চট্টগ্রাম ও খুলনায় দুইজনকে প্রকাশ্যে গুলি এবং নরসিংদী ও ফেনীতে দুইজনকে কুপিয়ে হত্যা
চট্টগ্রামের রাউজান ও খুলনায় মঙ্গলবার, (২২ এপ্রিল) দুইজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া নরসিংদীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, এক ইউপি সদস্য এবং ফেনীতে একজন বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এছাড়া গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মামলায় হত্যার ঘটনা যুক্ত হবে।
রাউজান প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের রাউজানে মো. ইব্রাহিম (২৬) নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গাজীপাড়া এলাকার বাজারে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম ওই এলাকার মাটি ও বালির ব্যবসায়ী মো. আলমের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিএনজি অটোরিকশা করে এসে অতর্কিতভাবে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গুলি করে ইব্রাহিমকে হত্যা করে।
ঘটনাস্থল থেকে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহতের মা জানান, আমি কিস্তি দিতে গিয়েছিলাম। আমার ছেলে ঘুমিয়ে ছিল। তাকে কে বা কারা ফোন করে ডেকে নিয়ে আসে। পরে জানতে পারি আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে। বাবা মো. আলম বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নাই।
নিহতের চাচা ও রাউজান ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব আবদুল হালিম বলেন, আমরা বাজারের জানে আলমের চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম। অতর্কিতভাবে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালায়। আমাকেও ফায়ার করেছিল। পালিয়ে প্রাণে বেঁচে যাই।
একইদিন উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নে মো. নাইম নামের এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ বিষয়ে রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এক যুবককে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। তদন্ত করে বিস্তারিত জানাবো।
খুলনা থেকে নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানান, খুলনার ফুলতলায় সুমন মোল্লা (৩২) নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে একদল লোক। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে ফুলতলার জামিরা বাজারসংলগ্ন পিপরাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ফুলতলা থানার ওসি মো. জেল্লাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে। পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। সুমন মোল্লার বাড়ি ফুলতলার পিপরাইল গ্রামে। সে ওই গ্রামের রকিব উদ্দিন মোল্লার ছেলে।
ওসি আরও বলেন, কারা কী কারণে তাকে হত্যা করেছে তা এখনও জানা যায়নি। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজে আনা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে সুমন মোল্লা মোটরসাইকেল নিয়ে জামিরা বাজারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। বাড়ি থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর পিপরাইল নামক স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলে থাকা তিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তার গতিপথ রোধ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগে তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তারা। গুলি তার ডান থুতনি ভেদ করে বের
হয়ে যায়। এ সময়ে সুমন মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পাশের একটি ধান ক্ষেতে পড়ে যায়।
পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফুলতলা থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুজ্জামান খান বলেন, নিহতের বিরুদ্ধে থানায় মামলা আছে। সেই মামলায় তিনি কারাগারেও ছিলেন।
নরসিংদী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নরসিংদীতে ইউপি সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আমির হোসেন সরকারকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার আলোকবালীতে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত আমির হোসেন সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি আলোকবালী গ্রামের আব্দুল হক মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, চরাঞ্চলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধ থাকায় গত ৫ আগস্টের পর হতে এলাকা ছাড়া ছিলেন ইউপি সদস্য আমির হোসেন সরকার। প্রবাস ফেরত ভাইকে দেখতে গত মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেন তিনি। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমির হোসেনের ওপর হামলা চালায়। এতে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয় আমির হোসেন। স্বজনরা গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্পিডবোটে করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নদীতে কচুরিপানার জট থাকায় হাসপাতালে নিতে দেরি হওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। নরসিংদী সদর থানার ওসি মো. এমদাদুল হক বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করছে। আধিপত্য নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ফেনীর সোনাগাজীতে আবুল হাসেম (৪০) নামের বিএনপির এক কর্মীকে এলোপাতারি কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার সকালে সোনাগাজী-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের ওলামা বাজারের ইসলামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা বোরকা পরে এসে হামলা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাসেল (৩৫) নামের এক যুবককে আটক করছে পুলিশ।
নিহত আবুল হাসেম সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের পশ্চিম চরদরবেশ গ্রামের শুক্কুর মিয়ার ছেলে। তিনি সোনাগাজী পৌরসভার ইসলাম মুহুরি রোড এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। নিহত আবুল হাসেম সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ওরফে গিয়াস চেয়ারম্যানের সহযোগী ছিলেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের মন্ডলের হাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষে আহত মাইদুল ইসলাম বাদশা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় মন্ডলের হাটে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয়রা মানববন্ধন করেছেন।
গত ১৩ এপ্রিল হাটের ভিতরে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক বাবু মিয়ার ওষুধের দোকানের সামনে রাখা বেঞ্চের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা শফিকুল ইসলামের মোটরসাইকের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে বাবু ও শফিকুলের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় সংঘর্ষ বাধে। এতে মাইদুল ইসলাম বাদশাসহ বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, গোলাম কিবরিয়া মির্জা, আলম মিয়া, যুবদল নেতা আব্দুর রহমান, ছাত্রদল নেতা আহসান হাবিব আহত হয়।
এ ঘটনায় ইতোমধ্যে পুলিশ হোসাইন মোহাম্মদ নাজমুল ও জাকিউল ইসলাম লাঠিকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। বাদশা ওষুধের দোকানদার বাবুর চাচাতো ভাই।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, এ ঘটনায় ইতোপূর্বে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় হত্যার ঘটনা যুক্ত হবে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপর।
চট্টগ্রাম ও খুলনায় দুইজনকে প্রকাশ্যে গুলি এবং নরসিংদী ও ফেনীতে দুইজনকে কুপিয়ে হত্যা
