তৃতীয় দিনের মতো নগর ভবন ঘেরাও ইশরাক সমর্থকদের
ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে শনিবারও নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন তার সমর্থকরা -সংবাদ
শনিবার,(১৭ মে ২০২৫) ‘ঢাকার সাধারণ ভোটার’ ব্যানারে নগর ভবনের সামনে তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান ও সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা কর্মসূচি পালন করে কয়েকশ’ মানুষ। এদিন সকালে নগর ভবনের সামনে জড়ো হন তারা। বেলা ১১টার দিকে নগর ভবন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল গোলাপশাহ মাজার, জিপিও হয়ে পল্টনের দিকে এগোতে থাকে। জিপিও মোড় থেকে সচিবালয়ের দিকে প্রবেশের পথে পুলিশি বাধায় তারা পল্টন হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে আসে। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর আবার নগর ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।
বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ চেয়ে নানা স্লোগান দেয়। বিক্ষোভে অংশ নেয়া শাহবাগ এলাকার খলিল শাহীন নামে একজন বলেন, ‘ইশরাকের শপথ নিয়ে সরকার টালবাহানা করছে, বিএনপির নেতারা ভালো কোনো অবস্থানে যাক তারা চায় না।’
ধানমন্ডির শাহাদাত হোসেন সৈকত বলেন, ‘ইশরাক হোসেন জনতার মেয়র। স্বৈরাচার সরকারের আমলে জনগণের রায় কেড়ে নিয়ে আরেকজনকে মেয়র পদে বসানো হয়েছিল। এখন আদালত রায় দিয়েছে উনাকে মেয়র স্বীকৃতি দিয়ে। কিন্তু সরকার শপথ নেয়ার ব্যবস্থা করছে না।’
দুপুর ১টা পর্যন্ত নগর ভবনের সামনে অবস্থান করে ইশরাকের সমর্থকরা। নগর ভবনের প্রধান ফটকে দেয়া বক্তব্যে সাবেক সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আসিফ মাহমুদকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। তাকে যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ের ১৪ ও ১৫ তলায় স্থানীয় সরকার বিভাগের অফিস। সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পর স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যক্রম সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা সেখানেই বসেন। তবে গত বুধবার থেকে তিনি নগর ভবনে আসছেন না।
স্থানীয় সরকার বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন শনিবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘স্যার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়েরও উপদেষ্টা। সে কারণে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনের ওনার অফিস আছে। আপাতত সেখানে বসছেন তিনি।’
শনিবার সকাল থেকে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন ইশরাক
সমর্থকরা। এতে নগর ভবনের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় নগর ভবনের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে ছোট গেইট দিয়ে ভেতরে যাওয়া যাচ্ছিল। এ সময় বিক্ষুব্ধরা নগর ভবনের বিভিন্ন কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে আসতে পারেননি।
ডিএসসিসির একজন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের আজ (শনিবার) অফিস খোলা ছিল। তবে অফিসে তালা দেয়ায় সেখানে যেতে পারছি না। বাইরে ঘুরে চলে আসছি।’
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। বিএনপির ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হন।
অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম মেয়র পদে তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের রায়ের কপি পেয়ে ২২ এপ্রিল গেজেট প্রকাশের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চায় নির্বাচন কমিশন।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাকের শপথের আয়োজন এখনও হয়নি, এজন্য ক্ষোভ প্রকাশ করছেন আন্দোলনকারীরা।
ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত বুধবার ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে নগর ভবন প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে কয়েকশ’ মানুষ। এ দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণাও দেয়া হয় সেদিন।
ঘোষণা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার নগর ভবনের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন গেইট অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে ওইদিন সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নগর ভবনে ঢুকতে পারেননি। বিভিন্ন সেবা নিতে আসা নাগরিকরাও ভোগান্তিতে পড়েন।
এমন অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের মেয়র নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের করা মামলার রায় ও নির্বাচন কমিশনের আপিল না করার বিষয়ে কোনো আইনি জটিলতা আছে কিনা, তা জানতে চেয়ে গত বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার বিভাগে চিঠি দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের কাছে স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব মাহবুবা আইরিনের পাঠানো চিঠিতে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ধারা ৬ অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণে কোনো আইনি জটিলতা আছে কিনা, সে বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে।
তৃতীয় দিনের মতো নগর ভবন ঘেরাও ইশরাক সমর্থকদের
ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে শনিবারও নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন তার সমর্থকরা -সংবাদ
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
শনিবার,(১৭ মে ২০২৫) ‘ঢাকার সাধারণ ভোটার’ ব্যানারে নগর ভবনের সামনে তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান ও সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা কর্মসূচি পালন করে কয়েকশ’ মানুষ। এদিন সকালে নগর ভবনের সামনে জড়ো হন তারা। বেলা ১১টার দিকে নগর ভবন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল গোলাপশাহ মাজার, জিপিও হয়ে পল্টনের দিকে এগোতে থাকে। জিপিও মোড় থেকে সচিবালয়ের দিকে প্রবেশের পথে পুলিশি বাধায় তারা পল্টন হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে আসে। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর আবার নগর ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।
বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ চেয়ে নানা স্লোগান দেয়। বিক্ষোভে অংশ নেয়া শাহবাগ এলাকার খলিল শাহীন নামে একজন বলেন, ‘ইশরাকের শপথ নিয়ে সরকার টালবাহানা করছে, বিএনপির নেতারা ভালো কোনো অবস্থানে যাক তারা চায় না।’
ধানমন্ডির শাহাদাত হোসেন সৈকত বলেন, ‘ইশরাক হোসেন জনতার মেয়র। স্বৈরাচার সরকারের আমলে জনগণের রায় কেড়ে নিয়ে আরেকজনকে মেয়র পদে বসানো হয়েছিল। এখন আদালত রায় দিয়েছে উনাকে মেয়র স্বীকৃতি দিয়ে। কিন্তু সরকার শপথ নেয়ার ব্যবস্থা করছে না।’
দুপুর ১টা পর্যন্ত নগর ভবনের সামনে অবস্থান করে ইশরাকের সমর্থকরা। নগর ভবনের প্রধান ফটকে দেয়া বক্তব্যে সাবেক সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আসিফ মাহমুদকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। তাকে যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ের ১৪ ও ১৫ তলায় স্থানীয় সরকার বিভাগের অফিস। সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পর স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যক্রম সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা সেখানেই বসেন। তবে গত বুধবার থেকে তিনি নগর ভবনে আসছেন না।
স্থানীয় সরকার বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন শনিবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘স্যার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়েরও উপদেষ্টা। সে কারণে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনের ওনার অফিস আছে। আপাতত সেখানে বসছেন তিনি।’
শনিবার সকাল থেকে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন ইশরাক
সমর্থকরা। এতে নগর ভবনের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় নগর ভবনের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে ছোট গেইট দিয়ে ভেতরে যাওয়া যাচ্ছিল। এ সময় বিক্ষুব্ধরা নগর ভবনের বিভিন্ন কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে আসতে পারেননি।
ডিএসসিসির একজন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের আজ (শনিবার) অফিস খোলা ছিল। তবে অফিসে তালা দেয়ায় সেখানে যেতে পারছি না। বাইরে ঘুরে চলে আসছি।’
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। বিএনপির ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হন।
অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম মেয়র পদে তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের রায়ের কপি পেয়ে ২২ এপ্রিল গেজেট প্রকাশের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চায় নির্বাচন কমিশন।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাকের শপথের আয়োজন এখনও হয়নি, এজন্য ক্ষোভ প্রকাশ করছেন আন্দোলনকারীরা।
ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত বুধবার ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে নগর ভবন প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে কয়েকশ’ মানুষ। এ দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণাও দেয়া হয় সেদিন।
ঘোষণা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার নগর ভবনের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন গেইট অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে ওইদিন সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নগর ভবনে ঢুকতে পারেননি। বিভিন্ন সেবা নিতে আসা নাগরিকরাও ভোগান্তিতে পড়েন।
এমন অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের মেয়র নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের করা মামলার রায় ও নির্বাচন কমিশনের আপিল না করার বিষয়ে কোনো আইনি জটিলতা আছে কিনা, তা জানতে চেয়ে গত বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার বিভাগে চিঠি দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের কাছে স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব মাহবুবা আইরিনের পাঠানো চিঠিতে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ধারা ৬ অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণে কোনো আইনি জটিলতা আছে কিনা, সে বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে।