নয় মাসের মাথায়
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ৯ মাসের মাথায় আবার বাড়ানো হয়েছে গণপরিবহনের ভাড়া। মহানগর পর্যায়ে ১৬ শতাংশ এবং দূরপাল্লার বাসে ২২ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে সিটি সার্ভিসে ৩৫ পয়সা ও দূরপাল্লার বাসে ৪০ পয়সা ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতি কিলোমিটার বাস ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সা স্থলে ২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া দূরপাল্লার বাসে এক টাকা ৮০ পয়সা স্থলে ২ টাকা ২০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাসে সর্বনি¤œ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা, মিনিবাসে ৮ টাকা। যা আজ থেকে কার্যকর করা হবে।
শনিবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর বনানীর বিআরটিএ কার্যালয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।
ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে গত বছর ৭ নভেম্বর দূরপাল্লার বাসে ২৭ শতাংশ ও মহানগরী পর্যায়ে বাসে ২৬ দশমিক ৫০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়। এছাড়া যাত্রীবাহী লঞ্চের ভাড়া ৩৫ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ানো হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সরকার-নির্ধারিত এই ভাড়া বাস ও লঞ্চ মালিকরা মানেনি বলে জানান যাত্রীরা।
এর আগে ২০১৬ সালে দূরপাল্লায় ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় এক টাকা ৪২ পয়সা। তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে এ পর্যন্ত ৮-১০ বার গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু কোন সময়ই সরকার-নির্ধারিত এই ভাড়া মানতে দেখা যায়নি গণপরিবহনে। তাই বাসের ভাড়া বৃদ্ধির পর তা কঠোর মনিটরিংয়ের পরামর্শ গণপরিবহন বিশেষজ্ঞদের।
ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে গত বছর ৭ নভেম্বর আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৪২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে এক টাকা ৮০ পয়সা করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিভিন্ন রুটের বাসে ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সার থেকে বেড়িয়ে ২ টাকা ১৫ পয়সা করা হয়। মিনিবাসের ক্ষেত্রে এক টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়িয়ে ২ টাকা ০৫ পয়সা। বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকার স্থলে ১০ টাকা এবং মিনিবাসে ৫ টাকার স্থলে ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যা গত বছর ৮ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়।
৩২ বছরে ৮ বার বৃদ্ধি হয় গণপরিবহন ভাড়া
বিআরটিএ সূত্র জানায়, ১৯৯০ সালে বাসের চেয়ে মিনিবাসের ভাড়া বেশি ছিল। তখন প্রতি কিলোমিটার বাসের ভাড়া ছিলো ৩২ পয়সা। আর মিনিবাসের ভাড়া ছিল ৩৫ পয়সা। এখনও মিনিবাসের চেয়ে বাসের ভাড়া বেশি নেয়া হচ্ছে। ২০০৮ সালের ২২ জুলাই ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে পৃথকভাবে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। তখনই মিনিবাসের চেয়ে বাসের ভাড়া বেশি নির্ধারণ করা হয়। তখন বাসের জন্য এক টাকা ২০ পয়সা ও মিনিবাসের জন্য এক টাকা ১০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। তখনই মালিক সমিতির সম্মতিতে বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর ২০১১ সালের ১৮ মে গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে আবার বাস ও মিনিবাসের ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করা হয়। তখন বাসের জন্য এক টাকা ৫৫ পয়সা ও মিনিবাসের জন্য এক টাকা ৪৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। সে সময় বাস ও মিনিবাসের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকা ও ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে মালিক সমিতির আপত্তি ছিল বলে বিআরটিএ সূত্র জানায়।
