জঞ্জালে, জমে থাকা পানিতে বাসা বাঁধে এডিস, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কাটে না। রাজধানীর মুগদাপাড়ার একটি ছবি -সংবাদ
ডায়রিয়া ও ডেঙ্গুর পরে নতুন করে করোনার হানায় বরিশালের জনস্বাস্থ্য চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন। গতকাল বৃহস্পতিবারও বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও এক জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে গত এক সপ্তাহ ৪ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হলো। এ পর্যন্ত মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে ২৩ জন। হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যাটা প্রায় সাড়ে ৫ হাজারের কাছে। যার প্রায় ৫ হাজারই গত জুন মাসে শুরু থেকে চলতি জুলাইয়ের ৩ তারিখ পর্যন্ত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী সংখ্যা ছিল ৪৭৫ জন।
অন্যদিকে বছরের প্রথম ৬ মাসে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া রোগী ভর্তিও সংখ্যাটা ৪৬ হাজার অতিক্রম করলেও এর কয়েকগুণ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ঘরে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল চিকিৎসক জানিয়েছন। এখনও প্রতিদিন গড়ে আড়াইশ’ থেকে পৌনে ৩শ’ ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
এক হিসেবে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে ৬ হাজার ২৩১ জন ডায়রিয়াসহ পেটের পীড়া নিয়ে সরকারি হাসপাতাল সমূহে ভর্তি হন। ফেব্রুয়ারি মাসে আক্রান্তের সংখ্যাটা ৬ হাজার ৬৩ জনে সীমিত ছিল। কিন্তু মার্চে হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাটা ৭ হাজার ৮১৯ জনে উন্নীত হয়। এপ্রিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে সরকারি হাসপাতাগুলোতে ভর্তিকৃত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাটা এক লাফে ১২ হাজার ৫৪৬ জনে উন্নীত হয়। মে মাসে অবশ্য সংখ্যাটা ৯ হাজার ৫৭৮ জনে হ্রাস পায়। আর জুনে সংখ্যটা ৭ হাজার ৮৪৬ জনে স্থির ছিল। গত বছরও বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৭২ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যে সংখ্যাটা ২০২৩ সালে ছিল ৭৭ হাজারেরও বেশি। আর ২০২১ সনে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমনের মধ্যেও বরিশালে প্রায় ৮০ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। এ পরিস্থিতির মধ্যেই বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ইতোমধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে। ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাটা সাড়ে ৫ হাজারের কাছে।
২০২৩ সালে বরিশাল বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত প্রায় ৪০ হাজার ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছিল দুই শতাধিক। গতবছর পরিস্থিতি কিছুটা ইতিবাচক হলেও বর্ষার পরে শরৎ পেরিয়ে হেমন্তের মধবর্তী সময়েও ডেঙ্গু দাপিয়ে বেড়িয়েছে। যারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর বর্ষার আগেই বরিশালে ডেঙ্গু যথেষ্ট দুর্ভাবনা তৈরি করে এখন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত বছর ১ নভেম্বর পর্যন্ত বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ৩৫ জনের মৃত্যু ঘটে। যার মধ্যে শুধু অক্টোবরেই ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ছিল আড়াই হাজারের মতো। এ সময়ে মারা গেছেন ১৭ জন। চলতি বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গুর উপস্থিতি
লক্ষণীয় থাকলেও মে মাসের শুরু থেকে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল। জুনের শুরু থেকে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে শুরু করে। ৩ জুন পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে মারা গেছেন ১৩ জন। এদিন দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় পৌনে ৫শ’। যার প্রায় আড়াইশই বরগুনায়। শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ১শ’।
এদিকে মৃত্যুর বার্তা নিয়ে ইতোমধ্যে বরিশালেও করোনা হানা দিনে শুরু করেছে। তবে এ অঞ্চলে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ ও ভোলা জেনারেল হাসপাতালে যে ২টি আরটি পিসিআর ল্যাব রয়েছে, তা এখনও চালু করা হয়নি। বরিশালের ল্যাবের ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুপমেন্ট অবিলম্বে ক্যলিব্রেশন না করলে ল্যাবটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যান্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইতোমধ্যে দু’ শতাধিক র্যাপিড টেস্টের মাধ্যমে অন্তত ১০ জনের করোনা শনাক্তের পরে তাদের হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালাগুলোতেও করোনা পজেটিভ রোগীদের চিকিৎসায় ৫৬১টি বেড প্রস্তুত করার কথা বলেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মধ্যে শুধুমাত্র শের এবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮টি আইসিইউ রয়েছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে ১ হাজার ৭২৩টি অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকলেও হাইপ্রোনেজাল ক্যনোলা আছে মাত্র ১০৬টি। যার ৭৭টি শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
