alt

জাতীয়

তেঁতুলিয়ায় সরকারি ধান সংগ্রহে অনিয়ম

প্রতিনিধি, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) : শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সরকারি খাদ্য গুদামে বোরো-ইরি ধান সংগ্রহে নানা অনিয়ম, গরমিল ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে পর পর তিন দিন খাদ্যগুদাম পরিদর্শন করেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক বাস্তব প্রতিবেদন সম্পন্ন করতে পারেনি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিপাদনকারী কর্মকর্তা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসে গিয়ে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজ শাহীন খসরু খাদ্যগুদামের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক বাস্তব প্রতিবেদন সম্পন্ন করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে গত ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর পর তিন দিন তেঁতুলিয়া লোকাল সাপ্লাই ডিপো (এলএসডি) পরিদর্শন করেও খাদ্য গুদামের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে বার্ষিক বাস্তব প্রতিবেদন সম্পন্ন করতে পারেননি তিনি ।

আরও জানা যায়, উপজেলা খাদ্য গুদামে গিয়ে গুদামের বিভিন্ন খামালে খালি বস্তা, ধান, আমন চাল ও বোরো চাল সংগ্রহ এবং মজুদের সঙ্গে ব্যাপক গরমিলের সত্যতা পান প্রতিপাদনকারী কর্মকর্তা। এফএস-৩ এর ৩ নম্বর খামালে ওহি জুট ফাইবারের ২০ হাজার ৭৫ পিছ বস্তা থাকার কথা থাকলেও ৫টি বেল পরীক্ষা করে মাত্র ১টিতে ওহি জুট ফাইবারের নতুন বস্তা পাওয়া যায় এবং অন্য বেলগুলোতে পুরনো অন্য মিলের বস্তা পাওয়া যায়। এ সময় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এই ঘটনা উদ্ঘাটনের পর সব বস্তা যাচাই করতে অস্বীকৃতি জানান। একই এফএস এর ৪ নম্বর খামালে ৭ হাজার ৬শ’ ৩৪টি বস্তা থাকার কথা থাকলেও পুরনো ও ভিন্ন ভিন্ন মিলের ৬ হাজার ২০০টি বস্তা পাওয়া যায়, আবার ঘোষিত সংখ্যার ১ হাজার ৯৩৫টি খালি বস্তার ৫নং খামালই পাওয়া যায়নি বলে জানা যায়।

অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পরিদর্শনকালীন সময়ে বোরো ধান ক্রয়ে ওজনে কম ও আদ্রতা পরিমাপেও তারতম্য দেখা যায়। এ সময় আমন চালের খামালে বোরো ধানের স্টেনসিল যুক্ত বস্তা পাওয়া যাওয়ায় প্রতিপাদনকারী কর্মকর্তা (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) খামাল ভেঙে বস্তা মিলাতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া আহমেদ সবকিছু জেনে বুঝেও খামাল ভাঙতে অস্বীকৃতি জানার সত্যতা পাওয়া যায়। তার মতে মোট বস্তার সংখ্যা ঠিক থাকলেই হবে তা বোরো বা আমন হোক না কেনো?

অভিযোগ রয়েছে, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা দীর্ঘ দিন এই খাদ্য গুদামে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছে। বিভিন্ন মৌসুমে প্রকৃত কৃষকদের কাছে ধান সংগ্রহ না করে নিজেদের পছন্দের মানুষকে কৃষক সাজিয়ে ও ব্যবসায়ীদের কাছে ধান সংগ্রহ করে সরকারি অর্থের অপচয় করার অভিযোগও উঠেছে। কৃষকরা বলছেন, তারা জানতেই পারছেন না কখন খাদ্য অফিস সরকারিভাবে ধান, চাল ক্রয় করেন। ধান-চাল সংগ্রহের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাসহ লিফলেট বিতরণের কথা থাকলেও উপজেলা খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব বাস্তাবায়ন না করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আঁতাত করে ধান-চাল ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে।

আরও অভিযোগ রয়েছে, প্রকৃত কৃষকের পরিবর্তে ফরিয়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। এ বছর অ্যাপের মাধ্যমে আবেদন নেয়া হলেও লটারি না করে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অফিসের নিজের পছন্দের মানুষের নামে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।

