কোনো মামলা না থাকায় তারেক রহমানের দেশে ফিরে রাজনীতি করতে বাধা নেই
হত্যা মামলা থেকে দায়মুক্তির উদ্দেশ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে করা মামলা থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফজ্জামান বাবরসহ ৮ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মুহা. আবু তাহের এই রায় ঘোষণা করেন। ফলে বিচারিক আদালতে তারেক রহমান ও বাবরের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির আইনজীবীরা।
এই মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির হত্যা মামলার আসামি সাফিয়াত সোবাহান সানভীরকে দায়মুক্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে ২১ কোটি টাকা ঘুষ নেয়া হয়। এক এগারোর সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাদী হয়ে মামলাটি করেছিল। ২০০৭ সালের ৪ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করা হয়। মামলাটিতে ২০০৮ সালের ২৪ এপ্রিল তারেক ও বাবরসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চাজশিট দাখিল করে দুদক। পরে ওই বছর ১৪ জুলাই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে।
এই বিষয়ে বিএনপির আইনজীবী বোরহান উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ‘আসামিদের বিপক্ষে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি দুদক। এখন কোনো মামলা না থাকার কারণে তারেক রহমানের দেশে ফিরে রাজনীতি করতে আর কোনো বাধা নেই।’
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারেক রহমান আইনি প্রক্রিয়ায় তার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো থেকে খালাস পেয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন ও তারেক রহমানের মা খালেদা জিয়া রাষ্ট্রের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান গত ৬ আগস্ট। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মামলায় তাদের সাজা হয়েছিল।
সেনা-সমর্থিত এক এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একাধিক দুর্নীতির মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন তারেক রহমান। সেখানে তিনি পরিবারের সঙ্গেই থাকছেন। দেশ ছাড়ার সময় তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে পরে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে দলের নেতৃত্বের ভূমিকায় ফেরেন।
বিগত আওয়মী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা আশা করেছিলেন যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। তারেকের দেশে ফেরা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা হলেও বিএনপি নেতারা কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করেননি। তখন বিএনপির শীর্ষ নেতারা আইনি বাধা কাটানোর কথা জানিয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও তার দেশে ফেরা নিয়ে নানা তথ্যও প্রকাশ করে।
এই বিষয়ে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল সংবাদকে বলেছিলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে আনা সব মামলা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মোকাবিলা করে নিজেকে নির্দোশ প্রমাণ করেই দেশে ফিরবেন।’ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এখন আর কোনো মামলা নেই, তাই শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন।
খালেদা জিয়া ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেকের বিরুদ্ধে এক-এগারো সরকার এবং পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় ৮৭টি মামলা দায়ের হয়েছিল জানিয়েছিলেন তারেক রহমানের আইনজীবী ও বিএনপির আইন সম্পাদক কায়সার কামাল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা, অবৈধ সম্পত্তির মামলা, সিঙ্গাপুর মানি লন্ডারিং মামলা, নড়াইলে মানহানির মামলা, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ছিল এগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই ছয়টি মামলায় তারেক রহমানকে সাজা দেয়া হয়েছিল, কিন্তু আপিল বিভাগ সবগুলোই তার পক্ষে রায় দিয়েছেন।
তারেক রহমানের আরেক আইনজীবী জাকির হোসেন বলেন, ‘এই ছয়টি মামলা বাদে ৫ আগস্টের পর অন্যান্য মামলার অভিযোগপত্র খারিজ করা হয়েছিল। বাকি মামলাগুলো হয় হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছিলেন অথবা স্থগিত করেছিলেন। বিভিন্ন জেলায় দায়ের করা এই মামলাগুলোতে নাশকতা, চাঁদাবাজি এবং মানহানির অভিযোগ ছিল।’
দেশে ফেরার বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষ্য, বিচারিক আদালতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় দেশে ফেরার বাধা কেটে গেছে। তবে কেবল আইনি বাধা নয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরার সঙ্গে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও তার নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত বলেও জানান তারা।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক। খালেদা জিয়া ফেরার কিছুদিন পর তারেক রহমানও দেশে ফিরতে পারেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। গত বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় নোয়াখালী জাতীয়তাবাদী ফোরাম ইউকে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
এম এ মালেক বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করেছিলাম লন্ডনে ঈদ করে দেশে যেতে। তিনি আমাদের অনুরোধ রেখেছেন। এখন তিনি ঈদের পরে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন। ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে না পাওয়া গেলে সময় এদিক-সেদিক হতে পারে। তবে ম্যাডাম দেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।’
