alt

রাজনীতি

গত দুই নির্বাচনে বিতর্কের চাপ আমাদের ওপর পড়েছে : সিইসি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০১ অক্টোবর ২০২৩

দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে যেসব অভিযোগ ও বিতর্ক, সেটার চাপ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর পড়েছে বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না’, ‘কমিশনের ওপর আস্থা নেই’; বাজারে এসব ধারণা প্রচলিত আছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ‘অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ’ করার চ্যালেঞ্জ নিতে চায় বর্তমান কমিশন। স্বচ্ছতার বিষয়টি গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে দেখাতে চান সিইসি।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রোববার (১ অক্টোবর) ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি এসব কথা বলেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ী দল আওয়ামী লীগের আমলে আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ‘বাতিলের আদেশ দিলে’ সংবিধানে এ সংক্রান্ত সংশোধনী আনা হয়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করতে না পেরে বিএনপি ওই নির্বাচন বর্জন করে। ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩টি আসনে জয়লাভ করে। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নেয়। তবে ফল বিপর্যয়ের পর ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ করে দলটি। আগের রাতেই ক্ষমতাসীনরা ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরে রেখেছে বলেও দাবি করা হয় বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর পক্ষ থেকে।

দুটি নির্বাচন নিয়েই গণমাধ্যম, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে দেশে ও দেশের বাইরে সমালোচনা হয়। দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারও একাদশ সংসদ নির্বাচনে কমিশনের ব্যর্থতার সমালোচনা করেন।

রোববার প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক ও সমালোচনা হতে পারে। অতীতেও হয়েছে। ৫০, ৬০, ৭০ বছরের ইতিহাস ঘাঁটলেও বিতর্ক পাওয়া যাবে। এমনকি ব্রিটিশ আমলের নির্বাচন নিয়েও কিছু কিছু বিতর্ক হয়েছে। তখন হয়তো মাত্রাটা কম ছিল।’

সিইসি বলেন, ‘আমরা যে নির্বাচনটি করতে যাচ্ছি, সেটার একটা বিশেষ দিক হচ্ছে, অভিযোগ বা বিতর্কের মাত্রাটা একটু অতিরিক্ত। ২০১৪ ও ২০১৮-এর চাপটা এসে আমাদের ওপর পড়েছে, এই নির্বাচন কমিশনের ওপর পড়েছে। আমরাও নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি....মানুষের যে...। এগুলো সত্য হতে পারে, অসত্য হতে পারে, মিথ্যা হতে পারে, সত্য হতে পারে। আমরা সেদিকে যাচ্ছি না।’

ইউএনওদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হবে, সেটি কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করব। জানার চেষ্টা করব আপনারা কে, কীভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য নেব।’

ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে এটা সম্ভব মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মিডিয়ার কর্মীরা তাৎক্ষণিক তথ্যগুলো ধারণ করে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারেন। এদিক থেকে জবাবদিহিতা অনেক সহজ হয়ে গেছে এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা, এটা শুধু অবাধ হবে তা না- এটা স্বচ্ছভাবে হচ্ছে কিনা দেখা যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য তখনই হবে, যদি দায়িত্ব পালন করে মানুষকে দেখানো যায়।’

