জুলাই হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানার সই করা এক ‘প্রতিবাদ ও বিবৃতি’তে মঙ্গলবার, (১৩ মে ২০২৫) এমনটা দাবি করা হয়েছে। এই ‘প্রতিবাদ ও বিবৃতি’টি চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম মঙ্গলবার তার ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করেছেন।
এই পোস্টের কিছুক্ষণ আগে তাজুল ইসলাম তার ফেইসবুকে আরও একটি লেখা পোস্ট করেন। সেই পোস্টে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেছেন, ম্যাসমার্ডার অর্থ হত্যাযজ্ঞ/গণহত্যা। জেনোসাইড মূলত ‘জাতিগত নির্মূল’ (এথনিক ক্লিনজিং) অর্থে গণহত্যা। জুলাইয়ে বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ (ম্যাসমার্ডার) হয়েছে, জেনোসাইড হয়নি।
আর চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের সেই প্রতিবাদ ও বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যমে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। তারা (গণমাধ্যম) বলেছে যে, চিফ প্রসিকিউটর জুলাই মাসে গণহত্যা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন। এ ধরনের সংবাদ স্পষ্টতই চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্যের বিকৃতি এবং অপপ্রচার।
চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয় গতকাল সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। সেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে জানানো হয়। সেই প্রতিবেদনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় গণহত্যা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন।
প্রতিবাদ ও বিবৃতিতে চিফ
প্রসিকিউটর কার্যালয় আরও বলেছে, চিফ প্রসিকিউটর নিজেই স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, জুলাইয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক এবং পদ্ধতিগত হত্যাযজ্ঞ বা ম্যাসমার্ডার সংঘটিত হয়েছে, যা বাংলায় সাধারণভাবে গণহত্যা বলা হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনানুযায়ী জেনোসাইড হচ্ছে জাতিগত নির্মূল (এথনিক ক্লিনজিং) অর্থে গণহত্যা।
তবে তিনি (চিফ প্রসিকিউটর) এই ঘটনার জন্য ‘জেনোসাইড’-এর (জেনোসাইড বা জাতি/গোষ্ঠীনিধন) অভিযোগ আনেননি উল্লেখ করে প্রতিবাদ ও বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বরং অভিযোগ এনেছেন ‘ক্রাইম এগেইনস্ট হিউম্যানিটি’ বা ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে, যার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ব্যাপক ও পদ্ধতিগত গণহত্যা। আইনের যথাযথ অর্থ না জেনে বা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধও করা হয়েছে বিবৃতিতে।
এদিকে, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট জানিয়েছে, জেনোসাইডের সংজ্ঞা নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্য ভুলভাবে প্রচার হচ্ছে। বাংলাফ্যাক্ট জানায়, গতকাল সোমবার (১২ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিকের প্রশ্ন করেন, অভিযোগ হিসেবে ‘গণহত্যা’ আছে কিনা। এর জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রচলিত ভাষায় যদি একসঙ্গে বেশি মানুষ মারা যায় তাহলে আমরা বলি যে গণহত্যা হয়েছে। একসঙ্গে অনেক মানুষ মারা গেছে এটাকে মাস কিলিং অথবা ম্যাসাকার বলতে পারেন, কিন্তু আইনের যেটা জেনোসাইড সেইটা কিন্তু এটা না।’
চিফ প্রসিকিউটর আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ধরেন একশ’জন লোককে মেরে ফেলা হলো। এটা বাংলাদেশের... আমরা বাংলা ভাষায় বলি গণহত্যা করেছে। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল আইনের জেনোসাইড এটা নয়। সুতরাং আমরা যদি আমাদের স্বাভাবিক পরিভাষায় গণহত্যা বলিও, সেটা বলতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু আইনে অপরাধ হিসেবে জেনোসাইড যে জিনিসটা সংজ্ঞায়িত আছে, সেটা হওয়ার জন্য সার্টেন ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করতে হয়।’
