ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকার দেশকে কেবল ‘বিক্রিই’ করে দিচ্ছে না, ‘পরনির্ভরশীলও’ করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ইউট্যাব আয়োজিত আলোচনায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
সভায় জিয়াউর রহমানের ওপর দুইটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক কামরুল আহসান ও অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম।
ফখরুল বলেন, ‘তারা (সরকার) খুব বড় বড় কথা বলেন, বিএনপির সময় বাজেটের পরিমাণ ছিল এত, এখন হয়েছে এত।
‘আরে বিএনপি দেশটাকে দেশটাকে ভালোবাসত বলে তারা চট করে জনগণের ওপরে করের বোঝা, ঋণের বোঝা আমরা চাপায়নি। আজকে প্রতিটি ব্যক্তির ওপরে এক লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা ঋণ, চিন্তা করতে পারেন!’
গত বৃহস্পতিবার আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক আলোচনায় তার সরকারের আমলের সঙ্গে তার আমলের তুলনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে সবশেষ বাজেট মাত্র ৬২ হাজার কোটি টাকার ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকার, সেখানে আমরা ৭ লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা বাজেট প্রস্তাব করেছি।’
বাজেটের আকার বাড়ার পাশাপাশি ঘাটতিও বেড়েছে। এবার অর্থমন্ত্রী আড়াই লাখ কোটি টাকারও বেশি ঘাটতি রেখেছেন, যদিও বরাবরেই বাজেট ঘাটতি মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির পাঁচ শতাংশের আশেপাশেই থাকে, বিএনপি আমলেও তাই থাকত।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেখুন নিজের স্বার্থে, ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে দেশকে কীভাবে বিক্রি করে দিচ্ছে, পরনির্ভরশীল করে ফেলেছে। তাদের (সরকার) কথা-বার্তায় এসব আসছে।
‘তারা আজকে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে কার স্বার্থে? অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে সম্পূর্ণভাবে বিদেশিদের স্বার্থে, পরনির্ভরশীল একটা জাতিতে পরিণত করেছে।’
নতুন অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জনগণের সমস্যা সমাধানে কোনো দিক নির্দেশনা নেই বলেও মনে করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি কমানোর কোনো ব্যবস্থা বাজেটে নেই। যে সমস্ত জিনিসপত্র মেশিনারিজ আমদানি করলে উৎপাদন বাড়তে পারে, সেগুলোর ওপরে ট্যাক্স আরোপ করেছে। তাহলে কর্মসংস্থান হবে কীভাবে?’
আগামী অর্থবছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি এখনকার ১০ শতাংশ ছুঁই ছুঁই অবস্থা থেকে সাড়ে ছয় শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে এক শতাংশ করারোপের প্রস্তাবও করেছেন।
‘আওয়ামী লীগের রসায়নই হচ্ছে দুর্নীতি-সন্ত্রাস’
এমন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘এখন তো দেখছেন চুরি, দুর্নীতি কীভাবে হচ্ছে। ওই সময়ে তাদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বলছেন যে, ‘অন্য নেতারা দেশে পায় সোনার খনি, আর আমি পাই চোরের খনি’।’
সরকার সব প্রতিষ্ঠান ‘ধ্বংস’ করে দেশটাকে ‘জাহান্নামে’ নিয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘এর চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে? মানুষের মধ্যে যে একটা সৌহার্দ্য ছিল, ভ্রাতৃত্ব ছিল, সেগুলো তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দলীয়করণ করে’ শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে বলেও মনে করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘কারা আসছে আজকে আমাদের নেতৃত্বে? দেখেন আপনি তাদের কোয়ালিটি দেখেন কী অবস্থা। আমাদের সব জায়গায় নেতৃত্বের সংকট। কেন? যেন নেতৃত্ব সৃষ্টি না হয় পরিকল্পিতভাবে সেই ব্যবস্থা তারা করেছে।
‘নেতৃত্ব তৈরি হবে কীভাবে? ছাত্র সংসদের নির্বাচন নাই, ডাকসুর নির্বাচন নাই, কোথাও নির্বাচন নাই।’
ইউট্যাবের সভাপতি এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো. রইছ উদ্দীনের সঞ্চালনায় আলোচনায় সাবেক সাংসদ ফজলুল হক মিলন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান খান, ইউট্যাবের লুৎফুর রহমান, আবদুর রশীদ, শামসুল আলম সেলিম, আখতার হোসেন, হাবিবুর রহমান, আলীমুর রহমান, আমজাদ হোসেনও বক্তব্য রাখেন।
রোববার, ০৯ জুন ২০২৪
ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকার দেশকে কেবল ‘বিক্রিই’ করে দিচ্ছে না, ‘পরনির্ভরশীলও’ করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ইউট্যাব আয়োজিত আলোচনায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
সভায় জিয়াউর রহমানের ওপর দুইটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক কামরুল আহসান ও অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম।
ফখরুল বলেন, ‘তারা (সরকার) খুব বড় বড় কথা বলেন, বিএনপির সময় বাজেটের পরিমাণ ছিল এত, এখন হয়েছে এত।
‘আরে বিএনপি দেশটাকে দেশটাকে ভালোবাসত বলে তারা চট করে জনগণের ওপরে করের বোঝা, ঋণের বোঝা আমরা চাপায়নি। আজকে প্রতিটি ব্যক্তির ওপরে এক লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা ঋণ, চিন্তা করতে পারেন!’