জঞ্জালে, জমে থাকা পানিতে বাসা বাঁধে এডিস, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কাটে না। রাজধানীর মুগদাপাড়ার একটি ছবি -সংবাদ
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
ডায়রিয়া ও ডেঙ্গুর পরে নতুন করে করোনার হানায় বরিশালের জনস্বাস্থ্য চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন। গতকাল বৃহস্পতিবারও বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও এক জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে গত এক সপ্তাহ ৪ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হলো। এ পর্যন্ত মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে ২৩ জন। হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যাটা প্রায় সাড়ে ৫ হাজারের কাছে। যার প্রায় ৫ হাজারই গত জুন মাসে শুরু থেকে চলতি জুলাইয়ের ৩ তারিখ পর্যন্ত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী সংখ্যা ছিল ৪৭৫ জন।
অন্যদিকে বছরের প্রথম ৬ মাসে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া রোগী ভর্তিও সংখ্যাটা ৪৬ হাজার অতিক্রম করলেও এর কয়েকগুণ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ঘরে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল চিকিৎসক জানিয়েছন। এখনও প্রতিদিন গড়ে আড়াইশ’ থেকে পৌনে ৩শ’ ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
এক হিসেবে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে ৬ হাজার ২৩১ জন ডায়রিয়াসহ পেটের পীড়া নিয়ে সরকারি হাসপাতাল সমূহে ভর্তি হন। ফেব্রুয়ারি মাসে আক্রান্তের সংখ্যাটা ৬ হাজার ৬৩ জনে সীমিত ছিল। কিন্তু মার্চে হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাটা ৭ হাজার ৮১৯ জনে উন্নীত হয়। এপ্রিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে সরকারি হাসপাতাগুলোতে ভর্তিকৃত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাটা এক লাফে ১২ হাজার ৫৪৬ জনে উন্নীত হয়। মে মাসে অবশ্য সংখ্যাটা ৯ হাজার ৫৭৮ জনে হ্রাস পায়। আর জুনে সংখ্যটা ৭ হাজার ৮৪৬ জনে স্থির ছিল। গত বছরও বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৭২ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যে সংখ্যাটা ২০২৩ সালে ছিল ৭৭ হাজারেরও বেশি। আর ২০২১ সনে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমনের মধ্যেও বরিশালে প্রায় ৮০ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। এ পরিস্থিতির মধ্যেই বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ইতোমধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে। ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাটা সাড়ে ৫ হাজারের কাছে।
২০২৩ সালে বরিশাল বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত প্রায় ৪০ হাজার ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছিল দুই শতাধিক। গতবছর পরিস্থিতি কিছুটা ইতিবাচক হলেও বর্ষার পরে শরৎ পেরিয়ে হেমন্তের মধবর্তী সময়েও ডেঙ্গু দাপিয়ে বেড়িয়েছে। যারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর বর্ষার আগেই বরিশালে ডেঙ্গু যথেষ্ট দুর্ভাবনা তৈরি করে এখন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত বছর ১ নভেম্বর পর্যন্ত বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ৩৫ জনের মৃত্যু ঘটে। যার মধ্যে শুধু অক্টোবরেই ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ছিল আড়াই হাজারের মতো। এ সময়ে মারা গেছেন ১৭ জন। চলতি বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গুর উপস্থিতি
লক্ষণীয় থাকলেও মে মাসের শুরু থেকে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল। জুনের শুরু থেকে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে শুরু করে। ৩ জুন পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে মারা গেছেন ১৩ জন। এদিন দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় পৌনে ৫শ’। যার প্রায় আড়াইশই বরগুনায়। শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ১শ’।
এদিকে মৃত্যুর বার্তা নিয়ে ইতোমধ্যে বরিশালেও করোনা হানা দিনে শুরু করেছে। তবে এ অঞ্চলে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ ও ভোলা জেনারেল হাসপাতালে যে ২টি আরটি পিসিআর ল্যাব রয়েছে, তা এখনও চালু করা হয়নি। বরিশালের ল্যাবের ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুপমেন্ট অবিলম্বে ক্যলিব্রেশন না করলে ল্যাবটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যান্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইতোমধ্যে দু’ শতাধিক র্যাপিড টেস্টের মাধ্যমে অন্তত ১০ জনের করোনা শনাক্তের পরে তাদের হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালাগুলোতেও করোনা পজেটিভ রোগীদের চিকিৎসায় ৫৬১টি বেড প্রস্তুত করার কথা বলেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মধ্যে শুধুমাত্র শের এবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮টি আইসিইউ রয়েছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে ১ হাজার ৭২৩টি অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকলেও হাইপ্রোনেজাল ক্যনোলা আছে মাত্র ১০৬টি। যার ৭৭টি শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে