রিমান্ডে আনিস-সালমান, বসার জন্য টুল চাইলেন আমু
জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আওয়ামী লীগের কর্মী নুরু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। এছাড়া যাত্রাবাড়ী থানার বিভিন্ন মামলায় আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছে আদালত
তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার,(২৮ মে ২০২৫) ঢাকার মহানগর হাকিম মেহেরা মাহবুব এ আদেশ দেন। গ্রেপ্তার দেখানো অন্য আসামিরা হলেন সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম মনু, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগ নেত্রী রজনী আক্তার টুসী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। ধানমন্ডিতে রিয়াজ হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, নুরু মিয়া এবং সোহানুর রহমান আজাদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার।
আদালত প্রথমে আসামিদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এর চার আসামির রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। সোহানুর রহমান আজাদের পক্ষে তার আইনজীবী জহিরুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। অপর আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। তবে তারা শুনানি করেননি। পরে আদালত সোহানুর রহমান আজাদ বাদে অপর তিন আসামির দুই দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন। সোহানুর রহমান আজাদের রিমান্ডের বিষয়ে আদালত পরে আদেশ দিবেন বলে জানিয়েছেন। গ্রেপ্তার দেখানো আসামিদের মধ্যে আমুকে এক হত্যাচেষ্টা মামলায়, ইনু ও মেননকে একটি হত্যাচেষ্টা এবং দুটি হত্যা মামলায়, পলককে একটি হত্যাচেষ্টা এবং একটি হত্যা মামলায়, মনিরুল ইসলাম মনুকে দুইটি হত্যা মামলায়, কামরুল ইসলাম ও আতিকুল ইসলামকে একটি হত্যাচেষ্টা মামলায়, জাহাঙ্গীর আলম ও টুসীকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই সব মামলা যাত্রাবাড়ী থানার।
রিয়াজ হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্টে রাজধানীর ধানমন্ডির সাইন্সল্যাব এলাকা থেকে জিগাতলা এলাকায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন মো. রিয়াজ (২৩)। দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৭ আগস্ট বিকেলে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের মা শাফিয়া বেগম ৯ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
বসার জন্য টুল চাইলেন আমু
জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ১০ মে আমুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার এসআই নাজমুল হাসান। আদালত তার উপস্থিতিতে আবেদনের শুনানির দিন বুধবার, ধার্য করে। এদিন সকালে আমুকে মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে এনে হাজতখানায় রাখা হয়।
এরপর সকাল ১০টার দিকে তাকে দ্বিতীয় তলায় এজলাসে তোলা হয়। বয়স্ক ও অসুস্থ হওয়ায় একা চলাচলে অনেকটায় অক্ষম আমির হোসেন আমুকে ৪/৫ জন পুলিশ সদস্য মিলে নিয়ে যান। তবে সিঁড়িতে উঠতে বেগ পান পুলিশ সদস্যরা। উঠতে পারছিলেন না আমু। পরে আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য যোগ হয়ে তাকে এজলাসে নিয়ে যান। এ সময় আমুর হাতে হাতকড়া, মাথায় হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরানো ছিল।
আসামির কাঠগড়ায় নেয়ার পর আমু বসার জন্য আদালতের কর্মচারীদের কাছে একটা টুল চান। তবে কেউ কর্ণপাত করেননি। এ সময় দুইহাত দিয়ে কাঠগড়ার লোহা ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। তার একটি নখে ব্যান্ডেজ দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর আবারও একটা টুল চান সাবেক এই মন্ত্রী। তখন আদালতের একজন একটা টুল দিতে এগিয়ে আসেন। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে থামিয়ে দেন। পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের একজন বলেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে টুল দিতে হবে।
এরপর আমু তার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন। আইনজীবী তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তার কাছে কোরবানির বিষয়ে জানতে চান। তিনি আইনজীবীকে বলেন, পারিবারিকভাবে যেন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১০টা ১৭ মিনিটের দিকে আদালতের বিচারকাজ শুরু হয়। আইনজীবী মহসিন রেজা আমুর বসার জন্য একটা টুলের ব্যবস্থা করতে প্রার্থনা জানান। আদালত বসার জন্য টুলের ব্যবস্থা করতে বলে। শুনানির পরে আদালত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে।
নখ কেটে যাওয়ার বিষয়ে আমির হোসেন আমুর আইনজীবী মহসিন রেজা সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাজতখানা থেকে আদালতে নেয়ার পথে হ্যান্ডকাফের ধারালো অংশের আঘাতে তার নখ কেটে যাই। তিনি টিস্যু দিয়ে রক্ত বন্ধ করে রাখেন। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে তার হাতে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানার এসআই কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নাই। উনি পেছনে ছিলেন, আমি সামনে থাকার কারণে বিষয়টি খেয়াল করতে পারিনি।’ মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২০ জুলাই বিকেলে যাত্রাবাড়ী থানাধীন রায়েরবাগ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন লাভলু নামে এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় ২০ মার্চ শেখ হাসিনাসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন তিনি।
