শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী গণপদযাত্রায় নিপীড়িত নারী, চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ Ñসংবাদ
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের বিচারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে একটি গণপদযাত্রা ঠেকিয়ে দিয়েছে পুলিশ। ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’র ব্যানারে পদযাত্রাটি মঙ্গলবার (১১ মার্চ)বেলা ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পৌঁছায়।
সেখান থেকে যমুনার দিকে যেতে ডানে মোড় নিতেই ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেডে ধাক্কাধাক্কি করলে পুলিশ কয়েকদফা লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। ব্যারিকেডের পাশে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন এবং জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পদযাত্রায় অংশ নেয়া আদৃতা রায় নামের একজন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আসছিলাম। পুলিশ আগে থেকেই অবগত ছিল। এখানে আসার পর পুলিশ বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা করেছে, লাঠিপেটা করেছে। ‘যে পুলিশ নিপীড়কদের ধরতে পারে না, চোর-ছিনতাইকারীদের ধরতে পারে না, তারা আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠিপেটা করেছে।’
রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্ম সদস্যদের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে রওনা দেন। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশপাশে সভা-সমাবেশের ওপর ১৪৪ ধারা জারি থাকায় তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে থামিয়ে দেয়া হয় এবং তাদের একটি ছোট প্রতিনিধিদলকে স্মারকলিপি জমা দিতে বলি। এ সময় তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে এবং একজন পুলিশ সদস্যের ওপর চড়াও হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়।’
‘গণআন্দোলন’ গড়ার কথা বলে ফিরে গেল ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবিতে ‘গণআন্দোলন’ গড়ার ঘোষণা দিয়ে ফিরে গেছেন ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে সড়কে নামা বিক্ষোভকারীরা। মঙ্গলবার বিকেলে সড়ক ছাড়ার আগে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে অবস্থান নেন তারা। এদিন ৯ দাবিতে স্মারকলিপি দিতে পদযাত্রা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাওয়ার সময় ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে বেলা ৩টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের বিচারসহ ৯ দাবিতে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পৌঁছান। সেখান থেকে যমুনার দিকে যেতে ডানে মোড় নিতেই ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেডে ধাক্কা দিলে পুলিশ কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
পরে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। আন্দোলনকারীরা সেখানেই বসে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। আর ব্যারিকেডের পাশে ছিল পুলিশ আর জলকামান। আন্দোলনকারীদের স্মারকলিপি দিতে প্রতিনিধিদল পাঠানোর প্রস্তাব দেয় পুলিশ। আন্দোলনকারীরা তাতে রাজিও হন।
তবে কিছুক্ষণ পর স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ‘গণআন্দোলন’ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়ে ফিরে যান তারা। আদৃতা রায় নামের এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনকারী এক বোন আহত হয়ে হাসপাতালে। আমরা আগেই এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলাম, আমরা জানাইছি আসব। সে অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আসতেছিলাম, সেই মিছিলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আদেশ পালন করা পুলিশ হামলা চালিয়েছে।
‘আমাদের অন্যতম দাবি, নিরাপত্তা দিতে না পারা জাহাঙ্গীরকে পদত্যাগ করতে হবে। সে তো পদত্যাগ করলই না, বরং নারীদের নেতৃত্বে একটা মিছিলে পুলিশ দিয়ে হামলা চালাইল। আমাদের পোশাক ছেঁড়া হইছে, লাথি মারা হইছে।’ তিনি বলেন, ‘এই জায়গায় দাঁড়িয়ে যার বাহিনী, যার আন্ডারে চলা বাহিনী, যার ঘোষণায় চলা বাহিনী আমাদের ওপর হামলা চালায়, তাদের সঙ্গে কোনো আপস করতে পারি না।