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
জুলাই হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানার সই করা এক ‘প্রতিবাদ ও বিবৃতি’তে মঙ্গলবার, (১৩ মে ২০২৫) এমনটা দাবি করা হয়েছে। এই ‘প্রতিবাদ ও বিবৃতি’টি চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম মঙ্গলবার তার ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করেছেন।
এই পোস্টের কিছুক্ষণ আগে তাজুল ইসলাম তার ফেইসবুকে আরও একটি লেখা পোস্ট করেন। সেই পোস্টে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেছেন, ম্যাসমার্ডার অর্থ হত্যাযজ্ঞ/গণহত্যা। জেনোসাইড মূলত ‘জাতিগত নির্মূল’ (এথনিক ক্লিনজিং) অর্থে গণহত্যা। জুলাইয়ে বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ (ম্যাসমার্ডার) হয়েছে, জেনোসাইড হয়নি।
আর চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের সেই প্রতিবাদ ও বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যমে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। তারা (গণমাধ্যম) বলেছে যে, চিফ প্রসিকিউটর জুলাই মাসে গণহত্যা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন। এ ধরনের সংবাদ স্পষ্টতই চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্যের বিকৃতি এবং অপপ্রচার।
চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয় গতকাল সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। সেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে জানানো হয়। সেই প্রতিবেদনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় গণহত্যা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন।
প্রতিবাদ ও বিবৃতিতে চিফ
প্রসিকিউটর কার্যালয় আরও বলেছে, চিফ প্রসিকিউটর নিজেই স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, জুলাইয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক এবং পদ্ধতিগত হত্যাযজ্ঞ বা ম্যাসমার্ডার সংঘটিত হয়েছে, যা বাংলায় সাধারণভাবে গণহত্যা বলা হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনানুযায়ী জেনোসাইড হচ্ছে জাতিগত নির্মূল (এথনিক ক্লিনজিং) অর্থে গণহত্যা।
তবে তিনি (চিফ প্রসিকিউটর) এই ঘটনার জন্য ‘জেনোসাইড’-এর (জেনোসাইড বা জাতি/গোষ্ঠীনিধন) অভিযোগ আনেননি উল্লেখ করে প্রতিবাদ ও বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বরং অভিযোগ এনেছেন ‘ক্রাইম এগেইনস্ট হিউম্যানিটি’ বা ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে, যার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ব্যাপক ও পদ্ধতিগত গণহত্যা। আইনের যথাযথ অর্থ না জেনে বা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধও করা হয়েছে বিবৃতিতে।
এদিকে, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট জানিয়েছে, জেনোসাইডের সংজ্ঞা নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্য ভুলভাবে প্রচার হচ্ছে। বাংলাফ্যাক্ট জানায়, গতকাল সোমবার (১২ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিকের প্রশ্ন করেন, অভিযোগ হিসেবে ‘গণহত্যা’ আছে কিনা। এর জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রচলিত ভাষায় যদি একসঙ্গে বেশি মানুষ মারা যায় তাহলে আমরা বলি যে গণহত্যা হয়েছে। একসঙ্গে অনেক মানুষ মারা গেছে এটাকে মাস কিলিং অথবা ম্যাসাকার বলতে পারেন, কিন্তু আইনের যেটা জেনোসাইড সেইটা কিন্তু এটা না।’
চিফ প্রসিকিউটর আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ধরেন একশ’জন লোককে মেরে ফেলা হলো। এটা বাংলাদেশের... আমরা বাংলা ভাষায় বলি গণহত্যা করেছে। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল আইনের জেনোসাইড এটা নয়। সুতরাং আমরা যদি আমাদের স্বাভাবিক পরিভাষায় গণহত্যা বলিও, সেটা বলতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু আইনে অপরাধ হিসেবে জেনোসাইড যে জিনিসটা সংজ্ঞায়িত আছে, সেটা হওয়ার জন্য সার্টেন ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করতে হয়।’