জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ-সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) সঙ্গে সম্পৃক্ত জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) এবং প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) যাঁরা পরবর্তী সময়ে গণপরিষদের সদস্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন, তাঁদের আর ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে নয়, বরং ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে গণ্য করা হবে। এত দিন তাঁরা ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন।
নতুন অধ্যাদেশে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ পরিচয়ে পাঁচটি শ্রেণি নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
প্রথমত, মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশে থেকে পেশাগতভাবে বা বিশ্বজনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ব্যক্তিরা।
দ্বিতীয়ত, মুজিবনগর সরকারের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিযুক্ত দূত, চিকিৎসক, নার্স ও সহকারীরা।
তৃতীয়ত, মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এমএনএ ও এমপিএ, যাঁরা গণপরিষদের সদস্য হিসেবে বিবেচিত ছিলেন।
চতুর্থত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী-কলাকুশলী ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সাংবাদিকরা।
পঞ্চমত, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা।
এর আগে গত ১৫ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশটি শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই আলোকে সংশোধনী যুক্ত করে সরকার এই অধ্যাদেশ জারি করেছে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে—১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য যারা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম নিবন্ধন করেছেন, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন এবং পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন—তাঁরাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন।
এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর), পুলিশ, মুক্তিবাহিনী, মুজিবনগর সরকার স্বীকৃত বাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স ও আনসার সদস্যদেরও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
নতুন সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের নির্যাতনের শিকার সব নারী (বীরাঙ্গনা) এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা প্রদানকারী ফিল্ড হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও সহকারীরাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।
এ ছাড়া ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’-এর সংশোধনীতে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শব্দবন্ধটি পরিবর্তন করা হয়েছে।
অধ্যাদেশে ‘মুক্তিযুদ্ধ’-এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, এটি ছিল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী শক্তির বিরুদ্ধে পরিচালিত একটি ন্যায্য যুদ্ধ—যার লক্ষ্য ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।
বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ-সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) সঙ্গে সম্পৃক্ত জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) এবং প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) যাঁরা পরবর্তী সময়ে গণপরিষদের সদস্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন, তাঁদের আর ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে নয়, বরং ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে গণ্য করা হবে। এত দিন তাঁরা ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন।
নতুন অধ্যাদেশে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ পরিচয়ে পাঁচটি শ্রেণি নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
প্রথমত, মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশে থেকে পেশাগতভাবে বা বিশ্বজনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ব্যক্তিরা।
দ্বিতীয়ত, মুজিবনগর সরকারের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিযুক্ত দূত, চিকিৎসক, নার্স ও সহকারীরা।
তৃতীয়ত, মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এমএনএ ও এমপিএ, যাঁরা গণপরিষদের সদস্য হিসেবে বিবেচিত ছিলেন।
চতুর্থত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী-কলাকুশলী ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সাংবাদিকরা।
পঞ্চমত, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা।
এর আগে গত ১৫ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশটি শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই আলোকে সংশোধনী যুক্ত করে সরকার এই অধ্যাদেশ জারি করেছে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে—১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য যারা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম নিবন্ধন করেছেন, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন এবং পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন—তাঁরাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন।
এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর), পুলিশ, মুক্তিবাহিনী, মুজিবনগর সরকার স্বীকৃত বাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স ও আনসার সদস্যদেরও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
নতুন সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের নির্যাতনের শিকার সব নারী (বীরাঙ্গনা) এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা প্রদানকারী ফিল্ড হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও সহকারীরাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।
এ ছাড়া ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’-এর সংশোধনীতে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শব্দবন্ধটি পরিবর্তন করা হয়েছে।
অধ্যাদেশে ‘মুক্তিযুদ্ধ’-এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, এটি ছিল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী শক্তির বিরুদ্ধে পরিচালিত একটি ন্যায্য যুদ্ধ—যার লক্ষ্য ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।