২৭-২৮ জানুয়ারির মধ্যে দশম শ্রেণী সব বই চলে যাবে। তখন মোট ৫০ শতাংশ বই হয়ে যাবে। বাকি বইগুলো পরবর্তী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ছাপা শেষ হয়ে যাবে।

পাঠ্যবই ছাপার কাজ পাওয়া একটি প্রিন্টিং প্রেসের স্বত্বাধিকারী জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে একুশে বই মেলা শুরু হচ্ছে। ওই সময় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্যিক বই নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। এরপর মার্চে শুরু হচ্ছে রমজান মাস। তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে কী না সেই বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

ঢাকায় দুই ট্রাক বই জব্দ

বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যবই খোলাবাজারে বিক্রি ও মজুতের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একটি চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এই চক্রের কাছ থেকে দুই ট্রাকভর্তি প্রায় দশ হাজার বই জব্দ করা হয়েছে।

২২ জানুয়ারি বিকেলে পুরান ঢাকার বাংলাবাজার ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে এসব বই জব্দ করা হয়। এ সময় আটক ব্যক্তিরা হলেন সিরাজুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল (৫৫) ও দেলোয়ার হোসেন (৫৬)।

গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা নস্যাৎ করতে কিছু অসাধু চক্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের বই অবৈধ মজুতদারির মাধ্যমে খোলাবাজারে বিক্রি করছে-এ রকম তথ্য পাওয়ার পর ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। ডিবি ওই চক্রকে আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে।’

অভিযানে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণীর বিভিন্ন বিষয়ের প্রায় ১০ হাজার সরকারি পাঠ্যবই জব্দ করা হয়েছে জানিয়ে নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘জব্দ করা বইয়ের দাম প্রায় আট লাখ টাকা।’

ডিবি কর্মকর্তার দাবি, আটককৃত ব্যক্তিরা অবৈধ মজুতদাররা বছরের শুরুতে নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণে সরকারের ‘আন্তরিক প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ’ করতে এবং ‘অবৈধ উপায়ে আর্থিকভাবে লাভবান’ হওয়ার উদ্দেশ্যে এসব বই মজুত করে বিক্রি করে আসছিল।

৯ হাজার বই ‘পাচারের চেষ্টা’

প্রায় ৯ হাজার পাঠ্যবই বিক্রির উদ্দেশ্যে ‘পাচারকালে’ শেরপুর থেকে জব্দ করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ভোরে শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের ধাতিয়াপাড়া গ্রাম থেকে সদর থানার পুলিশ ট্রাকসহ এসব বই জব্দ করে।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে পুলিশ মাহিদুল ইসলাম (৩২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। আটক মাহিদুলের বাড়ি কুড়িগ্রামে জেলার রৌমারী উপজেলায়।

এ বিষয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম বলেন, জব্দ করা বই কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রৌমারী সি জি জামান উচ্চবিদ্যালয় থেকে ট্রাকে বোঝাই করে বিক্রির উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। একটি ‘চক্র’ বর্তমান সরকারের ‘ভাবমূর্তি ক্ষুণœœ’ করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের গুরুতর অপরাধমূলক কাজ করেছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করার জন্য পুলিশ অনুসন্ধান করে দেখছে।

জব্দ করা ট্রাকটিতে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের প্রায় ৯ হাজার বই রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে এসপি আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে মাহিদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় রৌমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী জামাল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। জব্দ করা বইগুলো রৌমারীতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুদ্রণ শিল্প সমিতির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে বলেন, ‘বই পাচার হয়ে ভারতে যাবে? তারা কী আমাদের বই পড়বে?’

তাহলে এক জেলার বই অন্য জেলায় কেন যাচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার ধারণা-বইয়ের চাহিদাপত্র তৈরির সময় অনেক স্কুলই ২/৫ শতাংশ বেশি শিক্ষার্থী দেখায়। এর মধ্যে এবার হয়তো ভর্তি আরও কম হয়েছে। সেজন্য ওইসব ‘অতিরিক্ত’ বই ঢাকায় বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছিল।

ওই নেতা আরও বলেন, এবার ঢাকায় পাঠ্যবই ছাপার কাজ যারা পেয়েছেন তাদের কাজের গতি অন্যদের তুলনায় কম। এজন্য রাজধানীতে বইয়ের চাহিদা বেশি। এই সুযোগে বাংলাবাজার ও নীলক্ষেতের প্রকাশকরা বিভিন্ন জেলা থেকে উদ্বৃত্ত বই সংগ্রহ করে চড়া দামে বিক্রি করে থাকতে পারেন বলেও তার ধারণা।

