আবারও ভিডিও ছড়িয়েছে একদল লোক
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ছাড়ানোর ঘটনায় পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার চারজনের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
সোমবার,(৩০ জুন ২০২৫) দুপুরে বিচারিক হাকিম মুরাদনগর আমলি আদালতে আসামিদের হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয় বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার এসআই রুহুল আমিন জানান।
অপরদিকে ধর্ষণ মামলার আসামি ফজর আলী এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাকে আদালতে হাজির করা যায়নি বলে জানান এসআই।
গতকাল রোববার কুমিল্লা জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে মুরাদনগরে একটি গ্রামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলী নামে এক ব্যক্তি আটক ও পিটুনির শিকার হয়। পরে ফজর সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে কিছু ব্যক্তি ভুক্তভোগীর ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। পরে মুরাদনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ‘আইনানুগ ব্যবস্থা’ গ্রহণ করে।
সোমবার রাতে আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোর্ট ইন্সপেক্টর সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, আদালতে সোমবার রিমান্ডের শুনানি হয়নি। শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন। তিনি জানান, নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, সেটিও আমরা তদন্ত করে দেখছি। কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
জানা যায়, গত শুক্রবার ওই নারী ধর্ষণের অভিযোগে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্যাতনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। পরে রোববার পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে আরও একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী। এতে চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। একই এলাকার আবদুল হান্নানের ছেলে সুমন, জাফর আলীর ছেলে রমজান, মো. আলমের ছেলে আরিফ ও তালেম হোসেনের ছেলে অনিক। এ ঘটনায় মূল আসামিসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় ৪ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। ধর্ষণ মামলার মূল আসামি ফজর আলী বর্তমানে পুলিশ প্রহরায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে, মুরাদনগরে এক নারীকে তার বাবার বাড়িতে নিপীড়নের ঘটনায় আরও একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সোমবার সকালে ‘তোর বাপেরা আইছে’ নামে একটি ফেইসবুক আইডি থেকে ৩ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে ফের নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের মুহাম্মদ আলী সুমনের নেতৃত্বে রমজান, অনিক, আরিফসহ ৭/৮ জন ধর্ষক ফজর আলীর হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করছে। সুমনের সহযোগী অনিক ওই নারীকে চৌকির ওপরে শুইয়ে নিজ হাতে বিবস্ত্র করছেন। এ সময় অন্য এক নারীকে তাদের রক্ষা করার জন্য চিৎকার করতেও দেখা গেছে। কেউ কেউ এ ঘটনাটি ভিডিও করছেন।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান জানান, নির্যাতনের সময় একাধিক ভিডিও ধারণ করা হয়। গ্রেপ্তার চারজনের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তবে জব্দের আগেই ভিডিওগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে
পড়ে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আর এ ঘটনায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামির ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম, তা নিয়ে কথাবার্তা হতো। ওই রাতে ফজর আলী খারাপ উদ্দেশ্যেই আমার কাছে এসেছে।
তবে তার ছোট ভাই শাহ পরান তার পেছনে আগে থেকেই লোক লাগাই রাখছে। ফজর আলী আমার ঘরে আসার পরপরই ১০/১২ জন লোক এসে আমাদের দু’জনকে নির্যাতন করতে থাকেন।
রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন বলেন, ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে ফজর আলীর আর্থিক লেনদেন রয়েছে। সেই সুবাদে ওই নারীর বাড়িতে ফজর আলী প্রায়ই আসা-যাওয়া করত। এটিও এলাকার লোকজন জানে। তবে ঘটনা বড় করার পেছনের কারিগর হচ্ছে ছাত্রলীগ সভাপতি সুমন। তারা আগে থেকে ফজর আলীকে টার্গেট করে দুজনকে একসঙ্গে ধরে পরিকল্পিতভাবে বিবস্ত্র এবং নির্যাতন করে এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে ওই চক্রটি ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে এ কাজ করে থাকতে পারে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এমন কোনো তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রকৃত অর্থেই ওই নারী পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বুঝেছি, তিনি সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছেন কিনা, সেটিও আমরা তদন্ত করে দেখছি।
