alt

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের গুরুত্ব বাড়ছে

ফয়েজ আহমেদ তুষার : বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের হার বাড়াতে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের গুরুত্ব বেড়েই চলেছে। বিএনপির বর্জনে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ না থাকায় ভোটের খরা হতে পারে এমন আশঙ্কা আছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সুযোগ দেয়ার নতুন কৌশল নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিষয়টি একাধিকবার স্পষ্ট করেছেন। শীর্ষ নেত্রীর বরাত দিয়েও তিনি বলেছেন, ‘সিদ্ধান্ত একটাই পরিবর্তন হয়নি।’ নৌকাবঞ্চিত প্রার্থীদের পক্ষে তৃণমূল কর্মীদের কাজ করার বিষয়েও ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

তবে গত বুধবার টাঙ্গাইলে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ‘বিদ্রোহী’ তকমা দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দল বা নৌকার বাইরে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। যারা দলের আদর্শ মেনে চলেন, তাদের অবশ্যই নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে।’

আবদুর রাজ্জাক সভায় বলেন, ‘নৌকার বাইরে যারা নির্বাচন করছেন, আমার দৃষ্টিতে তারা অবশ্যই বিদ্রোহী প্রার্থী।’

একদিন পরই নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসেন কৃষিমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, আমাদের অনেক স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিযোগিতায় আছেন। তারা অনেক সম্ভাবনাময়।’

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নৌকার প্রার্থীদের যোগ্যতা প্রমাণের আহ্বানও জানান তিনি

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘তারা নিজেদের প্রমাণ করে সংসদে আসুক। তার প্রমাণ করুক যে তারা মানুষের জন্য ভালো কাজ করেছেন, নিবেদিত ছিলেন।’

নিজেদের মধ্যে কীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই, যোগ্য, নিবেদিত, অঙ্গীকারাবদ্ধ কাউকে যেন জনগণ ভোট দেন। আমরা নৌকার প্রার্থী দিয়েছি, ভোট দিল না, এটা তো ভোটারদের পছন্দ। তারাই পছন্দের জনপ্রতিনিধি ঠিক করে দেবে।’

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার ফের সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

আওয়ামী লীগ নেতারা স্বতন্ত্র নির্বাচনে আসাতে কর্মীরাও বিভক্ত হয়ে পড়ছে। ভবিষ্যতে এটা বিষফোড়া হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন কি- ধানমন্ডিতে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিষফোড়া কেন হবে আমি জানি না। এটা আমাদের নির্বাচনী রণকৌশল। এখানে আমাদের নির্বাচনকে অর্থবহ করতে হবে। মোটা টার্ন-আউটের ব্যাপার আমরা মাথায় রাখছি। এটা একটা ফেয়ার কম্পিটিশন হবে। এখানে তো সংঘাত-মারামারির বিষয় নেই।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন যে, স্বতন্ত্র যারা করতে চায় তারা করবে। এতে আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা কোনো ভিন্ন অবস্থান নেইনি। আমরা মনে করি, ফেয়ার কম্পিটিশনে যে জিতে জিতবে। অসুবিধা কী, স্বতন্ত্র হলে তার জেতার অধিকার নেই?’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা দলগতভাবে অবশ্যই দলকে বেছে নেব প্রথমে। কারণ দলই আমাদের কাছে মূল ব্যাপার। স্বতন্ত্রদের দেয়া হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য। যদি জনগণের ভোটে তারা এগিয়ে যায়, সেখানে আমাদের কী করার আছে?’

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হয়েছে গত ৩০ নভেম্বর। যাচাই শেষে বৈধ প্রার্থীও ঘোষণা করা হয়েছে। আপিল-নিষ্পত্তি ও প্রত্যাহার শেষে প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এই নির্বাচন বর্জন করেছে। ‘একতরফা নির্বাচন’ বন্ধ করতে সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দুই দিন এবং মঙ্গলবার বিরতি রেখে টানা অবরোধ-হরতাল দিয়ে যাচ্ছে সরকারবিরোধী দলগুলো।

এমন পরিস্থিতিতে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনা ক্ষমতাসীনদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ এগুচ্ছে নতুন নতুন কৌশল নিয়ে। বিগত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে দেখা গেছে, নৌকার বিরুদ্ধে দলের কেউ ভোটে গেলে, তাকে বসিয়ে দিতে কঠোর ভূমিকা নিতো কেন্দ্র। এবার সেটি নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।

ফলে, সংসদীয় তিনশ’ আসনের দুই-তৃতীয়াংশে নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে দলের মনোনয়নবঞ্চিতরা প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা বেশি। তাদের কর্মী-সমর্থকও অনেক।