বই বিক্রি ঠেকাতে অভিযান

পাঠ্যবইয়ের বিক্রি ঠেকাতে এনসিটিবির সহযোগিতায় ‘নিয়মিত অভিযান’ পরিচালনা করছে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই বিক্রির খোঁজ পেয়ে গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর নীলক্ষেতে অভিযান চালায় গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা গেছে, ওইদিন নীলক্ষেতের মিজি বুক হাউজ, বইয়ের দেশ পাবলিকেশন্স, সায়মা বুক হাউজ এবং মামুন বুক হাউজসহ কয়েকটি লাইব্রেরি থেকে বিপুল সংখ্যক বিনামূল্যের পাঠ্যবই উদ্ধার করেন আইনশৃখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। অভিযুক্ত চারটি দোকানের মালকিদের এক হাজার টাকা করে জরিমানা এবং হাফসা বুক সেন্টারের মালিককে সতর্ক করা হয়।

যেসব বই জব্দ করা হয়েছে, এর মধ্যে মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই বেশি। এগুলো ‘বারতোপা, মোল্লা, কচুয়া, কর্ণফুলী ও আনোয়ারা’ প্রিন্টিংয়ের বই বলে অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ওইদিন ইসলামিয়া বই মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সরকারি বই বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা ‘এনএসআই’ কর্মকর্তারা।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান একেএম রিয়াজুল হাসান সংবাদকে বলেছেন, ‘অসৎ প্রেস মালিকরা’ এই কাজ করছে, গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানো হয়েছে। তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার বাংলাবাজার বই মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত ২০ জানুয়ারি গোয়েন্দা সংস্থা ‘এনএসআই’ প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে এনসিটিবি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে অভিযান পরিচালনা করেন।

ওই সময় বাংলাবাজার বই মার্কেটের দুটি দোকান ও একটি গোডাউনে বিভিন্ন প্রেসে ছাপা বই উদ্ধার করা হয়। সরকার প্রিন্টার্স, লেটার অ্যান্ড কালার লিমিটেড, সীমান্ত প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন, মাস্টার সিমেক্স ও সুবর্ণা প্রিন্টিং প্রেসে মুদ্রণ করা মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই জব্দ করা হয়।

এসব বই ‘বই বাজার বিডি’ ও ‘জাহিদ বুক হাউজ’ লাইব্রেরিতে পাওয়া যায়। দুটি লাইব্রেরিকেই এক হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতে একই অপরাধ করলে সর্বোচ্চ জরিমানা ও জেল দেয়া হবে মর্মে সতর্ক করা হয়।

ছবি

পিলখানা হত্যাকাণ্ড : ১৬৮ জন সাজাপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য কারামুক্ত

ছবি

আন্দোলনে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি

ছবি

‘কর্নেল অব দি রেজিমেন্ট’ হিসেবে অভিষিক্ত হলেন সেনাবাহিনী প্রধান

ছবি

জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় মাহমুদুর রহমানের আপিলের রায় ১০ ফেব্রুয়ারি

ছবি

টেলিভিশনে বিজ্ঞাপনের সময়সীমা নির্ধারণে আইনি নোটিশ

ছবি

বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ বৈষম্যমূলক, সংশোধনের দাবি বার সভাপতির

ছবি

ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে নির্বাচন, ভোট হবে ব্যালটে : ইসি মাছউদ

ছবি

বিমানবন্দরের দ্বিতীয় দফার হুমকিও ভুয়া

ছবি

একে একে কারাগার থেকে বের হচ্ছেন মুক্তি পাওয়া বিডিআর জওয়ানরা

ছবি

পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে লাগার্ডের সহায়তা চাইলেন ইউনূস

ছবি

আন্দোলন দমাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন: জাতিসংঘের প্রতিবেদন ‘ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি’

ছবি

সাড়ে ১৫ বছর পর মুক্তি: বিডিআর জওয়ানদের জন্য কারাফটকে স্বজনদের অপেক্ষা

অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জের আবেদন খারিজ, বিচার চলবে

ছবি

সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর শাহবাগ থেকে সরলেন ম্যাটসের শিক্ষার্থীরা

