সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে উপস্থিত থাকুন বা না থাকুন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
বিচার ‘অবশ্যই’ হবে মন্তব্য করে সরকার প্রধান বলেন, ‘শুধু তিনি নন, তার সঙ্গে যারা জড়িত, তার পরিবারের সদস্য, তার সহযোগী ও ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরাও বিচারের আওতায় আসবেন।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘স্কাই নিউজ’ কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা সর্ম্পকে একথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে গেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত বছরের জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে যে সহিংস দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তাতে জাতিসংঘের হিসেবে প্রায় ১,৪০০ মানুষের প্রাণ গেছে।
ছাত্রজনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন পীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এছাড়া গোপন বন্দিশিবিরের একটি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করার অভিযোগ রয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। ওইসব বন্দিশিবিরে ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে’ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আটকে রাখা, গুম ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটতো বলে অভিযোগ রয়েছে।
হত্যা ও গুমের দুই মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে সরকার ভারতকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠালেও দেশটি তার উত্তর দেয়নি বলে জানান মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শেখ হাসিনাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে, তা তিনি সশরীরে বাংলাদেশে থাকুন বা না থাকুন। ভারতে থাকলেও তার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে।
‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত শেখ হাসিনা সরকারের আমলের কয়েকটি বন্দিশালা সম্প্রতি ঘুরে দেখার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা এমন এক ভয়ঙ্কর ব্যাপার, যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না, অনুভব করতে পারবেন না বা দেখলেও বিশ্বাস করতে পারবেন না।’
স্কাই নিউজ লিখেছে, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে বিরোধী মতের শত শত কর্মীকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ রয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। সেসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেছেন, তাকে ‘রাজনৈতিকভাবে হয়রানি’ করা হচ্ছে।
সারা দেশে আট শতাধিক গোপন বন্দিশিবির পরিচালনায় যারা জড়িত ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
সেসব অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা এবং তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে সময় লাগছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এতে সবাই জড়িত ছিল। পুরো সরকারই এর সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাই কারা নিজেদের আগ্রহে এটা করেছে, কারা সরকারের আদেশে এটা করেছে, আর কারা বাধ্য হয়ে করেছে, এটা নির্ধারণ করা কঠিন।’
আন্দোলনে হতাহতদের পরিবার যেন দ্রত ন্যায়বিচার পায়, সেই প্রত্যাশার চাপ মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর রয়েছে উল্লেখ করে স্কাই নিউজ লিখেছে, অন্তর্বর্তী সরকার থাকতে থাকতেই যাতে সেই বিচার করা যায়, সেই চেষ্টা করছেন তারা।
মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষায়, ‘কিছু অপরাধীর বিচার হবে, কিছু বিচারের প্রক্রিয়ায় থাকবে, আর কেউ কেউ
হয়ত ধরাছেঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে।’
স্কাই নিউজ লিখেছে, দেশের অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব নেয়ার পর নানামুখি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে মুহাম্মদ ইউনূসকে। এর মধ্যে শেখ হাসিনার আমলের দুর্নীতির তদন্তও রয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, তাদের মধ্যে শেখ হাসিনার ভাগ্নি ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকও আছেন। টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘গুরুতর’ মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশে তার ‘বিপুল সম্পদসহ সবকিছুই’ খতিয়ে দেখা হবে।
দুদকের তদন্তে নাম আসার পর লন্ডনে বেশ কয়েকটি বাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়, যেগুলো টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যরা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছ থেকে ‘উপহার’ হিসেবে পেয়েছেন। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ।
লন্ডনে তার একজন মুখপাত্র স্কাই নিউজকে বলেছেন, দুদক অভিযোগের বিষয়ে টিউলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আর তিনি সেসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে উপস্থিত থাকুন বা না থাকুন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
বিচার ‘অবশ্যই’ হবে মন্তব্য করে সরকার প্রধান বলেন, ‘শুধু তিনি নন, তার সঙ্গে যারা জড়িত, তার পরিবারের সদস্য, তার সহযোগী ও ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরাও বিচারের আওতায় আসবেন।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘স্কাই নিউজ’ কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা সর্ম্পকে একথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে গেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত বছরের জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে যে সহিংস দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তাতে জাতিসংঘের হিসেবে প্রায় ১,৪০০ মানুষের প্রাণ গেছে।
ছাত্রজনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন পীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এছাড়া গোপন বন্দিশিবিরের একটি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করার অভিযোগ রয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। ওইসব বন্দিশিবিরে ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে’ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আটকে রাখা, গুম ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটতো বলে অভিযোগ রয়েছে।
হত্যা ও গুমের দুই মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে সরকার ভারতকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠালেও দেশটি তার উত্তর দেয়নি বলে জানান মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শেখ হাসিনাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে, তা তিনি সশরীরে বাংলাদেশে থাকুন বা না থাকুন। ভারতে থাকলেও তার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে।
‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত শেখ হাসিনা সরকারের আমলের কয়েকটি বন্দিশালা সম্প্রতি ঘুরে দেখার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা এমন এক ভয়ঙ্কর ব্যাপার, যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না, অনুভব করতে পারবেন না বা দেখলেও বিশ্বাস করতে পারবেন না।’
স্কাই নিউজ লিখেছে, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে বিরোধী মতের শত শত কর্মীকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ রয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। সেসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেছেন, তাকে ‘রাজনৈতিকভাবে হয়রানি’ করা হচ্ছে।
সারা দেশে আট শতাধিক গোপন বন্দিশিবির পরিচালনায় যারা জড়িত ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
সেসব অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা এবং তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে সময় লাগছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এতে সবাই জড়িত ছিল। পুরো সরকারই এর সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাই কারা নিজেদের আগ্রহে এটা করেছে, কারা সরকারের আদেশে এটা করেছে, আর কারা বাধ্য হয়ে করেছে, এটা নির্ধারণ করা কঠিন।’
আন্দোলনে হতাহতদের পরিবার যেন দ্রত ন্যায়বিচার পায়, সেই প্রত্যাশার চাপ মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর রয়েছে উল্লেখ করে স্কাই নিউজ লিখেছে, অন্তর্বর্তী সরকার থাকতে থাকতেই যাতে সেই বিচার করা যায়, সেই চেষ্টা করছেন তারা।
মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষায়, ‘কিছু অপরাধীর বিচার হবে, কিছু বিচারের প্রক্রিয়ায় থাকবে, আর কেউ কেউ
হয়ত ধরাছেঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে।’
স্কাই নিউজ লিখেছে, দেশের অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব নেয়ার পর নানামুখি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে মুহাম্মদ ইউনূসকে। এর মধ্যে শেখ হাসিনার আমলের দুর্নীতির তদন্তও রয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, তাদের মধ্যে শেখ হাসিনার ভাগ্নি ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকও আছেন। টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘গুরুতর’ মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশে তার ‘বিপুল সম্পদসহ সবকিছুই’ খতিয়ে দেখা হবে।
দুদকের তদন্তে নাম আসার পর লন্ডনে বেশ কয়েকটি বাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়, যেগুলো টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যরা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছ থেকে ‘উপহার’ হিসেবে পেয়েছেন। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ।
লন্ডনে তার একজন মুখপাত্র স্কাই নিউজকে বলেছেন, দুদক অভিযোগের বিষয়ে টিউলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আর তিনি সেসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।