সিইসি বলেন, ‘বাজারে পারসেপশন (ধারণা) আছে, এটা চাউর হয়েছে যে, নির্বাচনে আমাদের ওপর আস্থা নেই, সরকারের ওপর আস্থা নেই, এর ওপর আস্থা নেই। নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় না। আমরা কিন্তু এই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করতে চাই যে, আমাদের অধীনে আগামীতে যে নির্বাচনটা হবে, সেটা অবাধ হবে, নিরপেক্ষ হবে এবং শান্তিপূর্ণ হবে, একই সঙ্গে স্বচ্ছ হবে।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘স্বচ্ছতা আমরা দেখাতে চাইবো মিডিয়ার মাধ্যমে, অবজারভারদের মাধ্যমে। তারা যতটা সম্ভব তথ্য সম্প্রচার করে স্বচ্ছতা দেখাবে। মিডিয়ার ব্যাপারে আমাদের আরও একটি বক্তব্য আছে, এখন কিন্তু মিডিয়ার মাধ্যমে অপপ্রচারও সম্ভব। যেটাকে ডিসইনফরমেশন, মিস ইনফরমেশন বলে। সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু বানিয়ে ছেড়ে দেয়া হতে পারে। সেগুলো কিন্তু আমরা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করব। যেসব সংস্থা আছে, যারা এগুলো দেখে থাকে, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে সঙ্গে অবহিত করা হলে, আমাদেরও অবহিত করা হলে আমরাও তাৎক্ষণিকভাবে... যাতে ডিসইনফরমেশনের মাধ্যমে ভোটকে ঋণাত্মকভাবে প্রভাবিত করা না হয়, সেই বিষয়টা আমরা অবশ্যই দেখব।’

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘দায়িত্বটা বুঝে নেবেন। নির্বাচনটা অবাধ হতে হবে, নিরপেক্ষ হতে হবে, স্বচ্ছ হতে হবে, শান্তিপূর্ণ হতে হবে। শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। যদি শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়ে যায়, সে কারণে যদি ভোটাররা নির্বাচন কেন্দ্রে আসতে অপারগ হন বা অনাগ্রহী হন, সেটার দায়-দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তাবে।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করেছে ইসি। রোববার শুরু হওয়া এ প্রশিক্ষণ চলবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত। চারটি ব্যাচে ১০০ ইউএনওকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রতিটি ব্যাচকে দেয়া হবে দুদিনের প্রশিক্ষণ।

এরপর বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, ডিসি, এসপি, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবে ইসি। এ প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে বিদ্যমান প্রশাসনকে নির্বাচন আয়োজনের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিশন।

আসছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যেকোন দিন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল দেবে ইসি।

ছবি

জুলাই আন্দোলনের হত্যা মামলায় আইভী কারাগারে

ছবি

আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবি: যমুনার সামনে বাদ জুমা বড় জমায়েতের ডাক

ছবি

আ. লীগকে নিষিদ্ধের দাবি: রাতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সকালেও চলছে

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন নিষিদ্ধের চূড়ান্ত প্রক্রিয়ায়, দাবি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার

ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সিইসি ও বিচারপতিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

ছবি

“জাতির বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নয়: মানবিক করিডোর নিয়ে সরকারকে বিএনপির হুঁশিয়ারি”

ছবি

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত সাবেক এমপি তুহিনের আপিল গ্রহণ, জামিন মঞ্জুর

ছবি

দল গোছাতে দুই মাসে এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য বিএনপির

ছবি

কবিগুরুর গান জাতীয় সংগীত হিসেবে পেয়ে আমরা গর্বিত: তারেক রহমান

ছবি

আজহারের রিভিউ শুনানি শেষ, রায় ২৭ মে

ছবি

সংসদের নিম্নকক্ষে আনুপাতিক ভোটে দ্বিমত নাগরিক ঐক্যের, অধিকাংশ প্রস্তাবে একমত

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রণীত সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি গণতন্ত্রী পার্টির

ছবি

রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক মতপার্থক্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে: এনসিপি

ছবি

লন্ডনে চিকিৎসার পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি, ফিরোজায় ফিরলেন

ছবি

হেফাজতের দুঃখ প্রকাশ: মহাসমাবেশে দুই বক্তার আপত্তিকর বক্তব্য নিয়ে বিবৃতি

ছবি

দুই ঘণ্টায় ‘ফিরোজা’য় পৌঁছালেন খালেদা জিয়া, নেতাকর্মীদের ভিড়ে সড়কজুড়ে উচ্ছ্বাস

ছবি

দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া, যাচ্ছেন ‘ফিরোজায়’

ছবি

দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, নেতাকর্মীদের ঢল বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত

ছবি

কিছু সংস্কার প্রস্তাব ধর্ম ও নারীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে: এনসিপি

ছবি

চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, হিথ্রোতে আবেগঘন বিদায়

ছবি

গয়েশ্বরের মন্তব্য: ‘আদালত বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য সেকেন্ড হোম হয়ে গেছে’

ছবি

গাজীপুরে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা

ছবি

৬ মে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, পথে পথে অভ্যর্থনার প্রস্তুতি বিএনপির

ছবি

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে থাকার কথা বললেন মির্জা ফখরুল

ছবি

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় দেশে পৌঁছাবেন খালেদা জিয়া

ছবি

কাতারের রাজকীয় বিমানে মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া

ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিলে নির্বাচন হওয়া উচিত: জামায়াতে আমির

ছবি

বিশেষ বিমানে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, অভ্যর্থনায় প্রস্তুত বিএনপি

ছবি

সাকিবকে আওয়ামী লীগে যোগ না দিতে বলেছিলাম, না শুনে বিপদে পড়েছে: হাফিজ উদ্দিন

ছবি

নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি: বাসদ

ছবি

চার দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করে মহাসমাবেশ শেষ করলো হেফাজতে ইসলাম

ছবি

মামলা প্রত্যাহারের দাবি, হুঁশিয়ারি ও যুদ্ধের প্রস্তুতির আহ্বান মামুনুল হকের

ছবি

এই ভূখণ্ডে আওয়ামী লীগের আর পুনর্বাসন হবে না: হাসনাত আবদুল্লাহ

ছবি

জোবাইদা রহমানের জন্য চার স্তরের নিরাপত্তা চেয়ে আইজিপিকে বিএনপির চিঠি

ছবি

দীর্ঘ মেয়াদে অনির্বাচিত সরকারে ‘নানা সমস্যা’: সংলাপে জাতীয়তাবাদী জোট

ছবি

নির্বাচনের উপযুক্ত সময় ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল পার হওয়া উচিত নয়: জামায়াত আমির

tab

রাজনীতি

গত দুই নির্বাচনে বিতর্কের চাপ আমাদের ওপর পড়েছে : সিইসি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০১ অক্টোবর ২০২৩

দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে যেসব অভিযোগ ও বিতর্ক, সেটার চাপ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর পড়েছে বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না’, ‘কমিশনের ওপর আস্থা নেই’; বাজারে এসব ধারণা প্রচলিত আছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ‘অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ’ করার চ্যালেঞ্জ নিতে চায় বর্তমান কমিশন। স্বচ্ছতার বিষয়টি গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে দেখাতে চান সিইসি।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রোববার (১ অক্টোবর) ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি এসব কথা বলেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ী দল আওয়ামী লীগের আমলে আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ‘বাতিলের আদেশ দিলে’ সংবিধানে এ সংক্রান্ত সংশোধনী আনা হয়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করতে না পেরে বিএনপি ওই নির্বাচন বর্জন করে। ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩টি আসনে জয়লাভ করে। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নেয়। তবে ফল বিপর্যয়ের পর ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ করে দলটি। আগের রাতেই ক্ষমতাসীনরা ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরে রেখেছে বলেও দাবি করা হয় বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর পক্ষ থেকে।

দুটি নির্বাচন নিয়েই গণমাধ্যম, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে দেশে ও দেশের বাইরে সমালোচনা হয়। দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারও একাদশ সংসদ নির্বাচনে কমিশনের ব্যর্থতার সমালোচনা করেন।

রোববার প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক ও সমালোচনা হতে পারে। অতীতেও হয়েছে। ৫০, ৬০, ৭০ বছরের ইতিহাস ঘাঁটলেও বিতর্ক পাওয়া যাবে। এমনকি ব্রিটিশ আমলের নির্বাচন নিয়েও কিছু কিছু বিতর্ক হয়েছে। তখন হয়তো মাত্রাটা কম ছিল।’