ছবি

শাহজালালে বোমা হুমকির বার্তা আসে পাকিস্তানি নম্বর থেকে : ডিএমপি

ছবি

১৭ বছর পর দখলমুক্ত হলো গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১৫শ’ কোটি টাকার সম্পদ

ছবি

মহার্ঘ ভাতা ও ভ্যাট বৃদ্ধির বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিলেন অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

রেলওয়ের রানিং স্টাফদের দাবিতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন বন্ধের হুঁশিয়ারি

ছবি

ডাভোসে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

ছবি

উড়োজাহাজে বিস্ফোরকের ভুয়া তথ্য, শনাক্ত হলে আইনি ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

মুহাম্মদ ইউনূসকে ২০২৫ ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ

ছবি

রোম থেকে ঢাকাগামী বিমানে বোমা হুমকি: মিথ্যা সংবাদের ভিত্তিতে সতর্কতা

ছবি

মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের পাঠানোর প্রক্রিয়া মার্চের মধ্যে শুরু

ছবি

শাহজালালে বোমা হুমকির বার্তা পাকিস্তানি নম্বর থেকে: ডিএমপি

ছবি

মালয়েশিয়া যেতে অপেক্ষমাণ ১৮ হাজার কর্মীকে মার্চ-এপ্রিলে পাঠানোর উদ্যোগ

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জের আবেদন খারিজ

ছবি

ঔষধ, রেস্তোরাঁ, মোবাইল ও পোশাক খাতে পূর্বের শুল্কহার বহাল

ছবি

ব্রিটিশ দম্পতির হারানো পাসপোর্ট ও তিন লাখ টাকা ৮ ঘণ্টায় উদ্ধার

ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছে ঝুলছিল লাশ

ছবি

বিমানের রোম ফ্লাইটে বোমা পাওয়া যায়নি, ইমিগ্রেশনে আটকা ২৫০ যাত্রী

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের বৈঠক

ছবি

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দিকে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা

ছবি

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস

ছবি

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের রোম ফ্লাইটে ‘বোমা হুমকি’, নিরাপদে ঢাকায় অবতরণ

‘গায়েবি’ ও সাইবার আইনে মত প্রকাশের মামলাগুলো ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রত্যাহারের ঘোষণা আইন উপদেষ্টার

চাঁদাবাজি-ঘুষ বন্ধে বিশেষ ‘স্কোয়াড’ গঠনের সুপারিশ, টাস্কফোর্সের খসড়া প্রতিবেদন

tab

জাতীয়

রাজধানীর বেশিরভাগ স্কুলেই পাঠ্যবই ‘সংকট’

রাকিব উদ্দিন

বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

ঢাকার কোনো হাইস্কুলেই সব শ্রেণীর পাঠ্যবই পৌঁছেনি। কোনো শ্রেণীর দুটি, কোনো শ্রেণীর তিনটি করে বই পৌঁছেছে বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে। সব মিলিয়ে ৩০ শতাংশের মতো পাঠ্যবই পেয়েছে রাজধানীর বিদ্যালয়গুলি।

পাঠ্যবই ‘সঙ্কটে’ পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে। সব বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাশ হচ্ছে না। বিনামূল্যের পাঠ্যবই না পেয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকেই ‘নোট-গাইড’ বা সহায়ক বইয়ের পেছনে ছুটছেন। ঢাকায় পাঠ্যবই বিক্রিও হচ্ছে।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সব শ্রেণীর বই না পাওয়ায় বেশির ভাগ স্কুলেই দু’টি বা তিনটি করে ক্লাশ নেয়া হচ্ছে। বাকি সময়টুকু খেলাধুলা ও স্কাউটিংসহ এ সংক্রান্ত কার্যক্রমে ব্যয় করছে স্কুলগুলি। কোনো কোনো স্কুলের শিক্ষক ওয়েবসাইট থেকে পাঠ্যবই ডাউনলোড করে ক্লাশ নিচ্ছেন।

পাঠ্যবই ছাপতে দেরি হওয়ায় সহায়ক বই বিক্রির লাইব্রেরিগুলিতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিক্রিরও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই ধরণের কম-বেশি বই বিক্রি হচ্ছে বলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে সহায়ক বই বিক্রির সঙ্গে জড়িত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলিকে দায়ী করে সেগুলির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে এনসিটিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।

