alt

রাজনীতি

বৃষ্টির মধ্যে সিলেটে ১৬০ কিলোমিটার রোডমার্চ করলো বিএনপি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক ও প্রতিনিধি (সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কিশোরগঞ্জ) : বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বৃহস্পতিবার সিলেটে বিএনপির রোডমার্চ -সংবাদ

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ‘একদফা’ দাবিতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে সিলেট পর্যন্ত ‘রোডমার্চ’ করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ভৈরবের দুর্জয় মোড় বাসস্ট্যান্ড থেকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে রোডমার্চটি শুরু হয়। এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের শেরপুর হয়ে ১৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

রোডমার্চে অংশ নিতে এদিন সকাল থেকে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা, কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও স্থানীয় বিএনপির ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হন। বিভিন্ন ব্যানার ও স্লোগানে খন্ড খন্ড মিছিলে রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশ স্থলে যোগ দেন। এরপর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় দলের ভাইস চেয়াম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হাসান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, ওয়ারেস আলী মামুন, নির্বাহী কমিটির সদস্য লায়লা বেগম, শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিএনপির স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারকে কোন অশুভ শক্তি রক্ষা করতে পারবে না। দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে তরুণ সমাজ জেগে উঠেছে। তারুণ্যের যে রোডমার্চ শুরু হয়েছে, তা সরকার পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যে অগণতান্ত্রিক শক্তি দাঁড়িয়েছে তারা জনগণের সামনে টিকে থাকতে পারবে না। দেশের মালিকানা নিয়ে দেশের মানুষ বাড়ি ফিরবে।’

রোডমার্চটি ভৈরব থেকে শুরু হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেরর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ, সরাইল বিশ্বরোডের মোড় ও কুট্টাপাড়া, বিজয়নগর উপজেলার এলাকায় পৌঁছালে স্বাগত জানান স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সেখানে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ঢল নামে। এ সময় তারা সরকার পদত্যাগসহ বিভিন্ন স্লোগানে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে সমবেত হন। সেই সঙ্গে মিছিলে মিছিলে মুখরিত করে তুলেন চারপাশ।

সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে যাত্রা বিরতি দিয়ে নেতকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন ডু অর ডাই। হয় বাঁচব, না হয় মরে যাব। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’ এ সময় আন্দোলনের ফসল ঘরে না তোলা পর্যন্ত নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, ‘গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার, গুম, খুন আর মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে রক্ষা হবে না। অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত কেউ বাড়ি ফিরবে না।’

এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খোকন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ শামীম ও যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা এসএন তরুণ দেসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সেখান থেকে আবারও রোডমার্চটি সিলেটের উদ্দেশে রওনা হয়। এরপর হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ গোলচত্বরে গিয়ে যাত্রা বিরতি দেয়। এখানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হাসিমের সভাপতিত্বে ও সাবেক এমপি শাম্মি আক্তার শিপার সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার আদায় করার জন্য আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়।’

শায়েস্তাগঞ্জ গোলচত্বর থেকে আবার সিলেটমুখী রোডমার্চ শুরু হয়। রোডমার্চটি যাত্রা বিরতি দিয়ে মৌলভীবাজার জেলার শেরপুরেও পথসভা করে। এখানে বৃষ্টি উপেক্ষা হাজারো নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিকেল ৫টায় পৌঁছার কথা থাকলেও রোডমার্চটি বৃষ্টির কারণে সমাপনী সমাবেশস্থলে তিন ঘণ্টা দেড়ি হয়। রোডমার্চটি সেখানে রাত পৌনে ৮টার দিকে এসে পৌঁছে। এ সময় সমেবেত জনতা মুহুর্মুহু কড়তালি ও স্লোগান দিয়ে রোডমার্চের গাড়িবহরকে স্বাগত জানান।

সমাপনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মানুষ শেখ হাসিনাকে আর এক মুহূর্তও ক্ষমতা দেখতে চায় না। আমরা ক্ষমতায় আসার জন্য আন্দোলন করছি না। আমরা আন্দোলন করছি গণতন্ত্রের জন্য, ভোটাধিকারের জন্য। তাই পরিষ্কার কথা, সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোন নির্বাচন হবে না, দেশের মানুষ হতে দেবে না।’

প্রধান বক্তা হিসেবে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশের মানুষের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলে কোন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। কারণ তারা জানে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন পরিবেশ নাই। বিশ্ববাসী একটি গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য একটি নির্বাচন চায়।’

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, আরিফুল হক চৌধুরী ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন ও এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সহ-ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী ও হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সূচিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন, মামুনুর রশিদ মামুন, মিফতাহ সিদ্দিকী, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, নজিবুর রহমান নজিব, হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, শামীম আহমদ, সৈয়দ সাফেক মাহবুব, মকসুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, শাহনেওয়াজ বক্ত তারেক, মির্জা সম্রাট হোসেন, মাহবুবুল হক চৌধুরী, শাকিল মোর্শেদ, আফসর খান, তাহসিন শারমিন তামান্না, নিগার সুলতানা ডেইজী, নিজাম উদ্দিন তরফদার, সুরমান আলী, জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন, সুদীপ জ্যোতি এষ, দেলোয়ার হোসেন দিনার, ফজলে রাব্বি আহসান প্রমুখ।

রোডমার্চকে বরণ করতে বিকেল ৩টা থেকেই আলিয়ার মাঠে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ মুক্তিকামী হাজার হাজার জনতা। বিকেল ৪টার পূর্বেই মুহুর্মুহু বৃষ্টি উপেক্ষা করে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষমাণ নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে মঞ্চ থেকে বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন জাসাস এর শিল্পীরা।

আজ যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় সমাবেশ, খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল।

‘একদফা’ দাবিতে বিএনপির চলমান দুই সপ্তাহব্যাপী ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট অঞ্চলে ‘রোডমার্চ’ করেছে দলটি। গত মঙ্গলবার রাজধানীর পাশে টঙ্গী ও জিনজিরায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ‘নভেম্বরের শুরু’ দিকে ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। ওই লক্ষ্যে ঘোষিত কর্মসূচিগুলো পালনের মধ্যে দিয়ে তাদের ‘একদফা’ আন্দোলনের ‘চূড়ান্ত ধাপে’ পৌঁছাতে চায় প্রায় ১৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি। আর তফসিল ঘোষণার আগেই চলমান আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে ‘সফল সমাপ্তি’ ঘটাতে চায় তারা।

সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বিএনপি ও শরিকরা বর্জন করে আন্দোলন করেছিল। কিন্তু সেই আন্দোলনে ‘সফল’ হতে পারেনি তারা। পরবর্তীতে দলটি আন্দোলন না গিয়ে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় আওয়ামী লীগের অধীনেই। তবে এবার আবারও আন্দোলনমুখী দলটি।

গত বছরের শেষ দিকে দলটি রাজপথে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। সবশেষ গত ১২ জুলাই এক সমাবেশ থেকে বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো যুগপৎভাবে ‘একদফা’ দাবিতে ‘চূড়ান্ত’ আন্দোলনের ডাক দেয়। পরবর্তীতে বিএনপিসহ সমমনা জোট ও দলগুলো ঢাকায় পদযাত্রা, মহাসমাবেশ, ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান, গণমিছিল ও কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি পালন করে।

সবশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর একদফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানী ও আশপাশে ১২ সমাবেশ, পাঁচ বিভাগে রোডমার্চসহ বিএনপির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বিএনপির চলমান এই কর্মসূচিগুলো আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।

ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আজ শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগরে যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আজ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় সারাদেশে জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দোয়া মাহফিল করবে বিএনপি।

