জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বেশিরভাগ সুপারিশে সমর্থন জানালেও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ আইন ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি হবেন কিনা এমন সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলের কাছেই থাকা উচিত এবং সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকা সর্বোত্তম বলে মনে করে বিএনপি।
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বেশিরভাগ সুপারিশে বিএনপির সমর্থনের কথা জানালেন সালাহউদ্দীন আহমেদ
পার্লামেন্ট হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট, নিম্নকক্ষে ৪০০ আসন, এরমধ্যে নারীদের ১০০ আসন এবং উচ্চকক্ষে ১০০ আসনের সুপারিশের বিষয়ে বিএনপি একমত
প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনা মেনেই বৈঠক করা হচ্ছে, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠক শুরু হতে পারে: আলী রীয়াজ
তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব?্যবহার করা যাবে না, এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছে দলটি। এছাড়া কোনো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এমপিরা থাকতে পারবে না এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রস্তাবেও একমত পোষণ করেছে তারা। সংবিধান সংশোধনীর সব ক্ষেত্রে গণভোটের দরকার নেই, তবে নির্দিষ্ট আর্টিকেল নিয়ে গণভোটের ব্যবস্থা করতে চাইলে সেটা পরবর্তী সংসদে আলোচনা করে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছে তারা। ন?্যায়পাল নিয়োগে ক্ষেত্রেও কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপি একমত হয়েছে।
মঙ্গলবার, (২২ এপ্রিল) পাঁচ কমিশনের দেয়া সুপারিশগুলোর ওপর মতামত দিতে তৃতীয় দিনের মতো ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। বেলা ১১টা ১০ মিনিটে জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই আলোচনা শুরু হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এবং রোববার দিনভর আলোচনার পরে বৈঠক মুলতবি করা হয়েছিল।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের বেশিরভাগ সুপারিশে বিএনপির সমর্থন রয়েছে। আপত্তি রয়েছে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ আইন, মন্ত্রিপরিষদে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব কমানো নিয়ে।’ তিনি জানান, পার্লামেন্ট হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট, নিম্নকক্ষে ৪০০ আসন থাকবে, এর মধ্যে নারীদের জন্য ১০০ আসন রাখা এবং উচ্চকক্ষে ১০০ আসনের সুপারিশের বিষয়ে বিএনপি একমত।
আর ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় অনেক বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। কিছু বিষয়ে ভিন্নতা থাকলেও সেসব সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে। বৈঠকে যেসব প্রস্তাব উঠেছে সেসব নিয়ে সংশ্লিষ্ট কমিশনের সঙ্গেও আলোচনা করবে ঐকমত্য কমিশন।’
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে সালাহউদ্দীন বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয়। জুডিশিয়ারির সম্পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাইলে এপিলেট ডিভিশন থেকে অন্তত দুই থেকে তিনজনের অপশন রাখা যেতে পারে। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতির পরিবর্তে তিনজন সিনিয়র বিচারপতি থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে বিএনপি।’ আর প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনা আমাদের অঙ্গীকার। পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, পরে এক মেয়াদ বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে আমরা মত দিয়েছি। একই ব?্যক্তি সংসদ নেতা ও দলীয়প্রধান হবেন না, এটির সঙ্গে একমত হইনি, কারণ প্রধানমন্ত্রীর কাছে সংসদ নেতার পদ থাকা উচিত। বিষয়টি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত, দলের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি হবেন কিনা।’ রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য ৪৮(৩) এর পর নতুন বিধান যুক্ত করে কী কী ক্ষমতা দেয়া হবে তা আলাদা করে উল্লেখ করার পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি।
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির তৃতীয় এই বৈঠকে বিচার
বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগের দুই বৈঠকে প্রজাতন্ত্র, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, মৌলিক অধিকার, আইন বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ, সংবিধান সংস্কার, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এসিসি) প্রভৃতি বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়। গত রোববারের দ্বিতীয় বৈঠকে আলোচনা যেখানে শেষ হয়েছে সেখানে থেকে তারা আবার আলোচনা শুরু করেন বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দীন আহমেদ।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অষ্টম, নবম, দশম, দ্বাদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্ব অবস্থা ফিরে যেতে চায় বলে ঐকমত্য কমিশনকে বিএনপি জানায়। ধর্মনিরপেক্ষতার বিলুপ্ত করার সঙ্গে একমত বিএনপি। সাম?্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার আনার ক্ষেত্রেও তারা একমত। এগুলো মৌলিক অধিকারে আনার বিষয়ে কথা বলেছে বিএনপি নেতারা।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কার তদারকির জন্য দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করা হয়। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আয়োজনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। সেদিন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রথম বৈঠক হয়।
এরপর সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চায় ঐকমত্য কমিশন। ৩৪টি দল তাদের মতামত তুলে ধরে, যাদের সঙ্গে এখন আলাদা করে বৈঠক করছে কমিশন। ইতোমধ্যে ১৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে কমিশন।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনা মেনেই বৈঠক করা হচ্ছে। প্রতিদিন আলোচনার বিষয়গুলো তাকে অবহিত করা হচ্ছে। তিনি দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।’ মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠক শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।
