দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল শুনানির প্রথম দিনে ৫৬ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। এছাড়া ৩২ জনের প্রার্থিতা নামঞ্জুর হয়েছে এবং ছয়টি আবেদন সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রাখা হয়েছে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ শুনানি হয়। শুনানি চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। শুনানি শেষে সঙ্গে সঙ্গে রায় প্রকাশ করবে ইসি। ওই রায়ে সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে প্রার্থীদের।
ইসির যুগ্ম সচিব মাহবুবার রহমান জানান, প্রথম দিনে ৯৪ জনের আপিল আবেদনের শুনানি হয়।
চুন্নুর আসনে নৌকা বহাল
কিশোরগঞ্জন্ড৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. নাসিরুল ইসলাম খানের মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। এই আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু লাঙ্গলের প্রার্থী হয়েছেন। এখানে নৌকার প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলে জাপাকে আসন ছেড়ে দেয়া হলো কিনা, এমন আলোচনা চলছিল।
আবদুর রহমানের আসনে দোলন ও কৃক
ফরিদপুরন্-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলন ও মাহমুদা বেগম কৃকের মনোয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর আবদুর রহমান এই আসনে নৌকার প্রার্থী। তিনি এই আসনের সাবেক এমপি।
দোলন অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা টাইমসের সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের সাবেক সহন্ডসভাপতি। কৃক মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
চট্টগ্রামে আ’লীগের ৩ নেতা
আপিল শুনানিতে মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে চট্টগ্রামের তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর, যারা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা। তিনজনই নৌকার মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়ে নিজ নিজ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের তালিকায় ত্রুটিবিচ্যুতির কারণে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন চট্টগ্রামন্ড১ (মিরসরাই) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিন। তিনি উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। এই আসনে নৌকার প্রার্থী মাহবুব রহমান, যিনি বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে।
প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া চট্টগ্রামন্ড৮ (বোয়ালখালীন্ডচান্দগাঁও) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস ছালাম নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়ান্ডলোহাগাড়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবও প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। তিনি সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এই আসনে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী।
মাহী বি চৌধুরী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জন্ড১ আসন থেকে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী মাহী বি চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার দুপুরে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আপিল শুনানি শেষে মাহীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা দেয় ইসি। একদাশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি বিকল্পধারাকে ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এবার এই আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন সিরাজদীখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ।
গত ৩ ডিসেম্বর যাচাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণ হিসেবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন মাহী বি চৌধুরী একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার ছিলেন। ওই প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি বলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য দেয়া হয়েছে।
হিরো আলম
