সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের যুক্তরাজ্যে থাকা সম্পত্তি জব্দ করেছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)। এর আগে সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার সম্পদ জব্দের ঘটনায় আলোড়নের মধ্যে এবার জাবেদের সম্পদের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
বুধবার (১১ জুন) কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা তাদের ওয়েবসাইটে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাজ্যের গুরুতর ও সংগঠিত অপরাধ দমন সংস্থা এনসিএ এক বিবৃতিতে ‘আই-ইউনিট’কে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধের ভিত্তিতে সাবেক মন্ত্রী জাবেদের যুক্তরাজ্যে থাকা একাধিক সম্পদ জব্দের আদেশ পেয়েছে তারা।
এ ঘটনায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এখন থেকে তার যুক্তরাজ্যের সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবেন না। তবে ঠিক কতটি সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে তা এনসিএ প্রকাশ করেনি।
আল জাজিরার আই-ইউনিটের অনুসন্ধানে জানা যায়, লন্ডনের সেন্ট জন’স উড এলাকায় অবস্থিত প্রায় দেড় কোটি ডলারে কেনা জাবেদের বিলাসবহুল বাড়িটি জব্দ হওয়া সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে। এই বাড়ির গোপন ভিডিও চিত্রও প্রকাশ করে আল জাজিরা, যেখানে জাবেদকে ঘনিষ্ঠভাবে দেখা যায়।
২০২৪ সালের অক্টোবরে প্রচারিত ‘দ্য মিনিস্টার’স মিলিয়নস’ শিরোনামের একটি প্রামাণ্যচিত্রে সাবেক মন্ত্রীর বিভিন্ন দেশে থাকা প্রায় সাড়ে তিনশত সম্পদের বিষয়ে বিস্তৃত বিবরণ তুলে ধরা হয়।
সেখানে ছদ্মবেশে সাংবাদিকরা জাবেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যুক্তরাজ্যে তার ব্যবসা, দামি স্যুট-জুতা, ও শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়েও আলাপ করেন। জাবেদ তখন বলেন, ‘আমি আসলে তার (শেখ হাসিনা) ছেলের মত।’
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হারানোর পর সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা তদন্তের মুখে পড়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে জাবেদ, সালমান এফ রহমানসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে তদন্ত ও মামলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
গত মে মাসেই এনসিএ সালমান রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমান এবং ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে ৯টি আদেশে যুক্তরাজ্যে থাকা প্রায় ৯ কোটি পাউন্ড মূল্যের সম্পদ জব্দ করে।
এমন এক সময় এই খবর সামনে এল, যখন লন্ডনে সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাজ্য সরকারকে অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা চাই যারা টাকার পাহাড় বানিয়ে বিদেশে রেখেছেন, তাদের সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনা হোক। তবে কোনো সিদ্ধান্ত তাড়াহুড়ো করে নয়, যুক্তিযুক্ত পর্যালোচনার ভিত্তিতে হবে।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানায়, বাংলাদেশি প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তি রয়েছে। এসব সম্পদ অনেক সময় অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়েছে।
একই মাসে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানায়, সরকারের একজন সাবেক মন্ত্রীর নামে বিদেশে ছয়টি কোম্পানির মালিকানা রয়েছে, যেগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২,৩১২ কোটি টাকা। পরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান নিশ্চিত করেন, ওই মন্ত্রীই ছিলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
জানুয়ারির নির্বাচনের কয়েক মাস পর এক সংবাদ সম্মেলনে জাবেদ স্বীকার করেন, যুক্তরাজ্যে তার ব্যবসা ও সম্পদ রয়েছে। তবে সেগুলো তার বাবার ব্যবসার উত্তরাধিকার এবং যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সময় করা ব্যবসা থেকে অর্জিত বলে দাবি করেন।
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের যুক্তরাজ্যে থাকা সম্পত্তি জব্দ করেছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)। এর আগে সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার সম্পদ জব্দের ঘটনায় আলোড়নের মধ্যে এবার জাবেদের সম্পদের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
বুধবার (১১ জুন) কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা তাদের ওয়েবসাইটে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাজ্যের গুরুতর ও সংগঠিত অপরাধ দমন সংস্থা এনসিএ এক বিবৃতিতে ‘আই-ইউনিট’কে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধের ভিত্তিতে সাবেক মন্ত্রী জাবেদের যুক্তরাজ্যে থাকা একাধিক সম্পদ জব্দের আদেশ পেয়েছে তারা।
এ ঘটনায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এখন থেকে তার যুক্তরাজ্যের সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবেন না। তবে ঠিক কতটি সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে তা এনসিএ প্রকাশ করেনি।
আল জাজিরার আই-ইউনিটের অনুসন্ধানে জানা যায়, লন্ডনের সেন্ট জন’স উড এলাকায় অবস্থিত প্রায় দেড় কোটি ডলারে কেনা জাবেদের বিলাসবহুল বাড়িটি জব্দ হওয়া সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে। এই বাড়ির গোপন ভিডিও চিত্রও প্রকাশ করে আল জাজিরা, যেখানে জাবেদকে ঘনিষ্ঠভাবে দেখা যায়।
২০২৪ সালের অক্টোবরে প্রচারিত ‘দ্য মিনিস্টার’স মিলিয়নস’ শিরোনামের একটি প্রামাণ্যচিত্রে সাবেক মন্ত্রীর বিভিন্ন দেশে থাকা প্রায় সাড়ে তিনশত সম্পদের বিষয়ে বিস্তৃত বিবরণ তুলে ধরা হয়।
সেখানে ছদ্মবেশে সাংবাদিকরা জাবেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যুক্তরাজ্যে তার ব্যবসা, দামি স্যুট-জুতা, ও শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়েও আলাপ করেন। জাবেদ তখন বলেন, ‘আমি আসলে তার (শেখ হাসিনা) ছেলের মত।’
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হারানোর পর সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা তদন্তের মুখে পড়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে জাবেদ, সালমান এফ রহমানসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে তদন্ত ও মামলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
গত মে মাসেই এনসিএ সালমান রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমান এবং ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে ৯টি আদেশে যুক্তরাজ্যে থাকা প্রায় ৯ কোটি পাউন্ড মূল্যের সম্পদ জব্দ করে।
এমন এক সময় এই খবর সামনে এল, যখন লন্ডনে সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাজ্য সরকারকে অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা চাই যারা টাকার পাহাড় বানিয়ে বিদেশে রেখেছেন, তাদের সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনা হোক। তবে কোনো সিদ্ধান্ত তাড়াহুড়ো করে নয়, যুক্তিযুক্ত পর্যালোচনার ভিত্তিতে হবে।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানায়, বাংলাদেশি প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তি রয়েছে। এসব সম্পদ অনেক সময় অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়েছে।
একই মাসে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানায়, সরকারের একজন সাবেক মন্ত্রীর নামে বিদেশে ছয়টি কোম্পানির মালিকানা রয়েছে, যেগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২,৩১২ কোটি টাকা। পরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান নিশ্চিত করেন, ওই মন্ত্রীই ছিলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
জানুয়ারির নির্বাচনের কয়েক মাস পর এক সংবাদ সম্মেলনে জাবেদ স্বীকার করেন, যুক্তরাজ্যে তার ব্যবসা ও সম্পদ রয়েছে। তবে সেগুলো তার বাবার ব্যবসার উত্তরাধিকার এবং যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সময় করা ব্যবসা থেকে অর্জিত বলে দাবি করেন।