এরপর ২০১১ সালে গ্যাসের দাম ২০ শতাংশ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাস ও মিনিবাসের ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করা হয়। তখন বাসের জন্য এক টাকা ৬০ পয়সা ও মিনিবাসের জন্য এক টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। তখনো বাস ও মিনিবাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকা ও ৫ টাকা অপরিবর্তিত থাকে।
২০১৫ সালে নগর পরিবহনে বাসের ভাড়া প্রতি কিলেমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সা এবং মিনিবাসের জন্য এক টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। আর ২০১৬ সালে দূরপাল্লায় ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় এক টাকা ৪২ পয়সা। কিন্তু কোন সময়ই সরকার নির্ধারিত এই ভাড়া মানতে দেখা যায়নি গণপরিবহনে। তাই বাসের ভাড়া বৃদ্ধির পর তা কঠোর মনিটরিংয়ের পরামর্শ গণপরিবহন বিশেষজ্ঞদের।
নির্ধারিত ভাড়া মানে না গণপরিবহন চালকরা
গণপরিবহনে সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের নিয়ম মানে না কেউ। এক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। রাজধানীতে চলাচলরত লেগুনা, বাস, মিনিবাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ সব গণপরিবহনে ভাড়া ইচ্ছেমতো আদায় করা হয় বলে যাত্রীরা জানান।
একই রুটের বিভিন্ন বাস-মিনিবাস ভাড়া নেয়া হয় বিভিন্ন রকম। এসব বাস বিরতিহীন, গেটলক, সিটিং সার্ভিস ও কাউন্টার সার্ভিসসহ নানা নামে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হতো। এখন ওয়েবিল নামে চেয়াকেরর কথা বলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয় বলে যাত্রীরা জানান।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে বাস-ট্রাক ও লঞ্চের মালিকেরা এই বর্ধিত মূল্যের কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া লুটে নেয়ার জন্য পরিবহন ধর্মঘটের নামে জনগণকে জিম্মি করে। বাস ও লঞ্চ মালিকদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে সরকার তাদের চাহিদা অনুযায়ী একচেটিয়া ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে।’ সংকটাপন্ন যাত্রী সাধারণকে সঙ্গে নিয়ে বর্ধিত ভাড়া প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
নয় মাসের মাথায়
শনিবার, ০৬ আগস্ট ২০২২
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ৯ মাসের মাথায় আবার বাড়ানো হয়েছে গণপরিবহনের ভাড়া। মহানগর পর্যায়ে ১৬ শতাংশ এবং দূরপাল্লার বাসে ২২ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে সিটি সার্ভিসে ৩৫ পয়সা ও দূরপাল্লার বাসে ৪০ পয়সা ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতি কিলোমিটার বাস ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সা স্থলে ২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া দূরপাল্লার বাসে এক টাকা ৮০ পয়সা স্থলে ২ টাকা ২০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাসে সর্বনি¤œ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা, মিনিবাসে ৮ টাকা। যা আজ থেকে কার্যকর করা হবে।
শনিবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর বনানীর বিআরটিএ কার্যালয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।
ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে গত বছর ৭ নভেম্বর দূরপাল্লার বাসে ২৭ শতাংশ ও মহানগরী পর্যায়ে বাসে ২৬ দশমিক ৫০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়। এছাড়া যাত্রীবাহী লঞ্চের ভাড়া ৩৫ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ানো হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সরকার-নির্ধারিত এই ভাড়া বাস ও লঞ্চ মালিকরা মানেনি বলে জানান যাত্রীরা।
এর আগে ২০১৬ সালে দূরপাল্লায় ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় এক টাকা ৪২ পয়সা। তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে এ পর্যন্ত ৮-১০ বার গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু কোন সময়ই সরকার-নির্ধারিত এই ভাড়া মানতে দেখা যায়নি গণপরিবহনে। তাই বাসের ভাড়া বৃদ্ধির পর তা কঠোর মনিটরিংয়ের পরামর্শ গণপরিবহন বিশেষজ্ঞদের।
ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে গত বছর ৭ নভেম্বর আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৪২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে এক টাকা ৮০ পয়সা করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিভিন্ন রুটের বাসে ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সার থেকে বেড়িয়ে ২ টাকা ১৫ পয়সা করা হয়। মিনিবাসের ক্ষেত্রে এক টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়িয়ে ২ টাকা ০৫ পয়সা। বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকার স্থলে ১০ টাকা এবং মিনিবাসে ৫ টাকার স্থলে ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যা গত বছর ৮ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়।
৩২ বছরে ৮ বার বৃদ্ধি হয় গণপরিবহন ভাড়া
বিআরটিএ সূত্র জানায়, ১৯৯০ সালে বাসের চেয়ে মিনিবাসের ভাড়া বেশি ছিল। তখন প্রতি কিলোমিটার বাসের ভাড়া ছিলো ৩২ পয়সা। আর মিনিবাসের ভাড়া ছিল ৩৫ পয়সা। এখনও মিনিবাসের চেয়ে বাসের ভাড়া বেশি নেয়া হচ্ছে। ২০০৮ সালের ২২ জুলাই ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে পৃথকভাবে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। তখনই মিনিবাসের চেয়ে বাসের ভাড়া বেশি নির্ধারণ করা হয়। তখন বাসের জন্য এক টাকা ২০ পয়সা ও মিনিবাসের জন্য এক টাকা ১০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। তখনই মালিক সমিতির সম্মতিতে বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর ২০১১ সালের ১৮ মে গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে আবার বাস ও মিনিবাসের ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করা হয়। তখন বাসের জন্য এক টাকা ৫৫ পয়সা ও মিনিবাসের জন্য এক টাকা ৪৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। সে সময় বাস ও মিনিবাসের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকা ও ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে মালিক সমিতির আপত্তি ছিল বলে বিআরটিএ সূত্র জানায়।
এরপর ২০১১ সালে গ্যাসের দাম ২০ শতাংশ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাস ও মিনিবাসের ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করা হয়। তখন বাসের জন্য এক টাকা ৬০ পয়সা ও মিনিবাসের জন্য এক টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। তখনো বাস ও মিনিবাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকা ও ৫ টাকা অপরিবর্তিত থাকে।
২০১৫ সালে নগর পরিবহনে বাসের ভাড়া প্রতি কিলেমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সা এবং মিনিবাসের জন্য এক টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। আর ২০১৬ সালে দূরপাল্লায় ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় এক টাকা ৪২ পয়সা। কিন্তু কোন সময়ই সরকার নির্ধারিত এই ভাড়া মানতে দেখা যায়নি গণপরিবহনে। তাই বাসের ভাড়া বৃদ্ধির পর তা কঠোর মনিটরিংয়ের পরামর্শ গণপরিবহন বিশেষজ্ঞদের।
নির্ধারিত ভাড়া মানে না গণপরিবহন চালকরা
গণপরিবহনে সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের নিয়ম মানে না কেউ। এক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। রাজধানীতে চলাচলরত লেগুনা, বাস, মিনিবাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ সব গণপরিবহনে ভাড়া ইচ্ছেমতো আদায় করা হয় বলে যাত্রীরা জানান।
একই রুটের বিভিন্ন বাস-মিনিবাস ভাড়া নেয়া হয় বিভিন্ন রকম। এসব বাস বিরতিহীন, গেটলক, সিটিং সার্ভিস ও কাউন্টার সার্ভিসসহ নানা নামে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হতো। এখন ওয়েবিল নামে চেয়াকেরর কথা বলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয় বলে যাত্রীরা জানান।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে বাস-ট্রাক ও লঞ্চের মালিকেরা এই বর্ধিত মূল্যের কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া লুটে নেয়ার জন্য পরিবহন ধর্মঘটের নামে জনগণকে জিম্মি করে। বাস ও লঞ্চ মালিকদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে সরকার তাদের চাহিদা অনুযায়ী একচেটিয়া ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে।’ সংকটাপন্ন যাত্রী সাধারণকে সঙ্গে নিয়ে বর্ধিত ভাড়া প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।