কষাকষিতে আমরা আর নেই : জাপা মহাসচিব চুন্নু
দীর্ঘদিনের সঙ্গী জাতীয় পার্টি (জাপা) চাইলে কিছু আসনে সমঝোতার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে আসন সমঝোতা নিয়ে এখন ‘ভাবছে না’ বলে সংবাদকে জানিয়েছেন জাপা মহাসচিব মুজিবুর হক চুন্নু।
যদিও জাপার একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আসন ভাগাভাগির ‘তৎপরতা’ তারা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের ‘ভূমিকা’ নিয়েই তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে রোববার (৩ ডিসেম্বর) এক বিফ্রিংয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে সিট ‘ভাগাভাগির’ ব্যাপারে জাতীয় পার্টি যদি কোনো আসন চায়, সেটি নিয়ে ‘আলোচনা’ হতে পারে।
জাতীয় পার্টির আসন ছাড় দেয়ার ব্যাপারে তাদের কোনো তালিকা পাঠায়নি বলেও ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন।
তিনি এও বলেছেন, ‘তারা (জাপা) যদি নিজেদের শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে নির্বাচন করে, এ মুহূর্তে এটাই হবে তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো খবর। সত্যিকারের অপজিশন হিসেবে নিজেদেরকে দাঁড় করানোর একটা মোক্ষম উপায়। তারা নিজেরাই নির্বাচন করতে পারলে আমরা স্বাগত জানাই।’
তবে জাপা মহাসচিব মুজিবুর হক চুন্নু সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীরা লাঙ্গল নিয়ে লড়বেন। তবে আসন সমঝোতা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।’
পার্টির চেয়ারম্যান কার্যালয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনেও তিনি বলেছেন, ‘কারও সঙ্গে আলোচনা বা দর কষাকষিতে আমরা আর নেই। আমরা বলেছিলাম ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেব; তাই দিয়েছি, কয়েকটা হয়তো দিতে পারিনি। আমরা আমাদের নিজেদের শক্তিতে নির্বাচন করতে চাই। কারও সঙ্গে সমন্বয় বা যোগাযোগ আমাদের হয়নি, আমাদের ইচ্ছাও নেই।’
আগামী ৭ জানুয়ারী ভোটের দিন রেখে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ ২৯টি নিবন্ধিত দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তবে বিএনপিসহ বেশকিছু দল নির্বাচনের বাইরে থাকছে।
এমন পরিস্থিতিতে জোটের আসন ‘সমঝোতা’ নিয়ে কৌশলী আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের তফসিলের পর দলটি প্রায় সব আসনেই নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে। দুটি আসন প্রার্থী দেয়া থেকে বিরত থাকলেও সেখানে স্বতন্ত্র হিসেবে দলের প্রার্থী রয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের জন্য দলটি বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারেও ‘নমনীয়তা’ দেখাচ্ছে।
আবার জোটের শরীকদের সঙ্গে আসন ‘ভাগাভাগির’ বিষয় ঝুলিয়ে রেখেছে ক্ষমতাসীনরা। ফলে নির্বাচনে অংশ নিতে শরীকদলগুলো নিজেদের মতো করে প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু জোটের আসন ‘সমঝোতা’র বিষয়টি নিয়ে ‘সন্দিহান’ শরীক দলগুলোর নেতারা।
অবশ্য আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বরাবরই বলে আসছেন ‘জোটগতভাবেই’ নির্বাচন করবেন তারা। এমন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা রাজনৈতিক অঙ্গণে।
বিগত তিনটি নির্বাচনে দল দুটি জোটগত বা আসন সমঝোতা করে নির্বাচন করেছে। তবে এবারের নির্বাচনে দুই দলের প্রায় সমানে-সমান প্রার্থী দিয়ে মাঠে রয়েছে। ফলে নির্বাচনে জাপার ‘ভূমিকা’ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায়।
জাপা গত ২৭ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা দেয়। তবে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে ‘মিল’ না হওয়ায় মনোনয়ন ফরম নেননি দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। এক পর্যায়ে তিনি নির্বাচন থেকেই সড়ে দাঁড়ান। যদিও নির্বাচনে রওশনপন্থি হিসেবে পরিচিত কয়েকজন নেতা নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিচ্ছেন।
জিএম কাদের ও রওশন এরশাদের ‘দ্বন্দ্ব’ মধ্যে ‘একক’ নির্বাচনের কথা জানিয়ে আসছেন জাপা মহাসচিব চুন্নু। তবে দলটির কয়েকন নেতা সংবাদকে জানিয়েছেন, পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের আসনে সমঝোতার ‘চেষ্টা চলছে’।
এক প্রশ্নের জবাবে জাপার উচ্চ পর্যায়ের এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দুটি বাদে সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। তাই বলে কি শরীকদের সঙ্গে আলোচনা থেমে থাকবে?’