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
চট্টগ্রামের রাউজান ও খুলনায় মঙ্গলবার, (২২ এপ্রিল) দুইজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া নরসিংদীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, এক ইউপি সদস্য এবং ফেনীতে একজন বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এছাড়া গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মামলায় হত্যার ঘটনা যুক্ত হবে।
রাউজান প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের রাউজানে মো. ইব্রাহিম (২৬) নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গাজীপাড়া এলাকার বাজারে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম ওই এলাকার মাটি ও বালির ব্যবসায়ী মো. আলমের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিএনজি অটোরিকশা করে এসে অতর্কিতভাবে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গুলি করে ইব্রাহিমকে হত্যা করে।
ঘটনাস্থল থেকে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহতের মা জানান, আমি কিস্তি দিতে গিয়েছিলাম। আমার ছেলে ঘুমিয়ে ছিল। তাকে কে বা কারা ফোন করে ডেকে নিয়ে আসে। পরে জানতে পারি আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে। বাবা মো. আলম বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নাই।
নিহতের চাচা ও রাউজান ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব আবদুল হালিম বলেন, আমরা বাজারের জানে আলমের চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম। অতর্কিতভাবে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালায়। আমাকেও ফায়ার করেছিল। পালিয়ে প্রাণে বেঁচে যাই।
একইদিন উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নে মো. নাইম নামের এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ বিষয়ে রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এক যুবককে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। তদন্ত করে বিস্তারিত জানাবো।
খুলনা থেকে নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানান, খুলনার ফুলতলায় সুমন মোল্লা (৩২) নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে একদল লোক। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে ফুলতলার জামিরা বাজারসংলগ্ন পিপরাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ফুলতলা থানার ওসি মো. জেল্লাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে। পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। সুমন মোল্লার বাড়ি ফুলতলার পিপরাইল গ্রামে। সে ওই গ্রামের রকিব উদ্দিন মোল্লার ছেলে।
ওসি আরও বলেন, কারা কী কারণে তাকে হত্যা করেছে তা এখনও জানা যায়নি। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজে আনা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে সুমন মোল্লা মোটরসাইকেল নিয়ে জামিরা বাজারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। বাড়ি থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর পিপরাইল নামক স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলে থাকা তিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তার গতিপথ রোধ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগে তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তারা। গুলি তার ডান থুতনি ভেদ করে বের
হয়ে যায়। এ সময়ে সুমন মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পাশের একটি ধান ক্ষেতে পড়ে যায়।
পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফুলতলা থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুজ্জামান খান বলেন, নিহতের বিরুদ্ধে থানায় মামলা আছে। সেই মামলায় তিনি কারাগারেও ছিলেন।
নরসিংদী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নরসিংদীতে ইউপি সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আমির হোসেন সরকারকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার আলোকবালীতে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত আমির হোসেন সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি আলোকবালী গ্রামের আব্দুল হক মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, চরাঞ্চলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধ থাকায় গত ৫ আগস্টের পর হতে এলাকা ছাড়া ছিলেন ইউপি সদস্য আমির হোসেন সরকার। প্রবাস ফেরত ভাইকে দেখতে গত মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেন তিনি। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমির হোসেনের ওপর হামলা চালায়। এতে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয় আমির হোসেন। স্বজনরা গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্পিডবোটে করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নদীতে কচুরিপানার জট থাকায় হাসপাতালে নিতে দেরি হওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। নরসিংদী সদর থানার ওসি মো. এমদাদুল হক বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করছে। আধিপত্য নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ফেনীর সোনাগাজীতে আবুল হাসেম (৪০) নামের বিএনপির এক কর্মীকে এলোপাতারি কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার সকালে সোনাগাজী-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের ওলামা বাজারের ইসলামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা বোরকা পরে এসে হামলা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাসেল (৩৫) নামের এক যুবককে আটক করছে পুলিশ।
নিহত আবুল হাসেম সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের পশ্চিম চরদরবেশ গ্রামের শুক্কুর মিয়ার ছেলে। তিনি সোনাগাজী পৌরসভার ইসলাম মুহুরি রোড এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। নিহত আবুল হাসেম সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ওরফে গিয়াস চেয়ারম্যানের সহযোগী ছিলেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের মন্ডলের হাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষে আহত মাইদুল ইসলাম বাদশা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।
সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় মন্ডলের হাটে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয়রা মানববন্ধন করেছেন।
গত ১৩ এপ্রিল হাটের ভিতরে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক বাবু মিয়ার ওষুধের দোকানের সামনে রাখা বেঞ্চের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা শফিকুল ইসলামের মোটরসাইকের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে বাবু ও শফিকুলের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় সংঘর্ষ বাধে। এতে মাইদুল ইসলাম বাদশাসহ বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, গোলাম কিবরিয়া মির্জা, আলম মিয়া, যুবদল নেতা আব্দুর রহমান, ছাত্রদল নেতা আহসান হাবিব আহত হয়।
এ ঘটনায় ইতোমধ্যে পুলিশ হোসাইন মোহাম্মদ নাজমুল ও জাকিউল ইসলাম লাঠিকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। বাদশা ওষুধের দোকানদার বাবুর চাচাতো ভাই।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, এ ঘটনায় ইতোপূর্বে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় হত্যার ঘটনা যুক্ত হবে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপর।