আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের বৈধতা ফেরৎ পেতে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যারা আপিল করছেন, তারা শতভাগ ন্যায়বিচার পাবেন এবং ছোটখাটো ভুলত্রুটি সমাধান করে তাদের আপিলের বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন চত্বরে আপিল কার্যক্রমের চতুর্থ দিনে সাংবাদিকদের একথা বলেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
এদিকে নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে চতুর্থ দিনের মতো চলছে আপিলের কার্যক্রম। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই আপিল আবেদন করতে এসেছেন প্রার্থীরা। বৃষ্টির কারণে প্রার্থী-সমর্থকদের আনাগোনা কিছুটা কম হলেও ইসি প্রাঙ্গণে দেখা যায়, সকাল থেকেই আসতে শুরু করেন প্রার্থীরা।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার চতুর্থ দিন পর্যন্ত প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবেদন করেছেন ৪৩১ জন। প্রথম দিনে আপিল আবেদন ছিল ৪২ জনের। দ্বিতীয় দিন করেছিলেন ১৪১ জন, তৃতীয় দিনে ১৫৫ এবং শুক্রবার চতুর্থ দিনে ৯৩ জন আপিল করেছেন। চতুর্থ দিনে যে ৯৩ জন আপিল আবেদন করেছেন, তাদের মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে ১৭ জন, কুমিল্লার ১১ জন, চট্টগ্রামের ৯ জন, ফরিদপুরের ৫ জন, সিলেটের ৪ জন, ময়মনসিংহেরর ১৪ জন, বরিশালের ৪ জন, খুলনা ১১ জন, রাজশাহীর ১৩ জন ও রংপুর অঞ্চলের ৫ জন প্রার্থী আপিল আবেদন করেছেন। এ সময় বৈধ প্রার্থীর বিরুদ্ধেও আপিল আবেদন জমা পড়ে।
মনোনয়নপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কিছু আপিল হয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে যদি প্রমাণ পান বাতিল করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বলেন, ‘অবশ্যই সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এবার আরপিও সংশোধন হয়েছে। আগে ছিল রিটার্নিং অফিসারের রিজেকশনের বিরুদ্ধে আপিল। আরপিওতে আছে, শুধু রিটার্নিং অফিসারের রিজেকশন না, রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। অ্যাকসেপ্টেন্সের বিরুদ্ধেও আপিল হবে, রিজেকশনের বিরুদ্ধে আপিল হবে। যেহেতু আইনে আছে, কমিশন যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে।’
শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিতে ব্যর্থ হওয়া কুমিল্লা-৩ আসনের জাকারিয়া মাসুদ নামের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে আপিলের জন্য ইসিতে ঘুরতে দেখা যায়। অতিরিক্ত সচিবের বক্তব্যের পর তিনি বলেন, আমি ৩০ নভেম্বর বিকেল ৩টায় সব কাগজপত্র দিয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে মনোনয়নের কাগজ পাঠিয়েছি, কিন্তু তারা রিসিভ করেননি। সাড়ে ৩টায় নিজে গেছি, অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু ফরম তারা জমা নেননি। তিনি বলেন, ইসিতে এসে অভিযোগ জমা দিয়েছি। রিসিভ কপি নিয়ে হাইকোর্টে উঠেছি, গত বৃহস্পতিবার শুনানি হচ্ছিল, সেই মুহূর্তে অ্যাটর্নি ফোন দিয়ে জানালেন আমার রায় ইসি থেকে হবে। এরপর থেকে আমি ইসিতে ঘোরাঘুরি করছি, কোন রেসপন্স পাইনি।
জাকারিয়া মাসুদ বলেন, আমি ২০ বার হাইকোর্টে গেছি, ইসিতে ৩০ বার এসেছি। ঘুরতে ঘুরতে আমার জুতা শেষ। আমি এখন কি করবো। মনোনয়নপত্র জমা দিতে আমি সময় মতো উপস্থিত ছিলাম, উনারা নিতে পারেননি, এটা ইসির ব্যর্থতা।
যারা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘৩০ নভেম্বর যারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি তাদের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কিছুর করার নেই।’ অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘সময়মতো হাজির হয়ে যদি তারা মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারেন। তারা তো হাইকোর্টে গিয়েছিলেন, হাইকোর্ট যদি নির্দেশনা দেন তাহলে রিটার্নিং অফিসার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করবে। হাইকোর্ট থেকে যদি তারা প্রতিকার না পান সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করণীয় নাই।’ দেশের ৬৪টি জেলার বিভিন্ন আসনের প্রার্থীদের আপিলের জন্য ইসি ভবন প্রাঙ্গণে করা হয়েছে আলাদা ১০টি বুথ। সেখানে আলাদাভাবে চলছে আপিল দায়েরের কার্যক্রম।
এবারের জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছিল ২ হাজার ৭১৬টি। এর মধ্যে বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাতিল করেছেন ৭৩১ জনের। আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। আর ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।
শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের বৈধতা ফেরৎ পেতে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যারা আপিল করছেন, তারা শতভাগ ন্যায়বিচার পাবেন এবং ছোটখাটো ভুলত্রুটি সমাধান করে তাদের আপিলের বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন চত্বরে আপিল কার্যক্রমের চতুর্থ দিনে সাংবাদিকদের একথা বলেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
এদিকে নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে চতুর্থ দিনের মতো চলছে আপিলের কার্যক্রম। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই আপিল আবেদন করতে এসেছেন প্রার্থীরা। বৃষ্টির কারণে প্রার্থী-সমর্থকদের আনাগোনা কিছুটা কম হলেও ইসি প্রাঙ্গণে দেখা যায়, সকাল থেকেই আসতে শুরু করেন প্রার্থীরা।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার চতুর্থ দিন পর্যন্ত প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবেদন করেছেন ৪৩১ জন। প্রথম দিনে আপিল আবেদন ছিল ৪২ জনের। দ্বিতীয় দিন করেছিলেন ১৪১ জন, তৃতীয় দিনে ১৫৫ এবং শুক্রবার চতুর্থ দিনে ৯৩ জন আপিল করেছেন। চতুর্থ দিনে যে ৯৩ জন আপিল আবেদন করেছেন, তাদের মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে ১৭ জন, কুমিল্লার ১১ জন, চট্টগ্রামের ৯ জন, ফরিদপুরের ৫ জন, সিলেটের ৪ জন, ময়মনসিংহেরর ১৪ জন, বরিশালের ৪ জন, খুলনা ১১ জন, রাজশাহীর ১৩ জন ও রংপুর অঞ্চলের ৫ জন প্রার্থী আপিল আবেদন করেছেন। এ সময় বৈধ প্রার্থীর বিরুদ্ধেও আপিল আবেদন জমা পড়ে।
মনোনয়নপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কিছু আপিল হয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে যদি প্রমাণ পান বাতিল করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বলেন, ‘অবশ্যই সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এবার আরপিও সংশোধন হয়েছে। আগে ছিল রিটার্নিং অফিসারের রিজেকশনের বিরুদ্ধে আপিল। আরপিওতে আছে, শুধু রিটার্নিং অফিসারের রিজেকশন না, রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। অ্যাকসেপ্টেন্সের বিরুদ্ধেও আপিল হবে, রিজেকশনের বিরুদ্ধে আপিল হবে। যেহেতু আইনে আছে, কমিশন যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে।’
শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিতে ব্যর্থ হওয়া কুমিল্লা-৩ আসনের জাকারিয়া মাসুদ নামের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে আপিলের জন্য ইসিতে ঘুরতে দেখা যায়। অতিরিক্ত সচিবের বক্তব্যের পর তিনি বলেন, আমি ৩০ নভেম্বর বিকেল ৩টায় সব কাগজপত্র দিয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে মনোনয়নের কাগজ পাঠিয়েছি, কিন্তু তারা রিসিভ করেননি। সাড়ে ৩টায় নিজে গেছি, অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু ফরম তারা জমা নেননি। তিনি বলেন, ইসিতে এসে অভিযোগ জমা দিয়েছি। রিসিভ কপি নিয়ে হাইকোর্টে উঠেছি, গত বৃহস্পতিবার শুনানি হচ্ছিল, সেই মুহূর্তে অ্যাটর্নি ফোন দিয়ে জানালেন আমার রায় ইসি থেকে হবে। এরপর থেকে আমি ইসিতে ঘোরাঘুরি করছি, কোন রেসপন্স পাইনি।
জাকারিয়া মাসুদ বলেন, আমি ২০ বার হাইকোর্টে গেছি, ইসিতে ৩০ বার এসেছি। ঘুরতে ঘুরতে আমার জুতা শেষ। আমি এখন কি করবো। মনোনয়নপত্র জমা দিতে আমি সময় মতো উপস্থিত ছিলাম, উনারা নিতে পারেননি, এটা ইসির ব্যর্থতা।
যারা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘৩০ নভেম্বর যারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি তাদের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কিছুর করার নেই।’ অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘সময়মতো হাজির হয়ে যদি তারা মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারেন। তারা তো হাইকোর্টে গিয়েছিলেন, হাইকোর্ট যদি নির্দেশনা দেন তাহলে রিটার্নিং অফিসার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করবে। হাইকোর্ট থেকে যদি তারা প্রতিকার না পান সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করণীয় নাই।’ দেশের ৬৪টি জেলার বিভিন্ন আসনের প্রার্থীদের আপিলের জন্য ইসি ভবন প্রাঙ্গণে করা হয়েছে আলাদা ১০টি বুথ। সেখানে আলাদাভাবে চলছে আপিল দায়েরের কার্যক্রম।
এবারের জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছিল ২ হাজার ৭১৬টি। এর মধ্যে বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাতিল করেছেন ৭৩১ জনের। আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। আর ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।