স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণ প্রক্রিয়া মসৃণ করতে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আমাদের এমপ্লয়মেন্টের ওপর চাপ আসতে পারে, আমাদের বেসরকারি খাতের ওপর চাপ আসতে পারে। কোন-কোন জায়গায় আমাদের পূর্ব সতর্কতা নেওয়া দরকার, সেগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। সম্ভাব্য দুর্যোগ যেগুলো হতে পারে, আমরা সেগুলোর লিস্ট করেছি। একটা উচ্চ পর্যায়ের কমিটি হচ্ছে। সে কমিটি সার্বক্ষণিকভাবে এটাকে তদারকি করবে।”
এই কমিটিও হবে একটি স্বতন্ত্র কাঠামো—যেমন জাপানের জিইটিআর এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআর—যাদের একমাত্র কাজ হবে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন সংক্রান্ত বাণিজ্য বিষয় তদারকি করা।
তিনি বলেন, “কমিটির আর কোনো কাজ নেই। আমরা সদা প্রস্তুত থাকব। শুধু সরকারি লোক থাকবে না, যারা আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এক্সপার্ট আছে, তাদের আনব সেখানে। আমরা প্রাইভেট সেক্টর থেকে লোক নেব। প্রয়োজন হলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, তাদের নিয়েও এই যাত্রা আমরা করব।”
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এলডিসি থেকে উত্তরণ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকা বাংলাদেশ ২০১৮ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করে। মাথাপিছু জাতীয় আয়, মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকির তিনটি মানদণ্ডেই যোগ্যতা অর্জন করায় ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় বাংলাদেশকে এলডিসির তালিকা থেকে উত্তরণের সুপারিশ করা হয়।
২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণ ঘটাবে—এই তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।
বর্তমানে ইউরোপের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাওয়া বাংলাদেশ এই সুবিধা ২০২৬ সালের পর আর পাবে না।
এর মধ্যে মহামারী ও ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাব এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ফলে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উত্তরণ সম্ভব হবে কি না, তা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি প্রশ্ন ছিল।
তবে ১৪ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, সময় পেছানো হবে না।
মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আরেকটি বৈঠক হয়, যার বিষয়ে জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, “আজকের মিটিংয়ে আমরা আইডেন্টিফাই করেছি, কোন-কোন জিনিসে আমরা শক্ত অবস্থায় আছি, কোন-কোন জিনিসে আরো শক্ত হতে হবে। এগুলো আমরা পর্যালোচনা করেছি। এলডিসির উড়োজাহাজ এখন আকাশে উড়ছে। আমরা মোটামুটি সেটিসফায়েড যে আমাদের প্লেন চলবে এবং ক্র্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা আমাদের তেমন নাই। ২০২৬ সালের মধ্যে আমরা উত্তরণ করতে পারব ইনশাআল্লাহ।”
তিনি বলেন, “আমাদের থেকে অনেক দুর্বল দেশ বেরিয়ে গেছে। ভুটান কোভিডের পর বেরিয়ে গেছে। আমরা কেন পারব না? আমাদের বের না হয়ে ফিরে আসার সুযোগ নেই।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “আজকে মিটিংয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আমাদের সিদ্ধান্ত কিন্তু নেওয়া হয়ে গেছে, এখন আমাদের পুরো গতিতে এগোতে হবে। সে অনুযায়ী যত ধরনের প্রস্তুতি দরকার সেটা উনি নিতে বলেছেন, যাতে কোনো খাত ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, বরং যেন আমরা এটা থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারি।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অল্প সংস্কার হলে ডিসেম্বরের মধ্যে, আর বেশি সংস্কার হলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
এই সংস্কার কতটা হবে—সে বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, “এই পুরো জিনিসটা নির্ভর করছে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর যে আলোচনা হচ্ছে সেটার ওপর। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো যে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবে, সেটার উপরে নির্ভর করবে যে আমরা আসলে কতটুকু সংস্কার করতে যাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “সেই সময়ে আসলে সিদ্ধান্ত হবে যে কম সংস্কারে আমরা যাব, নাকি বেশি। যদি এমন হয় যে আমরা ২০০টা সংস্কার করব, তার মধ্যে কি ১০টা এখন করব, বাকিটা কি যারা রাজনৈতিক দল আসবে তারা করবে—এই পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার ওপর।”
