ঢাকার সরকারি সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপনের দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আজকের (রোববার) মধ্যে দাবি না মানলে আগামীকাল (১৯ মে) থেকে কঠোর কর্মসূচিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার,(১৭ মে ২০২৫) বিকেলে ইডেন মহিলা কলেজের গেটের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এই আল্টিমেটামসহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন সাত কলেজের সম্মিলিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পক্ষে যৌথভাবে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের সদস্য তানজিমুল আবিদ ও জাফরিন আক্তার।
জাফরিন আক্তার বলেন, ‘আমরা শিক্ষার অধিকারটুকু চাই। আমরা আর রাজপথে নামতে চাই না। আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম ছেড়ে পড়ার টেবিলে ফিরে গিয়েছি। তবে রাষ্ট্র বারবার আমাদের পড়ার টেবিল ছেড়ে রাজপথে ফিরতে বাধ্য করেছে।’
আজকের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি না হলে ১৯ মে থেকে শিক্ষার্থীরা আবার ‘মাঠের
কর্মসূচিতে’ যেতে বাধ্য হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরবর্তী এ কর্মসূচি কেমন হবে, সেটা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেব। একইসঙ্গে আমরা বাকি দাবিগুলোর বিষয়েও নজর রাখব। আমাদের যদি আবার মাঠে নামতে হয়, তাহলে এবার রাজপথ থেকেই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরব।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাত কলেজের ঢাবি অধিভুক্তি বাতিলের পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ইউজিসি এ কলেজগুলো পরিচালনায় একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রস্তাব করেছে; যে প্রশাসন অধিভুক্তি বাতিল ও নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুর মধ্যবর্তী সময়ে দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী প্রশাসন বিষয়ে ইউজিসির প্রস্তাবনার আড়াই মাস পার হলেও এখনও সেটির চূড়ান্ত অনুমোদন হয়নি।
শিক্ষার্থীরা জানান, সবকিছুতেই যেন ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ঢিলেমি’ দেয়া হচ্ছে। সরকার সাত কলেজের এ সমস্যা সমাধানে গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দেয়। এ সমস্যা সমাধানে তাদের চার মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু গত ৩০ এপ্রিল এ কমিটির সময়সীমা শেষ হলেও এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি।
শিক্ষার্থীরা ‘সময়ক্ষেপণের তীব্র নিন্দা’ জানিয়ে বলেন, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চূড়ান্ত হওয়ার পর স্বল্প সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রজ্ঞাপন দেয়ার কথা থাকলেও তা ‘অদৃশ্য’ কারণে ঝুলে আছে।
অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রজ্ঞাপন ও অধ্যাদেশ জারি না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামো, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম, পরীক্ষাসহ সবকিছুতেই শিক্ষার্থীদের এখনও ঢাবির (ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়) ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এটা একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে বলেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
শিক্ষার্থী তানজিমুল আবিদ জানান, তারা গতকাল শুক্রবার রাতে সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা ও বর্তমান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ তাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সাত কলেজের জন্য প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তী প্রশাসনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এরপর এটি এখন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ প্রশাসন ঘোষণা করা হবে বলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেছেন।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি তুলে ধরেছেন। সেগুলো হলো
১. রোববারের (আজ) মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
২. অন্তর্বর্তী প্রশাসকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর সেশনজট নিরসনসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে ভুতুড়ে ফলের সমাধান, বিভিন্ন ইস্যুতে অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধসহ যাবতীয় অসঙ্গতিগুলো স্পষ্টভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
৩. অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের পরবর্তী ২ কার্যদিবসের মধ্যে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪. আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা এবং লোগো/মনোগ্রাম প্রকাশ করতে হবে।
৫. আগামী এক মাসের অর্থাৎ আগামী ১৬ জুনের মধ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে নবগঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।
রাজধানীর সরকারি সাতটি কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মিরপুর বাঙলা কলেজ। এই সাত কলেজে দুই লাখের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।
এই সাত কলেজ একসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছিল। ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এসব কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। এর পর থেকে যথাসময়ে পরীক্ষা নেয়া, ফল প্রকাশসহ বিভিন্ন দাবিতে সময় সময় আন্দোলন করে আসছিলেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত জানুয়ারিতে এই সাত কলেজকে আবারও ঢাবি থেকে আলাদা করার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
