alt

জাতীয়

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে তিন প্রতিপক্ষ ছিল ভারতের, দাবি উপ-সেনাপ্রধানের

বিবিসি নিউজ বাংলা : শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

সীমান্তে একজন নয়, ‘তিনজন প্রতিপক্ষের’ বিরুদ্ধে ভারতের লড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের উপ-সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং।

তিনি বলেছেন, প্রতিপক্ষ হিসেবে পাকিস্তান ‘দৃশ্যমান’ হলেও নেপথ্যে থেকে চীন এবং তুরস্ক তাদের সাহায্য করেছে।

ভারতের ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ (ক্যাপাবিলিটি, ডেভেলপমেন্ট

অ্যান্ড সাসটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং বলেছেন, চীন পাকিস্তানকে শুধু সামরিক সরঞ্জামই দেয়নি, সেগুলোর কার্যকারিতা যাচাইয়ের ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করেছে পাকিস্তান।

ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ‘নিউ এজ মিলিটারি টেকনোলজিস’ প্রোগ্রামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।

‘অপারেশন সিন্দুর’ থেকে ভারত কী শিক্ষা নিতে পারে সে বিষয়ে যেমন মত প্রকাশ করেছেন তিনি, তেমনই কয়েকটা ক্ষেত্রে ‘রাখঢাক’ না করে সমালোচনাও করতে ছাড়েননি।

তিনি অভিযোগ করেছেন, কার্যকর সরবরাহ ব্যবস্থার অভাবে সামরিক সরঞ্জাম ‘সময়মতো এসে পৌঁছায়নি’ না হলে, ‘গল্পটা হয়তো একটু অন্যরকম হতো।’

তার এই মন্তব্য ঘিরে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত মাসে বিবিসির সংবাদদাতা ফ্রাঙ্ক গার্ডনার পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তারা চীনের কাছ থেকে কতটা সমর্থন পেয়েছে?

উত্তরে মি মির্জা দাবি করেন, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, সেখানে তারা নিজস্ব সম্পদই ব্যবহার করেছে।

‘পাকিস্তানকে চীন সম্ভাব্য সব রকমের সহায়তা করেছে’

‘ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’-এর তরফে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গতকাল শুক্রবার ভারতের উপ-সেনাপ্রধান রাহুল আর সিং বলেছেন, ‘অপারেশন সিন্দুর থেকে যা কিছু শেখার থাকতে পারে, সে বিষয়ে বলা দরকার বলে আমি মনে করি। প্রথমত, সীমান্ত একটা, শত্রু দু’জন। আমরা সামনে পাকিস্তানকে দেখেছি, কিন্তু আসলে শত্রু দু’জন। কিন্তু আমি যদি তিনজন বলি তাহলে ভুল হবে না। পাকিস্তান ছিল কেবল সামনে দৃশ্যমান মুখ।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানকে চীন সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। কারণ গত পাঁচ বছরের তথ্যানুযায়ী, পাকিস্তান যে সামরিক সরঞ্জাম পেয়েছে, তার ৮১ শতাংশ এসেছে চীন থেকে। আর চীন, একটা পুরানো প্রবাদ ভালোভাবেই অনুসরণ করেছে ধার করা ছুরি দিয়ে হত্যা করা... তাই তারা উত্তর সীমান্তে কাদা ছোড়াছুড়ির খেলায় জড়িয়ে পড়ার চেয়ে (অন্যকে) যন্ত্রণা দেয়ার জন্য প্রতিবেশীকে ব্যবহার করেছে।’

প্রসঙ্গত, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিকতম সংঘর্ষে চীনের ভূমিকা সম্পর্কে আগেও অভিযোগ উঠেছিল। পাকিস্তানের প্রতি তুরস্কের সমর্থনও স্পষ্টভাবেই প্রকাশ্যে এসেছে এর আগে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিংয়ের কথায়, ‘চীন একটা বিষয় বুঝতে পেরেছে যে, এখানে তাদের তৈরি অস্ত্রগুলোকে (ভারতের) বিভিন্ন সিস্টেমের বিরুদ্ধে যাচাই করে দেখতে পারবে। তাই এটা তাদের কাছে এক ধরনের পরীক্ষাগারের মতো ছিল।’

