রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম সভার মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এই পথচলায় বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের ‘সমর্থন আছে’। প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ সার্থক করতে এবং তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করবো। যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করেছিল, সেটা যেন পরবর্তী সব প্রজন্ম মনে রাখে।’ শনিবার বিকেলে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস এসব কথা বলেন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা কেবলমাত্র সুপারিশগুলো নিয়ে এসেছি, আমরা শুধু সাচিবিক কাজগুলো আপনাদের করে দিলাম। এটা আমার কাজ না, এটা আপনাদের কাজ, যেহেতু আপনারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন।’
তিনি বলেন, ‘আজ আলোচনাটা একাডেমিক না, বাস্তব আলোচনা। কোনটা কাজে লাগাতে পারবো, কোনটা পারবো না সেই বিষয়ে আলোচনা। আমরা কোনোভাবেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে বিতর্কিত হতে দেবো না। জুলাইয়ের যোদ্ধারা ত্যাগ শিকার না করলে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকলেও জবাব খোঁজার আমাদের কোনো সুযোগ থাকতো না। প্রশ্ন আমাদের মনে যতটুকু ছিল, বহু বছর ধরে ছিল, সুযোগ পাইনি। অসংখ্য ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা সেই সুযোগ পেয়েছি।’ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম অধ্যায়ের সময় শেষ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের ছয় মাস পার হয়ে গেল, প্রথম অধ্যায় শেষ। আজকের এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ করলাম। প্রথম পর্ব ছিল প্রস্তুতি। আমাদের প্রস্তুতি পর্বের অনেক কিছু আপনাদের জানা।’ ছাত্রদের আত্মত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যে স্বপ্নের পেছনে ছাত্র-জনতা আত্মত্যাগ করেছে, সেটা সার্থক করতে আমরা যেন এমন একটা দেশ গড়তে পারি যেটা সুশৃঙ্খলভাবে চলবে। যে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার সুযোগ পেয়েছিল, সেই কাঠামো থেকে যেন আমরা বেরিয়ে আসতে পারি।’
তামাশায় পরিণত
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ছোটখাটো একটা হা-ডু-ডু খেলার জন্য আইন বানাই। ফুটবল খেলা তো বটেই, এটা আন্তর্জাতিক খেলা। সে আইন আমরা মেনে চলি, মেনে চলি বলেই খেলাটা খেলা হয়, তামাশা হয় না। আইনগুলো এমনভাবে বানানো হয়েছে, সবাই যেন উপভোগ করে। কিন্তু আমরা আমাদের দেশকে তামাশায় পরিণত করে ফেলেছি। আইন বলে কিছু নেই, নিয়ম বলে কিছু নেই। যারা আত্মত্যাগ করেছে, তারা আমাদের নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে, আমরা যেন সেসব আইন-কানুন পাল্টে ফেলে নতুন বাংলাদেশের জন্য প্রস্তুত হই।’
বৈঠকে যারা ছিলেন
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
বৈঠকে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে- মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন জমির উদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মশিউল আলম। ইসলামী আন্দোলনের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমেদ ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। খেলাফতে মজলিশের প্রতিনিধিদলে ছিলেন আমিরে মজলিশ মাওলানা আবদুল বাছিদ আজাদ ও মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হালদার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেম সেলিম, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরীসহ বিভিন্ন দলের নেতারা। বৈঠকে নাসির উদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক কমিটির চার সদস্যের প্রতিনিধি দলও অংশ নেন। অন্যরা হলেন- আখতার হোসেন, সারজিস আলম ও সামান্তা শারমিন।
*জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর*
প্রেস সচিব বলেন, ‘জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করবে আমাদের নির্বাচনটা কবে হবে।’ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে জানিয়েছেন উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘সেক্ষেত্রে আমরা হয়তো সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারব। এরপর যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, তারা বাকিটা বাস্তবায়ন করবে।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ হবে ছয় মাস। ৬ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে। আমাদের আশা থাকবে, সব রাজনৈতিক দল এটাতে স্বাক্ষর করবে। সেটা হবে জুলাই চার্টার।’
*আলোচনা ছাড়াই বাস্তবায়ন*
সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘আর যেসব ক্ষেত্রে প্রধান ঐকমত্য প্রয়োজন সেটার জন্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।’ শফিকুল আলম বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশকে পুনর্গঠন এবং তারপর আমরা যে রাজনৈতিক সমাধানে যাচ্ছি, কীভাবে আমাদের ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশনটা হবে, তার জন্য আজকে রাজনৈতিক সংলাপের সূচনা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের সূচনা।’ প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে অংশ নিতে দুপুর ২টার পর থেকেই ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আসতে থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বিকেল ৩টার কিছু পরে বৈঠক শুরু হয়।
* জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আলোচনা*
বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিল্পবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘বৈঠকে কমিশন থেকে বলা হয়েছে, কোনো প্রস্তাবনা ঐকমত্য কমিশন বা সরকারের পক্ষ হতে চাপিয়ে দেয়ার মনোভাব তাদের নেই। যেসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হতে পারবে সেই ভিত্তিতে আলাপ-আলোচনা করে তারা চেষ্টা করবে একটি জাতীয় সনদ তৈরির। সেই সনদের ভিত্তিতে পরবর্তীতে জাতীয় নির্বাচন, সংবিধান সংস্কার ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের যে প্রশ্ন বিবেচনা করা হবে।’
শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম সভার মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এই পথচলায় বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের ‘সমর্থন আছে’। প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ সার্থক করতে এবং তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করবো। যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করেছিল, সেটা যেন পরবর্তী সব প্রজন্ম মনে রাখে।’ শনিবার বিকেলে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস এসব কথা বলেন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা কেবলমাত্র সুপারিশগুলো নিয়ে এসেছি, আমরা শুধু সাচিবিক কাজগুলো আপনাদের করে দিলাম। এটা আমার কাজ না, এটা আপনাদের কাজ, যেহেতু আপনারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন।’
তিনি বলেন, ‘আজ আলোচনাটা একাডেমিক না, বাস্তব আলোচনা। কোনটা কাজে লাগাতে পারবো, কোনটা পারবো না সেই বিষয়ে আলোচনা। আমরা কোনোভাবেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে বিতর্কিত হতে দেবো না। জুলাইয়ের যোদ্ধারা ত্যাগ শিকার না করলে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকলেও জবাব খোঁজার আমাদের কোনো সুযোগ থাকতো না। প্রশ্ন আমাদের মনে যতটুকু ছিল, বহু বছর ধরে ছিল, সুযোগ পাইনি। অসংখ্য ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা সেই সুযোগ পেয়েছি।’ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম অধ্যায়ের সময় শেষ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের ছয় মাস পার হয়ে গেল, প্রথম অধ্যায় শেষ। আজকের এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ করলাম। প্রথম পর্ব ছিল প্রস্তুতি। আমাদের প্রস্তুতি পর্বের অনেক কিছু আপনাদের জানা।’ ছাত্রদের আত্মত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যে স্বপ্নের পেছনে ছাত্র-জনতা আত্মত্যাগ করেছে, সেটা সার্থক করতে আমরা যেন এমন একটা দেশ গড়তে পারি যেটা সুশৃঙ্খলভাবে চলবে। যে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার সুযোগ পেয়েছিল, সেই কাঠামো থেকে যেন আমরা বেরিয়ে আসতে পারি।’
তামাশায় পরিণত
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ছোটখাটো একটা হা-ডু-ডু খেলার জন্য আইন বানাই। ফুটবল খেলা তো বটেই, এটা আন্তর্জাতিক খেলা। সে আইন আমরা মেনে চলি, মেনে চলি বলেই খেলাটা খেলা হয়, তামাশা হয় না। আইনগুলো এমনভাবে বানানো হয়েছে, সবাই যেন উপভোগ করে। কিন্তু আমরা আমাদের দেশকে তামাশায় পরিণত করে ফেলেছি। আইন বলে কিছু নেই, নিয়ম বলে কিছু নেই। যারা আত্মত্যাগ করেছে, তারা আমাদের নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে, আমরা যেন সেসব আইন-কানুন পাল্টে ফেলে নতুন বাংলাদেশের জন্য প্রস্তুত হই।’
বৈঠকে যারা ছিলেন
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
বৈঠকে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে- মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন জমির উদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মশিউল আলম। ইসলামী আন্দোলনের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমেদ ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। খেলাফতে মজলিশের প্রতিনিধিদলে ছিলেন আমিরে মজলিশ মাওলানা আবদুল বাছিদ আজাদ ও মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হালদার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেম সেলিম, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরীসহ বিভিন্ন দলের নেতারা। বৈঠকে নাসির উদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক কমিটির চার সদস্যের প্রতিনিধি দলও অংশ নেন। অন্যরা হলেন- আখতার হোসেন, সারজিস আলম ও সামান্তা শারমিন।
*জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর*
প্রেস সচিব বলেন, ‘জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করবে আমাদের নির্বাচনটা কবে হবে।’ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে জানিয়েছেন উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘সেক্ষেত্রে আমরা হয়তো সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারব। এরপর যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, তারা বাকিটা বাস্তবায়ন করবে।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ হবে ছয় মাস। ৬ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে। আমাদের আশা থাকবে, সব রাজনৈতিক দল এটাতে স্বাক্ষর করবে। সেটা হবে জুলাই চার্টার।’
*আলোচনা ছাড়াই বাস্তবায়ন*
সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘আর যেসব ক্ষেত্রে প্রধান ঐকমত্য প্রয়োজন সেটার জন্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।’ শফিকুল আলম বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশকে পুনর্গঠন এবং তারপর আমরা যে রাজনৈতিক সমাধানে যাচ্ছি, কীভাবে আমাদের ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশনটা হবে, তার জন্য আজকে রাজনৈতিক সংলাপের সূচনা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের সূচনা।’ প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে অংশ নিতে দুপুর ২টার পর থেকেই ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আসতে থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বিকেল ৩টার কিছু পরে বৈঠক শুরু হয়।
* জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আলোচনা*
বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিল্পবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘বৈঠকে কমিশন থেকে বলা হয়েছে, কোনো প্রস্তাবনা ঐকমত্য কমিশন বা সরকারের পক্ষ হতে চাপিয়ে দেয়ার মনোভাব তাদের নেই। যেসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হতে পারবে সেই ভিত্তিতে আলাপ-আলোচনা করে তারা চেষ্টা করবে একটি জাতীয় সনদ তৈরির। সেই সনদের ভিত্তিতে পরবর্তীতে জাতীয় নির্বাচন, সংবিধান সংস্কার ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের যে প্রশ্ন বিবেচনা করা হবে।’