তেঁতুলিয়া এলএসডিতে ধান ক্রয়ের সময় একাধিকবার এলএসডিতে গিয়ে দেখতে ও জানতে পারা যায়, ফরিয়া ব্যবসায়ীর ধানই গুদামে ঢুকছে। এলএসডির ভিতরে ধান আনলোডের সময় জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত কৃষকদের পাওয়া যায়নি। ফরিয়া ব্যবসায়ী শাহজাহান ও লেবার সর্দার সফিকুলের বক্তব্যে জানা যায়, তারা গ্রামে গ্রামে ধান ক্রয় করে এলএসডিতে নিয়ে আসেন। এছাড়া কৃষক দেখতে না পেয়ে সহকারী উপ খাদ্য পরিদর্শক নিমাই চন্দ্র রায়কে জিজ্ঞাসা করলে সর্দার সফিকুল তাৎক্ষণিক কৃষক সেজে বসেন।

এ বিষয়ে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবেল আলমের কাছ থেকে জানার জন্য মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা সবকিছুই ঠিকঠাক মতো করেছি, অফিসে আসিয়েন সাক্ষাতে কথা হবে।’

তেঁতুলিয়ার সদ্য প্রাক্তন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামরুজ্জামান যিনি বর্তমানে রংপুর বিভাগে সহকারী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন তার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বদলি হয়েছি তেঁতুলিয়া থেকে। নিয়ম অনুযায়ী সব হয়েছে, অফিসে গেলেই তালিকা পাবেন।’

উপজেলা খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মো. জাকারিয়া আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ধান কৃষকদের কাছ থেকে কেনা, অনিয়মের সুযোগ নাই আমাদের। কৃষকদের একাউন্ট-পে এর মাধ্যমে আমরা তাদেরকে বিল দিই। এখানে আমি একেবারে নতুন। ওখানে কাগজপত্র দেখে আমি বক্তব্য দিতে

পারবো। উপজেলা খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, ‘সরকারি স্বার্থ রক্ষার্থে বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। তিনি বলেন, তিন দিনেও খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার অসহযোগিতা এবং ধান-চাল ক্রয়ের মজুদের অমিল থাকায় বার্ষিক বাস্তব প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রাপ্ত অনিয়মের বিষয়ে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানানো হয়েছে।

সিলেটে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার আন্দোলন

সম্পত্তির জন্য মাকে মারধর করলেন স্কুল শিক্ষক ছেলে

রাজধানীতে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার তিন

কোভিড পরীক্ষার খরচ কমলো

ছবি

রাবিতে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে গাছ কর্তন, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে আপাতত বন্ধ

ছবি

পানিতে ডুবে ঠাকুরগাঁও ও বরুড়ায় চার শিশুর মৃত্যু

ছবি

যে কোনো মূল্যে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করবো: নাহিদ

ছবি

দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

রাজধানীতে গৃহকর্মীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

রাজশাহীতে ধানের বাম্পার ফলন, তবুও চালের দামে দিশাহারা সাধারণ মানুষ

সমুদ্রবন্দরে ফের সংকেত, সারাদেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস

রিয়াল ডাকাতির ‘বেশিরভাগ’ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১৩

মুরাদনগরে ‘ধর্ষণ’: ভাইকে ‘শায়েস্তা করতে মব পরিকল্পনা’ শাহ পরাণের

মুঠোফোন চুরিকে কেন্দ্র করে খেপিয়ে তোলা হয় এলাকাবাসীকে

এনবিআরের আন্দোলন প্রত্যাহারে সাধুবাদ

‘আইএস তহবিলে অর্থ পাঠাত’ মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার ৩৬ বাংলাদেশি

ছবি

চালের পর বাড়লো সবজির দামও

ছবি

সিরিয়া ও বাংলাদেশে আইএস তহবিলে অর্থ পাঠাত মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার ৩৬ বাংলাদেশি