এসব আসেন বর্তমান সংসদ সদস্যদের (এমপি) অনেকেই অর্থ-সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। দলে পদপদবি এবং সরকারি নানা ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়-স্বজনদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরাগভাজন হয়েছেন। অনেক এমপি আবার স্বাধীনতার চেতনা পরিপন্থীদের আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশের ঘটিয়েছেন। দলে বিভাজন ঘটিয়ে নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেণ। স্থানীয় পর্যায়ে গঠন করেছেন পকেট কমিটি। তৃণমূলের ত্যাগী কর্মীদের পদপদবি থেকে বঞ্চিত করে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন।

এসব আসনে নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এবং সুষ্ঠু ভোট হলে পরিচ্ছন্ন ইমেজের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন- বলছে স্থানীয় সূত্র।

নির্বাচনে ভোটের হার বাড়াতে এই আসনগুলো ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে আওয়ামী লীগ।

ছবি

ঢাকায় আজ জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোট প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক দলগুলো

ছবি

রাজশাহীতে এনসিপি নেত্রীর আকস্মিক পদত্যাগ

ছবি

জামায়াতসহ কয়েক দলের যুগপৎ আন্দোলনের জবাব রাজপথেই দেবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন

ছবি

খালেদা জিয়ার ভাগ্নে শাহরিনকে আহ্বায়ক করে এইবির নতুন কমিটি

ছবি

নাশকতার দুই মামলা থেকে ফখরুল ও আব্বাসসহ ১০৬ জনকে অব্যাহতি

ছবি

এখন কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি

অভিন্ন দাবিতে তিন ইসলামী দলের যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

যুগপতে পাঁচ দাবিতে জামায়াতের তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫ সনাতন যোগ দিলেন জামায়াতে

ছবি

তারেকের নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বাবরের আলোচনা

ছবি

যুগপতে কারা থাকছে ঠিক হয়নি, তবে খেলাফতের কর্মসূচি ঘোষণা

জামায়াতের আযাদ: মুক্তিযুদ্ধ না মানলে ‘বাংলাদেশ অস্বীকার করা হবে’

ছবি

জুলাই সনদের গেরো: এবার আদালতের মত নিতে বলল বিএনপি

ছবি

‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরে রাজি বিএনপি, তবে আইনি ভিত্তি নিয়ে মতভেদ

ছবি

ডাকসু-জাকসু নির্বাচনে ‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রশ্ন তুললেন রিজভী

ছবি

মৌলবাদীরা ‘বেহেশতের টিকেট’ বিক্রি করছে: বিএনপির গয়েশ্বর

ছবি

সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিসের তিন দিনের কর্মসূচি

ছবি

সাবেক প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এবার তুহিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

ছবি

রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে বাস্তুতন্ত্রও নিরাপদ থাকবে: তারেক রহমান

ছবি

সরকার ও উপদেষ্টারা মাহফুজদের যথেচ্ছ ব্যবহার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে: নাহিদ ইসলাম

ছবি

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে পশু-পাখি ও বাস্তুতন্ত্রের অধিকার নিশ্চিত হবে: তারেক রহমান

ছবি

বসুন্ধরায় গোপন বৈঠক: ময়মনসিংহ জেলা আ.লীগ নেতার দোষ স্বীকার

ছবি

ঢাকার আগারগাঁওয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ‘নিষিদ্ধ’ আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

আওয়ামী লীগ লুটপাট করে দেশকে দেউলিয়া করে দিয়েছে: মঈন খান

ছবি

ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তারেকের আহ্বান

ছবি

বাংলাদেশের সংবিধানে শ্রমিক, জনতার অধিকার নিশ্চিত করা হয়নি: এনসিপি

ছবি

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মিন্টু

ছবি

জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: বিএনপি

ছবি

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে গাজীপুরে সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে ইসলামিক আন্দোলন

ছবি

নির্বাচনের আগে পরিবেশ সৃষ্টি জরুরি: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ

ছবি

সংবিধান সংশোধন: মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন পদ্ধতিতে ভিন্নমত রাজনৈতিক দলগুলোর

ছবি

বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন হলে দেশের সংকট আরও বাড়বে: আনিসুল ইসলাম

ছবি

‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নে কোনো কিছু চাপিয়ে দেবে না কমিশন: আলী রীয়াজ

ছবি

ডাকসু জয়ে ছাত্র শিবিরকে অভিনন্দন পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর

tab

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের গুরুত্ব বাড়ছে

ফয়েজ আহমেদ তুষার

বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের হার বাড়াতে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের গুরুত্ব বেড়েই চলেছে। বিএনপির বর্জনে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ না থাকায় ভোটের খরা হতে পারে এমন আশঙ্কা আছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সুযোগ দেয়ার নতুন কৌশল নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিষয়টি একাধিকবার স্পষ্ট করেছেন। শীর্ষ নেত্রীর বরাত দিয়েও তিনি বলেছেন, ‘সিদ্ধান্ত একটাই পরিবর্তন হয়নি।’ নৌকাবঞ্চিত প্রার্থীদের পক্ষে তৃণমূল কর্মীদের কাজ করার বিষয়েও ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