‘এর বাইরে, তুরস্কও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে যা (পাকিস্তানকে) সাহায্য করেছে। আমরা দেখেছি যে সংঘর্ষের সময় অনেক ধরনের ড্রোন ছিল, সঙ্গে প্রশিক্ষিণপ্রাপ্ত ব্যক্তিও ছিল।’

চীন যে স্যাটেলাইট ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট সামরিক তথ্য পাকিস্তানকে নিয়মিতভাবে দিয়েছে, সেই বিষয়েও উল্লেখ করেছেন তিনি।

তার কথায়, ‘যখন ডিজিএমও পর্যায়ের আলোচনা চলছিল, তখন পাকিস্তান উল্লেখ করেছিলÑ আমরা জানি যে আপনার অমুক ভেক্টর রেডি রয়েছে এবং যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে। আমরা আপনাদের সেটা প্রত্যাহার করার অনুরোধ করব। তার মানে, পাকিস্তান জানত আমদের কাছে এমন ভেক্টর প্রস্তুত আছে যা তাদের ওপর চরমতম আঘাত হানতে পারে।’

তার যুক্তি, সেই কারণেই পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়।

সেই প্রসঙ্গ টেনে রাহুল আর সিং বলেছেন, ‘এটা স্পষ্ট যে তারা চীন থেকে লাইভ ইনপুট পাচ্ছিল। তাই ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।’

অপারেশন সিন্দুর থেকে ‘শিক্ষণীয়’ বিষয়গুলো ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিং। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কোনোরকম রাখঢাক করেননি তিনি।

‘অপারেশন সিন্দুরের সময় একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল এয়ার ডিফেন্স (আকাশ প্রতিরক্ষা) এবং সেখানে আমরা কী কী করতে পেরেছি। আমরা ভালো-মন্দ মিশিয়ে (পারফর্ম) করেছি। তবে এক্ষেত্রে অনেক কিছু করা যেতে পারে।’

‘কিছু দেশি সিস্টেম ভালো (পারফর্ম) করেছে, কয়েকটা তেমন ভালো করেনি।’

‘এইবার আমাদের জনবহুল এলাকাগুলো নিশানা ছিল না। কিন্তু পরের বারের জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে। তার জন্য দরকার আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং আরও বেশি পরিমাণে কাউন্টার ড্রোন এবং কাউন্টার আর্টিলারি সিস্টেম।’

এরপরই তিনি নতুন প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী শক্তির বিষয়ে উল্লেখ করতে গিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কথা বলেন।

তার কথায়, ‘আমাদের কাছে ইসরায়েলের মতো সুযোগ-সুবিধা নেই। তাদের আয়রন ডোম আছে, একাধিক আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের বিস্তৃতি ব্যাপক এবং এই জাতীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করতে অনেক অর্থ ব্যয় হয়। তাই আমাদের উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।’

সামরিক সরঞ্জামের সঙ্গে সম্পর্কিত সরবরাহ শৃঙ্খল বিষয়ে সমালোচনা করতে ছাড়েননি লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর. সিং। তিনি বলেছেন, ‘আরেকটা বড় শিক্ষা হলো আমাদের শক্তিশালী এবং নিরাপদ সরবরাহ শৃঙ্খলা থাকা দরকার।’

সেনাবাহিনীর দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ধরা যাক, এই বছরের জানুয়ারি বা গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে আমাদের যে সরঞ্জামগুলো পাওয়ার কথা ছিল, তা সময়মতো পৌঁছাতে পারেনি।’

‘২২ এপ্রিলের ঘটনার পর আমি ড্রোন প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম কতজন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরঞ্জাম সরবরাহ করতে পারবে। সেই সময় অনেকেই হাত তুলেছিলেন। কিন্তু এক সপ্তাহ পরে যখন ফোন করি, তখন কিছু (সুরাহা) মেলেনি।‘

