এনার্জি টক: ইয়ূথ ফর জাস্ট ট্রানজিশন
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও জলবায়ু সহনশীলতার পথে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, একটি ন্যায়সংগত ও টেকসই জ্বালানি রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় আরও জরুরি হয়ে উঠেছে। এই পরিবর্তনকে এগিয়ে নিতে জ্ঞান নির্ভর তরুণদের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য বলে মনে করেন বক্তারা।
সোমবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অডিটোরিয়ামে —শুধু ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে নয়, বরং বর্তমান সময়ের পরিবর্তনকারী হিসেবেও। এই উদ্দেশ্যে তরুণদের কণ্ঠস্বর আরও জোরদার করা এবং ন্যায়সংগত জ্বালানি রূপান্তর গড়ে তোলার লক্ষ্যে’ এনার্জি টক: ইয়ূথ ফর জাস্ট ট্রানজিশন’ শিরোনামে সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ব্রাইটার্স, ক্লাইমেট ফ্রন্টিয়ার, ইকো নেটওয়ার্ক, এনভায়রনমেন্টাল সেপার্স নেটওয়ার্ক, গ্লোবাল ল’ থিঙ্কারস সোসাইটি (জিএলটিএস), মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, ওএবি ফাউন্ডেশন, সচেতন ফাউন্ডেশন, ইয়ং ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ইউক্যান), ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ।
ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনোমিকস অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল অ্যানালাইসিস ( আইইইএফএ)-এর লিড এনালিস্ট শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে আমদানী নির্ভর জ্বালানী শক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে কার্বণ-নিঃসরন কমিয়ে জ্বালানি চাহিদা মিটানো। আমরা বাসাবাড়িতে সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা করতে পারি ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারি। আমরা জ্বালানি রুপান্তরে অনেক দেশের চেয়েও পিছিয়ে আছি। আমাদের দেশে শুধু গ্যাসের দাম ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে তারপরও ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার।’
সেন্টার ফর রিনিউএবল এনার্জি সার্ভিসেস লিমিটেড (সিআরইএসএল) চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত আমাদের গ্যাসের চাহিদা বাড়তেই থাকবে, তারপর কমবে। আমরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও দেখছি সরকার পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছে। ভবিষ্যতে আমরা পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পাব। কিন্তু তখন আমাদের সরকারকে আরো বেশি ভর্তুকি দিতে হবে।’
তিনি অংশগ্রহনকারীদেরকে গ্রীন হাউস সংকট সম্পর্কে ধারনা দেন। তিন বলেন বাংলাদেশে আমরা জীবাশ্ম জ্বালানী ভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছি, যেখানে অন্যান্য দেশে জীবাশ্ম জ্বালানী ভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্রের সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং একপর্যায়ে থাকবেই না। তিনি অংশগ্রহনকারীদের প্রশ্নের উত্তরে সকলকে পরিবেশ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করতে মাইন্ড সেট তৈরী করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, ‘জলবায়ু যোদ্ধা হতে হলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’
তিনি জলবায়ু যোদ্ধা হিসেবে কার্যক্রমের ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে ধারনা দেন। তিনি বৈশ্বিক উষ্ণতার কারন ও প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি আরোও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২০১০ সালে পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্লানে কয়লাভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়। তখন থেকেই বাংলাদেশের জলবায়ু যোদ্ধারা সুন্দরবন সুরক্ষার জন্য আন্দোলন শুরু করেন, কারণ এতে সুন্দরবনের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। অনেক সংস্থাই এখন এ বিষয়ে কাজ করতে চাইছে, তবে তারা জানেনা কিভাবে করবে। তাই সবাইকে এ বিষয়ে জানতে হবে, এজন্যই আমাদের এ আয়োজন।’
তিনি নদী দূষণের মাত্রা ও ভয়াবহতাও তুলে ধরে বলেন ভারতের বিভিন্ন পরিকল্পনা বাংলাদেশের সব নদীগুলোকে ঘিরে ধরে সেগুলোর স্বাভাবিক গতিপথ নষ্ট করে দিচ্ছে যার ফলে আমাদের দেশের পরিবেশ মারাত্মক হুমকির সম্মুখিন হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও জলবায়ু আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বাংলাদেশের বিদ্যমান জ্বালানি অবস্থা, প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা, নীতিগত চ্যালেঞ্জ ও জলবায়ু আন্দোলনে তরুণদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গ্লোবাল ল’ থিংকার্স সোসাইটির সভাপতি রওমান স্মিতা, রাকিব হোসেন, জোবায়ের হোসেন, যুধিষ্ঠির চন্দ্র বিশ্বাস, রবিউল আওয়াল এবং ইমরান হোসেন। অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’র ফয়সাল আহমেদ, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি সিলেট-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. জহিরুল হক এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে একটি কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নিবন্ধিত ২১০ জন তরুণ অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে সনদ বিতরণ করা হয়।