গত বৃহস্পতিবার আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক আলোচনায় তার সরকারের আমলের সঙ্গে তার আমলের তুলনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে সবশেষ বাজেট মাত্র ৬২ হাজার কোটি টাকার ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকার, সেখানে আমরা ৭ লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা বাজেট প্রস্তাব করেছি।’
বাজেটের আকার বাড়ার পাশাপাশি ঘাটতিও বেড়েছে। এবার অর্থমন্ত্রী আড়াই লাখ কোটি টাকারও বেশি ঘাটতি রেখেছেন, যদিও বরাবরেই বাজেট ঘাটতি মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির পাঁচ শতাংশের আশেপাশেই থাকে, বিএনপি আমলেও তাই থাকত।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেখুন নিজের স্বার্থে, ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে দেশকে কীভাবে বিক্রি করে দিচ্ছে, পরনির্ভরশীল করে ফেলেছে। তাদের (সরকার) কথা-বার্তায় এসব আসছে।
‘তারা আজকে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে কার স্বার্থে? অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে সম্পূর্ণভাবে বিদেশিদের স্বার্থে, পরনির্ভরশীল একটা জাতিতে পরিণত করেছে।’
নতুন অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জনগণের সমস্যা সমাধানে কোনো দিক নির্দেশনা নেই বলেও মনে করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি কমানোর কোনো ব্যবস্থা বাজেটে নেই। যে সমস্ত জিনিসপত্র মেশিনারিজ আমদানি করলে উৎপাদন বাড়তে পারে, সেগুলোর ওপরে ট্যাক্স আরোপ করেছে। তাহলে কর্মসংস্থান হবে কীভাবে?’
আগামী অর্থবছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি এখনকার ১০ শতাংশ ছুঁই ছুঁই অবস্থা থেকে সাড়ে ছয় শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে এক শতাংশ করারোপের প্রস্তাবও করেছেন।
‘আওয়ামী লীগের রসায়নই হচ্ছে দুর্নীতি-সন্ত্রাস’
এমন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘এখন তো দেখছেন চুরি, দুর্নীতি কীভাবে হচ্ছে। ওই সময়ে তাদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বলছেন যে, ‘অন্য নেতারা দেশে পায় সোনার খনি, আর আমি পাই চোরের খনি’।’
সরকার সব প্রতিষ্ঠান ‘ধ্বংস’ করে দেশটাকে ‘জাহান্নামে’ নিয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘এর চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে? মানুষের মধ্যে যে একটা সৌহার্দ্য ছিল, ভ্রাতৃত্ব ছিল, সেগুলো তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দলীয়করণ করে’ শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে বলেও মনে করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘কারা আসছে আজকে আমাদের নেতৃত্বে? দেখেন আপনি তাদের কোয়ালিটি দেখেন কী অবস্থা। আমাদের সব জায়গায় নেতৃত্বের সংকট। কেন? যেন নেতৃত্ব সৃষ্টি না হয় পরিকল্পিতভাবে সেই ব্যবস্থা তারা করেছে।
‘নেতৃত্ব তৈরি হবে কীভাবে? ছাত্র সংসদের নির্বাচন নাই, ডাকসুর নির্বাচন নাই, কোথাও নির্বাচন নাই।’
ইউট্যাবের সভাপতি এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো. রইছ উদ্দীনের সঞ্চালনায় আলোচনায় সাবেক সাংসদ ফজলুল হক মিলন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান খান, ইউট্যাবের লুৎফুর রহমান, আবদুর রশীদ, শামসুল আলম সেলিম, আখতার হোসেন, হাবিবুর রহমান, আলীমুর রহমান, আমজাদ হোসেনও বক্তব্য রাখেন।