‘আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর এতদিন ক্ষমা চাননি, এখন আর ক্ষমা চাওয়ার মুখও নাই।’ তিনি বলেন, ‘এখন একমাত্র উপায় গণআন্দোলন গড়ে তোলা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পদত্যাগের আর কোনো পথ বাকি রাখে নাই।’
রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘ওনাদের কর্মসূচি ছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা। হঠাৎ দেখি বাসভবনের দিকে ঢুকে যান। আমাদের প্রস্তুতি ছিল, তখন আমরা তাদের বাধা দেই, বলি ‘সেখানে যাওয়া যাবে না, আপনাদের বক্তব্য বা স্মারকলিপি থাকলে আমি প্রতিনিধি পাঠিয়ে দেব। ‘প্রতিনিধি পাঠাব বলার পর একপক্ষ রাজি হইছে, আরেকপক্ষ ব্যারিকেড ভাঙবেই। এখানে তারা ব্যারিকেড ভাঙছিল, আমাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হচ্ছিল। লাঠিচার্জ করার সুযোগ ছিল না, করিও নাই। বরং তারা রমনার এসিকে আঘাত করেছে।
‘আমরা অত্যন্ত ধৈর্য নিয়ে তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করি। আমাদের ৭ থেকে ৮ জন আহত হয়েছেন। এটা তো স্যাটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট ছিল যে তারা প্রতিনিধি পাঠাবে। পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এই জায়গাটায় যেহেতু ১৪৪ ধারা জারি থাকে, আমরা যেতে দেই নাইÑ এটাই আমাদের অপরাধ। ‘তারা স্মারকলিপি দিতে প্রতিনিধি পাঠানোর কথায় রাজি হইল, এখন এসে বলতেছে যাবে না। এটা নাকি তাদের ব্যাপার।’
ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় পুলিশের ওপর আক্রমণ হয়েছে দাবি ডিএমপির
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি জানান, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা নামে নারী-পুরুষসহ ৬০/৭০ জনের একটি বিক্ষোভকারী দল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা প্রদান করে।
এ সময় পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা নারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। নিকটবর্তী স্থানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করলে তারা উল্টো পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে উদ্ধত ও মারমুখী আচরণ আরম্ভ করে।
তিনি আরও জানান, এ সময় বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নারীদের নখের আঁচড়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন গুরুতর আহত হন। এছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা ডিভিশনের উপপুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম, দুই নারী পুলিশ সদস্য এবং তিনজন পুরুষ কনস্টেবল আহত হন। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের মাধ্যমে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।
ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচার দাবি
ধর্ষণ মামলার বিচার অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করার দাবিতে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী ‘সকাল-সন্ধ্যা অবস্থান’ কর্মসূচি শুরু করেন। পরে সোয়া ১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। তাদের অবরোধের কারণে আধা ঘণ্টার বেশি সময় শাহবাগ মোড় দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বেলা পৌনে ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা আবার জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন।
এ সময় তারা ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ধর্ষকদের বিচার কর, নইলে হাতে চুড়ি পর’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। প্রতিবাদকারীদের একজন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ধর্ষণ পরিস্থিতি আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। বর্তমান সরকার ধর্ষণের বিচারের সময় ১৮০ দিন থেকে কমিয়ে ৯০ দিনে নামিয়ে আনার কথা বলেছেন। আর তদন্ত শেষ করতে বলেছেন ১৫ দিনের মধ্যে।
আমাদের কথা হচ্ছে, ১৫ দিনের মধ্যে যদি তদন্ত শেষ হয়, তাহলে তার বিচার শেষ করতে কেন ৯০ দিন সময় লাগবে? একজন ধর্ষককে কেন বসিয়ে রাখা হবে এতদিন? আমরা দ্রুততম সময়ে ধর্ষকদের ফাঁসি চাই। আমরা আজকে এখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করব, এখানেই ইফতার করব।’