রোববার আওয়ামী লীগ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৪ দলের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের জোট, তাদের সঙ্গে আমাদের সিদ্ধান্ত হবে। সেই জোটকে বাইরে রেখে নির্বাচন করব সেই কথা আমরা ভাবিনি। এখানে অ্যাডজাস্টমেন্টের ব্যাপার আছে।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
কষাকষিতে আমরা আর নেই : জাপা মহাসচিব চুন্নু
রোববার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩
দীর্ঘদিনের সঙ্গী জাতীয় পার্টি (জাপা) চাইলে কিছু আসনে সমঝোতার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে আসন সমঝোতা নিয়ে এখন ‘ভাবছে না’ বলে সংবাদকে জানিয়েছেন জাপা মহাসচিব মুজিবুর হক চুন্নু।
যদিও জাপার একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আসন ভাগাভাগির ‘তৎপরতা’ তারা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের ‘ভূমিকা’ নিয়েই তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে রোববার (৩ ডিসেম্বর) এক বিফ্রিংয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে সিট ‘ভাগাভাগির’ ব্যাপারে জাতীয় পার্টি যদি কোনো আসন চায়, সেটি নিয়ে ‘আলোচনা’ হতে পারে।
জাতীয় পার্টির আসন ছাড় দেয়ার ব্যাপারে তাদের কোনো তালিকা পাঠায়নি বলেও ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন।
তিনি এও বলেছেন, ‘তারা (জাপা) যদি নিজেদের শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে নির্বাচন করে, এ মুহূর্তে এটাই হবে তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো খবর। সত্যিকারের অপজিশন হিসেবে নিজেদেরকে দাঁড় করানোর একটা মোক্ষম উপায়। তারা নিজেরাই নির্বাচন করতে পারলে আমরা স্বাগত জানাই।’
তবে জাপা মহাসচিব মুজিবুর হক চুন্নু সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীরা লাঙ্গল নিয়ে লড়বেন। তবে আসন সমঝোতা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।’
পার্টির চেয়ারম্যান কার্যালয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনেও তিনি বলেছেন, ‘কারও সঙ্গে আলোচনা বা দর কষাকষিতে আমরা আর নেই। আমরা বলেছিলাম ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেব; তাই দিয়েছি, কয়েকটা হয়তো দিতে পারিনি। আমরা আমাদের নিজেদের শক্তিতে নির্বাচন করতে চাই। কারও সঙ্গে সমন্বয় বা যোগাযোগ আমাদের হয়নি, আমাদের ইচ্ছাও নেই।’
আগামী ৭ জানুয়ারী ভোটের দিন রেখে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ ২৯টি নিবন্ধিত দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তবে বিএনপিসহ বেশকিছু দল নির্বাচনের বাইরে থাকছে।
এমন পরিস্থিতিতে জোটের আসন ‘সমঝোতা’ নিয়ে কৌশলী আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের তফসিলের পর দলটি প্রায় সব আসনেই নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে। দুটি আসন প্রার্থী দেয়া থেকে বিরত থাকলেও সেখানে স্বতন্ত্র হিসেবে দলের প্রার্থী রয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের জন্য দলটি বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারেও ‘নমনীয়তা’ দেখাচ্ছে।
আবার জোটের শরীকদের সঙ্গে আসন ‘ভাগাভাগির’ বিষয় ঝুলিয়ে রেখেছে ক্ষমতাসীনরা। ফলে নির্বাচনে অংশ নিতে শরীকদলগুলো নিজেদের মতো করে প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু জোটের আসন ‘সমঝোতা’র বিষয়টি নিয়ে ‘সন্দিহান’ শরীক দলগুলোর নেতারা।
অবশ্য আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বরাবরই বলে আসছেন ‘জোটগতভাবেই’ নির্বাচন করবেন তারা। এমন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা রাজনৈতিক অঙ্গণে।
বিগত তিনটি নির্বাচনে দল দুটি জোটগত বা আসন সমঝোতা করে নির্বাচন করেছে। তবে এবারের নির্বাচনে দুই দলের প্রায় সমানে-সমান প্রার্থী দিয়ে মাঠে রয়েছে। ফলে নির্বাচনে জাপার ‘ভূমিকা’ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায়।
জাপা গত ২৭ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা দেয়। তবে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে ‘মিল’ না হওয়ায় মনোনয়ন ফরম নেননি দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। এক পর্যায়ে তিনি নির্বাচন থেকেই সড়ে দাঁড়ান। যদিও নির্বাচনে রওশনপন্থি হিসেবে পরিচিত কয়েকজন নেতা নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিচ্ছেন।
জিএম কাদের ও রওশন এরশাদের ‘দ্বন্দ্ব’ মধ্যে ‘একক’ নির্বাচনের কথা জানিয়ে আসছেন জাপা মহাসচিব চুন্নু। তবে দলটির কয়েকন নেতা সংবাদকে জানিয়েছেন, পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের আসনে সমঝোতার ‘চেষ্টা চলছে’।
এক প্রশ্নের জবাবে জাপার উচ্চ পর্যায়ের এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দুটি বাদে সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। তাই বলে কি শরীকদের সঙ্গে আলোচনা থেমে থাকবে?’
রোববার আওয়ামী লীগ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৪ দলের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের জোট, তাদের সঙ্গে আমাদের সিদ্ধান্ত হবে। সেই জোটকে বাইরে রেখে নির্বাচন করব সেই কথা আমরা ভাবিনি। এখানে অ্যাডজাস্টমেন্টের ব্যাপার আছে।’