ঠিকাদারি বিল যাচ্ছে নতুন অ্যাকাউন্টে, ঢাকা মেট্রোর ৪০ প্রতিষ্ঠানের বিল ‘নাকচ’
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার। করতেন ঠিকাদারি। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক। একাধিক হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় তার সবকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।
পলাতক থেকেও তিনি ঠিকাদারি কাজের বিল পাচ্ছেন। লিয়াকতের নামে নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে ‘ঠিকাদারি’ কাজের বিল হিসাবে এক কোটি ৬৮ লাখ টাকা পাঠিয়েছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডির) প্রকৌশলীরা। এই বিল ‘অগ্রিম’ দেয়া হয়েছে। চলতি বছর ওই অ্যাকাউন্টে আরও এক কোটি টাকা পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লিয়াকত শিকদারের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম কম্পিউটার ওয়ার্ল্ড বিডি। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে লিয়াকত শিকদারও ভারতে পালিয়েছে বলে তার ঘনিষ্টরা জানিয়েছেন। এরপর একাধিক হত্যা মামলায় তার সবকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে সরকার।
২০১৯ সালে পুরান ঢাকার শেরে বাংলা সরকারি মহিলা কলেজে একটি ১০তলা অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ ভাগিয়ে নেয় লিয়াকত শিকদারের প্রতিষ্ঠান। সাত বছরে প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ের এই কাজ মাত্র ৭০ শতাংশের মতো সম্পন্ন হয়েছে।
এই অবস্থায় লিয়াকত শিকদারের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে গত ২৯ জুন এক কোটি ৬৭ লাখ ৭১ হাজার টাকা পাঠিয়েছে ইইডির ‘ঢাকা মেট্রো’র প্রকৌশলীরা। ঢাকা মেট্রোর নির্বাহী প্রকৌশলী, সংশ্লিষ্ট সহকারী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের স্বাক্ষরে এই বিল ‘ছাড়’ করা হয়েছে। এই অনিয়মের সঙ্গে ইইডির প্রধান কার্যালয়ের দু’জন নির্বাহী প্রকৌশলী ও একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে একজন নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ইইডির প্রধান প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন জানিয়েছেন, বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রধান প্রকৌশলীর সংশ্লিষ্টতা থাকে না। এটি সরাসরি নির্বাহী প্রকৌশলীরা করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।
ইইডির ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের দু’জন প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে জানিয়েছেন, কয়েকজন ঠিকাদারকে ‘অগ্রিম বিল’ দেয়ার ‘প্রস্তাব’ করতে তাদের ওপর ব্যাপকভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু তারা অগ্রিম বিল দিতে ‘রাজি’ হচ্ছেন না।
এর কারণ হিসেবে তারা বলেন, ‘জালিয়াতির’ অভিযোগে সম্প্রতি এজি অফিস (মহাহিসাব রক্ষকের কার্যালয়) থেকে ঢাকা মেট্রোর অন্তত ৪০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিল ‘নাকচ’ করা হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ বা কার্যাদেশ দেয়া হয়েছিল সেগুলোর সঙ্গে ওই ৪০টি প্রতিষ্ঠানের ‘গড়মিল’ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজে একটি ১০তম অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য গত বছর এক ঠিকাদারকে প্রায় ২০ লাখ টাকা অগ্রিম দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ওই ঠিকাদারও আত্নগোপনে চলে যান। কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের শতাধিক কাজের অগ্রিম বিল নিয়ে ঠিকাদাররা পালিয়েছেন।
ঠিকাদারি বিল যাচ্ছে নতুন অ্যাকাউন্টে, ঢাকা মেট্রোর ৪০ প্রতিষ্ঠানের বিল ‘নাকচ’
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার। করতেন ঠিকাদারি। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক। একাধিক হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় তার সবকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।
পলাতক থেকেও তিনি ঠিকাদারি কাজের বিল পাচ্ছেন। লিয়াকতের নামে নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে ‘ঠিকাদারি’ কাজের বিল হিসাবে এক কোটি ৬৮ লাখ টাকা পাঠিয়েছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডির) প্রকৌশলীরা। এই বিল ‘অগ্রিম’ দেয়া হয়েছে। চলতি বছর ওই অ্যাকাউন্টে আরও এক কোটি টাকা পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লিয়াকত শিকদারের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম কম্পিউটার ওয়ার্ল্ড বিডি। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে লিয়াকত শিকদারও ভারতে পালিয়েছে বলে তার ঘনিষ্টরা জানিয়েছেন। এরপর একাধিক হত্যা মামলায় তার সবকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে সরকার।
২০১৯ সালে পুরান ঢাকার শেরে বাংলা সরকারি মহিলা কলেজে একটি ১০তলা অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ ভাগিয়ে নেয় লিয়াকত শিকদারের প্রতিষ্ঠান। সাত বছরে প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ের এই কাজ মাত্র ৭০ শতাংশের মতো সম্পন্ন হয়েছে।
এই অবস্থায় লিয়াকত শিকদারের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে গত ২৯ জুন এক কোটি ৬৭ লাখ ৭১ হাজার টাকা পাঠিয়েছে ইইডির ‘ঢাকা মেট্রো’র প্রকৌশলীরা। ঢাকা মেট্রোর নির্বাহী প্রকৌশলী, সংশ্লিষ্ট সহকারী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের স্বাক্ষরে এই বিল ‘ছাড়’ করা হয়েছে। এই অনিয়মের সঙ্গে ইইডির প্রধান কার্যালয়ের দু’জন নির্বাহী প্রকৌশলী ও একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে একজন নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ইইডির প্রধান প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন জানিয়েছেন, বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রধান প্রকৌশলীর সংশ্লিষ্টতা থাকে না। এটি সরাসরি নির্বাহী প্রকৌশলীরা করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।
ইইডির ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের দু’জন প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে জানিয়েছেন, কয়েকজন ঠিকাদারকে ‘অগ্রিম বিল’ দেয়ার ‘প্রস্তাব’ করতে তাদের ওপর ব্যাপকভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু তারা অগ্রিম বিল দিতে ‘রাজি’ হচ্ছেন না।
এর কারণ হিসেবে তারা বলেন, ‘জালিয়াতির’ অভিযোগে সম্প্রতি এজি অফিস (মহাহিসাব রক্ষকের কার্যালয়) থেকে ঢাকা মেট্রোর অন্তত ৪০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিল ‘নাকচ’ করা হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ বা কার্যাদেশ দেয়া হয়েছিল সেগুলোর সঙ্গে ওই ৪০টি প্রতিষ্ঠানের ‘গড়মিল’ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজে একটি ১০তম অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য গত বছর এক ঠিকাদারকে প্রায় ২০ লাখ টাকা অগ্রিম দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ওই ঠিকাদারও আত্নগোপনে চলে যান। কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের শতাধিক কাজের অগ্রিম বিল নিয়ে ঠিকাদাররা পালিয়েছেন।