এনার্জি টক: ইয়ূথ ফর জাস্ট ট্রানজিশন
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও জলবায়ু সহনশীলতার পথে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, একটি ন্যায়সংগত ও টেকসই জ্বালানি রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় আরও জরুরি হয়ে উঠেছে। এই পরিবর্তনকে এগিয়ে নিতে জ্ঞান নির্ভর তরুণদের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য বলে মনে করেন বক্তারা।
সোমবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অডিটোরিয়ামে —শুধু ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে নয়, বরং বর্তমান সময়ের পরিবর্তনকারী হিসেবেও। এই উদ্দেশ্যে তরুণদের কণ্ঠস্বর আরও জোরদার করা এবং ন্যায়সংগত জ্বালানি রূপান্তর গড়ে তোলার লক্ষ্যে’ এনার্জি টক: ইয়ূথ ফর জাস্ট ট্রানজিশন’ শিরোনামে সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ব্রাইটার্স, ক্লাইমেট ফ্রন্টিয়ার, ইকো নেটওয়ার্ক, এনভায়রনমেন্টাল সেপার্স নেটওয়ার্ক, গ্লোবাল ল’ থিঙ্কারস সোসাইটি (জিএলটিএস), মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, ওএবি ফাউন্ডেশন, সচেতন ফাউন্ডেশন, ইয়ং ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ইউক্যান), ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ।
ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনোমিকস অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল অ্যানালাইসিস ( আইইইএফএ)-এর লিড এনালিস্ট শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে আমদানী নির্ভর জ্বালানী শক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে কার্বণ-নিঃসরন কমিয়ে জ্বালানি চাহিদা মিটানো। আমরা বাসাবাড়িতে সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা করতে পারি ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারি। আমরা জ্বালানি রুপান্তরে অনেক দেশের চেয়েও পিছিয়ে আছি। আমাদের দেশে শুধু গ্যাসের দাম ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে তারপরও ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার।’
সেন্টার ফর রিনিউএবল এনার্জি সার্ভিসেস লিমিটেড (সিআরইএসএল) চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত আমাদের গ্যাসের চাহিদা বাড়তেই থাকবে, তারপর কমবে। আমরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও দেখছি সরকার পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছে। ভবিষ্যতে আমরা পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পাব। কিন্তু তখন আমাদের সরকারকে আরো বেশি ভর্তুকি দিতে হবে।’
তিনি অংশগ্রহনকারীদেরকে গ্রীন হাউস সংকট সম্পর্কে ধারনা দেন। তিন বলেন বাংলাদেশে আমরা জীবাশ্ম জ্বালানী ভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছি, যেখানে অন্যান্য দেশে জীবাশ্ম জ্বালানী ভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্রের সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং একপর্যায়ে থাকবেই না। তিনি অংশগ্রহনকারীদের প্রশ্নের উত্তরে সকলকে পরিবেশ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করতে মাইন্ড সেট তৈরী করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, ‘জলবায়ু যোদ্ধা হতে হলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’
তিনি জলবায়ু যোদ্ধা হিসেবে কার্যক্রমের ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে ধারনা দেন। তিনি বৈশ্বিক উষ্ণতার কারন ও প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি আরোও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২০১০ সালে পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্লানে কয়লাভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়। তখন থেকেই বাংলাদেশের জলবায়ু যোদ্ধারা সুন্দরবন সুরক্ষার জন্য আন্দোলন শুরু করেন, কারণ এতে সুন্দরবনের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। অনেক সংস্থাই এখন এ বিষয়ে কাজ করতে চাইছে, তবে তারা জানেনা কিভাবে করবে। তাই সবাইকে এ বিষয়ে জানতে হবে, এজন্যই আমাদের এ আয়োজন।’
তিনি নদী দূষণের মাত্রা ও ভয়াবহতাও তুলে ধরে বলেন ভারতের বিভিন্ন পরিকল্পনা বাংলাদেশের সব নদীগুলোকে ঘিরে ধরে সেগুলোর স্বাভাবিক গতিপথ নষ্ট করে দিচ্ছে যার ফলে আমাদের দেশের পরিবেশ মারাত্মক হুমকির সম্মুখিন হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও জলবায়ু আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বাংলাদেশের বিদ্যমান জ্বালানি অবস্থা, প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা, নীতিগত চ্যালেঞ্জ ও জলবায়ু আন্দোলনে তরুণদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গ্লোবাল ল’ থিংকার্স সোসাইটির সভাপতি রওমান স্মিতা, রাকিব হোসেন, জোবায়ের হোসেন, যুধিষ্ঠির চন্দ্র বিশ্বাস, রবিউল আওয়াল এবং ইমরান হোসেন। অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’র ফয়সাল আহমেদ, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি সিলেট-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. জহিরুল হক এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে একটি কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নিবন্ধিত ২১০ জন তরুণ অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে সনদ বিতরণ করা হয়।