‘এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো আমাদের সরবরাহ শৃঙ্খলা মূলত অন্যান্য দেশের ওপর নির্ভরশীল। যদি এই সমস্ত সরঞ্জাম সময়মতো আমাদের কাছে পৌঁছাত, তাহলে হয়তো গল্পটা হয়ত একটু অন্যরকম হতো। সেই কারণেই আমাদের এই বিষয়ে গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে।’

পুলিশ সংস্কার বাস্তবায়নে দুটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন

শার্শায় গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ

তিন জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৩২ জনকে ‘পুশইন’ ভারতের

নিখোঁজ খিলক্ষেতের ব্যাংক কর্মকর্তার অবস্থান শনাক্তের দাবি পুলিশের

ছবি

গ্যাব পদ্ধতিতে আম চাষে সফল চাষি হিলির নিরঞ্জন

তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির আভাস, ভূমিধসের সতর্কবার্তা

মোবাইল চুরির ঘটনায় মাসহ দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা: র‌্যাব

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে তরুণদের, বিশেষ ঝুঁকিতে ছেলেরা

রবিবার পবিত্র আশুরা

ছবি

সঞ্চয়পত্রে সুদহার বাড়ালে কেউ ব্যাংকে টাকা রাখবে না: উপদেষ্টা

ছবি

টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় নিহত ২৪

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আসেনি: নজরুল ইসলাম খান

ছবি

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার শামসুল হুদা মারা গেছেন

গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় ‘ন্যূনতম হস্তক্ষেপ’ করেনি অন্তর্বর্তী সরকার: প্রেস সচিব

জঙ্গি সম্পৃক্ততায় মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো তিনজন কারাগারে

সন্ত্রাসবাদ তদন্তে মালয়েশিয়াকে সহায়তার আশ্বাস বাংলাদেশের

সৌরবিদ্যুতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ‘আশানুরূপ নয়’

শুল্ক নিয়ে আলোচনায় ‘প্রত্যাশার চেয়েও বেশি’ প্রাপ্তির সম্ভাবনা

ছবি

‘মব’ তৈরি করে নগদ টাকা-স্বর্ণালঙ্কার লুট, থানায় অভিযোগ হাবিবার

ছবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে: প্রেস সচিব

ছবি

‘ব্যাংকগুলোর টাকা ফেরত দিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ’ — সালেহউদ্দিন আহমেদ

ছবি

সন্ত্রাসবাদ তদন্তে মালয়েশিয়াকে সহায়তার আশ্বাস বাংলাদেশের

ছবি

জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো ৩ জন কারাগারে

ছবি

তিন বিভাগে অতি ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা, পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সতর্কতা

ছবি

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার শামসুল হুদা আর নেই

ছবি

বিএনপি পুরনো খসড়া দেখে মন্তব্য করেছে: তৈয়্যব

ছবি

মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সন্দেহে আটক তিনজন দেশে ফিরেছে, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ: আসিফ নজরুল

সিলেটে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার আন্দোলন

সম্পত্তির জন্য মাকে মারধর করলেন স্কুল শিক্ষক ছেলে

রাজধানীতে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার তিন

কোভিড পরীক্ষার খরচ কমলো

ছবি

রাবিতে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে গাছ কর্তন, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে আপাতত বন্ধ

ছবি

পানিতে ডুবে ঠাকুরগাঁও ও বরুড়ায় চার শিশুর মৃত্যু

ছবি

যে কোনো মূল্যে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করবো: নাহিদ

ছবি

তেঁতুলিয়ায় সরকারি ধান সংগ্রহে অনিয়ম

ছবি

দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

tab

জাতীয়

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে তিন প্রতিপক্ষ ছিল ভারতের, দাবি উপ-সেনাপ্রধানের

বিবিসি নিউজ বাংলা

শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

সীমান্তে একজন নয়, ‘তিনজন প্রতিপক্ষের’ বিরুদ্ধে ভারতের লড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের উপ-সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং।

তিনি বলেছেন, প্রতিপক্ষ হিসেবে পাকিস্তান ‘দৃশ্যমান’ হলেও নেপথ্যে থেকে চীন এবং তুরস্ক তাদের সাহায্য করেছে।

ভারতের ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ (ক্যাপাবিলিটি, ডেভেলপমেন্ট

অ্যান্ড সাসটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং বলেছেন, চীন পাকিস্তানকে শুধু সামরিক সরঞ্জামই দেয়নি, সেগুলোর কার্যকারিতা যাচাইয়ের ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করেছে পাকিস্তান।

ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ‘নিউ এজ মিলিটারি টেকনোলজিস’ প্রোগ্রামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।

‘অপারেশন সিন্দুর’ থেকে ভারত কী শিক্ষা নিতে পারে সে বিষয়ে যেমন মত প্রকাশ করেছেন তিনি, তেমনই কয়েকটা ক্ষেত্রে ‘রাখঢাক’ না করে সমালোচনাও করতে ছাড়েননি।

তিনি অভিযোগ করেছেন, কার্যকর সরবরাহ ব্যবস্থার অভাবে সামরিক সরঞ্জাম ‘সময়মতো এসে পৌঁছায়নি’ না হলে, ‘গল্পটা হয়তো একটু অন্যরকম হতো।’

তার এই মন্তব্য ঘিরে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত মাসে বিবিসির সংবাদদাতা ফ্রাঙ্ক গার্ডনার পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তারা চীনের কাছ থেকে কতটা সমর্থন পেয়েছে?

উত্তরে মি মির্জা দাবি করেন, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, সেখানে তারা নিজস্ব সম্পদই ব্যবহার করেছে।

‘পাকিস্তানকে চীন সম্ভাব্য সব রকমের সহায়তা করেছে’

‘ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’-এর তরফে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গতকাল শুক্রবার ভারতের উপ-সেনাপ্রধান রাহুল আর সিং বলেছেন, ‘অপারেশন সিন্দুর থেকে যা কিছু শেখার থাকতে পারে, সে বিষয়ে বলা দরকার বলে আমি মনে করি। প্রথমত, সীমান্ত একটা, শত্রু দু’জন। আমরা সামনে পাকিস্তানকে দেখেছি, কিন্তু আসলে শত্রু দু’জন। কিন্তু আমি যদি তিনজন বলি তাহলে ভুল হবে না। পাকিস্তান ছিল কেবল সামনে দৃশ্যমান মুখ।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানকে চীন সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। কারণ গত পাঁচ বছরের তথ্যানুযায়ী, পাকিস্তান যে সামরিক সরঞ্জাম পেয়েছে, তার ৮১ শতাংশ এসেছে চীন থেকে। আর চীন, একটা পুরানো প্রবাদ ভালোভাবেই অনুসরণ করেছে ধার করা ছুরি দিয়ে হত্যা করা... তাই তারা উত্তর সীমান্তে কাদা ছোড়াছুড়ির খেলায় জড়িয়ে পড়ার চেয়ে (অন্যকে) যন্ত্রণা দেয়ার জন্য প্রতিবেশীকে ব্যবহার করেছে।’

প্রসঙ্গত, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিকতম সংঘর্ষে চীনের ভূমিকা সম্পর্কে আগেও অভিযোগ উঠেছিল। পাকিস্তানের প্রতি তুরস্কের সমর্থনও স্পষ্টভাবেই প্রকাশ্যে এসেছে এর আগে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিংয়ের কথায়, ‘চীন একটা বিষয় বুঝতে পেরেছে যে, এখানে তাদের তৈরি অস্ত্রগুলোকে (ভারতের) বিভিন্ন সিস্টেমের বিরুদ্ধে যাচাই করে দেখতে পারবে। তাই এটা তাদের কাছে এক ধরনের পরীক্ষাগারের মতো ছিল।’

‘এর বাইরে, তুরস্কও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে যা (পাকিস্তানকে) সাহায্য করেছে। আমরা দেখেছি যে সংঘর্ষের সময় অনেক ধরনের ড্রোন ছিল, সঙ্গে প্রশিক্ষিণপ্রাপ্ত ব্যক্তিও ছিল।’