আগামীকাল বরিশাল-ঝালকাঠি-পিরোজপুর পটুয়াখালী পথে রোডমার্চ করবে; ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরে নয়াবাজার ও ঢাকা জেলা আমিন বাজারে সমাবেশ; ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগে রোডমার্চ, একই দিনে ঢাকায় পেশাজীবী কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর গাবতলী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় জনসমাবেশ; ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মহিলা সমাবেশ; ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শ্রমজীবী কনভেনশন; ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ পথে রোডমার্চ; ২ অক্টোবর ঢাকায় কৃষক সমাবেশ এবং ৩ অক্টোবর কুমিল্লা-ফেনী-মিরসরাই-চট্টগ্রাম পথে রোডমার্চ।

সিলেটে বিএনপির মিছিল থেকে হামলা, একাধিক নাট্যকর্মী আহত।

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সারদাস্মৃতি ভবনের হল রুমে বিএনপির মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, এদিন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরের ক্বিন ব্রিজ সংলগ্ন ৮৬ বছরের পুরনো এই স্থাপনাটিতে হামলা চালানো হয়। এতে আহত হয়েছেন সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একাধিক কর্মী।

সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত বলেন, সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা অভিমুখে একটি মিছিল যাচ্ছিল। সেই মিছিল থেকে কয়েকজন অতর্কিতে সারদা ভবনের হলরুমে ঢুকে নাট্যকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় কথাকলি সিলেটের আমিরুল ইসলাম বাবু, লিটল থিয়েটারের আবদুল কাইয়ূম মুকুলসহ বেশ কয়েকজন নাট্যকর্মী আহত হন। তিনি নিজেও আহত হন বলেও জানান তিনি।

নাট্যকর্মী অরূপ বাউল বলেন, সংস্কৃতি চর্চার জন্য বৃহস্পতিবার থেকে সারদা ভবন খুলে দেয়া হয়। এ উপলক্ষেই সারদা হল মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী নাট্য উৎসবের আয়োজন করে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট। আর সেই নাট্য উৎসবের মঞ্চ লক্ষ্য করে বিএনপির মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়। পরে হলরুমে ঢুকে চেয়ার ছুড়ে মারতে থাকে বিএনপির কর্মীরা। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন নাট্যকর্মী। ঘটনার পরপরই সিলেট কোতয়ালি মডেল থানার পুলিশ ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও উপস্থিত সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন বলে জানান অরূপ।

ছবি

আমি আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে নেই : এম এ মান্নান

ছবি

কারাগারে সাবেক এমপি বোমা মানিক

ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও চারটি মামলা

ছবি

১০ দফা সংস্কার প্রস্তাবে আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় জামায়াত

সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনা এখনো প্রধানমন্ত্রী : রুমিন ফারহানা

ছবি

ক্ষমতায় এলে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার ও দখলদারত্বের বিচার হবে : মির্জা ফখরুল

ছবি

রাষ্ট্র সংস্কারে যেসব প্রস্তাব দিল জামায়াত

ছবি

চট্টগ্রাম সিটি মেয়র হিসেবে বিএনপির শাহাদাত হোসেনকে ঘোষণা, প্রজ্ঞাপন জারি

ছবি

পদত্যাগ করেছেন এবি পার্টির আহ্বায়ক সোলায়মান চৌধুরী

ছবি

সাবেক মেয়র তাপস ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ

ছবি

সীমান্তে স্বর্ণা দাস হত্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিবাদ নেই কেন- প্রশ্ন রিজভীর

ছবি

সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছবি

সংবিধান সংস্কার নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার গুরুত্ব

ছবি

সশস্ত্র বাহিনীতে রাজনীতি বন্ধ ও সামরিক আইন সংস্কারের দাবি

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার কাছে গণঅধিকার পরিষদের ১২ দফা দাবি

ছবি

নির্বাচন থেকে সংস্কার বেশি গুরুত্বপূর্ণ : জামায়াত

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ: ইসি গঠন ও ভোটের রোড ম্যাপ চেয়েছে বিএনপি