আলোচনায় বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাঈল জবিউল্লাহ, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল ও সাবেক সচিব আবু মো. মনিরুজ্জামান খান।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিশন সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, বিচারপতি এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বেশিরভাগ সুপারিশে সমর্থন জানালেও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ আইন ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি হবেন কিনা এমন সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলের কাছেই থাকা উচিত এবং সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকা সর্বোত্তম বলে মনে করে বিএনপি।
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বেশিরভাগ সুপারিশে বিএনপির সমর্থনের কথা জানালেন সালাহউদ্দীন আহমেদ
পার্লামেন্ট হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট, নিম্নকক্ষে ৪০০ আসন, এরমধ্যে নারীদের ১০০ আসন এবং উচ্চকক্ষে ১০০ আসনের সুপারিশের বিষয়ে বিএনপি একমত
প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনা মেনেই বৈঠক করা হচ্ছে, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠক শুরু হতে পারে: আলী রীয়াজ
তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব?্যবহার করা যাবে না, এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছে দলটি। এছাড়া কোনো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এমপিরা থাকতে পারবে না এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রস্তাবেও একমত পোষণ করেছে তারা। সংবিধান সংশোধনীর সব ক্ষেত্রে গণভোটের দরকার নেই, তবে নির্দিষ্ট আর্টিকেল নিয়ে গণভোটের ব্যবস্থা করতে চাইলে সেটা পরবর্তী সংসদে আলোচনা করে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছে তারা। ন?্যায়পাল নিয়োগে ক্ষেত্রেও কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপি একমত হয়েছে।
মঙ্গলবার, (২২ এপ্রিল) পাঁচ কমিশনের দেয়া সুপারিশগুলোর ওপর মতামত দিতে তৃতীয় দিনের মতো ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। বেলা ১১টা ১০ মিনিটে জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই আলোচনা শুরু হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এবং রোববার দিনভর আলোচনার পরে বৈঠক মুলতবি করা হয়েছিল।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের বেশিরভাগ সুপারিশে বিএনপির সমর্থন রয়েছে। আপত্তি রয়েছে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ আইন, মন্ত্রিপরিষদে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব কমানো নিয়ে।’ তিনি জানান, পার্লামেন্ট হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট, নিম্নকক্ষে ৪০০ আসন থাকবে, এর মধ্যে নারীদের জন্য ১০০ আসন রাখা এবং উচ্চকক্ষে ১০০ আসনের সুপারিশের বিষয়ে বিএনপি একমত।
আর ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় অনেক বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। কিছু বিষয়ে ভিন্নতা থাকলেও সেসব সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে। বৈঠকে যেসব প্রস্তাব উঠেছে সেসব নিয়ে সংশ্লিষ্ট কমিশনের সঙ্গেও আলোচনা করবে ঐকমত্য কমিশন।’
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে সালাহউদ্দীন বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয়। জুডিশিয়ারির সম্পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাইলে এপিলেট ডিভিশন থেকে অন্তত দুই থেকে তিনজনের অপশন রাখা যেতে পারে। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতির পরিবর্তে তিনজন সিনিয়র বিচারপতি থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে বিএনপি।’ আর প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনা আমাদের অঙ্গীকার। পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, পরে এক মেয়াদ বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে আমরা মত দিয়েছি। একই ব?্যক্তি সংসদ নেতা ও দলীয়প্রধান হবেন না, এটির সঙ্গে একমত হইনি, কারণ প্রধানমন্ত্রীর কাছে সংসদ নেতার পদ থাকা উচিত। বিষয়টি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত, দলের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি হবেন কিনা।’ রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য ৪৮(৩) এর পর নতুন বিধান যুক্ত করে কী কী ক্ষমতা দেয়া হবে তা আলাদা করে উল্লেখ করার পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি।
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির তৃতীয় এই বৈঠকে বিচার
বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগের দুই বৈঠকে প্রজাতন্ত্র, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, মৌলিক অধিকার, আইন বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ, সংবিধান সংস্কার, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এসিসি) প্রভৃতি বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়। গত রোববারের দ্বিতীয় বৈঠকে আলোচনা যেখানে শেষ হয়েছে সেখানে থেকে তারা আবার আলোচনা শুরু করেন বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দীন আহমেদ।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অষ্টম, নবম, দশম, দ্বাদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্ব অবস্থা ফিরে যেতে চায় বলে ঐকমত্য কমিশনকে বিএনপি জানায়। ধর্মনিরপেক্ষতার বিলুপ্ত করার সঙ্গে একমত বিএনপি। সাম?্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার আনার ক্ষেত্রেও তারা একমত। এগুলো মৌলিক অধিকারে আনার বিষয়ে কথা বলেছে বিএনপি নেতারা।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কার তদারকির জন্য দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করা হয়। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আয়োজনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। সেদিন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রথম বৈঠক হয়।
এরপর সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চায় ঐকমত্য কমিশন। ৩৪টি দল তাদের মতামত তুলে ধরে, যাদের সঙ্গে এখন আলাদা করে বৈঠক করছে কমিশন। ইতোমধ্যে ১৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে কমিশন।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনা মেনেই বৈঠক করা হচ্ছে। প্রতিদিন আলোচনার বিষয়গুলো তাকে অবহিত করা হচ্ছে। তিনি দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।’ মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠক শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।
আলোচনায় বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাঈল জবিউল্লাহ, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল ও সাবেক সচিব আবু মো. মনিরুজ্জামান খান।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিশন সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, বিচারপতি এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।