পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নতুন নেতাদের সংবাদ সম্মেলন
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হরতাল-অবরোধের যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের নেতারাই পরিবহনে বোমা মেরে বিরোধী নেতাদের নামে মামলা দিতেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নতুন নেতারা।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, শ্রমিক স্বার্থের পরিবর্তে বিরোধী দলের আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য শ্রমিকদের বাধ্য করতেন ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি শাজাহান খান ও সম্পাদক ওসমান আলী। তারা জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন ‘প্রতিহতের নেতৃত্বও দেন’।
‘তাদের (শাজাহান খান ও ওসমান আলী) নির্দেশনা অমান্যকারীদের হয়রানি করা হতো। বিরোধী দলের আন্দোলন হরতাল-অবরোধে পরিবহন শ্রমিকদের গাড়ি চালাতে বাধ্য করা হতো। আবার যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীরা চলমান গাড়িতে পেট্রল বোমা মেরে ড্রাইভার ও যাত্রীদের হতাহত করে বিরোধী দলের নেতাদের নামে মামলা করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে কোনো মালিক-শ্রমিক মুখ খুলতে পারেনি,’ বলেন ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান।
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপরই আত্মগোপনে চলে যান শ্রমিক নেতা শাজাহান খান ও ওসমান আলী। তবে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হয়েছেন শাজাহান খান। বর্তমানে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় কিশোর আবদুল মোতালিব (১৪) হত্যা মামলায় রিমান্ডে আছেন।
পরবর্তী পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত সকল বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটি, বেসিক ইউনিয়ন ও কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ে বিশেষ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ফেডারেশনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির খানকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করা হয়। পরবর্তীতে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
পরে শনিবার শাজাহান খান ও ওসমান আলীসহ শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফেডারেশনের নতুন নেতারা।
লিখিত বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ৭০ লাখ শ্রমিকের প্রিয় সংগঠন। এ সংগঠন অরাজনৈতিকভাবে পরিচালিত হওয়ার কথা। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে সংগঠনের নিয়ম ভঙ্গ করে একটি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় সংগঠন পরিচালনা হয়ে আসছিল। এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নেতৃত্বে ছিলেন শাজাহান খান, ওসমান আলী ও খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।’
তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধের নামে নিজেরাই ক্ষেত্র তৈরি করে আহত ও নিহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহযোগিতার নামে পরিবহন হতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন। সরকারি ফান্ড হতেও সাহায্যের নামে কোটি কোটি টাকা গ্রহণ করেন তারা। আর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে দুয়েকটি পরিবারকে আর্থিক সহযোগতা করে তা মিডিয়াতে প্রচার করেন।’
এ সময় জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন প্রতিহতে শাজাহান খান ও ওসমান নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি সাভার ও গাজীপুরে চলমান শ্রমিক আন্দোলনেও তাদের ‘ভূমিকা থাকার’ অভিযোগ আনেন নেতারা।
হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এখনও দেশের শিল্প কারখানা, পরিবহনসহ বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নামে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ওসমান আলীর নেতৃত্বে আশুলিয়া, সাভার, ইপিজেড, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানা ভাঙচুর চালিয়ে যাচ্ছে।’
পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নতুন নেতাদের সংবাদ সম্মেলন
রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হরতাল-অবরোধের যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের নেতারাই পরিবহনে বোমা মেরে বিরোধী নেতাদের নামে মামলা দিতেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নতুন নেতারা।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, শ্রমিক স্বার্থের পরিবর্তে বিরোধী দলের আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য শ্রমিকদের বাধ্য করতেন ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি শাজাহান খান ও সম্পাদক ওসমান আলী। তারা জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন ‘প্রতিহতের নেতৃত্বও দেন’।
‘তাদের (শাজাহান খান ও ওসমান আলী) নির্দেশনা অমান্যকারীদের হয়রানি করা হতো। বিরোধী দলের আন্দোলন হরতাল-অবরোধে পরিবহন শ্রমিকদের গাড়ি চালাতে বাধ্য করা হতো। আবার যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীরা চলমান গাড়িতে পেট্রল বোমা মেরে ড্রাইভার ও যাত্রীদের হতাহত করে বিরোধী দলের নেতাদের নামে মামলা করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে কোনো মালিক-শ্রমিক মুখ খুলতে পারেনি,’ বলেন ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান।
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপরই আত্মগোপনে চলে যান শ্রমিক নেতা শাজাহান খান ও ওসমান আলী। তবে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হয়েছেন শাজাহান খান। বর্তমানে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় কিশোর আবদুল মোতালিব (১৪) হত্যা মামলায় রিমান্ডে আছেন।
পরবর্তী পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত সকল বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটি, বেসিক ইউনিয়ন ও কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ে বিশেষ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ফেডারেশনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির খানকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করা হয়। পরবর্তীতে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
পরে শনিবার শাজাহান খান ও ওসমান আলীসহ শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফেডারেশনের নতুন নেতারা।
লিখিত বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ৭০ লাখ শ্রমিকের প্রিয় সংগঠন। এ সংগঠন অরাজনৈতিকভাবে পরিচালিত হওয়ার কথা। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে সংগঠনের নিয়ম ভঙ্গ করে একটি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় সংগঠন পরিচালনা হয়ে আসছিল। এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নেতৃত্বে ছিলেন শাজাহান খান, ওসমান আলী ও খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।’
তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধের নামে নিজেরাই ক্ষেত্র তৈরি করে আহত ও নিহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহযোগিতার নামে পরিবহন হতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন। সরকারি ফান্ড হতেও সাহায্যের নামে কোটি কোটি টাকা গ্রহণ করেন তারা। আর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে দুয়েকটি পরিবারকে আর্থিক সহযোগতা করে তা মিডিয়াতে প্রচার করেন।’
এ সময় জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন প্রতিহতে শাজাহান খান ও ওসমান নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি সাভার ও গাজীপুরে চলমান শ্রমিক আন্দোলনেও তাদের ‘ভূমিকা থাকার’ অভিযোগ আনেন নেতারা।
হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এখনও দেশের শিল্প কারখানা, পরিবহনসহ বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নামে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ওসমান আলীর নেতৃত্বে আশুলিয়া, সাভার, ইপিজেড, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানা ভাঙচুর চালিয়ে যাচ্ছে।’