ছবি

বিরাজনীতিকরণ চাই না, উদার গণতন্ত্র দেখতে চাই: ফখরুল

ছবি

সংলাপে কাদের সঙ্গে কখন বসবেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

শহীদরা জাতির সম্পদ, দলীয় ভিত্তিতে তাদের ভাগ করতে চাই না

জনতা পার্টির নতুন চেয়ারম্যান হলেন হুমায়ূন কবীর আকন

শনিবার থেকে দলগুলোর সঙ্গে ফের আলোচনা

আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের শরিকদের বিরুদ্ধে ট্র্যাইব্যুনালে অভিযোগ

ছবি

প্রকাশ্যে এল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

ছবি

দুই মামলায় আবারও ৭ দিনের রিমান্ডে সালমান এফ রহমান

বাংলাদেশে ৩৩ পুলিশ সুপারের নতুন স্থানে বদলি

ছবি

পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিদেশে দুদকের ৭১ চিঠি

ছবি

ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মনসুর ডিবি হেফাজতে

ছবি

শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার

ছবি

নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ চান বিএনপি নেতা হাফিজ

ছবি

বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত

ছবি

মুগ্ধের ভাইয়ের বেদনাবিধুর আহ্বান: ‘আমি এখন আর হাসতে পারি না’

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনার জন্মদিনে `গণ জুতা নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা’

ছবি

সরকারকে নির্বাচনী রোড ম্যাপ পরিষ্কার করতে হবে: তারেক রহমান

গাজীপুরে বিএনপি মহাসচিব : মির্জা ফখরুল

ছবি

ক্ষমতায় থাকার জন্য হাসিনা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে : মির্জা ফখরুল

tab

রাজনীতি

বৃষ্টির মধ্যে সিলেটে ১৬০ কিলোমিটার রোডমার্চ করলো বিএনপি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক ও প্রতিনিধি (সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কিশোরগঞ্জ)

বৃহস্পতিবার সিলেটে বিএনপির রোডমার্চ -সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ‘একদফা’ দাবিতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে সিলেট পর্যন্ত ‘রোডমার্চ’ করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ভৈরবের দুর্জয় মোড় বাসস্ট্যান্ড থেকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে রোডমার্চটি শুরু হয়। এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের শেরপুর হয়ে ১৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

রোডমার্চে অংশ নিতে এদিন সকাল থেকে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা, কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও স্থানীয় বিএনপির ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হন। বিভিন্ন ব্যানার ও স্লোগানে খন্ড খন্ড মিছিলে রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশ স্থলে যোগ দেন। এরপর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় দলের ভাইস চেয়াম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হাসান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, ওয়ারেস আলী মামুন, নির্বাহী কমিটির সদস্য লায়লা বেগম, শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিএনপির স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারকে কোন অশুভ শক্তি রক্ষা করতে পারবে না। দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে তরুণ সমাজ জেগে উঠেছে। তারুণ্যের যে রোডমার্চ শুরু হয়েছে, তা সরকার পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যে অগণতান্ত্রিক শক্তি দাঁড়িয়েছে তারা জনগণের সামনে টিকে থাকতে পারবে না। দেশের মালিকানা নিয়ে দেশের মানুষ বাড়ি ফিরবে।’

রোডমার্চটি ভৈরব থেকে শুরু হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেরর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ, সরাইল বিশ্বরোডের মোড় ও কুট্টাপাড়া, বিজয়নগর উপজেলার এলাকায় পৌঁছালে স্বাগত জানান স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সেখানে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ঢল নামে। এ সময় তারা সরকার পদত্যাগসহ বিভিন্ন স্লোগানে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে সমবেত হন। সেই সঙ্গে মিছিলে মিছিলে মুখরিত করে তুলেন চারপাশ।

সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে যাত্রা বিরতি দিয়ে নেতকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন ডু অর ডাই। হয় বাঁচব, না হয় মরে যাব। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’ এ সময় আন্দোলনের ফসল ঘরে না তোলা পর্যন্ত নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, ‘গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার, গুম, খুন আর মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে রক্ষা হবে না। অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত কেউ বাড়ি ফিরবে না।’

এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খোকন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ শামীম ও যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা এসএন তরুণ দেসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সেখান থেকে আবারও রোডমার্চটি সিলেটের উদ্দেশে রওনা হয়। এরপর হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ গোলচত্বরে গিয়ে যাত্রা বিরতি দেয়। এখানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হাসিমের সভাপতিত্বে ও সাবেক এমপি শাম্মি আক্তার শিপার সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার আদায় করার জন্য আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়।’

শায়েস্তাগঞ্জ গোলচত্বর থেকে আবার সিলেটমুখী রোডমার্চ শুরু হয়। রোডমার্চটি যাত্রা বিরতি দিয়ে মৌলভীবাজার জেলার শেরপুরেও পথসভা করে। এখানে বৃষ্টি উপেক্ষা হাজারো নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিকেল ৫টায় পৌঁছার কথা থাকলেও রোডমার্চটি বৃষ্টির কারণে সমাপনী সমাবেশস্থলে তিন ঘণ্টা দেড়ি হয়। রোডমার্চটি সেখানে রাত পৌনে ৮টার দিকে এসে পৌঁছে। এ সময় সমেবেত জনতা মুহুর্মুহু কড়তালি ও স্লোগান দিয়ে রোডমার্চের গাড়িবহরকে স্বাগত জানান।

সমাপনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মানুষ শেখ হাসিনাকে আর এক মুহূর্তও ক্ষমতা দেখতে চায় না। আমরা ক্ষমতায় আসার জন্য আন্দোলন করছি না। আমরা আন্দোলন করছি গণতন্ত্রের জন্য, ভোটাধিকারের জন্য। তাই পরিষ্কার কথা, সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোন নির্বাচন হবে না, দেশের মানুষ হতে দেবে না।’

প্রধান বক্তা হিসেবে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশের মানুষের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলে কোন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। কারণ তারা জানে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন পরিবেশ নাই। বিশ্ববাসী একটি গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য একটি নির্বাচন চায়।’

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, আরিফুল হক চৌধুরী ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন ও এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সহ-ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী ও হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সূচিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন, মামুনুর রশিদ মামুন, মিফতাহ সিদ্দিকী, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, নজিবুর রহমান নজিব, হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, শামীম আহমদ, সৈয়দ সাফেক মাহবুব, মকসুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, শাহনেওয়াজ বক্ত তারেক, মির্জা সম্রাট হোসেন, মাহবুবুল হক চৌধুরী, শাকিল মোর্শেদ, আফসর খান, তাহসিন শারমিন তামান্না, নিগার সুলতানা ডেইজী, নিজাম উদ্দিন তরফদার, সুরমান আলী, জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন, সুদীপ জ্যোতি এষ, দেলোয়ার হোসেন দিনার, ফজলে রাব্বি আহসান প্রমুখ।

রোডমার্চকে বরণ করতে বিকেল ৩টা থেকেই আলিয়ার মাঠে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ মুক্তিকামী হাজার হাজার জনতা। বিকেল ৪টার পূর্বেই মুহুর্মুহু বৃষ্টি উপেক্ষা করে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষমাণ নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে মঞ্চ থেকে বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন জাসাস এর শিল্পীরা।

আজ যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় সমাবেশ, খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল।

‘একদফা’ দাবিতে বিএনপির চলমান দুই সপ্তাহব্যাপী ‘প্যাকেজ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট অঞ্চলে ‘রোডমার্চ’ করেছে দলটি। গত মঙ্গলবার রাজধানীর পাশে টঙ্গী ও জিনজিরায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ‘নভেম্বরের শুরু’ দিকে ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। ওই লক্ষ্যে ঘোষিত কর্মসূচিগুলো পালনের মধ্যে দিয়ে তাদের ‘একদফা’ আন্দোলনের ‘চূড়ান্ত ধাপে’ পৌঁছাতে চায় প্রায় ১৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি। আর তফসিল ঘোষণার আগেই চলমান আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে ‘সফল সমাপ্তি’ ঘটাতে চায় তারা।

সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বিএনপি ও শরিকরা বর্জন করে আন্দোলন করেছিল। কিন্তু সেই আন্দোলনে ‘সফল’ হতে পারেনি তারা। পরবর্তীতে দলটি আন্দোলন না গিয়ে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় আওয়ামী লীগের অধীনেই। তবে এবার আবারও আন্দোলনমুখী দলটি।

গত বছরের শেষ দিকে দলটি রাজপথে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। সবশেষ গত ১২ জুলাই এক সমাবেশ থেকে বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো যুগপৎভাবে ‘একদফা’ দাবিতে ‘চূড়ান্ত’ আন্দোলনের ডাক দেয়। পরবর্তীতে বিএনপিসহ সমমনা জোট ও দলগুলো ঢাকায় পদযাত্রা, মহাসমাবেশ, ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান, গণমিছিল ও কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি পালন করে।

সবশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর একদফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানী ও আশপাশে ১২ সমাবেশ, পাঁচ বিভাগে রোডমার্চসহ বিএনপির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বিএনপির চলমান এই কর্মসূচিগুলো আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।

ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আজ শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগরে যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আজ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় সারাদেশে জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দোয়া মাহফিল করবে বিএনপি।

আগামীকাল বরিশাল-ঝালকাঠি-পিরোজপুর পটুয়াখালী পথে রোডমার্চ করবে; ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরে নয়াবাজার ও ঢাকা জেলা আমিন বাজারে সমাবেশ; ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগে রোডমার্চ, একই দিনে ঢাকায় পেশাজীবী কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর গাবতলী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় জনসমাবেশ; ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মহিলা সমাবেশ; ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শ্রমজীবী কনভেনশন; ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ পথে রোডমার্চ; ২ অক্টোবর ঢাকায় কৃষক সমাবেশ এবং ৩ অক্টোবর কুমিল্লা-ফেনী-মিরসরাই-চট্টগ্রাম পথে রোডমার্চ।

সিলেটে বিএনপির মিছিল থেকে হামলা, একাধিক নাট্যকর্মী আহত।

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সারদাস্মৃতি ভবনের হল রুমে বিএনপির মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, এদিন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরের ক্বিন ব্রিজ সংলগ্ন ৮৬ বছরের পুরনো এই স্থাপনাটিতে হামলা চালানো হয়। এতে আহত হয়েছেন সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একাধিক কর্মী।

সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত বলেন, সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা অভিমুখে একটি মিছিল যাচ্ছিল। সেই মিছিল থেকে কয়েকজন অতর্কিতে সারদা ভবনের হলরুমে ঢুকে নাট্যকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় কথাকলি সিলেটের আমিরুল ইসলাম বাবু, লিটল থিয়েটারের আবদুল কাইয়ূম মুকুলসহ বেশ কয়েকজন নাট্যকর্মী আহত হন। তিনি নিজেও আহত হন বলেও জানান তিনি।

নাট্যকর্মী অরূপ বাউল বলেন, সংস্কৃতি চর্চার জন্য বৃহস্পতিবার থেকে সারদা ভবন খুলে দেয়া হয়। এ উপলক্ষেই সারদা হল মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী নাট্য উৎসবের আয়োজন করে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট। আর সেই নাট্য উৎসবের মঞ্চ লক্ষ্য করে বিএনপির মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়। পরে হলরুমে ঢুকে চেয়ার ছুড়ে মারতে থাকে বিএনপির কর্মীরা। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন নাট্যকর্মী। ঘটনার পরপরই সিলেট কোতয়ালি মডেল থানার পুলিশ ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও উপস্থিত সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন বলে জানান অরূপ।

back to top