ঢাকার সরকারি সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপনের দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আজকের (রোববার) মধ্যে দাবি না মানলে আগামীকাল (১৯ মে) থেকে কঠোর কর্মসূচিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার,(১৭ মে ২০২৫) বিকেলে ইডেন মহিলা কলেজের গেটের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এই আল্টিমেটামসহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন সাত কলেজের সম্মিলিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পক্ষে যৌথভাবে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের সদস্য তানজিমুল আবিদ ও জাফরিন আক্তার।
জাফরিন আক্তার বলেন, ‘আমরা শিক্ষার অধিকারটুকু চাই। আমরা আর রাজপথে নামতে চাই না। আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম ছেড়ে পড়ার টেবিলে ফিরে গিয়েছি। তবে রাষ্ট্র বারবার আমাদের পড়ার টেবিল ছেড়ে রাজপথে ফিরতে বাধ্য করেছে।’
আজকের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি না হলে ১৯ মে থেকে শিক্ষার্থীরা আবার ‘মাঠের
কর্মসূচিতে’ যেতে বাধ্য হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরবর্তী এ কর্মসূচি কেমন হবে, সেটা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেব। একইসঙ্গে আমরা বাকি দাবিগুলোর বিষয়েও নজর রাখব। আমাদের যদি আবার মাঠে নামতে হয়, তাহলে এবার রাজপথ থেকেই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরব।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাত কলেজের ঢাবি অধিভুক্তি বাতিলের পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ইউজিসি এ কলেজগুলো পরিচালনায় একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রস্তাব করেছে; যে প্রশাসন অধিভুক্তি বাতিল ও নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুর মধ্যবর্তী সময়ে দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী প্রশাসন বিষয়ে ইউজিসির প্রস্তাবনার আড়াই মাস পার হলেও এখনও সেটির চূড়ান্ত অনুমোদন হয়নি।
শিক্ষার্থীরা জানান, সবকিছুতেই যেন ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ঢিলেমি’ দেয়া হচ্ছে। সরকার সাত কলেজের এ সমস্যা সমাধানে গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দেয়। এ সমস্যা সমাধানে তাদের চার মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু গত ৩০ এপ্রিল এ কমিটির সময়সীমা শেষ হলেও এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি।
শিক্ষার্থীরা ‘সময়ক্ষেপণের তীব্র নিন্দা’ জানিয়ে বলেন, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চূড়ান্ত হওয়ার পর স্বল্প সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রজ্ঞাপন দেয়ার কথা থাকলেও তা ‘অদৃশ্য’ কারণে ঝুলে আছে।
অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রজ্ঞাপন ও অধ্যাদেশ জারি না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামো, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম, পরীক্ষাসহ সবকিছুতেই শিক্ষার্থীদের এখনও ঢাবির (ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়) ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এটা একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে বলেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
শিক্ষার্থী তানজিমুল আবিদ জানান, তারা গতকাল শুক্রবার রাতে সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা ও বর্তমান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ তাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সাত কলেজের জন্য প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তী প্রশাসনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এরপর এটি এখন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ প্রশাসন ঘোষণা করা হবে বলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেছেন।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি তুলে ধরেছেন। সেগুলো হলো
১. রোববারের (আজ) মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
২. অন্তর্বর্তী প্রশাসকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর সেশনজট নিরসনসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে ভুতুড়ে ফলের সমাধান, বিভিন্ন ইস্যুতে অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধসহ যাবতীয় অসঙ্গতিগুলো স্পষ্টভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
৩. অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের পরবর্তী ২ কার্যদিবসের মধ্যে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪. আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা এবং লোগো/মনোগ্রাম প্রকাশ করতে হবে।
৫. আগামী এক মাসের অর্থাৎ আগামী ১৬ জুনের মধ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে নবগঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।
রাজধানীর সরকারি সাতটি কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মিরপুর বাঙলা কলেজ। এই সাত কলেজে দুই লাখের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।
এই সাত কলেজ একসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছিল। ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এসব কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। এর পর থেকে যথাসময়ে পরীক্ষা নেয়া, ফল প্রকাশসহ বিভিন্ন দাবিতে সময় সময় আন্দোলন করে আসছিলেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত জানুয়ারিতে এই সাত কলেজকে আবারও ঢাবি থেকে আলাদা করার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।