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ছাত্রী হেনস্তা’, মাগুরায় ‘শিশু ধর্ষণ’সহ বিভিন্ন স্থানে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বিদ্বেষের ঘটনায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়েছেন। এর মধ্যে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল গত রোববার বলেন, ধর্ষণ মামলার বিচার ১৮০ দিনের পরিবর্তে ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করার বিধান রেখে আইনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পাশাপাশি আসামির জামিন না দেয়া এবং তদন্তের সময় অর্ধেকে নামিয়ে ১৫ দিন করার ভাবনা রয়েছে।
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী রুভা বলেন, ‘মেয়েরা এখন ঘরেও সেইফ না। বাবার কাছে, শিক্ষকের কাছে ধর্ষিত হচ্ছে। এরপর সে সুস্থ হলেও ট্রমা থাকে, সোসাইটি তাকে খারাপ চোখে দেখে। আমরা এ বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ চাই, আর একটা ধর্ষণের ঘটনাও দেখতে চাই না।’ শাহরিয়ার নামে একজন বলেন, ‘আমরা চব্বিশের গণআন্দোলন করেছি, এরপর কীভাবে ধর্ষকের সাহস হয় আমার বোনকে ধর্ষণ করার? ধর্ষকের কালো হাত ভেঙে দিতে হবে। ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষকের ফাঁসি দিতে হবে। অন্যথায় আমরা ছাত্রসমাজ রাস্তা ছাড়ব না।’
ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ বিন নূর হোসাইন বলেন, ‘একের পর এক ধর্ষণ হয়ে যাচ্ছে। ধর্ষকের শাস্তি যদি সময়মতো দেয়া হতো, পরবর্তী ঘটনাটা ঘটত না।’ এদিকে শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচি ঘিরে শাহবাগে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রথমে শিক্ষার্থীরা জাদুঘরের সামনে টিএসসি থেকে শাহবাগগামী প্রধান সড়কে অবস্থান নেন। পুলিশের অনুরোধে তারা যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে জাদুঘরের সামনে একপাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তখন পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘তাদের শাহবাগ মোড়ে কর্মসূচি ছিল। জনদুর্ভোগ বিবেচনায় তারা জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছে। এখানে তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকবে বলে জানিয়েছে।’
শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী গণপদযাত্রায় নিপীড়িত নারী, চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ Ñসংবাদ
মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের বিচারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে একটি গণপদযাত্রা ঠেকিয়ে দিয়েছে পুলিশ। ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’র ব্যানারে পদযাত্রাটি মঙ্গলবার (১১ মার্চ)বেলা ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পৌঁছায়।
সেখান থেকে যমুনার দিকে যেতে ডানে মোড় নিতেই ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেডে ধাক্কাধাক্কি করলে পুলিশ কয়েকদফা লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। ব্যারিকেডের পাশে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন এবং জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পদযাত্রায় অংশ নেয়া আদৃতা রায় নামের একজন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আসছিলাম। পুলিশ আগে থেকেই অবগত ছিল। এখানে আসার পর পুলিশ বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা করেছে, লাঠিপেটা করেছে। ‘যে পুলিশ নিপীড়কদের ধরতে পারে না, চোর-ছিনতাইকারীদের ধরতে পারে না, তারা আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠিপেটা করেছে।’
রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্ম সদস্যদের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে রওনা দেন। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশপাশে সভা-সমাবেশের ওপর ১৪৪ ধারা জারি থাকায় তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে থামিয়ে দেয়া হয় এবং তাদের একটি ছোট প্রতিনিধিদলকে স্মারকলিপি জমা দিতে বলি। এ সময় তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে এবং একজন পুলিশ সদস্যের ওপর চড়াও হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়।’