আবারও ভিডিও ছড়িয়েছে একদল লোক
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ছাড়ানোর ঘটনায় পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার চারজনের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
সোমবার,(৩০ জুন ২০২৫) দুপুরে বিচারিক হাকিম মুরাদনগর আমলি আদালতে আসামিদের হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয় বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার এসআই রুহুল আমিন জানান।
অপরদিকে ধর্ষণ মামলার আসামি ফজর আলী এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাকে আদালতে হাজির করা যায়নি বলে জানান এসআই।
গতকাল রোববার কুমিল্লা জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে মুরাদনগরে একটি গ্রামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলী নামে এক ব্যক্তি আটক ও পিটুনির শিকার হয়। পরে ফজর সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে কিছু ব্যক্তি ভুক্তভোগীর ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। পরে মুরাদনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ‘আইনানুগ ব্যবস্থা’ গ্রহণ করে।
সোমবার রাতে আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোর্ট ইন্সপেক্টর সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, আদালতে সোমবার রিমান্ডের শুনানি হয়নি। শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন। তিনি জানান, নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, সেটিও আমরা তদন্ত করে দেখছি। কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
জানা যায়, গত শুক্রবার ওই নারী ধর্ষণের অভিযোগে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্যাতনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। পরে রোববার পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে আরও একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী। এতে চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। একই এলাকার আবদুল হান্নানের ছেলে সুমন, জাফর আলীর ছেলে রমজান, মো. আলমের ছেলে আরিফ ও তালেম হোসেনের ছেলে অনিক। এ ঘটনায় মূল আসামিসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় ৪ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। ধর্ষণ মামলার মূল আসামি ফজর আলী বর্তমানে পুলিশ প্রহরায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে, মুরাদনগরে এক নারীকে তার বাবার বাড়িতে নিপীড়নের ঘটনায় আরও একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সোমবার সকালে ‘তোর বাপেরা আইছে’ নামে একটি ফেইসবুক আইডি থেকে ৩ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে ফের নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের মুহাম্মদ আলী সুমনের নেতৃত্বে রমজান, অনিক, আরিফসহ ৭/৮ জন ধর্ষক ফজর আলীর হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করছে। সুমনের সহযোগী অনিক ওই নারীকে চৌকির ওপরে শুইয়ে নিজ হাতে বিবস্ত্র করছেন। এ সময় অন্য এক নারীকে তাদের রক্ষা করার জন্য চিৎকার করতেও দেখা গেছে। কেউ কেউ এ ঘটনাটি ভিডিও করছেন।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান জানান, নির্যাতনের সময় একাধিক ভিডিও ধারণ করা হয়। গ্রেপ্তার চারজনের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তবে জব্দের আগেই ভিডিওগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে
পড়ে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আর এ ঘটনায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামির ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম, তা নিয়ে কথাবার্তা হতো। ওই রাতে ফজর আলী খারাপ উদ্দেশ্যেই আমার কাছে এসেছে।
তবে তার ছোট ভাই শাহ পরান তার পেছনে আগে থেকেই লোক লাগাই রাখছে। ফজর আলী আমার ঘরে আসার পরপরই ১০/১২ জন লোক এসে আমাদের দু’জনকে নির্যাতন করতে থাকেন।
রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন বলেন, ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে ফজর আলীর আর্থিক লেনদেন রয়েছে। সেই সুবাদে ওই নারীর বাড়িতে ফজর আলী প্রায়ই আসা-যাওয়া করত। এটিও এলাকার লোকজন জানে। তবে ঘটনা বড় করার পেছনের কারিগর হচ্ছে ছাত্রলীগ সভাপতি সুমন। তারা আগে থেকে ফজর আলীকে টার্গেট করে দুজনকে একসঙ্গে ধরে পরিকল্পিতভাবে বিবস্ত্র এবং নির্যাতন করে এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে ওই চক্রটি ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে এ কাজ করে থাকতে পারে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এমন কোনো তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রকৃত অর্থেই ওই নারী পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বুঝেছি, তিনি সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছেন কিনা, সেটিও আমরা তদন্ত করে দেখছি।