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণ প্রক্রিয়া মসৃণ করতে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আমাদের এমপ্লয়মেন্টের ওপর চাপ আসতে পারে, আমাদের বেসরকারি খাতের ওপর চাপ আসতে পারে। কোন-কোন জায়গায় আমাদের পূর্ব সতর্কতা নেওয়া দরকার, সেগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। সম্ভাব্য দুর্যোগ যেগুলো হতে পারে, আমরা সেগুলোর লিস্ট করেছি। একটা উচ্চ পর্যায়ের কমিটি হচ্ছে। সে কমিটি সার্বক্ষণিকভাবে এটাকে তদারকি করবে।”
এই কমিটিও হবে একটি স্বতন্ত্র কাঠামো—যেমন জাপানের জিইটিআর এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআর—যাদের একমাত্র কাজ হবে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন সংক্রান্ত বাণিজ্য বিষয় তদারকি করা।
তিনি বলেন, “কমিটির আর কোনো কাজ নেই। আমরা সদা প্রস্তুত থাকব। শুধু সরকারি লোক থাকবে না, যারা আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এক্সপার্ট আছে, তাদের আনব সেখানে। আমরা প্রাইভেট সেক্টর থেকে লোক নেব। প্রয়োজন হলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, তাদের নিয়েও এই যাত্রা আমরা করব।”
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এলডিসি থেকে উত্তরণ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকা বাংলাদেশ ২০১৮ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করে। মাথাপিছু জাতীয় আয়, মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকির তিনটি মানদণ্ডেই যোগ্যতা অর্জন করায় ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় বাংলাদেশকে এলডিসির তালিকা থেকে উত্তরণের সুপারিশ করা হয়।
২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণ ঘটাবে—এই তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।
বর্তমানে ইউরোপের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাওয়া বাংলাদেশ এই সুবিধা ২০২৬ সালের পর আর পাবে না।
এর মধ্যে মহামারী ও ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাব এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ফলে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উত্তরণ সম্ভব হবে কি না, তা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি প্রশ্ন ছিল।
তবে ১৪ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, সময় পেছানো হবে না।
মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আরেকটি বৈঠক হয়, যার বিষয়ে জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, “আজকের মিটিংয়ে আমরা আইডেন্টিফাই করেছি, কোন-কোন জিনিসে আমরা শক্ত অবস্থায় আছি, কোন-কোন জিনিসে আরো শক্ত হতে হবে। এগুলো আমরা পর্যালোচনা করেছি। এলডিসির উড়োজাহাজ এখন আকাশে উড়ছে। আমরা মোটামুটি সেটিসফায়েড যে আমাদের প্লেন চলবে এবং ক্র্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা আমাদের তেমন নাই। ২০২৬ সালের মধ্যে আমরা উত্তরণ করতে পারব ইনশাআল্লাহ।”
তিনি বলেন, “আমাদের থেকে অনেক দুর্বল দেশ বেরিয়ে গেছে। ভুটান কোভিডের পর বেরিয়ে গেছে। আমরা কেন পারব না? আমাদের বের না হয়ে ফিরে আসার সুযোগ নেই।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “আজকে মিটিংয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আমাদের সিদ্ধান্ত কিন্তু নেওয়া হয়ে গেছে, এখন আমাদের পুরো গতিতে এগোতে হবে। সে অনুযায়ী যত ধরনের প্রস্তুতি দরকার সেটা উনি নিতে বলেছেন, যাতে কোনো খাত ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, বরং যেন আমরা এটা থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারি।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অল্প সংস্কার হলে ডিসেম্বরের মধ্যে, আর বেশি সংস্কার হলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
এই সংস্কার কতটা হবে—সে বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, “এই পুরো জিনিসটা নির্ভর করছে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর যে আলোচনা হচ্ছে সেটার ওপর। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো যে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবে, সেটার উপরে নির্ভর করবে যে আমরা আসলে কতটুকু সংস্কার করতে যাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “সেই সময়ে আসলে সিদ্ধান্ত হবে যে কম সংস্কারে আমরা যাব, নাকি বেশি। যদি এমন হয় যে আমরা ২০০টা সংস্কার করব, তার মধ্যে কি ১০টা এখন করব, বাকিটা কি যারা রাজনৈতিক দল আসবে তারা করবে—এই পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার ওপর।”
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।