‘গণআন্দোলন’ গড়ার কথা বলে ফিরে গেল ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবিতে ‘গণআন্দোলন’ গড়ার ঘোষণা দিয়ে ফিরে গেছেন ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে সড়কে নামা বিক্ষোভকারীরা। মঙ্গলবার বিকেলে সড়ক ছাড়ার আগে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে অবস্থান নেন তারা। এদিন ৯ দাবিতে স্মারকলিপি দিতে পদযাত্রা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাওয়ার সময় ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে বেলা ৩টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের বিচারসহ ৯ দাবিতে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পৌঁছান। সেখান থেকে যমুনার দিকে যেতে ডানে মোড় নিতেই ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেডে ধাক্কা দিলে পুলিশ কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
পরে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। আন্দোলনকারীরা সেখানেই বসে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। আর ব্যারিকেডের পাশে ছিল পুলিশ আর জলকামান। আন্দোলনকারীদের স্মারকলিপি দিতে প্রতিনিধিদল পাঠানোর প্রস্তাব দেয় পুলিশ। আন্দোলনকারীরা তাতে রাজিও হন।
তবে কিছুক্ষণ পর স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ‘গণআন্দোলন’ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়ে ফিরে যান তারা। আদৃতা রায় নামের এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনকারী এক বোন আহত হয়ে হাসপাতালে। আমরা আগেই এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলাম, আমরা জানাইছি আসব। সে অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আসতেছিলাম, সেই মিছিলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আদেশ পালন করা পুলিশ হামলা চালিয়েছে।
‘আমাদের অন্যতম দাবি, নিরাপত্তা দিতে না পারা জাহাঙ্গীরকে পদত্যাগ করতে হবে। সে তো পদত্যাগ করলই না, বরং নারীদের নেতৃত্বে একটা মিছিলে পুলিশ দিয়ে হামলা চালাইল। আমাদের পোশাক ছেঁড়া হইছে, লাথি মারা হইছে।’ তিনি বলেন, ‘এই জায়গায় দাঁড়িয়ে যার বাহিনী, যার আন্ডারে চলা বাহিনী, যার ঘোষণায় চলা বাহিনী আমাদের ওপর হামলা চালায়, তাদের সঙ্গে কোনো আপস করতে পারি না।
‘আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর এতদিন ক্ষমা চাননি, এখন আর ক্ষমা চাওয়ার মুখও নাই।’ তিনি বলেন, ‘এখন একমাত্র উপায় গণআন্দোলন গড়ে তোলা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পদত্যাগের আর কোনো পথ বাকি রাখে নাই।’
রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘ওনাদের কর্মসূচি ছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা। হঠাৎ দেখি বাসভবনের দিকে ঢুকে যান। আমাদের প্রস্তুতি ছিল, তখন আমরা তাদের বাধা দেই, বলি ‘সেখানে যাওয়া যাবে না, আপনাদের বক্তব্য বা স্মারকলিপি থাকলে আমি প্রতিনিধি পাঠিয়ে দেব। ‘প্রতিনিধি পাঠাব বলার পর একপক্ষ রাজি হইছে, আরেকপক্ষ ব্যারিকেড ভাঙবেই। এখানে তারা ব্যারিকেড ভাঙছিল, আমাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হচ্ছিল। লাঠিচার্জ করার সুযোগ ছিল না, করিও নাই। বরং তারা রমনার এসিকে আঘাত করেছে।
‘আমরা অত্যন্ত ধৈর্য নিয়ে তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করি। আমাদের ৭ থেকে ৮ জন আহত হয়েছেন। এটা তো স্যাটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট ছিল যে তারা প্রতিনিধি পাঠাবে। পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এই জায়গাটায় যেহেতু ১৪৪ ধারা জারি থাকে, আমরা যেতে দেই নাইÑ এটাই আমাদের অপরাধ। ‘তারা স্মারকলিপি দিতে প্রতিনিধি পাঠানোর কথায় রাজি হইল, এখন এসে বলতেছে যাবে না। এটা নাকি তাদের ব্যাপার।’
ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় পুলিশের ওপর আক্রমণ হয়েছে দাবি ডিএমপির
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি জানান, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা নামে নারী-পুরুষসহ ৬০/৭০ জনের একটি বিক্ষোভকারী দল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা প্রদান করে।
এ সময় পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা নারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। নিকটবর্তী স্থানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করলে তারা উল্টো পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে উদ্ধত ও মারমুখী আচরণ আরম্ভ করে।