সিইসি বলেন, ‘আমরা যে নির্বাচনটি করতে যাচ্ছি, সেটার একটা বিশেষ দিক হচ্ছে, অভিযোগ বা বিতর্কের মাত্রাটা একটু অতিরিক্ত। ২০১৪ ও ২০১৮-এর চাপটা এসে আমাদের ওপর পড়েছে, এই নির্বাচন কমিশনের ওপর পড়েছে। আমরাও নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি....মানুষের যে...। এগুলো সত্য হতে পারে, অসত্য হতে পারে, মিথ্যা হতে পারে, সত্য হতে পারে। আমরা সেদিকে যাচ্ছি না।’

ইউএনওদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হবে, সেটি কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করব। জানার চেষ্টা করব আপনারা কে, কীভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য নেব।’

ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে এটা সম্ভব মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মিডিয়ার কর্মীরা তাৎক্ষণিক তথ্যগুলো ধারণ করে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারেন। এদিক থেকে জবাবদিহিতা অনেক সহজ হয়ে গেছে এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা, এটা শুধু অবাধ হবে তা না- এটা স্বচ্ছভাবে হচ্ছে কিনা দেখা যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য তখনই হবে, যদি দায়িত্ব পালন করে মানুষকে দেখানো যায়।’

সিইসি বলেন, ‘বাজারে পারসেপশন (ধারণা) আছে, এটা চাউর হয়েছে যে, নির্বাচনে আমাদের ওপর আস্থা নেই, সরকারের ওপর আস্থা নেই, এর ওপর আস্থা নেই। নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় না। আমরা কিন্তু এই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করতে চাই যে, আমাদের অধীনে আগামীতে যে নির্বাচনটা হবে, সেটা অবাধ হবে, নিরপেক্ষ হবে এবং শান্তিপূর্ণ হবে, একই সঙ্গে স্বচ্ছ হবে।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘স্বচ্ছতা আমরা দেখাতে চাইবো মিডিয়ার মাধ্যমে, অবজারভারদের মাধ্যমে। তারা যতটা সম্ভব তথ্য সম্প্রচার করে স্বচ্ছতা দেখাবে। মিডিয়ার ব্যাপারে আমাদের আরও একটি বক্তব্য আছে, এখন কিন্তু মিডিয়ার মাধ্যমে অপপ্রচারও সম্ভব। যেটাকে ডিসইনফরমেশন, মিস ইনফরমেশন বলে। সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু বানিয়ে ছেড়ে দেয়া হতে পারে। সেগুলো কিন্তু আমরা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করব। যেসব সংস্থা আছে, যারা এগুলো দেখে থাকে, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে সঙ্গে অবহিত করা হলে, আমাদেরও অবহিত করা হলে আমরাও তাৎক্ষণিকভাবে... যাতে ডিসইনফরমেশনের মাধ্যমে ভোটকে ঋণাত্মকভাবে প্রভাবিত করা না হয়, সেই বিষয়টা আমরা অবশ্যই দেখব।’

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘দায়িত্বটা বুঝে নেবেন। নির্বাচনটা অবাধ হতে হবে, নিরপেক্ষ হতে হবে, স্বচ্ছ হতে হবে, শান্তিপূর্ণ হতে হবে। শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। যদি শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়ে যায়, সে কারণে যদি ভোটাররা নির্বাচন কেন্দ্রে আসতে অপারগ হন বা অনাগ্রহী হন, সেটার দায়-দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তাবে।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করেছে ইসি। রোববার শুরু হওয়া এ প্রশিক্ষণ চলবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত। চারটি ব্যাচে ১০০ ইউএনওকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রতিটি ব্যাচকে দেয়া হবে দুদিনের প্রশিক্ষণ।

এরপর বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, ডিসি, এসপি, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবে ইসি। এ প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে বিদ্যমান প্রশাসনকে নির্বাচন আয়োজনের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিশন।

আসছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যেকোন দিন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল দেবে ইসি।

back to top