সচিবালয়ে বিক্ষোভরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
সরকারি চাকরি আইন সংশোধন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার,(১৭ জুন ২০২৫) ও বিক্ষোভ করেছেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। তারা অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার পর মন্ত্রিপরিষদের নতুন ভবনের নিচে কর্মচারীদের সমাবেশ শুরু হয়। এ সময় সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা সমাবেশে যোগ দেন।
এদিন তাদের বড় ধরনের জমায়েতের ঘোষণা থাকলেও আগের দিনের তুলনায় আন্দোলনকারীদের উপস্থিতি কিছুটা কম দেখা গেছে।
কর্মচারী ফোরামের অন্যতম কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর বলেন, অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সারা দেশে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন চলছে। অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। তিনি বলেন, ‘আগামীকালও (আজ) বেলা ১১টায় আমরা জড়ো হব।’
উপদেষ্টা পরিষদ গত ২২ মে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারি করার প্রস্তাব অনুমোদন করে। এর প্রতিবাদে ২৪ মে থেকে দিনভর সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আপত্তির মধ্যেই গত ২৫ মে রাতে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
নতুন ধারায় কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে দুই দফায় সাত দিন করে নোটিসের পর, দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা রাখার বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনকে ‘নিবর্তনমূলক’ আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে নিয়মিত বিক্ষোভ চলছে।
এই অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় গঠিত কমিটি ইতোমধ্যে বৈঠক করেছে। কর্মচারীদের সঙ্গে আরেক দফায় বৈঠক করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রস্তুত করা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সদস্য উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার সমাবেশে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, তারা কাউকে বিশ্বাস করতে চান না। ‘বিশেষ সুবিধা’ তারা চান না।
তিনি অধ্যাদেশ বাতিল এবং ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর যদি এখানে না থাকে, এই অধ্যাদেশের মাস্টারমাইন্ড কে? কে কার সুযোগ নিয়ে বসে আছে আমরা তালিকা করছি। আমরা এখন অধ্যাদেশ বাতিল ও ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা চাই। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে।’
কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা গোলাম রব্বানি বলেন, ‘স্বৈরশাসকের রেখে যাওয়া কিছু প্রেতাত্মা সরকারের সঙ্গে আমাদের মুখোমুখি করেছে। বেশ কিছু লোককে আমরা আইডেনটিফাই করেছি।’
অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় প্রধান উপদেষ্টার গঠন করে দেয়া কমিটি একটি বৈঠক করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছিলাম সেই মিটিংয়ে আমাদের ডাকবে। কিন্তু
তারা আমাদের ডাকেনি। গণমাধ্যমে শুনেছি তারা সংশোধনের ব্যবস্থা করবে। আমরা সংশোধন মানি না। এই কালো আইন বাতিল করতে হবে। সারা বাংলাদেশ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তারা বলছে, এই আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামবে।’
কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-মহাসচিব মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আমাদের জনসমাগম আরও বাড়াতে হবে। এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সচিবালয়ের প্রতিটি দেয়ালে পোস্টার সাঁটানো যায় কিনা, সবাই চিন্তা করুন।’
আইন উপদেষ্টার অনুপস্থিতিতে এই আইন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইন উপদেষ্টা বলেছেন এটা মন্দ আইন। তারপরেও এই আইন বাতিলে কালক্ষেপণ করার কারণ কী? আঙ্গুল সোজা আছে, আঙ্গুল বাঁকা না করলে কিছু হবে না।’
কর্মচারীরা ‘যমুনা ঘেরাও’ (প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়) করতে যাবেন না জানিয়ে সেলিম বলেন, ‘কারণ আমরা ওই ধরনের লোক না। মহার্ঘ্য ভাতা না দিয়ে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে যেটা ২৩৭ টাকা ৫০ পয়সা। আমরা বলছি সর্বনিম্ন চার হাজার টাকা বাড়াতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আল্লাহর বিশেষ রহমতে উনারা সচিব হয়েছেন, উপদেষ্টা হয়েছেন। কিন্তু উনাদের বিবেক ভোঁতা। আইন মানি, তালগাছ আমার। তালগাছের গোড়া না থাকলে তালগাছ থাকে না। ভালো কথায় কাজ না হলে মন্দ করতে ১০ মিনিট সময় নেব।’
কর্মচারীদের বিক্ষোভের বিষয়ে মঙ্গলবার, উপদেষ্টা ফাওজুল কবিরকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