তিনি আরও জানান, এ সময় বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নারীদের নখের আঁচড়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন গুরুতর আহত হন। এছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা ডিভিশনের উপপুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম, দুই নারী পুলিশ সদস্য এবং তিনজন পুরুষ কনস্টেবল আহত হন। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের মাধ্যমে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।
ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচার দাবি
ধর্ষণ মামলার বিচার অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করার দাবিতে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী ‘সকাল-সন্ধ্যা অবস্থান’ কর্মসূচি শুরু করেন। পরে সোয়া ১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। তাদের অবরোধের কারণে আধা ঘণ্টার বেশি সময় শাহবাগ মোড় দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বেলা পৌনে ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা আবার জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন।
এ সময় তারা ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ধর্ষকদের বিচার কর, নইলে হাতে চুড়ি পর’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। প্রতিবাদকারীদের একজন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ধর্ষণ পরিস্থিতি আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। বর্তমান সরকার ধর্ষণের বিচারের সময় ১৮০ দিন থেকে কমিয়ে ৯০ দিনে নামিয়ে আনার কথা বলেছেন। আর তদন্ত শেষ করতে বলেছেন ১৫ দিনের মধ্যে।
আমাদের কথা হচ্ছে, ১৫ দিনের মধ্যে যদি তদন্ত শেষ হয়, তাহলে তার বিচার শেষ করতে কেন ৯০ দিন সময় লাগবে? একজন ধর্ষককে কেন বসিয়ে রাখা হবে এতদিন? আমরা দ্রুততম সময়ে ধর্ষকদের ফাঁসি চাই। আমরা আজকে এখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করব, এখানেই ইফতার করব।’
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ছাত্রী হেনস্তা’, মাগুরায় ‘শিশু ধর্ষণ’সহ বিভিন্ন স্থানে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বিদ্বেষের ঘটনায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়েছেন। এর মধ্যে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল গত রোববার বলেন, ধর্ষণ মামলার বিচার ১৮০ দিনের পরিবর্তে ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করার বিধান রেখে আইনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পাশাপাশি আসামির জামিন না দেয়া এবং তদন্তের সময় অর্ধেকে নামিয়ে ১৫ দিন করার ভাবনা রয়েছে।
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী রুভা বলেন, ‘মেয়েরা এখন ঘরেও সেইফ না। বাবার কাছে, শিক্ষকের কাছে ধর্ষিত হচ্ছে। এরপর সে সুস্থ হলেও ট্রমা থাকে, সোসাইটি তাকে খারাপ চোখে দেখে। আমরা এ বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ চাই, আর একটা ধর্ষণের ঘটনাও দেখতে চাই না।’ শাহরিয়ার নামে একজন বলেন, ‘আমরা চব্বিশের গণআন্দোলন করেছি, এরপর কীভাবে ধর্ষকের সাহস হয় আমার বোনকে ধর্ষণ করার? ধর্ষকের কালো হাত ভেঙে দিতে হবে। ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষকের ফাঁসি দিতে হবে। অন্যথায় আমরা ছাত্রসমাজ রাস্তা ছাড়ব না।’
ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ বিন নূর হোসাইন বলেন, ‘একের পর এক ধর্ষণ হয়ে যাচ্ছে। ধর্ষকের শাস্তি যদি সময়মতো দেয়া হতো, পরবর্তী ঘটনাটা ঘটত না।’ এদিকে শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচি ঘিরে শাহবাগে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রথমে শিক্ষার্থীরা জাদুঘরের সামনে টিএসসি থেকে শাহবাগগামী প্রধান সড়কে অবস্থান নেন। পুলিশের অনুরোধে তারা যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে জাদুঘরের সামনে একপাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তখন পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘তাদের শাহবাগ মোড়ে কর্মসূচি ছিল। জনদুর্ভোগ বিবেচনায় তারা জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছে। এখানে তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকবে বলে জানিয়েছে।’