মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে, চলবে ২ মে পর্যন্ত
গেল বছর ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যে সব মামলায় ঢালাও আসামি করে ‘বাণিজ্যের’ অভিযোগ উঠেছে, এসব মামলা পুলিশের না নেয়ার উপায় নেই বলে মন্তব্য করেন পুলিশপ্রধান (আইজিপি) বাহারুল আলম।
এসব মামলার ক্ষেত্রে ‘নিরীহ আসামিরা’ যাতে বাদী পক্ষের প্ররোচনায় না পড়ে পুলিশের কাছে যান। সেই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আর নিরীহ কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি যাতে না করা হয়, সেই নির্দেশনা পুলিশের সব পর্যায়ে দেয়া হয়েছে। আর মামলা হলেই গ্রেপ্তার করা যাবে না। তদন্তে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে শুধু তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোমবার,(২৮ এপ্রিল ২০২৫)বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পুলিশপ্রধান। আজ পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মামলা নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকরা প্রশ্ন করে বলেন, সারাদেশে মামলা হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি এখন বিভিন্ন পেশার মানুষকে এসব মামলায় আসামি করা হচ্ছে। এমনকি একটি চক্র মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা নিচ্ছে এবং পুলিশই বলছে, এই সবের বেশিরভাগই মিথ্যা। পুলিশ কী করছে?
এমন প্রশ্নে জবাবে আইজিপি বলেন, একটা সময় থানার ওসি মামলার অভিযোগ শুনে লিখে সই-স্বাক্ষর নিত। পাকিস্তান আমল কিংবা তার আগে এমন হয়েছে। এখন দেশে শিক্ষিতের হার বেড়েছে, সবাই নিজের হাতে মামলা লিখে নিয়ে আসেন। যখন একজন বাদী লিখে নিয়ে আসেন, তখন আমাদের আইনানুযায়ী এর বাইরে আমরা যেতে পারি না।
আমাদের তা মামলা হিসেবে নিতে হয়। সেটা সত্য না মিথ্যা তা যাচাই করার কোনো সুযোগ নেই। উনি অভিযোগে যেটা দেন, এগজ্যাক্টলি সেটাই মামলা হিসেবে নিতে হয়। এরপর তদন্তে গিয়ে দেখি কতটা সত্য আর কতটা মিথ্যা।
তিনি বলেন, গেল বছর ৫ আগস্টের পর দেখা গেছে, অসৎ উদ্দেশ্যে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের জন্য, ভয় দেখানোর জন্য মামলা করছেন। অপরাধটা হয়তো করছেন ৫ থেকে ১০ জন। সেখানে আরও ৩শ’ লোকের নাম দিয়ে মামলা হচ্ছে। গতকাল রোববার একটা হয়েছে।
পুলিশপ্রধান বাহারুল আলম বলেন, আমি সবাইকে নিশ্চিত করতে পারি। আমরা শুরু থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ, আমরা বলছি, পুলিশের সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা এই নির্দেশ পেয়েছেন যে, নিরীহ লোককে গ্রেপ্তার করা যেন না হয়। নিরীহ লোককে যেন হয়রানি না করা হয়। তদন্তে শুধু যার বিরুদ্ধে দায়ভার পাওয়া যাবে, তার জন্য আমরা গ্রেপ্তারের ওয়ারেন্ট চাইব।
এসব মামলাকে মিথ্যা মামলা বলা যাবে না বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, যেটাকে মিথ্যা মামলা বলেছেন, মামলাটা মিথ্যা নয়, সেটা সত্য, কিন্তু আসামির সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এটা আমরা বন্ধ করতে পারছি না। আইনে আমাদের এই সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশে মামলা-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে রিপোর্টও আসছে। আসামি করার পর তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বাদী হলফনামা দিয়ে বলছেন, তিনি নির্দোষ। উপস্থিত সংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আইজিপি বলেন, বাদীর বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ করতে পারি আদালতের কাছে। কিন্তু সেটা হতে হবে, তদন্তটা শেষ হওয়ার পর। আরেকটা কথা বলেছেন, ৮ মাস হয়ে গেছে তদন্ত বেশিরভাগই শেষ হয়নি। এখনও চলমান।
আইজিপি বলেন, যারা মিথ্যাভাবে আসামি হয়ে আছে। তাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপনে অসুবিধা নেই। যেহেতু তদন্ত কর্মকর্তা জানে, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তাকে হয়রানি করব না। গ্রেপ্তারও করব না। এখন তদন্ত কর্মকর্তা যদি সেটা না করে, আর কে করতে পারে?