সচিবালয়ে বিক্ষোভরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
সরকারি চাকরি আইন সংশোধন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার,(১৭ জুন ২০২৫) ও বিক্ষোভ করেছেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। তারা অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার পর মন্ত্রিপরিষদের নতুন ভবনের নিচে কর্মচারীদের সমাবেশ শুরু হয়। এ সময় সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা সমাবেশে যোগ দেন।
এদিন তাদের বড় ধরনের জমায়েতের ঘোষণা থাকলেও আগের দিনের তুলনায় আন্দোলনকারীদের উপস্থিতি কিছুটা কম দেখা গেছে।
কর্মচারী ফোরামের অন্যতম কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর বলেন, অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সারা দেশে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন চলছে। অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। তিনি বলেন, ‘আগামীকালও (আজ) বেলা ১১টায় আমরা জড়ো হব।’
উপদেষ্টা পরিষদ গত ২২ মে সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারি করার প্রস্তাব অনুমোদন করে। এর প্রতিবাদে ২৪ মে থেকে দিনভর সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আপত্তির মধ্যেই গত ২৫ মে রাতে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
নতুন ধারায় কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে দুই দফায় সাত দিন করে নোটিসের পর, দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা রাখার বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনকে ‘নিবর্তনমূলক’ আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে নিয়মিত বিক্ষোভ চলছে।
এই অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় গঠিত কমিটি ইতোমধ্যে বৈঠক করেছে। কর্মচারীদের সঙ্গে আরেক দফায় বৈঠক করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রস্তুত করা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সদস্য উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার সমাবেশে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, তারা কাউকে বিশ্বাস করতে চান না। ‘বিশেষ সুবিধা’ তারা চান না।
তিনি অধ্যাদেশ বাতিল এবং ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর যদি এখানে না থাকে, এই অধ্যাদেশের মাস্টারমাইন্ড কে? কে কার সুযোগ নিয়ে বসে আছে আমরা তালিকা করছি। আমরা এখন অধ্যাদেশ বাতিল ও ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা চাই। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে।’
কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা গোলাম রব্বানি বলেন, ‘স্বৈরশাসকের রেখে যাওয়া কিছু প্রেতাত্মা সরকারের সঙ্গে আমাদের মুখোমুখি করেছে। বেশ কিছু লোককে আমরা আইডেনটিফাই করেছি।’
অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় প্রধান উপদেষ্টার গঠন করে দেয়া কমিটি একটি বৈঠক করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছিলাম সেই মিটিংয়ে আমাদের ডাকবে। কিন্তু
তারা আমাদের ডাকেনি। গণমাধ্যমে শুনেছি তারা সংশোধনের ব্যবস্থা করবে। আমরা সংশোধন মানি না। এই কালো আইন বাতিল করতে হবে। সারা বাংলাদেশ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তারা বলছে, এই আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামবে।’
কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-মহাসচিব মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আমাদের জনসমাগম আরও বাড়াতে হবে। এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সচিবালয়ের প্রতিটি দেয়ালে পোস্টার সাঁটানো যায় কিনা, সবাই চিন্তা করুন।’
আইন উপদেষ্টার অনুপস্থিতিতে এই আইন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইন উপদেষ্টা বলেছেন এটা মন্দ আইন। তারপরেও এই আইন বাতিলে কালক্ষেপণ করার কারণ কী? আঙ্গুল সোজা আছে, আঙ্গুল বাঁকা না করলে কিছু হবে না।’
কর্মচারীরা ‘যমুনা ঘেরাও’ (প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়) করতে যাবেন না জানিয়ে সেলিম বলেন, ‘কারণ আমরা ওই ধরনের লোক না। মহার্ঘ্য ভাতা না দিয়ে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে যেটা ২৩৭ টাকা ৫০ পয়সা। আমরা বলছি সর্বনিম্ন চার হাজার টাকা বাড়াতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আল্লাহর বিশেষ রহমতে উনারা সচিব হয়েছেন, উপদেষ্টা হয়েছেন। কিন্তু উনাদের বিবেক ভোঁতা। আইন মানি, তালগাছ আমার। তালগাছের গোড়া না থাকলে তালগাছ থাকে না। ভালো কথায় কাজ না হলে মন্দ করতে ১০ মিনিট সময় নেব।’
কর্মচারীদের বিক্ষোভের বিষয়ে মঙ্গলবার, উপদেষ্টা ফাওজুল কবিরকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।