পুলিশ সংস্কার আইনের সুপারিশমালায় বলা হয়েছে, রাতে বাসা-বাড়িতে পুলিশের তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি বা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
আটক ব্যক্তি বা রিমান্ডে নেয়া আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতিটি থানায় স্বচ্ছ কাচের ঘেরাটোপ দেয়া একটি আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ রুম বা ইন্টারগেশন রুম অবশ্যই থাকবে।
পুলিশের তত্ত্বাবধানে হাজত ও কোর্ট হাজতের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং বন্দিদের কোর্ট থেকে আনা-নেয়ায় ব্যবহৃত যানবাহনগুলোতে মানবিক সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে পরিচ্ছন্নতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে।
নারী আসামিকে যথেষ্ট শালীনতার সঙ্গে নারী পুলিশের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বাসা-বাড়িতে তল্লাশির সময় পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিতে অস্বীকার করলে অথবা সার্চ ওয়ারেন্ট না থাকলে জরুরি যোগাযোগের জন্য নাগরিক নিরাপত্তা বিধানে একটি জরুরি কল সার্ভিস চালু। জব্দকৃত মালামালের যথাযথ তালিকা না হলে এবং তল্লাশি কার্যক্রম সন্দেহজনক মনে হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানানোর জন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বা জেলা পুলিশ সুপার বরাবর জরুরি কল সার্ভিস চালু করার কথা বলা হয়েছে।
অভিযান পরিচালনাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের কাছে জিপিএস ট্র্র্যাকিং সিস্টেম ও ভিডিও রেকর্ডিং ডিভাইসসহ ভেস্ট/পোশাক পরিধান করতে হবে।
থানায় মামলা দায়ের বা এফআইআর গ্রহণ ও তদন্ত কঠোরভাবে সার্কেল অফিসার বা পুলিশ সুপার কর্তৃক নিয়মিত তদারকি জারি রাখতে হবে। কেইস ডায়েরি আদালতে দাখিল করে আদালতের আদেশ ব্যতীত কোনোক্রমেই এফআইআরবহির্ভূত আসামি গ্রেপ্তার করা যাবে না।
ভুয়া বা গায়েবি মামলা : অনিবাসী
বা মৃত বা নিরপরাধ নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য করতে হবে।
অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা দেয়ার অপচর্চা পরিহার করতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্য যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কাউকে এ ধরনের মামলায় হয়রানি করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিচার প্রক্রিয়া সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত মিডিয়ার সামনে কাউকে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে না।
থানায় জিডি, রেকর্ড, মামলা রুজু ও তদন্ত : থানায় জিডি নেয়া বাধ্যতামূলক। কোনোক্রমে জিডি গ্রহণ প্রত্যাখ্যান করা যাবে না। মামলা এফআইআর গ্রহণে কোনো রূপে অনীহা বা বিলম্ব করা যাবে না। ফৌজদারি মামলা তদন্তের জন্য একটি বিশেষায়িত দল গঠন করতে হবে। যাদের তদন্ত সংক্রান্ত ইউনিট ও থানা ব্যতীত অন্যত্র বদলি করা যাবে না। ভবিষ্যতে মামলা পরিচালনা ও তদন্ত একটি ক্যারিয়ার প্ল্যানিংয়ের অধীনে পরিচালিত হতে হবে। তারা ফৌজদারি মামলার প্রসিকিউশনসংক্রান্ত একটি বিশেষ তদন্ত দল হবে।
থানাকেন্দ্রিক দুর্নীতি : থানাকেন্দ্রিক জিডি গ্রহণে কালক্ষেপণ বা ওজর-আপত্তি বা কোনো রকম দুর্নীতির প্রমাণে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। মামলা তদন্তে ব্যয়-বৃদ্ধিসহ জিডি তদন্তে প্রতিটি থানায় বিশেষ বরাদ্দ ও ভাতার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
থানায় দরকারি আসবাবপত্র সরবরাহ ও মেরামতের নিয়মিত ব্যবস্থা করা উচিত। এই জন্য প্রতি থানা বরাবর প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দ করা যেতে পারে।
পুলিশের টহল ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য দরকারি যানবাহন ও জ্বালানি সরবরাহ সুনিশ্চিত করা যেতে পারে। থানায় বাদী-বিবাদী নিয়ে কোনো ধরনের মধ্যস্থতার জন্য বৈঠক বা অন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাবে না।
পুলিশ সংস্কারের পাশাপাশি পুলিশের সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে ৮ ঘণ্টার বেশি কর্মঘণ্টা জন্য প্রণোদনা, স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, আবাসন ব্যবস্থা উন্নয়ন, মানসিক স্বাস্থ্য ও বিনোদনবিষয়ক ব্যবস্থাপনা, সুস্থ কর্মপরিবেশ, আর্থিক প্রণোদনা, নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের সুপারিশ করার উপর মতামত দিয়েছেন।
পুলিশের একজন ডিআইজি বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসব সুপারিশমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী প্রযুক্তিনির্ভর, জবাবদিহিমূলক ও কল্যাণকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে। যার মাধ্যমে মানুষের মানবাধিকার সুরক্ষা ও পুলিশি সেবা সর্বক্ষেত্রে প্রসারিত হবে এবং পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।
শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
পুলিশ সংস্কার আইনের সুপারিশমালায় বলা হয়েছে, রাতে বাসা-বাড়িতে পুলিশের তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি বা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
আটক ব্যক্তি বা রিমান্ডে নেয়া আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতিটি থানায় স্বচ্ছ কাচের ঘেরাটোপ দেয়া একটি আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ রুম বা ইন্টারগেশন রুম অবশ্যই থাকবে।
পুলিশের তত্ত্বাবধানে হাজত ও কোর্ট হাজতের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং বন্দিদের কোর্ট থেকে আনা-নেয়ায় ব্যবহৃত যানবাহনগুলোতে মানবিক সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে পরিচ্ছন্নতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে।
নারী আসামিকে যথেষ্ট শালীনতার সঙ্গে নারী পুলিশের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বাসা-বাড়িতে তল্লাশির সময় পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিতে অস্বীকার করলে অথবা সার্চ ওয়ারেন্ট না থাকলে জরুরি যোগাযোগের জন্য নাগরিক নিরাপত্তা বিধানে একটি জরুরি কল সার্ভিস চালু। জব্দকৃত মালামালের যথাযথ তালিকা না হলে এবং তল্লাশি কার্যক্রম সন্দেহজনক মনে হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানানোর জন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বা জেলা পুলিশ সুপার বরাবর জরুরি কল সার্ভিস চালু করার কথা বলা হয়েছে।
অভিযান পরিচালনাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের কাছে জিপিএস ট্র্র্যাকিং সিস্টেম ও ভিডিও রেকর্ডিং ডিভাইসসহ ভেস্ট/পোশাক পরিধান করতে হবে।
থানায় মামলা দায়ের বা এফআইআর গ্রহণ ও তদন্ত কঠোরভাবে সার্কেল অফিসার বা পুলিশ সুপার কর্তৃক নিয়মিত তদারকি জারি রাখতে হবে। কেইস ডায়েরি আদালতে দাখিল করে আদালতের আদেশ ব্যতীত কোনোক্রমেই এফআইআরবহির্ভূত আসামি গ্রেপ্তার করা যাবে না।
ভুয়া বা গায়েবি মামলা : অনিবাসী
বা মৃত বা নিরপরাধ নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য করতে হবে।
অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা দেয়ার অপচর্চা পরিহার করতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্য যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কাউকে এ ধরনের মামলায় হয়রানি করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিচার প্রক্রিয়া সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত মিডিয়ার সামনে কাউকে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে না।
থানায় জিডি, রেকর্ড, মামলা রুজু ও তদন্ত : থানায় জিডি নেয়া বাধ্যতামূলক। কোনোক্রমে জিডি গ্রহণ প্রত্যাখ্যান করা যাবে না। মামলা এফআইআর গ্রহণে কোনো রূপে অনীহা বা বিলম্ব করা যাবে না। ফৌজদারি মামলা তদন্তের জন্য একটি বিশেষায়িত দল গঠন করতে হবে। যাদের তদন্ত সংক্রান্ত ইউনিট ও থানা ব্যতীত অন্যত্র বদলি করা যাবে না। ভবিষ্যতে মামলা পরিচালনা ও তদন্ত একটি ক্যারিয়ার প্ল্যানিংয়ের অধীনে পরিচালিত হতে হবে। তারা ফৌজদারি মামলার প্রসিকিউশনসংক্রান্ত একটি বিশেষ তদন্ত দল হবে।
থানাকেন্দ্রিক দুর্নীতি : থানাকেন্দ্রিক জিডি গ্রহণে কালক্ষেপণ বা ওজর-আপত্তি বা কোনো রকম দুর্নীতির প্রমাণে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। মামলা তদন্তে ব্যয়-বৃদ্ধিসহ জিডি তদন্তে প্রতিটি থানায় বিশেষ বরাদ্দ ও ভাতার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
থানায় দরকারি আসবাবপত্র সরবরাহ ও মেরামতের নিয়মিত ব্যবস্থা করা উচিত। এই জন্য প্রতি থানা বরাবর প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দ করা যেতে পারে।
পুলিশের টহল ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য দরকারি যানবাহন ও জ্বালানি সরবরাহ সুনিশ্চিত করা যেতে পারে। থানায় বাদী-বিবাদী নিয়ে কোনো ধরনের মধ্যস্থতার জন্য বৈঠক বা অন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাবে না।
পুলিশ সংস্কারের পাশাপাশি পুলিশের সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে ৮ ঘণ্টার বেশি কর্মঘণ্টা জন্য প্রণোদনা, স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, আবাসন ব্যবস্থা উন্নয়ন, মানসিক স্বাস্থ্য ও বিনোদনবিষয়ক ব্যবস্থাপনা, সুস্থ কর্মপরিবেশ, আর্থিক প্রণোদনা, নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের সুপারিশ করার উপর মতামত দিয়েছেন।
পুলিশের একজন ডিআইজি বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসব সুপারিশমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী প্রযুক্তিনির্ভর, জবাবদিহিমূলক ও কল্যাণকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে। যার মাধ্যমে মানুষের মানবাধিকার সুরক্ষা ও পুলিশি সেবা সর্বক্ষেত্রে প্রসারিত হবে এবং পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।