তবে গত বুধবার টাঙ্গাইলে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ‘বিদ্রোহী’ তকমা দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দল বা নৌকার বাইরে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। যারা দলের আদর্শ মেনে চলেন, তাদের অবশ্যই নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে।’

আবদুর রাজ্জাক সভায় বলেন, ‘নৌকার বাইরে যারা নির্বাচন করছেন, আমার দৃষ্টিতে তারা অবশ্যই বিদ্রোহী প্রার্থী।’

একদিন পরই নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসেন কৃষিমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, আমাদের অনেক স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিযোগিতায় আছেন। তারা অনেক সম্ভাবনাময়।’

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নৌকার প্রার্থীদের যোগ্যতা প্রমাণের আহ্বানও জানান তিনি

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘তারা নিজেদের প্রমাণ করে সংসদে আসুক। তার প্রমাণ করুক যে তারা মানুষের জন্য ভালো কাজ করেছেন, নিবেদিত ছিলেন।’

নিজেদের মধ্যে কীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই, যোগ্য, নিবেদিত, অঙ্গীকারাবদ্ধ কাউকে যেন জনগণ ভোট দেন। আমরা নৌকার প্রার্থী দিয়েছি, ভোট দিল না, এটা তো ভোটারদের পছন্দ। তারাই পছন্দের জনপ্রতিনিধি ঠিক করে দেবে।’

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার ফের সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

আওয়ামী লীগ নেতারা স্বতন্ত্র নির্বাচনে আসাতে কর্মীরাও বিভক্ত হয়ে পড়ছে। ভবিষ্যতে এটা বিষফোড়া হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন কি- ধানমন্ডিতে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিষফোড়া কেন হবে আমি জানি না। এটা আমাদের নির্বাচনী রণকৌশল। এখানে আমাদের নির্বাচনকে অর্থবহ করতে হবে। মোটা টার্ন-আউটের ব্যাপার আমরা মাথায় রাখছি। এটা একটা ফেয়ার কম্পিটিশন হবে। এখানে তো সংঘাত-মারামারির বিষয় নেই।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন যে, স্বতন্ত্র যারা করতে চায় তারা করবে। এতে আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা কোনো ভিন্ন অবস্থান নেইনি। আমরা মনে করি, ফেয়ার কম্পিটিশনে যে জিতে জিতবে। অসুবিধা কী, স্বতন্ত্র হলে তার জেতার অধিকার নেই?’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা দলগতভাবে অবশ্যই দলকে বেছে নেব প্রথমে। কারণ দলই আমাদের কাছে মূল ব্যাপার। স্বতন্ত্রদের দেয়া হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য। যদি জনগণের ভোটে তারা এগিয়ে যায়, সেখানে আমাদের কী করার আছে?’

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হয়েছে গত ৩০ নভেম্বর। যাচাই শেষে বৈধ প্রার্থীও ঘোষণা করা হয়েছে। আপিল-নিষ্পত্তি ও প্রত্যাহার শেষে প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এই নির্বাচন বর্জন করেছে। ‘একতরফা নির্বাচন’ বন্ধ করতে সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দুই দিন এবং মঙ্গলবার বিরতি রেখে টানা অবরোধ-হরতাল দিয়ে যাচ্ছে সরকারবিরোধী দলগুলো।

এমন পরিস্থিতিতে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনা ক্ষমতাসীনদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ এগুচ্ছে নতুন নতুন কৌশল নিয়ে। বিগত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে দেখা গেছে, নৌকার বিরুদ্ধে দলের কেউ ভোটে গেলে, তাকে বসিয়ে দিতে কঠোর ভূমিকা নিতো কেন্দ্র। এবার সেটি নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।

ফলে, সংসদীয় তিনশ’ আসনের দুই-তৃতীয়াংশে নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে দলের মনোনয়নবঞ্চিতরা প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা বেশি। তাদের কর্মী-সমর্থকও অনেক।

এসব আসেন বর্তমান সংসদ সদস্যদের (এমপি) অনেকেই অর্থ-সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। দলে পদপদবি এবং সরকারি নানা ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়-স্বজনদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরাগভাজন হয়েছেন। অনেক এমপি আবার স্বাধীনতার চেতনা পরিপন্থীদের আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশের ঘটিয়েছেন। দলে বিভাজন ঘটিয়ে নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেণ। স্থানীয় পর্যায়ে গঠন করেছেন পকেট কমিটি। তৃণমূলের ত্যাগী কর্মীদের পদপদবি থেকে বঞ্চিত করে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন।

এসব আসনে নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এবং সুষ্ঠু ভোট হলে পরিচ্ছন্ন ইমেজের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন- বলছে স্থানীয় সূত্র।

নির্বাচনে ভোটের হার বাড়াতে এই আসনগুলো ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে আওয়ামী লীগ।

back to top