বগুড়ান্ড৪ আসনের প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফ হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। আলোচিত এই অনলাইন কনটেন্ট ক্রিয়েটর বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনোনয়ন নিয়ে ভোটের মাঠে এসেছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মো. হেলাল উদ্দিন কবিরাজ। বর্তমান সংসদ সদস্য জাসদের রেজাউল করিম তানসেন।
ডলি সায়ন্তনী
পাবনান্ড২ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী। নব্বই দশকের আলোচিত এই শিল্পী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দাঁড়াতে ভোটের টিকেট পেয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি আহমেদ ফিরোজ কবির।
কামরুল হাসান রিপন
ঢাকান্ড৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান রিপনের মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই নেতা নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না। বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মুনও দ্বাদশ সংসদে নৌকার মনোনয়ন পাননি।
জাবির সাবেক উপাচার্য আনোয়ার
নেত্রকোনান্ড৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। ১ শতাংশ ভোটারের তালিকায় গরমিলের তা বাতিল হয়। নেত্রকোণান্ড৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল। তার বদলে এবার এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেনকে।
প্রার্থিতা ফিরে পেলেন যারা
টাঙ্গাইলন্ড২ আসনের মো. ইউনুস ইসলাম তালুকদার (স্বতন্ত্র), যশোরন্ড২ আসনের এস এম হাবিবুর রহমান (স্বতন্ত্র), জামালপুরন্ড২ আসনের মো. জিয়াউল হক জিয়া (স্বতন্ত্র), নোয়াখালীন্ড২ আসনের তালেবুজ্জামান (জাতীয় পার্টি), যশোরন্ড১ আসনের মো. আক্তারুজ্জামান (জাতীয় পার্টি), গোপালগঞ্জন্ড১ আসনের মোহাম্মদ কবির মিয়া (স্বতন্ত্র), খুলনান্ড৬ আসনের মো. শফিকুল ইসলাম মধু (জাতীয় পার্টি), চট্টগ্রামন্ড৮ আসনের আবদুছ সালাম (স্বতন্ত্র), বরগুনান্ড১ আসনের মো. খলিলুর রহমান (স্বতন্ত্র), খুলনান্ড৪ আসনের শেখ হাবিবুর রহমান (তৃণমূল বিএনপি), মেহেরপুরন্ড২ আসনের মোখলেসুর রহমান (স্বতন্ত্র), রংপুরন্ড২ আসনের বিশ্বনাথ সরকার (স্বতন্ত্র), ঢাকান্ড২০ আসনের মো. মিনহাজ উদ্দিন (বিএসপি), চট্টগ্রামন্ড২ আসনের মোহাম্মদ শাহজাহান (স্বতন্ত্র), মুন্সীগঞ্জন্ড৩ আসনের মমতাজ সুলতানা আহমেদ (বিএনএফ), মাদারীপুরন্ড২ আসনের ইউসুফ আলী সুমন (বিএসপি), যশোরন্ড৩ আসনের মো. মহিদুল ইসলাম (জাকের পার্টি), যশোরন্ড৫ আসনের শেখ নুরুজ্জামান (বিএনএম), মুন্সীগঞ্জন্ড২ আসনের মো. বাচ্ছু শেখ (বিএনএফ), যশোরন্ড৩ আসনের মোহিত কুমার নাথ (স্বতন্ত্র), কুমিল্লান্ড২ আসনের এটিএম মঞ্জুরুল ইসলাম (জাকের পার্টি), যশোরন্ড৬ আসনের মো. আজিজুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), বরিশালন্ড৬ আসনের মোহাম্মদ শামসুল আলম (স্বতন্ত্র), কুমিল্লান্ড৫ আসনের সাজ্জাদ হোসেন (স্বতন্ত্র), কুমিল্লান্ড৫ আসনের এ ম তাহের (স্বতন্ত্র), বরগুনান্ড১ আসনের মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), চাঁপাইনবাবগঞ্জন্ড১ আসনের সৈয়দ নজরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), গাইবান্ধান্ড২ আসনের শাহ সারোয়ার কবীর (স্বতন্ত্র)।
বাতিল ৭১৬, আপিল ৫৬১
এবারের সংসদ নির্বাচনে ২৯টি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে দুই হাজার ৭১২ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাছাইয়ে বাদপড়ে ৭৩১ জন প্রার্থীর মনোনয়ন। বিএনপিন্ডজামায়াতের ভোট বর্জনের মধ্যে আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জম দেন। তবে এক শতাংশ ভোটারের আগাম সমর্থনের প্রমাণ দিতে না পারার ঘটনায় তাদের বড় অংশ বাদপড়ে যান। বাদপড়ার তালিকায় আওয়ামী লীগ, জাপার প্রার্থীরাও আছেন।
রিটার্নিং অফিসারদের সিদ্ধান্তের (প্রার্থিতা বৈধ বা বাতিল) বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ ছিল ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর। নির্ধারিত সময়ে ইসিতে মোট ৫৬১টি আপিল জমা পড়ে। এর মধ্যে বৈধ ঘোষিত প্রার্থীকে অবৈধ ঘোষণার দাবিতে আপিল হয় অন্তত ৩০টি। কোনো কোনো আসনের প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধেও আপিল করেন। বাকি আপিলগুলো হয় প্রার্থিতা ফিরে পেতে।
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা জানা যাবে। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রার্থীরা প্রচার শুরু করতে পারবেন, যা চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ব্যালটে ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন
রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল শুনানির প্রথম দিনে ৫৬ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। এছাড়া ৩২ জনের প্রার্থিতা নামঞ্জুর হয়েছে এবং ছয়টি আবেদন সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রাখা হয়েছে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ শুনানি হয়। শুনানি চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। শুনানি শেষে সঙ্গে সঙ্গে রায় প্রকাশ করবে ইসি। ওই রায়ে সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে প্রার্থীদের।
ইসির যুগ্ম সচিব মাহবুবার রহমান জানান, প্রথম দিনে ৯৪ জনের আপিল আবেদনের শুনানি হয়।
চুন্নুর আসনে নৌকা বহাল
কিশোরগঞ্জন্ড৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. নাসিরুল ইসলাম খানের মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। এই আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু লাঙ্গলের প্রার্থী হয়েছেন। এখানে নৌকার প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলে জাপাকে আসন ছেড়ে দেয়া হলো কিনা, এমন আলোচনা চলছিল।
আবদুর রহমানের আসনে দোলন ও কৃক
ফরিদপুরন্-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান দোলন ও মাহমুদা বেগম কৃকের মনোয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর আবদুর রহমান এই আসনে নৌকার প্রার্থী। তিনি এই আসনের সাবেক এমপি।
দোলন অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা টাইমসের সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের সাবেক সহন্ডসভাপতি। কৃক মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
চট্টগ্রামে আ’লীগের ৩ নেতা
আপিল শুনানিতে মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে চট্টগ্রামের তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর, যারা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা। তিনজনই নৌকার মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়ে নিজ নিজ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের তালিকায় ত্রুটিবিচ্যুতির কারণে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন চট্টগ্রামন্ড১ (মিরসরাই) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিন। তিনি উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। এই আসনে নৌকার প্রার্থী মাহবুব রহমান, যিনি বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে।
প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া চট্টগ্রামন্ড৮ (বোয়ালখালীন্ডচান্দগাঁও) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস ছালাম নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়ান্ডলোহাগাড়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবও প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। তিনি সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এই আসনে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী।
মাহী বি চৌধুরী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জন্ড১ আসন থেকে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী মাহী বি চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার দুপুরে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আপিল শুনানি শেষে মাহীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা দেয় ইসি। একদাশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি বিকল্পধারাকে ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এবার এই আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন সিরাজদীখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ।
গত ৩ ডিসেম্বর যাচাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণ হিসেবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন মাহী বি চৌধুরী একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার ছিলেন। ওই প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি বলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য দেয়া হয়েছে।
হিরো আলম