নিরীহ আসামিদের বাদীর প্ররোচনার ফাঁদে না পড়ার পরামর্শ দিয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, মামলার অনেক বাদী আসামিদের বলছে, আপনার নাম বাদ দিয়ে দেব। আপনি আমাকে এই সুবিধা দেন। মিথ্যা মামলায় আসামিদের ভুল বুঝিয়ে অনেক বাদী সুবিধা আদায় করেন। আইজিপি বলেন, কাউকে টাকা-পয়সা দিবেন না। যদি অসুবিধায় পড়েন পুলিশের কাছেই যান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশপ্রধান ছাড়াও পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি মিডিয়া ইনামুল হক সাগর ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও সহকারী প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
আজ পুলিশ সপ্তাহ শুরু : আজ পুলিশ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে। এই বছর পুলিশ সপ্তাহে প্যারেড অনুষ্ঠান হচ্ছে না। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে প্রধান উপদেষ্টা পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণ ও পদক প্রদান করবেন। এতে সব পুলিশ ইউনিট ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থাকবে। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভা। দুপুর ১টার দিকে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির স্টল শুভ উদ্বোধন ও পরিদর্শন। আগামী ১ মে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইজিপির সম্মেলন হবে রাজারবাগ অডিটরিয়ামে। এভাবে আগামী ২ মে পর্যন্ত পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের নানা কর্মসূচি শেষে পুলিশ সপ্তাহের সমাপ্তি হবে বলে পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া শাখা থেকে জানিয়েছে।
মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে, চলবে ২ মে পর্যন্ত
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
গেল বছর ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যে সব মামলায় ঢালাও আসামি করে ‘বাণিজ্যের’ অভিযোগ উঠেছে, এসব মামলা পুলিশের না নেয়ার উপায় নেই বলে মন্তব্য করেন পুলিশপ্রধান (আইজিপি) বাহারুল আলম।
এসব মামলার ক্ষেত্রে ‘নিরীহ আসামিরা’ যাতে বাদী পক্ষের প্ররোচনায় না পড়ে পুলিশের কাছে যান। সেই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আর নিরীহ কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি যাতে না করা হয়, সেই নির্দেশনা পুলিশের সব পর্যায়ে দেয়া হয়েছে। আর মামলা হলেই গ্রেপ্তার করা যাবে না। তদন্তে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে শুধু তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোমবার,(২৮ এপ্রিল ২০২৫)বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পুলিশপ্রধান। আজ পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মামলা নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকরা প্রশ্ন করে বলেন, সারাদেশে মামলা হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি এখন বিভিন্ন পেশার মানুষকে এসব মামলায় আসামি করা হচ্ছে। এমনকি একটি চক্র মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা নিচ্ছে এবং পুলিশই বলছে, এই সবের বেশিরভাগই মিথ্যা। পুলিশ কী করছে?