যদিও পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল সংবাদকে বলেছেন, ‘কোনো পেশাদার লাইব্রেরিতে এসব বই বিক্রি হচ্ছে না। বাংলাবাজার ও নীলক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিক্রি হচ্ছে। এক শ্রেণীর লোক বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এসব বই দালালের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বিক্রি করছে।’

রাজধানীর পল্লবীর কালশী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন ২২ জানুয়ারি সংবাদকে জানিয়েছেন, তার প্রতিষ্ঠানটি ‘পাঠ্যবই বিতরণ কেন্দ্র’। এই স্কুল থেকে পল্লবী এলাকার অন্তত ৪০টি প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়। এই স্কুল থেকে চাহিদার অন্তত ৩০ শতাংশের মতো বই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়েছে।

রাজধানীর অন্য একটি থানার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে সংবাদকে জানিয়েছেন, তার থানার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর প্রায় বেশির ভাগ বই সরবরাহ করা হয়েছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর বই পর্যায়ক্রমে যাচ্ছে। আর মাধ্যমিকের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিতরণ করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বই বিতরণ হয়েছে বলে ওই শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি।

এনসিটিবি থেকে জানা গেছে, চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপা হচ্ছে। এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে আট হাজারের বেশি ব্রেইল বই এবং শিক্ষকদের জন্য ছাপা প্রায় ৪১ লাখ সহায়িকা বই ছাপা হচ্ছে। সংস্থার কর্মকর্তাদের দাবি, এ পর্যন্ত ১৩/১৪ কোটি বই ছাপা হয়েছে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান জানিয়েছেন, ২৫ জানুয়ারির মধ্যে পঞ্চম শ্রেণীর বই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌছে যাবে। ২৭-২৮ জানুয়ারির মধ্যে দশম শ্রেণী সব বই চলে যাবে। তখন মোট ৫০ শতাংশ বই হয়ে যাবে। বাকি বইগুলো পরবর্তী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ছাপা শেষ হয়ে যাবে।

পাঠ্যবই ছাপার কাজ পাওয়া একটি প্রিন্টিং প্রেসের স্বত্বাধিকারী জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে একুশে বই মেলা শুরু হচ্ছে। ওই সময় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্যিক বই নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। এরপর মার্চে শুরু হচ্ছে রমজান মাস। তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে কী না সেই বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

ঢাকায় দুই ট্রাক বই জব্দ

বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যবই খোলাবাজারে বিক্রি ও মজুতের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একটি চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এই চক্রের কাছ থেকে দুই ট্রাকভর্তি প্রায় দশ হাজার বই জব্দ করা হয়েছে।

২২ জানুয়ারি বিকেলে পুরান ঢাকার বাংলাবাজার ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে এসব বই জব্দ করা হয়। এ সময় আটক ব্যক্তিরা হলেন সিরাজুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল (৫৫) ও দেলোয়ার হোসেন (৫৬)।

গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা নস্যাৎ করতে কিছু অসাধু চক্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের বই অবৈধ মজুতদারির মাধ্যমে খোলাবাজারে বিক্রি করছে-এ রকম তথ্য পাওয়ার পর ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। ডিবি ওই চক্রকে আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে।’

অভিযানে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণীর বিভিন্ন বিষয়ের প্রায় ১০ হাজার সরকারি পাঠ্যবই জব্দ করা হয়েছে জানিয়ে নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘জব্দ করা বইয়ের দাম প্রায় আট লাখ টাকা।’

ডিবি কর্মকর্তার দাবি, আটককৃত ব্যক্তিরা অবৈধ মজুতদাররা বছরের শুরুতে নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণে সরকারের ‘আন্তরিক প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ’ করতে এবং ‘অবৈধ উপায়ে আর্থিকভাবে লাভবান’ হওয়ার উদ্দেশ্যে এসব বই মজুত করে বিক্রি করে আসছিল।

৯ হাজার বই ‘পাচারের চেষ্টা’

প্রায় ৯ হাজার পাঠ্যবই বিক্রির উদ্দেশ্যে ‘পাচারকালে’ শেরপুর থেকে জব্দ করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ভোরে শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের ধাতিয়াপাড়া গ্রাম থেকে সদর থানার পুলিশ ট্রাকসহ এসব বই জব্দ করে।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে পুলিশ মাহিদুল ইসলাম (৩২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। আটক মাহিদুলের বাড়ি কুড়িগ্রামে জেলার রৌমারী উপজেলায়।

এ বিষয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম বলেন, জব্দ করা বই কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রৌমারী সি জি জামান উচ্চবিদ্যালয় থেকে ট্রাকে বোঝাই করে বিক্রির উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। একটি ‘চক্র’ বর্তমান সরকারের ‘ভাবমূর্তি ক্ষুণœœ’ করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের গুরুতর অপরাধমূলক কাজ করেছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করার জন্য পুলিশ অনুসন্ধান করে দেখছে।

জব্দ করা ট্রাকটিতে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের প্রায় ৯ হাজার বই রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে এসপি আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে মাহিদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় রৌমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী জামাল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। জব্দ করা বইগুলো রৌমারীতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুদ্রণ শিল্প সমিতির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে বলেন, ‘বই পাচার হয়ে ভারতে যাবে? তারা কী আমাদের বই পড়বে?’

তাহলে এক জেলার বই অন্য জেলায় কেন যাচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার ধারণা-বইয়ের চাহিদাপত্র তৈরির সময় অনেক স্কুলই ২/৫ শতাংশ বেশি শিক্ষার্থী দেখায়। এর মধ্যে এবার হয়তো ভর্তি আরও কম হয়েছে। সেজন্য ওইসব ‘অতিরিক্ত’ বই ঢাকায় বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছিল।

ওই নেতা আরও বলেন, এবার ঢাকায় পাঠ্যবই ছাপার কাজ যারা পেয়েছেন তাদের কাজের গতি অন্যদের তুলনায় কম। এজন্য রাজধানীতে বইয়ের চাহিদা বেশি। এই সুযোগে বাংলাবাজার ও নীলক্ষেতের প্রকাশকরা বিভিন্ন জেলা থেকে উদ্বৃত্ত বই সংগ্রহ করে চড়া দামে বিক্রি করে থাকতে পারেন বলেও তার ধারণা।

বই বিক্রি ঠেকাতে অভিযান

পাঠ্যবইয়ের বিক্রি ঠেকাতে এনসিটিবির সহযোগিতায় ‘নিয়মিত অভিযান’ পরিচালনা করছে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই বিক্রির খোঁজ পেয়ে গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর নীলক্ষেতে অভিযান চালায় গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা গেছে, ওইদিন নীলক্ষেতের মিজি বুক হাউজ, বইয়ের দেশ পাবলিকেশন্স, সায়মা বুক হাউজ এবং মামুন বুক হাউজসহ কয়েকটি লাইব্রেরি থেকে বিপুল সংখ্যক বিনামূল্যের পাঠ্যবই উদ্ধার করেন আইনশৃখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। অভিযুক্ত চারটি দোকানের মালকিদের এক হাজার টাকা করে জরিমানা এবং হাফসা বুক সেন্টারের মালিককে সতর্ক করা হয়।

যেসব বই জব্দ করা হয়েছে, এর মধ্যে মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই বেশি। এগুলো ‘বারতোপা, মোল্লা, কচুয়া, কর্ণফুলী ও আনোয়ারা’ প্রিন্টিংয়ের বই বলে অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ওইদিন ইসলামিয়া বই মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সরকারি বই বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা ‘এনএসআই’ কর্মকর্তারা।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান একেএম রিয়াজুল হাসান সংবাদকে বলেছেন, ‘অসৎ প্রেস মালিকরা’ এই কাজ করছে, গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানো হয়েছে। তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার বাংলাবাজার বই মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত ২০ জানুয়ারি গোয়েন্দা সংস্থা ‘এনএসআই’ প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে এনসিটিবি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে অভিযান পরিচালনা করেন।

ওই সময় বাংলাবাজার বই মার্কেটের দুটি দোকান ও একটি গোডাউনে বিভিন্ন প্রেসে ছাপা বই উদ্ধার করা হয়। সরকার প্রিন্টার্স, লেটার অ্যান্ড কালার লিমিটেড, সীমান্ত প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন, মাস্টার সিমেক্স ও সুবর্ণা প্রিন্টিং প্রেসে মুদ্রণ করা মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই জব্দ করা হয়।

এসব বই ‘বই বাজার বিডি’ ও ‘জাহিদ বুক হাউজ’ লাইব্রেরিতে পাওয়া যায়। দুটি লাইব্রেরিকেই এক হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতে একই অপরাধ করলে সর্বোচ্চ জরিমানা ও জেল দেয়া হবে মর্মে সতর্ক করা হয়।

back to top