বগুড়ান্ড৪ আসনের প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফ হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। আলোচিত এই অনলাইন কনটেন্ট ক্রিয়েটর বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনোনয়ন নিয়ে ভোটের মাঠে এসেছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মো. হেলাল উদ্দিন কবিরাজ। বর্তমান সংসদ সদস্য জাসদের রেজাউল করিম তানসেন।
ডলি সায়ন্তনী
পাবনান্ড২ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী। নব্বই দশকের আলোচিত এই শিল্পী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দাঁড়াতে ভোটের টিকেট পেয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি আহমেদ ফিরোজ কবির।
কামরুল হাসান রিপন
ঢাকান্ড৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান রিপনের মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই নেতা নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না। বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মুনও দ্বাদশ সংসদে নৌকার মনোনয়ন পাননি।
জাবির সাবেক উপাচার্য আনোয়ার
নেত্রকোনান্ড৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে। ১ শতাংশ ভোটারের তালিকায় গরমিলের তা বাতিল হয়। নেত্রকোণান্ড৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল। তার বদলে এবার এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেনকে।
প্রার্থিতা ফিরে পেলেন যারা
টাঙ্গাইলন্ড২ আসনের মো. ইউনুস ইসলাম তালুকদার (স্বতন্ত্র), যশোরন্ড২ আসনের এস এম হাবিবুর রহমান (স্বতন্ত্র), জামালপুরন্ড২ আসনের মো. জিয়াউল হক জিয়া (স্বতন্ত্র), নোয়াখালীন্ড২ আসনের তালেবুজ্জামান (জাতীয় পার্টি), যশোরন্ড১ আসনের মো. আক্তারুজ্জামান (জাতীয় পার্টি), গোপালগঞ্জন্ড১ আসনের মোহাম্মদ কবির মিয়া (স্বতন্ত্র), খুলনান্ড৬ আসনের মো. শফিকুল ইসলাম মধু (জাতীয় পার্টি), চট্টগ্রামন্ড৮ আসনের আবদুছ সালাম (স্বতন্ত্র), বরগুনান্ড১ আসনের মো. খলিলুর রহমান (স্বতন্ত্র), খুলনান্ড৪ আসনের শেখ হাবিবুর রহমান (তৃণমূল বিএনপি), মেহেরপুরন্ড২ আসনের মোখলেসুর রহমান (স্বতন্ত্র), রংপুরন্ড২ আসনের বিশ্বনাথ সরকার (স্বতন্ত্র), ঢাকান্ড২০ আসনের মো. মিনহাজ উদ্দিন (বিএসপি), চট্টগ্রামন্ড২ আসনের মোহাম্মদ শাহজাহান (স্বতন্ত্র), মুন্সীগঞ্জন্ড৩ আসনের মমতাজ সুলতানা আহমেদ (বিএনএফ), মাদারীপুরন্ড২ আসনের ইউসুফ আলী সুমন (বিএসপি), যশোরন্ড৩ আসনের মো. মহিদুল ইসলাম (জাকের পার্টি), যশোরন্ড৫ আসনের শেখ নুরুজ্জামান (বিএনএম), মুন্সীগঞ্জন্ড২ আসনের মো. বাচ্ছু শেখ (বিএনএফ), যশোরন্ড৩ আসনের মোহিত কুমার নাথ (স্বতন্ত্র), কুমিল্লান্ড২ আসনের এটিএম মঞ্জুরুল ইসলাম (জাকের পার্টি), যশোরন্ড৬ আসনের মো. আজিজুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), বরিশালন্ড৬ আসনের মোহাম্মদ শামসুল আলম (স্বতন্ত্র), কুমিল্লান্ড৫ আসনের সাজ্জাদ হোসেন (স্বতন্ত্র), কুমিল্লান্ড৫ আসনের এ ম তাহের (স্বতন্ত্র), বরগুনান্ড১ আসনের মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), চাঁপাইনবাবগঞ্জন্ড১ আসনের সৈয়দ নজরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), গাইবান্ধান্ড২ আসনের শাহ সারোয়ার কবীর (স্বতন্ত্র)।
বাতিল ৭১৬, আপিল ৫৬১
এবারের সংসদ নির্বাচনে ২৯টি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে দুই হাজার ৭১২ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাছাইয়ে বাদপড়ে ৭৩১ জন প্রার্থীর মনোনয়ন। বিএনপিন্ডজামায়াতের ভোট বর্জনের মধ্যে আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জম দেন। তবে এক শতাংশ ভোটারের আগাম সমর্থনের প্রমাণ দিতে না পারার ঘটনায় তাদের বড় অংশ বাদপড়ে যান। বাদপড়ার তালিকায় আওয়ামী লীগ, জাপার প্রার্থীরাও আছেন।
রিটার্নিং অফিসারদের সিদ্ধান্তের (প্রার্থিতা বৈধ বা বাতিল) বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ ছিল ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর। নির্ধারিত সময়ে ইসিতে মোট ৫৬১টি আপিল জমা পড়ে। এর মধ্যে বৈধ ঘোষিত প্রার্থীকে অবৈধ ঘোষণার দাবিতে আপিল হয় অন্তত ৩০টি। কোনো কোনো আসনের প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধেও আপিল করেন। বাকি আপিলগুলো হয় প্রার্থিতা ফিরে পেতে।
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা জানা যাবে। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রার্থীরা প্রচার শুরু করতে পারবেন, যা চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ব্যালটে ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।