রিমান্ডে আনিস-সালমান, বসার জন্য টুল চাইলেন আমু
বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আওয়ামী লীগের কর্মী নুরু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। এছাড়া যাত্রাবাড়ী থানার বিভিন্ন মামলায় আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছে আদালত
তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার,(২৮ মে ২০২৫) ঢাকার মহানগর হাকিম মেহেরা মাহবুব এ আদেশ দেন। গ্রেপ্তার দেখানো অন্য আসামিরা হলেন সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম মনু, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগ নেত্রী রজনী আক্তার টুসী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। ধানমন্ডিতে রিয়াজ হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, নুরু মিয়া এবং সোহানুর রহমান আজাদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার।
আদালত প্রথমে আসামিদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এর চার আসামির রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। সোহানুর রহমান আজাদের পক্ষে তার আইনজীবী জহিরুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। অপর আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। তবে তারা শুনানি করেননি। পরে আদালত সোহানুর রহমান আজাদ বাদে অপর তিন আসামির দুই দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন। সোহানুর রহমান আজাদের রিমান্ডের বিষয়ে আদালত পরে আদেশ দিবেন বলে জানিয়েছেন। গ্রেপ্তার দেখানো আসামিদের মধ্যে আমুকে এক হত্যাচেষ্টা মামলায়, ইনু ও মেননকে একটি হত্যাচেষ্টা এবং দুটি হত্যা মামলায়, পলককে একটি হত্যাচেষ্টা এবং একটি হত্যা মামলায়, মনিরুল ইসলাম মনুকে দুইটি হত্যা মামলায়, কামরুল ইসলাম ও আতিকুল ইসলামকে একটি হত্যাচেষ্টা মামলায়, জাহাঙ্গীর আলম ও টুসীকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই সব মামলা যাত্রাবাড়ী থানার।
রিয়াজ হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্টে রাজধানীর ধানমন্ডির সাইন্সল্যাব এলাকা থেকে জিগাতলা এলাকায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন মো. রিয়াজ (২৩)। দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৭ আগস্ট বিকেলে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের মা শাফিয়া বেগম ৯ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
বসার জন্য টুল চাইলেন আমু
জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ১০ মে আমুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার এসআই নাজমুল হাসান। আদালত তার উপস্থিতিতে আবেদনের শুনানির দিন বুধবার, ধার্য করে। এদিন সকালে আমুকে মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে এনে হাজতখানায় রাখা হয়।
এরপর সকাল ১০টার দিকে তাকে দ্বিতীয় তলায় এজলাসে তোলা হয়। বয়স্ক ও অসুস্থ হওয়ায় একা চলাচলে অনেকটায় অক্ষম আমির হোসেন আমুকে ৪/৫ জন পুলিশ সদস্য মিলে নিয়ে যান। তবে সিঁড়িতে উঠতে বেগ পান পুলিশ সদস্যরা। উঠতে পারছিলেন না আমু। পরে আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য যোগ হয়ে তাকে এজলাসে নিয়ে যান। এ সময় আমুর হাতে হাতকড়া, মাথায় হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরানো ছিল।
আসামির কাঠগড়ায় নেয়ার পর আমু বসার জন্য আদালতের কর্মচারীদের কাছে একটা টুল চান। তবে কেউ কর্ণপাত করেননি। এ সময় দুইহাত দিয়ে কাঠগড়ার লোহা ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। তার একটি নখে ব্যান্ডেজ দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর আবারও একটা টুল চান সাবেক এই মন্ত্রী। তখন আদালতের একজন একটা টুল দিতে এগিয়ে আসেন। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে থামিয়ে দেন। পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের একজন বলেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে টুল দিতে হবে।
এরপর আমু তার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন। আইনজীবী তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তার কাছে কোরবানির বিষয়ে জানতে চান। তিনি আইনজীবীকে বলেন, পারিবারিকভাবে যেন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১০টা ১৭ মিনিটের দিকে আদালতের বিচারকাজ শুরু হয়। আইনজীবী মহসিন রেজা আমুর বসার জন্য একটা টুলের ব্যবস্থা করতে প্রার্থনা জানান। আদালত বসার জন্য টুলের ব্যবস্থা করতে বলে। শুনানির পরে আদালত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে।
নখ কেটে যাওয়ার বিষয়ে আমির হোসেন আমুর আইনজীবী মহসিন রেজা সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাজতখানা থেকে আদালতে নেয়ার পথে হ্যান্ডকাফের ধারালো অংশের আঘাতে তার নখ কেটে যাই। তিনি টিস্যু দিয়ে রক্ত বন্ধ করে রাখেন। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে তার হাতে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানার এসআই কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নাই। উনি পেছনে ছিলেন, আমি সামনে থাকার কারণে বিষয়টি খেয়াল করতে পারিনি।’ মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২০ জুলাই বিকেলে যাত্রাবাড়ী থানাধীন রায়েরবাগ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন লাভলু নামে এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় ২০ মার্চ শেখ হাসিনাসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন তিনি।