চীন যে স্যাটেলাইট ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট সামরিক তথ্য পাকিস্তানকে নিয়মিতভাবে দিয়েছে, সেই বিষয়েও উল্লেখ করেছেন তিনি।

তার কথায়, ‘যখন ডিজিএমও পর্যায়ের আলোচনা চলছিল, তখন পাকিস্তান উল্লেখ করেছিলÑ আমরা জানি যে আপনার অমুক ভেক্টর রেডি রয়েছে এবং যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে। আমরা আপনাদের সেটা প্রত্যাহার করার অনুরোধ করব। তার মানে, পাকিস্তান জানত আমদের কাছে এমন ভেক্টর প্রস্তুত আছে যা তাদের ওপর চরমতম আঘাত হানতে পারে।’

তার যুক্তি, সেই কারণেই পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়।

সেই প্রসঙ্গ টেনে রাহুল আর সিং বলেছেন, ‘এটা স্পষ্ট যে তারা চীন থেকে লাইভ ইনপুট পাচ্ছিল। তাই ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।’

অপারেশন সিন্দুর থেকে ‘শিক্ষণীয়’ বিষয়গুলো ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিং। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কোনোরকম রাখঢাক করেননি তিনি।

‘অপারেশন সিন্দুরের সময় একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল এয়ার ডিফেন্স (আকাশ প্রতিরক্ষা) এবং সেখানে আমরা কী কী করতে পেরেছি। আমরা ভালো-মন্দ মিশিয়ে (পারফর্ম) করেছি। তবে এক্ষেত্রে অনেক কিছু করা যেতে পারে।’

‘কিছু দেশি সিস্টেম ভালো (পারফর্ম) করেছে, কয়েকটা তেমন ভালো করেনি।’

‘এইবার আমাদের জনবহুল এলাকাগুলো নিশানা ছিল না। কিন্তু পরের বারের জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে। তার জন্য দরকার আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং আরও বেশি পরিমাণে কাউন্টার ড্রোন এবং কাউন্টার আর্টিলারি সিস্টেম।’

এরপরই তিনি নতুন প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী শক্তির বিষয়ে উল্লেখ করতে গিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কথা বলেন।

তার কথায়, ‘আমাদের কাছে ইসরায়েলের মতো সুযোগ-সুবিধা নেই। তাদের আয়রন ডোম আছে, একাধিক আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের বিস্তৃতি ব্যাপক এবং এই জাতীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করতে অনেক অর্থ ব্যয় হয়। তাই আমাদের উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।’

সামরিক সরঞ্জামের সঙ্গে সম্পর্কিত সরবরাহ শৃঙ্খল বিষয়ে সমালোচনা করতে ছাড়েননি লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর. সিং। তিনি বলেছেন, ‘আরেকটা বড় শিক্ষা হলো আমাদের শক্তিশালী এবং নিরাপদ সরবরাহ শৃঙ্খলা থাকা দরকার।’

সেনাবাহিনীর দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ধরা যাক, এই বছরের জানুয়ারি বা গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে আমাদের যে সরঞ্জামগুলো পাওয়ার কথা ছিল, তা সময়মতো পৌঁছাতে পারেনি।’

‘২২ এপ্রিলের ঘটনার পর আমি ড্রোন প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম কতজন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরঞ্জাম সরবরাহ করতে পারবে। সেই সময় অনেকেই হাত তুলেছিলেন। কিন্তু এক সপ্তাহ পরে যখন ফোন করি, তখন কিছু (সুরাহা) মেলেনি।‘

‘এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো আমাদের সরবরাহ শৃঙ্খলা মূলত অন্যান্য দেশের ওপর নির্ভরশীল। যদি এই সমস্ত সরঞ্জাম সময়মতো আমাদের কাছে পৌঁছাত, তাহলে হয়তো গল্পটা হয়ত একটু অন্যরকম হতো। সেই কারণেই আমাদের এই বিষয়ে গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে।’

back to top