১০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
মঙ্গলবার বিকালে তিনি গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফিরেছেন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বাসায় চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে তার নিয়মিত চিকিৎসা চলবে।
এ দফায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে ‘স্থায়ী পেসমেকার’ বসানো হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল কয়েক দফা বৈঠকের পর পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। গত ২৩ জুন পেসমেকার বসানো হয়। অস্ত্রোপচারের পর দুদিন করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) থাকার পর তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
এরপর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে উঠলে মঙ্গলবার তাকে বাসায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন লিভার বিশেষজ্ঞ এনে তার লিভারে অস্ত্রোপচার করা হয়।
হঠাৎ অসুস্থতা বেড়ে গেলে গত ২২ জুন রাত সাড়ে ৩টার দিকে খালেদা জিয়াকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর তাকে সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাডামে বিকাল সাড়ে ৫টায় এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।”
হাসপাতালে থেকে ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারের গাড়িতে করে বিকাল ৬টা ৪০ মিনিটে বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এসময় নেতাকর্মীরা তার গাড়ি ঘিরে রেখে গুলশানের বাসা ফিরোজায় নিয়ে আসেন।
বাসায় ফেরার পরে ফিরোজার গেইটে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, “ম্যাডাম আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীসহ দলের নেতাকর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি দেশবাসীর কাছে তার আরোগ্য কামনায় দোয়া চেয়েছেন।”
খালেদা জিয়াকে বাসায় ফেরানোর বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “যারা হসপিটালে ছিলেন তারা বেগম খালেদা জিয়াকে যেরকম দেখেছেন…ম্যাডাম সত্যিকার অর্থে অত্যন্ত অসুস্থ। উনাকে শিফট করা হয়েছে শুধুমাত্র। যেহেতু উনার পেস মেকার লাগানো হয়েছে, এটা একটা অপারেশনের মাধ্যমে প্লেস করতে হয় শরীরের ভেতরে। কাজেই যেকোনো সময়ে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে।
“বিশেষ করে হসপিটালে এই সম্ভাবনাটা বিভিন্নভাবে থাকে। উনার ডায়াবেটিস আছে, উনার ক্রনিক লিভার ডিজিস, ক্রনিক কিডনি ডিজিস, হার্টের সমস্যা যেটা আছে সেটি আরো মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।”
তিনি বলেন, “কাজেই এই অবস্থার মধ্যে উনাকে যত দ্রুত সম্ভব এমন জায়গায় নেওয়া যেখানে ইনফেকশনের সম্ভাবনা কম। সেজন্য এখানে(ফিরোজায়) আনা হয়েছে। সার্বক্ষণিকভাবে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানের উনি চিকিৎসাধীন থাকবেন। যখনই প্রয়োজন পড়বে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হবে, হসপিটালে নেয়া হবে। তবে উনাকে যত দ্রুত সম্ভব বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্লানারি সেন্টার বা হসপিটালে ট্রান্সফার করা জরুরি বলে এবারও মেডিকেল বোর্ড সুপারিশ করেছেন।”
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, আর্থারাইটিস ছাড়াও হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। গত চার বছরে বেশ কয়েকবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যেতে হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে।
করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুতে তার পরিবারের আবেদনে সরকার নির্বাহী আদেশে দুই শর্তে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। শর্ত হল, তাকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
গত তিন বছরে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে কয়েক দফা অনুমতি চাইলেও ওই শর্তের যুক্তি দেখিয়ে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।
মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪
১০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
মঙ্গলবার বিকালে তিনি গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফিরেছেন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বাসায় চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে তার নিয়মিত চিকিৎসা চলবে।
এ দফায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে ‘স্থায়ী পেসমেকার’ বসানো হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল কয়েক দফা বৈঠকের পর পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। গত ২৩ জুন পেসমেকার বসানো হয়। অস্ত্রোপচারের পর দুদিন করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) থাকার পর তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
এরপর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে উঠলে মঙ্গলবার তাকে বাসায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন লিভার বিশেষজ্ঞ এনে তার লিভারে অস্ত্রোপচার করা হয়।
হঠাৎ অসুস্থতা বেড়ে গেলে গত ২২ জুন রাত সাড়ে ৩টার দিকে খালেদা জিয়াকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর তাকে সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাডামে বিকাল সাড়ে ৫টায় এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।”
হাসপাতালে থেকে ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারের গাড়িতে করে বিকাল ৬টা ৪০ মিনিটে বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এসময় নেতাকর্মীরা তার গাড়ি ঘিরে রেখে গুলশানের বাসা ফিরোজায় নিয়ে আসেন।
বাসায় ফেরার পরে ফিরোজার গেইটে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, “ম্যাডাম আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীসহ দলের নেতাকর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি দেশবাসীর কাছে তার আরোগ্য কামনায় দোয়া চেয়েছেন।”
খালেদা জিয়াকে বাসায় ফেরানোর বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “যারা হসপিটালে ছিলেন তারা বেগম খালেদা জিয়াকে যেরকম দেখেছেন…ম্যাডাম সত্যিকার অর্থে অত্যন্ত অসুস্থ। উনাকে শিফট করা হয়েছে শুধুমাত্র। যেহেতু উনার পেস মেকার লাগানো হয়েছে, এটা একটা অপারেশনের মাধ্যমে প্লেস করতে হয় শরীরের ভেতরে। কাজেই যেকোনো সময়ে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে।
“বিশেষ করে হসপিটালে এই সম্ভাবনাটা বিভিন্নভাবে থাকে। উনার ডায়াবেটিস আছে, উনার ক্রনিক লিভার ডিজিস, ক্রনিক কিডনি ডিজিস, হার্টের সমস্যা যেটা আছে সেটি আরো মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।”
তিনি বলেন, “কাজেই এই অবস্থার মধ্যে উনাকে যত দ্রুত সম্ভব এমন জায়গায় নেওয়া যেখানে ইনফেকশনের সম্ভাবনা কম। সেজন্য এখানে(ফিরোজায়) আনা হয়েছে। সার্বক্ষণিকভাবে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানের উনি চিকিৎসাধীন থাকবেন। যখনই প্রয়োজন পড়বে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হবে, হসপিটালে নেয়া হবে। তবে উনাকে যত দ্রুত সম্ভব বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্লানারি সেন্টার বা হসপিটালে ট্রান্সফার করা জরুরি বলে এবারও মেডিকেল বোর্ড সুপারিশ করেছেন।”
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, আর্থারাইটিস ছাড়াও হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। গত চার বছরে বেশ কয়েকবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যেতে হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে।
করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুতে তার পরিবারের আবেদনে সরকার নির্বাহী আদেশে দুই শর্তে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। শর্ত হল, তাকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
গত তিন বছরে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে কয়েক দফা অনুমতি চাইলেও ওই শর্তের যুক্তি দেখিয়ে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।