কোনো মামলা না থাকায় তারেক রহমানের দেশে ফিরে রাজনীতি করতে বাধা নেই
বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
হত্যা মামলা থেকে দায়মুক্তির উদ্দেশ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে করা মামলা থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফজ্জামান বাবরসহ ৮ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মুহা. আবু তাহের এই রায় ঘোষণা করেন। ফলে বিচারিক আদালতে তারেক রহমান ও বাবরের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির আইনজীবীরা।
এই মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির হত্যা মামলার আসামি সাফিয়াত সোবাহান সানভীরকে দায়মুক্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে ২১ কোটি টাকা ঘুষ নেয়া হয়। এক এগারোর সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাদী হয়ে মামলাটি করেছিল। ২০০৭ সালের ৪ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করা হয়। মামলাটিতে ২০০৮ সালের ২৪ এপ্রিল তারেক ও বাবরসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চাজশিট দাখিল করে দুদক। পরে ওই বছর ১৪ জুলাই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে।
এই বিষয়ে বিএনপির আইনজীবী বোরহান উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ‘আসামিদের বিপক্ষে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি দুদক। এখন কোনো মামলা না থাকার কারণে তারেক রহমানের দেশে ফিরে রাজনীতি করতে আর কোনো বাধা নেই।’
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারেক রহমান আইনি প্রক্রিয়ায় তার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো থেকে খালাস পেয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন ও তারেক রহমানের মা খালেদা জিয়া রাষ্ট্রের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান গত ৬ আগস্ট। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মামলায় তাদের সাজা হয়েছিল।
সেনা-সমর্থিত এক এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একাধিক দুর্নীতির মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন তারেক রহমান। সেখানে তিনি পরিবারের সঙ্গেই থাকছেন। দেশ ছাড়ার সময় তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে পরে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে দলের নেতৃত্বের ভূমিকায় ফেরেন।
বিগত আওয়মী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা আশা করেছিলেন যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। তারেকের দেশে ফেরা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা হলেও বিএনপি নেতারা কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করেননি। তখন বিএনপির শীর্ষ নেতারা আইনি বাধা কাটানোর কথা জানিয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও তার দেশে ফেরা নিয়ে নানা তথ্যও প্রকাশ করে।
এই বিষয়ে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল সংবাদকে বলেছিলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে আনা সব মামলা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মোকাবিলা করে নিজেকে নির্দোশ প্রমাণ করেই দেশে ফিরবেন।’ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এখন আর কোনো মামলা নেই, তাই শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন।
খালেদা জিয়া ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেকের বিরুদ্ধে এক-এগারো সরকার এবং পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় ৮৭টি মামলা দায়ের হয়েছিল জানিয়েছিলেন তারেক রহমানের আইনজীবী ও বিএনপির আইন সম্পাদক কায়সার কামাল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা, অবৈধ সম্পত্তির মামলা, সিঙ্গাপুর মানি লন্ডারিং মামলা, নড়াইলে মানহানির মামলা, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ছিল এগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই ছয়টি মামলায় তারেক রহমানকে সাজা দেয়া হয়েছিল, কিন্তু আপিল বিভাগ সবগুলোই তার পক্ষে রায় দিয়েছেন।
তারেক রহমানের আরেক আইনজীবী জাকির হোসেন বলেন, ‘এই ছয়টি মামলা বাদে ৫ আগস্টের পর অন্যান্য মামলার অভিযোগপত্র খারিজ করা হয়েছিল। বাকি মামলাগুলো হয় হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছিলেন অথবা স্থগিত করেছিলেন। বিভিন্ন জেলায় দায়ের করা এই মামলাগুলোতে নাশকতা, চাঁদাবাজি এবং মানহানির অভিযোগ ছিল।’
দেশে ফেরার বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষ্য, বিচারিক আদালতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় দেশে ফেরার বাধা কেটে গেছে। তবে কেবল আইনি বাধা নয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরার সঙ্গে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও তার নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত বলেও জানান তারা।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক। খালেদা জিয়া ফেরার কিছুদিন পর তারেক রহমানও দেশে ফিরতে পারেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। গত বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় নোয়াখালী জাতীয়তাবাদী ফোরাম ইউকে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
এম এ মালেক বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করেছিলাম লন্ডনে ঈদ করে দেশে যেতে। তিনি আমাদের অনুরোধ রেখেছেন। এখন তিনি ঈদের পরে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন। ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে না পাওয়া গেলে সময় এদিক-সেদিক হতে পারে। তবে ম্যাডাম দেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।’