ছবি

দেশে ফিরেছেন ৬৫ হাজার হাজি, হজে গিয়ে মৃত্যু ৪২ জনের

ছবি

কোভিড পরীক্ষার ফি কমাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

ছবি

স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ইভিএম বাদ, নতুন নীতিমালায় বড় পরিবর্তন

ছবি

হত্যাকারীদের বিচার না করে নির্বাচন নয়: নাহিদ

দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন মহামারীর পর্যায়ে: উপদেষ্টা

শ্রীপুরে বই আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থী, শিক্ষক কারাগারে

ওসমানী হাসপাতালের বারান্দায় দুই নারীর সন্তান প্রসব, এক নবজাতকের মৃত্যু

বিএমইটির ৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে কেএনএফ কমান্ডারসহ নিহত ২

ছবি

সিলেটে পাথর কোয়ারী ‘দখল’: সবার স্বপ্ন এক

তাভেল্লা হত্যা: তিনজনের যাবজ্জীবন

ছবি

‘অপরাধকে লেবাস দিয়ে কালারিং করার প্রয়োজন নাই’

সরকারি কর্মচারীদের তদন্ত ছাড়া শাস্তি নয়, অধ্যাদেশ সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন

রোহিঙ্গা নাগরিক মোস্তফা ‘পাচ্ছেন জুলাই শহীদের স্বীকৃতি’

কলাবাগানে ভাঙচুর-চাঁদাবাজি: বরখাস্ত ওসি ও এসআইদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে সিআইডি

এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু

ভোটের আগে টেলিকম নীতিমালা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ

ছবি

কুমিল্লার মুরাদনগরে এবার গণপিটুনি, দুই সন্তানসহ নিহত হলেন নারী

tab

জাতীয়

তেঁতুলিয়ায় সরকারি ধান সংগ্রহে অনিয়ম

প্রতিনিধি, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়)

শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সরকারি খাদ্য গুদামে বোরো-ইরি ধান সংগ্রহে নানা অনিয়ম, গরমিল ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে পর পর তিন দিন খাদ্যগুদাম পরিদর্শন করেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক বাস্তব প্রতিবেদন সম্পন্ন করতে পারেনি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিপাদনকারী কর্মকর্তা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসে গিয়ে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজ শাহীন খসরু খাদ্যগুদামের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক বাস্তব প্রতিবেদন সম্পন্ন করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে গত ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর পর তিন দিন তেঁতুলিয়া লোকাল সাপ্লাই ডিপো (এলএসডি) পরিদর্শন করেও খাদ্য গুদামের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে বার্ষিক বাস্তব প্রতিবেদন সম্পন্ন করতে পারেননি তিনি ।

আরও জানা যায়, উপজেলা খাদ্য গুদামে গিয়ে গুদামের বিভিন্ন খামালে খালি বস্তা, ধান, আমন চাল ও বোরো চাল সংগ্রহ এবং মজুদের সঙ্গে ব্যাপক গরমিলের সত্যতা পান প্রতিপাদনকারী কর্মকর্তা। এফএস-৩ এর ৩ নম্বর খামালে ওহি জুট ফাইবারের ২০ হাজার ৭৫ পিছ বস্তা থাকার কথা থাকলেও ৫টি বেল পরীক্ষা করে মাত্র ১টিতে ওহি জুট ফাইবারের নতুন বস্তা পাওয়া যায় এবং অন্য বেলগুলোতে পুরনো অন্য মিলের বস্তা পাওয়া যায়। এ সময় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এই ঘটনা উদ্ঘাটনের পর সব বস্তা যাচাই করতে অস্বীকৃতি জানান। একই এফএস এর ৪ নম্বর খামালে ৭ হাজার ৬শ’ ৩৪টি বস্তা থাকার কথা থাকলেও পুরনো ও ভিন্ন ভিন্ন মিলের ৬ হাজার ২০০টি বস্তা পাওয়া যায়, আবার ঘোষিত সংখ্যার ১ হাজার ৯৩৫টি খালি বস্তার ৫নং খামালই পাওয়া যায়নি বলে জানা যায়।

অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পরিদর্শনকালীন সময়ে বোরো ধান ক্রয়ে ওজনে কম ও আদ্রতা পরিমাপেও তারতম্য দেখা যায়। এ সময় আমন চালের খামালে বোরো ধানের স্টেনসিল যুক্ত বস্তা পাওয়া যাওয়ায় প্রতিপাদনকারী কর্মকর্তা (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) খামাল ভেঙে বস্তা মিলাতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া আহমেদ সবকিছু জেনে বুঝেও খামাল ভাঙতে অস্বীকৃতি জানার সত্যতা পাওয়া যায়। তার মতে মোট বস্তার সংখ্যা ঠিক থাকলেই হবে তা বোরো বা আমন হোক না কেনো?

অভিযোগ রয়েছে, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা দীর্ঘ দিন এই খাদ্য গুদামে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছে। বিভিন্ন মৌসুমে প্রকৃত কৃষকদের কাছে ধান সংগ্রহ না করে নিজেদের পছন্দের মানুষকে কৃষক সাজিয়ে ও ব্যবসায়ীদের কাছে ধান সংগ্রহ করে সরকারি অর্থের অপচয় করার অভিযোগও উঠেছে। কৃষকরা বলছেন, তারা জানতেই পারছেন না কখন খাদ্য অফিস সরকারিভাবে ধান, চাল ক্রয় করেন। ধান-চাল সংগ্রহের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাসহ লিফলেট বিতরণের কথা থাকলেও উপজেলা খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব বাস্তাবায়ন না করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আঁতাত করে ধান-চাল ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে।

আরও অভিযোগ রয়েছে, প্রকৃত কৃষকের পরিবর্তে ফরিয়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। এ বছর অ্যাপের মাধ্যমে আবেদন নেয়া হলেও লটারি না করে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অফিসের নিজের পছন্দের মানুষের নামে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।

তেঁতুলিয়া এলএসডিতে ধান ক্রয়ের সময় একাধিকবার এলএসডিতে গিয়ে দেখতে ও জানতে পারা যায়, ফরিয়া ব্যবসায়ীর ধানই গুদামে ঢুকছে। এলএসডির ভিতরে ধান আনলোডের সময় জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত কৃষকদের পাওয়া যায়নি। ফরিয়া ব্যবসায়ী শাহজাহান ও লেবার সর্দার সফিকুলের বক্তব্যে জানা যায়, তারা গ্রামে গ্রামে ধান ক্রয় করে এলএসডিতে নিয়ে আসেন। এছাড়া কৃষক দেখতে না পেয়ে সহকারী উপ খাদ্য পরিদর্শক নিমাই চন্দ্র রায়কে জিজ্ঞাসা করলে সর্দার সফিকুল তাৎক্ষণিক কৃষক সেজে বসেন।

এ বিষয়ে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবেল আলমের কাছ থেকে জানার জন্য মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা সবকিছুই ঠিকঠাক মতো করেছি, অফিসে আসিয়েন সাক্ষাতে কথা হবে।’

তেঁতুলিয়ার সদ্য প্রাক্তন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামরুজ্জামান যিনি বর্তমানে রংপুর বিভাগে সহকারী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন তার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বদলি হয়েছি তেঁতুলিয়া থেকে। নিয়ম অনুযায়ী সব হয়েছে, অফিসে গেলেই তালিকা পাবেন।’

উপজেলা খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মো. জাকারিয়া আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ধান কৃষকদের কাছ থেকে কেনা, অনিয়মের সুযোগ নাই আমাদের। কৃষকদের একাউন্ট-পে এর মাধ্যমে আমরা তাদেরকে বিল দিই। এখানে আমি একেবারে নতুন। ওখানে কাগজপত্র দেখে আমি বক্তব্য দিতে

পারবো। উপজেলা খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, ‘সরকারি স্বার্থ রক্ষার্থে বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। তিনি বলেন, তিন দিনেও খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার অসহযোগিতা এবং ধান-চাল ক্রয়ের মজুদের অমিল থাকায় বার্ষিক বাস্তব প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রাপ্ত অনিয়মের বিষয়ে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানানো হয়েছে।

back to top