এমন প্রশ্নে জবাবে আইজিপি বলেন, একটা সময় থানার ওসি মামলার অভিযোগ শুনে লিখে সই-স্বাক্ষর নিত। পাকিস্তান আমল কিংবা তার আগে এমন হয়েছে। এখন দেশে শিক্ষিতের হার বেড়েছে, সবাই নিজের হাতে মামলা লিখে নিয়ে আসেন। যখন একজন বাদী লিখে নিয়ে আসেন, তখন আমাদের আইনানুযায়ী এর বাইরে আমরা যেতে পারি না।
আমাদের তা মামলা হিসেবে নিতে হয়। সেটা সত্য না মিথ্যা তা যাচাই করার কোনো সুযোগ নেই। উনি অভিযোগে যেটা দেন, এগজ্যাক্টলি সেটাই মামলা হিসেবে নিতে হয়। এরপর তদন্তে গিয়ে দেখি কতটা সত্য আর কতটা মিথ্যা।
তিনি বলেন, গেল বছর ৫ আগস্টের পর দেখা গেছে, অসৎ উদ্দেশ্যে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের জন্য, ভয় দেখানোর জন্য মামলা করছেন। অপরাধটা হয়তো করছেন ৫ থেকে ১০ জন। সেখানে আরও ৩শ’ লোকের নাম দিয়ে মামলা হচ্ছে। গতকাল রোববার একটা হয়েছে।
পুলিশপ্রধান বাহারুল আলম বলেন, আমি সবাইকে নিশ্চিত করতে পারি। আমরা শুরু থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ, আমরা বলছি, পুলিশের সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা এই নির্দেশ পেয়েছেন যে, নিরীহ লোককে গ্রেপ্তার করা যেন না হয়। নিরীহ লোককে যেন হয়রানি না করা হয়। তদন্তে শুধু যার বিরুদ্ধে দায়ভার পাওয়া যাবে, তার জন্য আমরা গ্রেপ্তারের ওয়ারেন্ট চাইব।
এসব মামলাকে মিথ্যা মামলা বলা যাবে না বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, যেটাকে মিথ্যা মামলা বলেছেন, মামলাটা মিথ্যা নয়, সেটা সত্য, কিন্তু আসামির সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এটা আমরা বন্ধ করতে পারছি না। আইনে আমাদের এই সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশে মামলা-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে রিপোর্টও আসছে। আসামি করার পর তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বাদী হলফনামা দিয়ে বলছেন, তিনি নির্দোষ। উপস্থিত সংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আইজিপি বলেন, বাদীর বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ করতে পারি আদালতের কাছে। কিন্তু সেটা হতে হবে, তদন্তটা শেষ হওয়ার পর। আরেকটা কথা বলেছেন, ৮ মাস হয়ে গেছে তদন্ত বেশিরভাগই শেষ হয়নি। এখনও চলমান।
আইজিপি বলেন, যারা মিথ্যাভাবে আসামি হয়ে আছে। তাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপনে অসুবিধা নেই। যেহেতু তদন্ত কর্মকর্তা জানে, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তাকে হয়রানি করব না। গ্রেপ্তারও করব না। এখন তদন্ত কর্মকর্তা যদি সেটা না করে, আর কে করতে পারে?
নিরীহ আসামিদের বাদীর প্ররোচনার ফাঁদে না পড়ার পরামর্শ দিয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, মামলার অনেক বাদী আসামিদের বলছে, আপনার নাম বাদ দিয়ে দেব। আপনি আমাকে এই সুবিধা দেন। মিথ্যা মামলায় আসামিদের ভুল বুঝিয়ে অনেক বাদী সুবিধা আদায় করেন। আইজিপি বলেন, কাউকে টাকা-পয়সা দিবেন না। যদি অসুবিধায় পড়েন পুলিশের কাছেই যান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশপ্রধান ছাড়াও পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি মিডিয়া ইনামুল হক সাগর ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও সহকারী প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
আজ পুলিশ সপ্তাহ শুরু : আজ পুলিশ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে। এই বছর পুলিশ সপ্তাহে প্যারেড অনুষ্ঠান হচ্ছে না। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে প্রধান উপদেষ্টা পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণ ও পদক প্রদান করবেন। এতে সব পুলিশ ইউনিট ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থাকবে। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভা। দুপুর ১টার দিকে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির স্টল শুভ উদ্বোধন ও পরিদর্শন। আগামী ১ মে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইজিপির সম্মেলন হবে রাজারবাগ অডিটরিয়ামে। এভাবে আগামী ২ মে পর্যন্ত পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের নানা কর্মসূচি শেষে পুলিশ সপ্তাহের সমাপ্তি হবে বলে পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া শাখা থেকে জানিয়েছে।